চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসবেন রিচি
বিন মোস্তফা | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
ছোটপর্দার নন্দিত অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান। তিনি সেই অল্প কিছু তারকার একজন যারা শুধু নতুন কাজ দিয়ে আলোচনায় থাকেন না। মেধা আর তারকাখ্যাতি দিয়ে প্রজন্মের সীমারেখা পার করতে পেরেছেন। তাই তো এখন অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও দর্শক ভুলে যাননি এই তারকাকে। গতকাল ছিল দর্শকের এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানাতেই সেই প্রিয় চেনা হাসি। বললেন, ‘দেশ রূপান্তর পরিবারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
বিশেষ দিনটি কীভাবে কাটালেন জানতে চাইলে রিচি বলেন, ‘জন্মদিনটি কখনো আমার ঘটা করে উদযাপন করা হয় না। দেশে এবার চার বছর পর জন্মদিন উদযাপন করছি। তারপরও ঘটা করে কিছু করা হয়নি। এতদিন যা কিছু করেছি তা ভক্তদের জন্যই। ২৩ জানুয়ারি এলেই ভক্তরা ফোনে বা ফেইসবুকে শুভেচ্ছা জানান। কেউ উপহার পাঠান, কেক নিয়ে বাসায় হাজির হন। তাদের খুশি করতেই ঘরোয়া আয়োজনে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। সাধারণত জন্মদিনে এতিম শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাই। করোনার কারণে এবার এতিমখানায় যাওয়া হয়নি। গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে পারিবারিক কবরস্থানের পাশে এতিমখানায় লোকের মাধ্যমে খাবার পাঠিয়েছি। দুপুরে চ্যানেল আইয়ের ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে ব্যস্ততায় কেটেছে দিনটি। রাতে পরিবারের সঙ্গে ডিনার করেছি।’ তবে জন্মদিন এলেই শৈশবের কথা খুব মনে পড়ে তার। বললেন, ‘প্রতিটি জন্মদিন নতুন অনুভূতির। শৈশবের জন্মদিন তো সবসময়ই রঙিন। শৈশবের দিনগুলো ঢাকায় কেটেছে। নতুন জামাকাপড় পরতাম। আব্বু কেকের সঙ্গে মিষ্টি নিয়ে আসতেন। মিষ্টি খাইয়ে রাত ১২টায় কেক কাটা হতো। জন্মদিনে বই পেলে সবচেয়ে খুশি হতাম। এখন অনেক কিছুই মিস করি।’
অভিনয়কেও মিস করেন তিনি। কারণ, জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক কারণে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হয়। সেখানে সন্তানদের নিজস্ব জগৎ তৈরি হয়েছে। প্রথম প্রথম বেশ মন খারাপ লাগত সবাইকে ছেড়ে বিদেশে থাকতে। এখন অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছেন। রিচি বললেন, ‘অভিনয় একেবারেই যে মিস করি না, তা নয়। চিরচেনা ভুবনে ফিরতে সবারই ভালো লাগে। দেশে এলে অনেকে প্রশ্ন করেন হাতে যখন সময় আছে, তখন অভিনয় থেকে দূরে কেন? এ প্রশ্নের কী উত্তর দেব? তা ছাড়া প্রিয় মানুষদের জন্য বসে থাকার উপায় নেই। দেশে যখনই ফিরি সময়-সুযোগ পেলেই অভিনয় করি।’
সম্প্রতি চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘মন কেমনের দিন’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেছেন রিচি। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন আনিসুর রহমান মিলন। আরও কয়েকটি নাটকের প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু দেড় বছর পর দেশে এসেছেন। মাসের পর মাস থাকারও সুযোগ নেই। তাই এই সময়টা চেষ্টা করেন নিজের মতো কাটাতে। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতেই সময় চলে যায়। কতদিনের জন্য এবারের সফর? জানতে চাইলে এই লাস্যময়ী অভিনেত্রী বলেন, ‘এবার খুব বেশিদিন থাকতে পারব না। মাত্র এক মাসের জন্য এসেছি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাব। দেশে ফিরে প্রথমেই রংপুরে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পারিবারিক কিছু কাজ ছিল সেখানে। সপ্তাহখানেক ছিলাম। এরপর ঢাকায় এসে নাটকের শ্যুটিং করেছি।’
অনেক দিন পর কাজ করে নাটকের চেনা জগৎটাকে কেমন লাগল? রিচি বলেন, ‘টিভি নাটকের অবস্থা তেমন ভালো নয়। আগে একটি নাটকের অনেক চরিত্র থাকত। এখন প্রেম ছাড়া গল্প দেখতে পাই না। বাজেট স্বল্পতার কারণে দুটি চরিত্র নিয়ে গল্প হচ্ছে। তবে বাজেট কম থাকায় সারাক্ষণ সবার একটা চাপ থাকে। এ সমস্যা থেকে আমরা এখনো বের হতে পারিনি।’
কয়েক বছর আগে রিচি চলচ্চিত্র প্রযোজনার কথা বলেছিলেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই প্রযোজনায় আসব। সবকিছু গুছিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে চাই। সৃষ্টিশীল কাজে অনেক মনোযোগী হতে হয়। আমার মেয়ের বয়স সাড়ে তিন বছর। তাকে সময় দিতে হয়। এ বছরের সেপ্টেম্বরে মেয়ে স্কুলে যাবে। তখন হাতে অনেক সময় পাব। এরপরই ছবি প্রযোজনা করার পরিকল্পনা করব।’
শেয়ার করুন
বিন মোস্তফা | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

ছোটপর্দার নন্দিত অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান। তিনি সেই অল্প কিছু তারকার একজন যারা শুধু নতুন কাজ দিয়ে আলোচনায় থাকেন না। মেধা আর তারকাখ্যাতি দিয়ে প্রজন্মের সীমারেখা পার করতে পেরেছেন। তাই তো এখন অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও দর্শক ভুলে যাননি এই তারকাকে। গতকাল ছিল দর্শকের এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানাতেই সেই প্রিয় চেনা হাসি। বললেন, ‘দেশ রূপান্তর পরিবারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
বিশেষ দিনটি কীভাবে কাটালেন জানতে চাইলে রিচি বলেন, ‘জন্মদিনটি কখনো আমার ঘটা করে উদযাপন করা হয় না। দেশে এবার চার বছর পর জন্মদিন উদযাপন করছি। তারপরও ঘটা করে কিছু করা হয়নি। এতদিন যা কিছু করেছি তা ভক্তদের জন্যই। ২৩ জানুয়ারি এলেই ভক্তরা ফোনে বা ফেইসবুকে শুভেচ্ছা জানান। কেউ উপহার পাঠান, কেক নিয়ে বাসায় হাজির হন। তাদের খুশি করতেই ঘরোয়া আয়োজনে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। সাধারণত জন্মদিনে এতিম শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাই। করোনার কারণে এবার এতিমখানায় যাওয়া হয়নি। গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে পারিবারিক কবরস্থানের পাশে এতিমখানায় লোকের মাধ্যমে খাবার পাঠিয়েছি। দুপুরে চ্যানেল আইয়ের ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে ব্যস্ততায় কেটেছে দিনটি। রাতে পরিবারের সঙ্গে ডিনার করেছি।’ তবে জন্মদিন এলেই শৈশবের কথা খুব মনে পড়ে তার। বললেন, ‘প্রতিটি জন্মদিন নতুন অনুভূতির। শৈশবের জন্মদিন তো সবসময়ই রঙিন। শৈশবের দিনগুলো ঢাকায় কেটেছে। নতুন জামাকাপড় পরতাম। আব্বু কেকের সঙ্গে মিষ্টি নিয়ে আসতেন। মিষ্টি খাইয়ে রাত ১২টায় কেক কাটা হতো। জন্মদিনে বই পেলে সবচেয়ে খুশি হতাম। এখন অনেক কিছুই মিস করি।’
অভিনয়কেও মিস করেন তিনি। কারণ, জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক কারণে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হয়। সেখানে সন্তানদের নিজস্ব জগৎ তৈরি হয়েছে। প্রথম প্রথম বেশ মন খারাপ লাগত সবাইকে ছেড়ে বিদেশে থাকতে। এখন অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছেন। রিচি বললেন, ‘অভিনয় একেবারেই যে মিস করি না, তা নয়। চিরচেনা ভুবনে ফিরতে সবারই ভালো লাগে। দেশে এলে অনেকে প্রশ্ন করেন হাতে যখন সময় আছে, তখন অভিনয় থেকে দূরে কেন? এ প্রশ্নের কী উত্তর দেব? তা ছাড়া প্রিয় মানুষদের জন্য বসে থাকার উপায় নেই। দেশে যখনই ফিরি সময়-সুযোগ পেলেই অভিনয় করি।’
সম্প্রতি চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘মন কেমনের দিন’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেছেন রিচি। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন আনিসুর রহমান মিলন। আরও কয়েকটি নাটকের প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু দেড় বছর পর দেশে এসেছেন। মাসের পর মাস থাকারও সুযোগ নেই। তাই এই সময়টা চেষ্টা করেন নিজের মতো কাটাতে। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতেই সময় চলে যায়। কতদিনের জন্য এবারের সফর? জানতে চাইলে এই লাস্যময়ী অভিনেত্রী বলেন, ‘এবার খুব বেশিদিন থাকতে পারব না। মাত্র এক মাসের জন্য এসেছি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাব। দেশে ফিরে প্রথমেই রংপুরে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পারিবারিক কিছু কাজ ছিল সেখানে। সপ্তাহখানেক ছিলাম। এরপর ঢাকায় এসে নাটকের শ্যুটিং করেছি।’
অনেক দিন পর কাজ করে নাটকের চেনা জগৎটাকে কেমন লাগল? রিচি বলেন, ‘টিভি নাটকের অবস্থা তেমন ভালো নয়। আগে একটি নাটকের অনেক চরিত্র থাকত। এখন প্রেম ছাড়া গল্প দেখতে পাই না। বাজেট স্বল্পতার কারণে দুটি চরিত্র নিয়ে গল্প হচ্ছে। তবে বাজেট কম থাকায় সারাক্ষণ সবার একটা চাপ থাকে। এ সমস্যা থেকে আমরা এখনো বের হতে পারিনি।’
কয়েক বছর আগে রিচি চলচ্চিত্র প্রযোজনার কথা বলেছিলেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই প্রযোজনায় আসব। সবকিছু গুছিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে চাই। সৃষ্টিশীল কাজে অনেক মনোযোগী হতে হয়। আমার মেয়ের বয়স সাড়ে তিন বছর। তাকে সময় দিতে হয়। এ বছরের সেপ্টেম্বরে মেয়ে স্কুলে যাবে। তখন হাতে অনেক সময় পাব। এরপরই ছবি প্রযোজনা করার পরিকল্পনা করব।’