‘বলি’তে অন্যরকম চঞ্চল চৌধুরী
মাসিদ রণ | ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
আবারও চমক দেখাতে হাজির হচ্ছেন দেশের অন্যতম মেধাবী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আগামীকাল কলকাতার ওয়েব প্ল্যাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘বলি’। ইতোমধ্যে সিরিজটির ট্রেলার হইচই ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশেষ করে এই অভিনেতার ডেভিল লুক ও ভরাট কণ্ঠের সংলাপ দর্শকের আগ্রহ তৈরি করেছে সিরিজটি দেখতে। শঙ্খ দাসগুপ্তের পরিচালনায় নির্মিত সিরিজটিতে আরও অভিনয় করেছেন সোহেল ম-ল, সালাহউদ্দিন লাভলু, ইরেশ জাকের, সোহানা সাবা, সাফা কবির, লুৎফর রহমান জর্জ, জিয়াউল হক পলাশ, কাজী রোকসানা রুমা, মৌসুমী মৌ এবং নাসির উদ্দিন খান।
নিজের কাজের ব্যাপারে বরাবরই খোলামেলা কথা বলেন চঞ্চল চৌধুরী। তার সঙ্গে কথা বলে মনে হলো, এই কাজটি নিয়ে সত্যিই আশাবাদী। প্রথমেই বললেন, ‘এটি সচরাচর কাজের মতো নয়। একেবারে ডিজাইন করা প্রোডাকশন। পরিচালক পর্দায় কী দেখাবেন তা অভিনেতাদেরও শ্যুটিং শুরুর আগেই দেখিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ আমাদের প্রত্যেক শিল্পীর চরিত্র দেখতে কেমন হবে তা নিয়ে আগেই আর্টিস্ট দিয়ে একে ফেলেন। পরে চরিত্রের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পোশাক ও মেকাপের বিষয়টি চলে আসে। যখন কমপ্লিট লুকে ফটোশ্যুট করি তখনই যেন চরিত্রটি হয়ে উঠেছিলাম। একজন অভিনেতার জন্য এই প্রসেস খুবই সহায়তা করে। অভিনেতা বুঝতে পারেন এমন লুকে তাকে কী ধরনের অভিনয় ডেলিভারি দিতে হবে। শুধু লুক নয়, প্রতিটি দৃশ্যের শ্যুটিংয়ে কী ধরনের ডিজাইন করে সেট বানানো হয়। সব মিলিয়ে ভিন্নধর্মী একটি কাজ হয়েছে। আশা করছি দর্শক পছন্দ করবে।’
‘বলি’র ট্রেলারে চঞ্চলকে একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। সোহরাব নামের সেই চরিত্রে রয়েছে খারাপ মানুষের গন্ধ। এই চরিত্রের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন,‘ কাজটির ব্যাপারে পরিচালক ও প্রযোজক আমার সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে কথা বলেন। গল্প শুনেই মনে হয়েছিল একেবারেই ভিন্ন জোনের। সচরাচর যে এলাকার গল্প আমার দেখাই, এটি তার বাইরে। কুয়াকাটার মতো একটি বিচ্ছিন্ন এলাকার মানুষের গল্প এটি। পরিচালক শুরু থেকেই ক্লিয়ার ছিলেন যে এতে থাকবে ওয়েস্টার্ন ড্রামার স্বাদ। তার পরিকল্পনা শুনে খুব ভালো লাগে। এরপর লুক সেট ছাড়াও প্রত্যেক শিল্পী চার পাঁচদিন ধরে পরিচালকের সঙ্গে আলাদা করে রিহার্সেল করেছি।’
এতগুলো ভালো অভিনেতা ও মেধাবী টিমের সঙ্গে কাজ করে তার খুবই ভালো লেগেছে বলে জানালেন। তার ভাষায়, ‘আমি তারকা কথাটায় বিশ^াসী নই। যে ইউনিটে ভালো অভিনেতা থাকে, সে ইউনিটে কাজ করার অভিজ্ঞতা সব সময়ই ভালো। লুৎফর রহমান জর্জ, সালাহউদ্দিন লাভলু, ইরেশ জাকের, সোহেল ম-ল, সোহানা সাবার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সাফা কবির আর পলাশই ছিল আমার জন্য নতুন। প্রত্যেকে চেষ্টা করেছে ভালো করতে। তাদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা ভালো। কেমন অভিনয় করল, সেটি আমি বলতে চাই না। দর্শক দেখেই বলবে। তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে এমন একটি টিম পেয়ে। সাধারণত টিমের সবার কাছ থেকে সমান এফোর্ট পাই না। এখানে সবাই যার যার জায়গা থেকে সেরাটা দিতে চেয়েছে। এই সততা থাকলেই আমার খুব ভালো লাগে কাজ করতে। অনেক কষ্ট করেছি শ্যুটিং করতে গিয়ে। কুয়াকাটার খুবই চ্যালেঞ্জিং জোনে কাজ হয়েছে। সেখানে তেমন একটা উন্নয়নের আলো পৌঁছায়নি। রাস্তাঘাট খুব খারাপ। তারমধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। একটি দৃশ্য করতে গিয়ে আমার একটি আঙুল পুড়ে যায়। তারপরও কাজ চালিয়ে গেছি একটি ভালো প্রজেক্ট দর্শককে উপহার দেওয়ার প্রয়াসে। সেই কষ্ট সার্থক হবে দর্শকের মনে সিরিজটি জায়গা পেলে।’
এদিকে, চঞ্চল চৌধুরৗ এখন টিভি নাটকের চেয়ে ওয়েব কনটেন্টই বেশি করছেন। প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন তিনি। জি ফাইভের এই ওয়েব সিরিয়ালের নাম ‘রূপকথা নয়’। এর পর্ব হবে ১০০টিরও বেশি। পরিচালনা করছেন গোলাম সোহরাব দোদুল। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত অমিতাভ রেজা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘মুন্সিগিরি’ ওয়েব সিরিজটিও। এই অভিনেতার দুটি সিনেমা মুক্তির জন্য প্রস্তুত। একটি গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘পাপ পুণ্য’, অপরটি মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’।
শেয়ার করুন
মাসিদ রণ | ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

আবারও চমক দেখাতে হাজির হচ্ছেন দেশের অন্যতম মেধাবী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আগামীকাল কলকাতার ওয়েব প্ল্যাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘বলি’। ইতোমধ্যে সিরিজটির ট্রেলার হইচই ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশেষ করে এই অভিনেতার ডেভিল লুক ও ভরাট কণ্ঠের সংলাপ দর্শকের আগ্রহ তৈরি করেছে সিরিজটি দেখতে। শঙ্খ দাসগুপ্তের পরিচালনায় নির্মিত সিরিজটিতে আরও অভিনয় করেছেন সোহেল ম-ল, সালাহউদ্দিন লাভলু, ইরেশ জাকের, সোহানা সাবা, সাফা কবির, লুৎফর রহমান জর্জ, জিয়াউল হক পলাশ, কাজী রোকসানা রুমা, মৌসুমী মৌ এবং নাসির উদ্দিন খান।
নিজের কাজের ব্যাপারে বরাবরই খোলামেলা কথা বলেন চঞ্চল চৌধুরী। তার সঙ্গে কথা বলে মনে হলো, এই কাজটি নিয়ে সত্যিই আশাবাদী। প্রথমেই বললেন, ‘এটি সচরাচর কাজের মতো নয়। একেবারে ডিজাইন করা প্রোডাকশন। পরিচালক পর্দায় কী দেখাবেন তা অভিনেতাদেরও শ্যুটিং শুরুর আগেই দেখিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ আমাদের প্রত্যেক শিল্পীর চরিত্র দেখতে কেমন হবে তা নিয়ে আগেই আর্টিস্ট দিয়ে একে ফেলেন। পরে চরিত্রের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পোশাক ও মেকাপের বিষয়টি চলে আসে। যখন কমপ্লিট লুকে ফটোশ্যুট করি তখনই যেন চরিত্রটি হয়ে উঠেছিলাম। একজন অভিনেতার জন্য এই প্রসেস খুবই সহায়তা করে। অভিনেতা বুঝতে পারেন এমন লুকে তাকে কী ধরনের অভিনয় ডেলিভারি দিতে হবে। শুধু লুক নয়, প্রতিটি দৃশ্যের শ্যুটিংয়ে কী ধরনের ডিজাইন করে সেট বানানো হয়। সব মিলিয়ে ভিন্নধর্মী একটি কাজ হয়েছে। আশা করছি দর্শক পছন্দ করবে।’
‘বলি’র ট্রেলারে চঞ্চলকে একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। সোহরাব নামের সেই চরিত্রে রয়েছে খারাপ মানুষের গন্ধ। এই চরিত্রের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন,‘ কাজটির ব্যাপারে পরিচালক ও প্রযোজক আমার সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে কথা বলেন। গল্প শুনেই মনে হয়েছিল একেবারেই ভিন্ন জোনের। সচরাচর যে এলাকার গল্প আমার দেখাই, এটি তার বাইরে। কুয়াকাটার মতো একটি বিচ্ছিন্ন এলাকার মানুষের গল্প এটি। পরিচালক শুরু থেকেই ক্লিয়ার ছিলেন যে এতে থাকবে ওয়েস্টার্ন ড্রামার স্বাদ। তার পরিকল্পনা শুনে খুব ভালো লাগে। এরপর লুক সেট ছাড়াও প্রত্যেক শিল্পী চার পাঁচদিন ধরে পরিচালকের সঙ্গে আলাদা করে রিহার্সেল করেছি।’
এতগুলো ভালো অভিনেতা ও মেধাবী টিমের সঙ্গে কাজ করে তার খুবই ভালো লেগেছে বলে জানালেন। তার ভাষায়, ‘আমি তারকা কথাটায় বিশ^াসী নই। যে ইউনিটে ভালো অভিনেতা থাকে, সে ইউনিটে কাজ করার অভিজ্ঞতা সব সময়ই ভালো। লুৎফর রহমান জর্জ, সালাহউদ্দিন লাভলু, ইরেশ জাকের, সোহেল ম-ল, সোহানা সাবার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সাফা কবির আর পলাশই ছিল আমার জন্য নতুন। প্রত্যেকে চেষ্টা করেছে ভালো করতে। তাদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা ভালো। কেমন অভিনয় করল, সেটি আমি বলতে চাই না। দর্শক দেখেই বলবে। তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে এমন একটি টিম পেয়ে। সাধারণত টিমের সবার কাছ থেকে সমান এফোর্ট পাই না। এখানে সবাই যার যার জায়গা থেকে সেরাটা দিতে চেয়েছে। এই সততা থাকলেই আমার খুব ভালো লাগে কাজ করতে। অনেক কষ্ট করেছি শ্যুটিং করতে গিয়ে। কুয়াকাটার খুবই চ্যালেঞ্জিং জোনে কাজ হয়েছে। সেখানে তেমন একটা উন্নয়নের আলো পৌঁছায়নি। রাস্তাঘাট খুব খারাপ। তারমধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। একটি দৃশ্য করতে গিয়ে আমার একটি আঙুল পুড়ে যায়। তারপরও কাজ চালিয়ে গেছি একটি ভালো প্রজেক্ট দর্শককে উপহার দেওয়ার প্রয়াসে। সেই কষ্ট সার্থক হবে দর্শকের মনে সিরিজটি জায়গা পেলে।’
এদিকে, চঞ্চল চৌধুরৗ এখন টিভি নাটকের চেয়ে ওয়েব কনটেন্টই বেশি করছেন। প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন তিনি। জি ফাইভের এই ওয়েব সিরিয়ালের নাম ‘রূপকথা নয়’। এর পর্ব হবে ১০০টিরও বেশি। পরিচালনা করছেন গোলাম সোহরাব দোদুল। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত অমিতাভ রেজা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘মুন্সিগিরি’ ওয়েব সিরিজটিও। এই অভিনেতার দুটি সিনেমা মুক্তির জন্য প্রস্তুত। একটি গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘পাপ পুণ্য’, অপরটি মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’।