‘মিশন এক্সট্রিম’ নিয়ে উচ্চাশা
মাসিদ রণ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
আজ একযোগে বাংলাদেশসহ চার মহাদেশের ১৪টি দেশে মুক্তি পাচ্ছে আরিফিন শুভ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী জুটি অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। এরইমধ্যে সিনেমার ট্রেলার দর্শকের মধ্যে আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। কপ ক্রিয়েশন প্রযোজিত এই সিনেমার প্রথম কিস্তি মুক্তির আগেই দ্বিতীয় কিস্তি তৈরি করে রেখেছেন পরিচালকযুগল সানী সারোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ। বোঝাই যাচ্ছে তারকাবহুল এই সিনেমা নিয়ে তাদের প্রত্যাশার পারদ কতখানি উঁচুতে। পরিচালক ফয়সাল আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ছবিটি যে ধরনের আয়োজন, বাজেট ও পরিকল্পনা নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তাতে প্রত্যাশা সত্যিই অনেক বড়। করোনার আগেই মুক্তির জন্য প্রস্তুত ছিল ‘মিশন এক্সট্রিম’। মহামারীর দুই ঈদে মুক্তি পেতে পেতেও পায়নি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। করোনার মধ্যে মানুষের মধ্যে যে একঘেয়েমির জন্ম নিয়েছে তা থেকে কিছুটা সময় রিফ্রেশমেন্ট দিতে পারবে এই ছবিটি। আমার মনে হয়, দর্শকরা এই সুযোগটি নেবে। তাছাড়া এই ছবিটি শুধু আমাদের জন্য নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। এই ছবিটি ভালো ব্যবসা করলে আমাদের সিনেমার চাকা আবার গতিশীল হবে।’
ছবির নায়িকা জান্নাতুল ফেরদৌস এশীও একই কথা বললেন। এটি তার বড়পর্দায় অভিষেক সিনেমা। তাই প্রত্যাশা কিংবা মানসিক চাপ- দুটোই বেশি। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এই সিনেমার জন্য চার-পাঁচটা বছর সময় দিয়েছি। অবশেষে দর্শকের কাছে আসছে। আমি তো চাইতেই পারি ছবিটি সবাই হলে গিয়ে দেখুন। প্রথম সিনেমা হিসেবে ভুলভ্রান্তি হলে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন যাতে পরে আরও ভালো করতে পারি। আমরা পুরো টিম অনেক কষ্ট করেছি দর্শকের একটি আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা উপহার দিতে। বিশেষ করে করোনার জন্য আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির যে ভগ্ন দশা হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য এই সিনেমাটির সফলতা খুবই জরুরি। এটিই করোনার পর প্রথম বিগ বাজেট সিনেমা। এটি সফল হলে অন্য প্রযোজকরাও তাদের বিগ বাজেট সিনেমাগুলো মুক্তি দেওয়ার সাহস করবেন। তখন আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
দর্শক কেন ছবিটি দেখতে হলে যাবেন, জানতে চাইলে পরিচালক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘সরাসরি বলতে গেলে এটি পিওর কমার্শিয়াল সিনেমা। এতে এন্টারটেইনমেন্ট আছে, অ্যাকশন আছে, ড্রামা আছে, সাসপেন্স আছে। যারা এ ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন তারা তো হলে যাবেনই। আর যারা জীবনঘনিষ্ঠ গল্প দেখতে পছন্দ করেন, তাদের বলব- এটি শুধু নাচ নাচ ফাইটের ছবি নয়। গল্পে একটি হিডেন লাইনও আছে, যার সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পারবেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ছবিতে পুলিশ বাহিনীর সাহসিকতার যে গল্প দেখানো হয়েছে তাতে সমাজে পুলিশদের নিয়ে যে ভ্রান্ত ধারণা আছে, ভয় আছে তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আমার বিশ^াস।’
আরিফিন শুভর জন্য এই ছবি জীবন-মরণের প্রশ্ন। ছবিতে নিজের লুক তৈরির জন্য পরিশ্রম করতে গিয়ে পড়েছিলেন পায়ের ইনজুরিতে। প্রায় দুই বছর ধরে ভুগছেন। শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন কিছুদিন। মাঝখানে অস্ত্রোপচার করলেও ভোগান্তি কমেনি। চিকিৎসকরা লাইফস্টাইলের নিয়ম-কানুন তৈরি করে দিয়ে সেটা মেনে চলতে বলেছেন। ওজন বাড়লেই সমস্যা বাড়বে শুভর। কারণ পায়ের ওপর ভরটা বেশি পড়বে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর জন্য ওজন বানিয়েছিলেন ৮২ কেজি। তিনি বলেন, ‘একটা অ্যাকশন ফিল্ম বানানোর জন্য আমাদের রিসোর্সের স্বল্পতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তা সত্ত্বেও আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছি। বলছি না আমরা একদম বিশ্ববিখ্যাত ছবি বানিয়ে ফেলেছি। শুধু এটাই বলছি, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছি। দর্শক যাতে হলে বসে প্রতারিত বোধ না করে। এটা যেন মনে না করে, আমরা মিথ্যা বলে তাদের হলে নিয়ে গেছি। আগামীকালই দর্শক প্রমাণ পেয়ে যাবে। আমরা সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটা গল্প বলতে চেয়েছি, নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সেটা লিখেছেন আমাদের পুলিশ প্রশাসনেরই একজন। এখানে এমন কিছু নেই যেটা দর্শক রিলেট করতে পারবে না।’ চার মহাদেশে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। এটা বাংলা ছবির জন্য প্রথম। শুভ বলেন, ‘আমাদের একটা ছবি প্রথম দিনেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ দেখতে পাবে, এটা ভীষণ গর্বের। এই উদ্যোগ আমাদের সিনেমার পথ সহজ করে দেবে। ইচ্ছে আছে দেশের বাইরে গিয়ে দর্শকের সঙ্গে ছবি দেখব।’ এ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেণ তাসকিন রহমান, সাদিয়া নাবিলা, সুমিত, ফজলুর রহমান বাবু, মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইরেশ যাকের, মনোজ প্রমুখ।
শেয়ার করুন
মাসিদ রণ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

আজ একযোগে বাংলাদেশসহ চার মহাদেশের ১৪টি দেশে মুক্তি পাচ্ছে আরিফিন শুভ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী জুটি অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। এরইমধ্যে সিনেমার ট্রেলার দর্শকের মধ্যে আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। কপ ক্রিয়েশন প্রযোজিত এই সিনেমার প্রথম কিস্তি মুক্তির আগেই দ্বিতীয় কিস্তি তৈরি করে রেখেছেন পরিচালকযুগল সানী সারোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ। বোঝাই যাচ্ছে তারকাবহুল এই সিনেমা নিয়ে তাদের প্রত্যাশার পারদ কতখানি উঁচুতে। পরিচালক ফয়সাল আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ছবিটি যে ধরনের আয়োজন, বাজেট ও পরিকল্পনা নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তাতে প্রত্যাশা সত্যিই অনেক বড়। করোনার আগেই মুক্তির জন্য প্রস্তুত ছিল ‘মিশন এক্সট্রিম’। মহামারীর দুই ঈদে মুক্তি পেতে পেতেও পায়নি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। করোনার মধ্যে মানুষের মধ্যে যে একঘেয়েমির জন্ম নিয়েছে তা থেকে কিছুটা সময় রিফ্রেশমেন্ট দিতে পারবে এই ছবিটি। আমার মনে হয়, দর্শকরা এই সুযোগটি নেবে। তাছাড়া এই ছবিটি শুধু আমাদের জন্য নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। এই ছবিটি ভালো ব্যবসা করলে আমাদের সিনেমার চাকা আবার গতিশীল হবে।’
ছবির নায়িকা জান্নাতুল ফেরদৌস এশীও একই কথা বললেন। এটি তার বড়পর্দায় অভিষেক সিনেমা। তাই প্রত্যাশা কিংবা মানসিক চাপ- দুটোই বেশি। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এই সিনেমার জন্য চার-পাঁচটা বছর সময় দিয়েছি। অবশেষে দর্শকের কাছে আসছে। আমি তো চাইতেই পারি ছবিটি সবাই হলে গিয়ে দেখুন। প্রথম সিনেমা হিসেবে ভুলভ্রান্তি হলে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন যাতে পরে আরও ভালো করতে পারি। আমরা পুরো টিম অনেক কষ্ট করেছি দর্শকের একটি আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা উপহার দিতে। বিশেষ করে করোনার জন্য আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির যে ভগ্ন দশা হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য এই সিনেমাটির সফলতা খুবই জরুরি। এটিই করোনার পর প্রথম বিগ বাজেট সিনেমা। এটি সফল হলে অন্য প্রযোজকরাও তাদের বিগ বাজেট সিনেমাগুলো মুক্তি দেওয়ার সাহস করবেন। তখন আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
দর্শক কেন ছবিটি দেখতে হলে যাবেন, জানতে চাইলে পরিচালক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘সরাসরি বলতে গেলে এটি পিওর কমার্শিয়াল সিনেমা। এতে এন্টারটেইনমেন্ট আছে, অ্যাকশন আছে, ড্রামা আছে, সাসপেন্স আছে। যারা এ ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন তারা তো হলে যাবেনই। আর যারা জীবনঘনিষ্ঠ গল্প দেখতে পছন্দ করেন, তাদের বলব- এটি শুধু নাচ নাচ ফাইটের ছবি নয়। গল্পে একটি হিডেন লাইনও আছে, যার সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পারবেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ছবিতে পুলিশ বাহিনীর সাহসিকতার যে গল্প দেখানো হয়েছে তাতে সমাজে পুলিশদের নিয়ে যে ভ্রান্ত ধারণা আছে, ভয় আছে তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আমার বিশ^াস।’
আরিফিন শুভর জন্য এই ছবি জীবন-মরণের প্রশ্ন। ছবিতে নিজের লুক তৈরির জন্য পরিশ্রম করতে গিয়ে পড়েছিলেন পায়ের ইনজুরিতে। প্রায় দুই বছর ধরে ভুগছেন। শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন কিছুদিন। মাঝখানে অস্ত্রোপচার করলেও ভোগান্তি কমেনি। চিকিৎসকরা লাইফস্টাইলের নিয়ম-কানুন তৈরি করে দিয়ে সেটা মেনে চলতে বলেছেন। ওজন বাড়লেই সমস্যা বাড়বে শুভর। কারণ পায়ের ওপর ভরটা বেশি পড়বে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর জন্য ওজন বানিয়েছিলেন ৮২ কেজি। তিনি বলেন, ‘একটা অ্যাকশন ফিল্ম বানানোর জন্য আমাদের রিসোর্সের স্বল্পতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তা সত্ত্বেও আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছি। বলছি না আমরা একদম বিশ্ববিখ্যাত ছবি বানিয়ে ফেলেছি। শুধু এটাই বলছি, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছি। দর্শক যাতে হলে বসে প্রতারিত বোধ না করে। এটা যেন মনে না করে, আমরা মিথ্যা বলে তাদের হলে নিয়ে গেছি। আগামীকালই দর্শক প্রমাণ পেয়ে যাবে। আমরা সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটা গল্প বলতে চেয়েছি, নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সেটা লিখেছেন আমাদের পুলিশ প্রশাসনেরই একজন। এখানে এমন কিছু নেই যেটা দর্শক রিলেট করতে পারবে না।’ চার মহাদেশে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। এটা বাংলা ছবির জন্য প্রথম। শুভ বলেন, ‘আমাদের একটা ছবি প্রথম দিনেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ দেখতে পাবে, এটা ভীষণ গর্বের। এই উদ্যোগ আমাদের সিনেমার পথ সহজ করে দেবে। ইচ্ছে আছে দেশের বাইরে গিয়ে দর্শকের সঙ্গে ছবি দেখব।’ এ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেণ তাসকিন রহমান, সাদিয়া নাবিলা, সুমিত, ফজলুর রহমান বাবু, মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইরেশ যাকের, মনোজ প্রমুখ।