শিল্পীদের নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
মাসিদ রণ | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
আগামী ২৮ জানুয়ারি শোবিজের মানুষের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ এ দিনেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ও ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন টেলিভিশন অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন। দুই নির্বাচনকে ঘিরে শোবিজ এখন বেশ সরগরম। কিন্তু এর মধ্যে বাড়ছে করোনা শনাক্তের হার। বাড়ছে ওমিক্রন শনাক্তও। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে জরিমানার বিধানসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। গতকাল থেকে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কি হবে না তা নিয়ে আছে শঙ্কা। চলছে আলোচনাও। কারণ ১১ দফা বিধিনিষেধের মধ্যে আছে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। যদিও নির্বাচন বন্ধ করার বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি।
তবে গতকাল নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সেটি পেয়েছেন অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতারা। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গতকাল যে প্রজ্ঞাপন এসেছে তা নিয়ে আমরা এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে পারছি না। এটা পর্যবেক্ষণ করে যেকোনো সিদ্ধান্ত আসবে। যদি নির্বাচনে কোনো বাধা নাও থাকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে তা সম্পন্ন করা সম্ভব সে বিষয়গুলো নিয়েও ভাবনার বিষয় রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তাতে বলা যায়, আগামী ২৮ জানুয়ারিতে নির্বাচনটি হবে।’
করোনার এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কি না জানতে চাইলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘এখনো বলতে পারছি না। কারণ সরকার থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। তাই ধরে নিচ্ছি নির্বাচন হবে। তবে আমি সবাইকে বলেছি সাবধানে থাকতে। যাতে আমাদের মাধ্যমে করোনা না ছড়ায়। আর চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ও শিল্পীদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি সভাপতি পদে নির্বাচন করব। জীবনের এ পর্যায়ে এসে শিল্পীদের জন্য কিছু করতে চাই। চলচ্চিত্রের যে হারানো গৌরব ছিল, তা ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’ ১৯৮৯-৯০ সালের নির্বাচনে সেক্রেটারি ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। আরেক সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগর বলেন, ‘করোনা বাড়ছে, এটা উৎকণ্ঠার বিষয়। সামনে আমাদের নির্বাচন। এটা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী বিধিনিষেধের কারণে করোনা কমে আসবে। আর যথাসময়ে নির্বাচনও হবে।’ নির্বাচন না হলে কী হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। হলে আমরা জানাব।’
আহসান হাবিব নাসিম গতবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন। এবারই প্রথম সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। এবারও নির্বাচিত হলে কোন দিকগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া শিল্পী সংঘের নিজস্ব ফান্ড গঠিত হয়েছে। এবার সেই ফান্ড বড় করার পরিকল্পনা আছে। এবার একটি নতুন বিষয়ে নজর দেব। নাট্যাঙ্গনে সিনিয়র ও জুনিয়র শিল্পীদের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলে আমরা কোনো সুফল পাচ্ছি না। তাই এবার সব প্রজন্মের শিল্পীর মধ্যে যোগাযোগ ঘটাব। বেশ কিছু মতবিনিময় সভা করব। এর ফলে প্রত্যেকের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক যেমন উন্নত হবে, তেমনি সিনিয়ররা তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন, যা খুবই মূল্যবান। এ ছাড়া বিগত দিনেও আমরা চেষ্টা করেছি শ্যুটিংয়ে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে। সঠিক সময়ে কাজ শুরু হওয়া ও শেষ হওয়া, শিল্পীদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দিকে দৃষ্টি দেওয়া হবে।’
এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন (অর্থ সম্পাদক পদে) অভিনেতা সায়েম সামাদ। তিনি বলেন, ‘শিল্পীরা আমাদের পরিবারের অংশ। তাদের ভালো-মন্দ সবাই মিলে দেখাশোনা করার জন্যই আমাদের সংঘ। তবে সেই কাজ সহজ হয়ে যায় একটি সংগঠনের আওতায় এলে। শিল্পীদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার জন্য তাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’
জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকি এবার নির্বাচন করছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে। তিনি বলেন, ‘পুরনো যে কাজগুলো কিছুটা এগিয়েছে সেগুলো তো শেষ করতেই হবে। সেই সঙ্গে নতুন কিছু কাজও করার ইচ্ছা আমাদের। এখন বাংলা কনটেন্ট সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক নানা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। তাই এখনই সময় আমাদের শিল্পীদের অভিনয়দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। সেজন্য আমরা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও সেমিনারের ব্যবস্থা করব। এটি খুবই সময়োপযোগী চাহিদা বলে মনে করি। এ ছাড়া এত দিন শিল্পীর পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বলে কিছু ছিল না। কারণ শ্যুটিংয়ের টাইম টেবিলের কোনো ঠিকঠিকানা ছিল না। কিন্তু এখন আমরা আস্তে আস্তে কাজটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে চাই। এরই মধ্যে একটি কাজ হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো গভীর রাত পর্যন্ত শ্যুটিং হয় না। রাত ১১টার মধ্যেই শ্যুটিং হাউজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেহেতু শ্যুটিং শেষের সময়টা নির্ধারণ করা গেছে, আস্তে আস্তে শ্যুটিং শুরুর বিষয়টিও নিয়মে পরিণত হবে।’
শেয়ার করুন
মাসিদ রণ | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

আগামী ২৮ জানুয়ারি শোবিজের মানুষের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ এ দিনেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ও ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন টেলিভিশন অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন। দুই নির্বাচনকে ঘিরে শোবিজ এখন বেশ সরগরম। কিন্তু এর মধ্যে বাড়ছে করোনা শনাক্তের হার। বাড়ছে ওমিক্রন শনাক্তও। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে জরিমানার বিধানসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। গতকাল থেকে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কি হবে না তা নিয়ে আছে শঙ্কা। চলছে আলোচনাও। কারণ ১১ দফা বিধিনিষেধের মধ্যে আছে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। যদিও নির্বাচন বন্ধ করার বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি।
তবে গতকাল নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সেটি পেয়েছেন অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতারা। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গতকাল যে প্রজ্ঞাপন এসেছে তা নিয়ে আমরা এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে পারছি না। এটা পর্যবেক্ষণ করে যেকোনো সিদ্ধান্ত আসবে। যদি নির্বাচনে কোনো বাধা নাও থাকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে তা সম্পন্ন করা সম্ভব সে বিষয়গুলো নিয়েও ভাবনার বিষয় রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তাতে বলা যায়, আগামী ২৮ জানুয়ারিতে নির্বাচনটি হবে।’
করোনার এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কি না জানতে চাইলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘এখনো বলতে পারছি না। কারণ সরকার থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। তাই ধরে নিচ্ছি নির্বাচন হবে। তবে আমি সবাইকে বলেছি সাবধানে থাকতে। যাতে আমাদের মাধ্যমে করোনা না ছড়ায়। আর চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ও শিল্পীদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি সভাপতি পদে নির্বাচন করব। জীবনের এ পর্যায়ে এসে শিল্পীদের জন্য কিছু করতে চাই। চলচ্চিত্রের যে হারানো গৌরব ছিল, তা ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’ ১৯৮৯-৯০ সালের নির্বাচনে সেক্রেটারি ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। আরেক সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগর বলেন, ‘করোনা বাড়ছে, এটা উৎকণ্ঠার বিষয়। সামনে আমাদের নির্বাচন। এটা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী বিধিনিষেধের কারণে করোনা কমে আসবে। আর যথাসময়ে নির্বাচনও হবে।’ নির্বাচন না হলে কী হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। হলে আমরা জানাব।’
আহসান হাবিব নাসিম গতবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন। এবারই প্রথম সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। এবারও নির্বাচিত হলে কোন দিকগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া শিল্পী সংঘের নিজস্ব ফান্ড গঠিত হয়েছে। এবার সেই ফান্ড বড় করার পরিকল্পনা আছে। এবার একটি নতুন বিষয়ে নজর দেব। নাট্যাঙ্গনে সিনিয়র ও জুনিয়র শিল্পীদের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলে আমরা কোনো সুফল পাচ্ছি না। তাই এবার সব প্রজন্মের শিল্পীর মধ্যে যোগাযোগ ঘটাব। বেশ কিছু মতবিনিময় সভা করব। এর ফলে প্রত্যেকের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক যেমন উন্নত হবে, তেমনি সিনিয়ররা তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন, যা খুবই মূল্যবান। এ ছাড়া বিগত দিনেও আমরা চেষ্টা করেছি শ্যুটিংয়ে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে। সঠিক সময়ে কাজ শুরু হওয়া ও শেষ হওয়া, শিল্পীদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দিকে দৃষ্টি দেওয়া হবে।’
এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন (অর্থ সম্পাদক পদে) অভিনেতা সায়েম সামাদ। তিনি বলেন, ‘শিল্পীরা আমাদের পরিবারের অংশ। তাদের ভালো-মন্দ সবাই মিলে দেখাশোনা করার জন্যই আমাদের সংঘ। তবে সেই কাজ সহজ হয়ে যায় একটি সংগঠনের আওতায় এলে। শিল্পীদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার জন্য তাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’
জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকি এবার নির্বাচন করছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে। তিনি বলেন, ‘পুরনো যে কাজগুলো কিছুটা এগিয়েছে সেগুলো তো শেষ করতেই হবে। সেই সঙ্গে নতুন কিছু কাজও করার ইচ্ছা আমাদের। এখন বাংলা কনটেন্ট সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক নানা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। তাই এখনই সময় আমাদের শিল্পীদের অভিনয়দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। সেজন্য আমরা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও সেমিনারের ব্যবস্থা করব। এটি খুবই সময়োপযোগী চাহিদা বলে মনে করি। এ ছাড়া এত দিন শিল্পীর পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বলে কিছু ছিল না। কারণ শ্যুটিংয়ের টাইম টেবিলের কোনো ঠিকঠিকানা ছিল না। কিন্তু এখন আমরা আস্তে আস্তে কাজটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে চাই। এরই মধ্যে একটি কাজ হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো গভীর রাত পর্যন্ত শ্যুটিং হয় না। রাত ১১টার মধ্যেই শ্যুটিং হাউজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেহেতু শ্যুটিং শেষের সময়টা নির্ধারণ করা গেছে, আস্তে আস্তে শ্যুটিং শুরুর বিষয়টিও নিয়মে পরিণত হবে।’