আশা জাগিয়েও মন্দা উৎসবের গানে
সুদীপ্ত | ১৮ মে, ২০২২ ০০:০০
প্রতি ঈদেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন গান প্রকাশ করে। এবারের ঈদেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এবারের ঈদের সবচেয়ে বড় চমক ছিল চাঁদরাতে জেমসের নতুন গান। প্রায় এক যুগ পর নিজের মৌলিক গান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন জেমস। তবে যতটা উদ্দীপনা ছড়িয়েছিল গানটাকে ঘিরে, সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি গানটি। হাবিবের সুরে দীর্ঘদিন পর ফেরদৌস ওয়াহিদও নতুন গান নিয়ে এসেছেন ঈদে। আসিফ আকবর, মিনার, কর্ণিয়াসহ আরও অনেকেই নতুন গান উপহার দিয়েছেন। এর বাইরেও আরও বেশকিছু প্রযোজনা সংস্থা থেকে আলোচিত কিছু গান প্রকাশ পেয়েছে। তবে এবারের ঈদে কিছু গান আলোচিত হলেও বেশিরভাগই ছিল ম্রিয়মাণ। ঈদে বেশকিছু গান প্রকাশ করেছে প্রযোজনা সংস্থা সিএমভি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার এসকে শাহেদ আলী পাপ্পু বলেন, ‘যে গানগুলো প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোর রেসপন্স মোটামুটি ভালোই। বিজনেসও মোটামুটি। আর মোটাদাগে যদি বলি, এখন বিজনেস তেমন ভালো যাচ্ছে না। আগে কলার টিউনটা বেশি চলত সেটাও এখন ডাউন হয়ে গেছে। আবার ইউটিউবেও আগের থেকে কম রেভিনিউ আসছে। আসলে ভালো-খারাপ মিলিয়েই যাচ্ছে। সামনে ভালো যাবে হয়তো এই আশায় কাজ করে যাচ্ছি।’ এদিকে ঈদে বেশ সাড়া ফেলেছে ইমরান মাহমুদুলের গাওয়া ‘তোমরই আছি’ গান। এ বিষয়ে ইমরান বলেন, ‘ঈদের জন্য এটা আমার সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট ছিল। আমি মনে করি ঈদ উপহার হিসেবে ভক্তরা এমন কিছুই আশা করেছিল আমাদের কাছে। জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী সাবিলা নূরের প্রথম মিউজিক ভিডিও এটি। শেষ পর্যন্ত দর্শক ও শ্রোতারা গানটি সাদরে গ্রহণ করেছেন বলে ভালো লাগছে।’ এবারের ঈদে তিনটি গান প্রকাশ হয়েছে সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির।
এরমধ্যে রয়েছে দুটি মৌলিক গান ও একটি সিনেমার কাভার করা গান। ‘একদিন বলেছিলে’ শিরোনামের গানটি অনুপম মিউজিকের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে একই ব্যানার থেকে প্রকাশ পেয়েছে ‘এই হৃদয় সাদা কাগজে’ শিরোনামের চলচ্চিত্রের একটি গান। ‘কুখ্যাত খুনি’ সিনেমার এ গানটি গেয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ ও কনকচাঁপা। গানটির সবকিছুই ঠিক রেখেই কেবল কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে নতুন করে এ গানটি গেয়েছেন ন্যান্সি। এর বাইরে একটি দ্বৈত গান এসেছে ‘হৃদয়ে লিখেছি নাম’। এটি প্রকাশিত হয়েছে সিএমভি থেকে উন্মুক্ত হওয়া ‘লাস্ট লাভ’ নাটকে। দ্বৈত গানটিতে ন্যান্সির সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন মার্সেল। এ গায়িকা বলেন, এবারের ঈদে তিনটি গান প্রকাশ হয়েছে আমার। প্রতিটি গানই ভিন্ন স্বাদের। বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি।’ ঈদের পর পরই নতুন গান প্রকাশ হয়েছে নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় গায়িকা জাকিয়া সুলতানা কর্ণিয়ার। গানের শিরোনাম ‘শাকালাকা মন’। আরজিনের কথায় এর সুর ও সংগীত করেছেন নাভেদ পারভেজ। এখানে গান গাওয়ার পাশাপাশি ভিডিওতে পারফর্মও করেছেন তিনি। কর্ণিয়া বলেন, অল্প সময়ে ভালো সাড়া মিলছে গানটি থেকে। প্রচুর মানুষ ইউটিউবে গানটি উপভোগ করেছেন। আমি মনে করি গানটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও ভালো অবস্থানে যাবে।’ঈদ উপলক্ষে প্রায় ১০টি গান প্রকাশ করেছে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার কণ্ঠশিল্পী ধ্রুব কুমার গুহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কিছু গান সমাদৃত হচ্ছে এটা ঠিক। কিন্তু ব্যবসার দিক থেকে দেখলে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে এখন বিজনেস নেই। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি এখন সেইভাবে চলতে পারছে না। গত দুই বছর ধরেই বিজনেসের উদ্দেশ্য সার্ভ করছে না। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সবাই কাজ করে যাচ্ছে। বিজনেসের চিন্তাটাকে এক জায়গায় রেখে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সবাই। পরিবেশ তো সবসময় এক থাকে না। ব্যবসা নেই বললেই তো থেমে থাকা যাবে না। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই গান প্রকাশ করছি। শুধু শিল্পী না, গীতিকার, সুরকার, লেবেল কোম্পানিসহ যারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত এরা অনেকটা ভালোবাসার বন্ধন থেকেই এখানে আছে। ভালোবাসার জায়গা থেকেই এটাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আর বড়কথা, এখন সেই অর্থে কোনো গানই অডিয়েন্সের কাছে যাচ্ছে না। মাঝখানে কিছু কিছু গান হিট হচ্ছে কিন্তু সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য বড় কিছু বয়ে আনছে না। তবে সবাই মানসম্পন্ন, রুচিশীল গান অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা করছি।’
শেয়ার করুন
সুদীপ্ত | ১৮ মে, ২০২২ ০০:০০

প্রতি ঈদেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন গান প্রকাশ করে। এবারের ঈদেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এবারের ঈদের সবচেয়ে বড় চমক ছিল চাঁদরাতে জেমসের নতুন গান। প্রায় এক যুগ পর নিজের মৌলিক গান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন জেমস। তবে যতটা উদ্দীপনা ছড়িয়েছিল গানটাকে ঘিরে, সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি গানটি। হাবিবের সুরে দীর্ঘদিন পর ফেরদৌস ওয়াহিদও নতুন গান নিয়ে এসেছেন ঈদে। আসিফ আকবর, মিনার, কর্ণিয়াসহ আরও অনেকেই নতুন গান উপহার দিয়েছেন। এর বাইরেও আরও বেশকিছু প্রযোজনা সংস্থা থেকে আলোচিত কিছু গান প্রকাশ পেয়েছে। তবে এবারের ঈদে কিছু গান আলোচিত হলেও বেশিরভাগই ছিল ম্রিয়মাণ। ঈদে বেশকিছু গান প্রকাশ করেছে প্রযোজনা সংস্থা সিএমভি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার এসকে শাহেদ আলী পাপ্পু বলেন, ‘যে গানগুলো প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোর রেসপন্স মোটামুটি ভালোই। বিজনেসও মোটামুটি। আর মোটাদাগে যদি বলি, এখন বিজনেস তেমন ভালো যাচ্ছে না। আগে কলার টিউনটা বেশি চলত সেটাও এখন ডাউন হয়ে গেছে। আবার ইউটিউবেও আগের থেকে কম রেভিনিউ আসছে। আসলে ভালো-খারাপ মিলিয়েই যাচ্ছে। সামনে ভালো যাবে হয়তো এই আশায় কাজ করে যাচ্ছি।’ এদিকে ঈদে বেশ সাড়া ফেলেছে ইমরান মাহমুদুলের গাওয়া ‘তোমরই আছি’ গান। এ বিষয়ে ইমরান বলেন, ‘ঈদের জন্য এটা আমার সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট ছিল। আমি মনে করি ঈদ উপহার হিসেবে ভক্তরা এমন কিছুই আশা করেছিল আমাদের কাছে। জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী সাবিলা নূরের প্রথম মিউজিক ভিডিও এটি। শেষ পর্যন্ত দর্শক ও শ্রোতারা গানটি সাদরে গ্রহণ করেছেন বলে ভালো লাগছে।’ এবারের ঈদে তিনটি গান প্রকাশ হয়েছে সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির।
এরমধ্যে রয়েছে দুটি মৌলিক গান ও একটি সিনেমার কাভার করা গান। ‘একদিন বলেছিলে’ শিরোনামের গানটি অনুপম মিউজিকের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে একই ব্যানার থেকে প্রকাশ পেয়েছে ‘এই হৃদয় সাদা কাগজে’ শিরোনামের চলচ্চিত্রের একটি গান। ‘কুখ্যাত খুনি’ সিনেমার এ গানটি গেয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ ও কনকচাঁপা। গানটির সবকিছুই ঠিক রেখেই কেবল কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে নতুন করে এ গানটি গেয়েছেন ন্যান্সি। এর বাইরে একটি দ্বৈত গান এসেছে ‘হৃদয়ে লিখেছি নাম’। এটি প্রকাশিত হয়েছে সিএমভি থেকে উন্মুক্ত হওয়া ‘লাস্ট লাভ’ নাটকে। দ্বৈত গানটিতে ন্যান্সির সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন মার্সেল। এ গায়িকা বলেন, এবারের ঈদে তিনটি গান প্রকাশ হয়েছে আমার। প্রতিটি গানই ভিন্ন স্বাদের। বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি।’ ঈদের পর পরই নতুন গান প্রকাশ হয়েছে নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় গায়িকা জাকিয়া সুলতানা কর্ণিয়ার। গানের শিরোনাম ‘শাকালাকা মন’। আরজিনের কথায় এর সুর ও সংগীত করেছেন নাভেদ পারভেজ। এখানে গান গাওয়ার পাশাপাশি ভিডিওতে পারফর্মও করেছেন তিনি। কর্ণিয়া বলেন, অল্প সময়ে ভালো সাড়া মিলছে গানটি থেকে। প্রচুর মানুষ ইউটিউবে গানটি উপভোগ করেছেন। আমি মনে করি গানটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও ভালো অবস্থানে যাবে।’ঈদ উপলক্ষে প্রায় ১০টি গান প্রকাশ করেছে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার কণ্ঠশিল্পী ধ্রুব কুমার গুহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কিছু গান সমাদৃত হচ্ছে এটা ঠিক। কিন্তু ব্যবসার দিক থেকে দেখলে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে এখন বিজনেস নেই। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি এখন সেইভাবে চলতে পারছে না। গত দুই বছর ধরেই বিজনেসের উদ্দেশ্য সার্ভ করছে না। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সবাই কাজ করে যাচ্ছে। বিজনেসের চিন্তাটাকে এক জায়গায় রেখে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সবাই। পরিবেশ তো সবসময় এক থাকে না। ব্যবসা নেই বললেই তো থেমে থাকা যাবে না। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই গান প্রকাশ করছি। শুধু শিল্পী না, গীতিকার, সুরকার, লেবেল কোম্পানিসহ যারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত এরা অনেকটা ভালোবাসার বন্ধন থেকেই এখানে আছে। ভালোবাসার জায়গা থেকেই এটাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আর বড়কথা, এখন সেই অর্থে কোনো গানই অডিয়েন্সের কাছে যাচ্ছে না। মাঝখানে কিছু কিছু গান হিট হচ্ছে কিন্তু সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য বড় কিছু বয়ে আনছে না। তবে সবাই মানসম্পন্ন, রুচিশীল গান অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা করছি।’