
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার কৌরীচালা গ্রামে ‘লাল শাড়ি’ সিনেমার শ্যুটিং চলছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। কী কারণে হারিয়ে যাচ্ছে, তার পেছনের গল্প নিয়ে এই সিনেমা। এরই মধ্যে সিনেমার ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সরকারি অনুদানের এই সিনেমা পরিচালনা করছেন বন্ধন বিশ্বাস। নায়িকা অপু বিশ্বাস লাল শাড়ি সিনেমার প্রযোজকও। সিনেমায় অপুর নায়ক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা সায়মন সাদিক। আরও আছেন শহিদুজ্জামান সেলিম, সুমিত, দিলরুবা দোয়েল, রাশেদুজ্জামান আপু, শাহেদ আলীসহ অনেকে। সিনেমা প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস জানালেন, ‘কয়েক দিন ধরে লাল শাড়ি সিনেমার শ্যুটিং করছেন কৌরীচালা গ্রামে। এখন করছেন গানের শ্যুটিং। প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজকের দায়িত্বও পালন করছেন। মানিকগঞ্জের মানুষের ভালোবাসায়ও মুগ্ধ এই চিত্রনায়িকা।’ তিনি বললেন, ‘এখানকার মানুষজন আমাদের আপন করে নিয়েছে। রোজ এটা-সেটা রেঁধে নিয়ে আসে। একটু হলেও মুখে দিতে হয় তাদের আনা খাবার। আমার তো মনে হয়, মানিকগঞ্জ এসে ওজন বেড়ে গেছে।’ সিনেমাটি নিয়ে অপু আরও বলেন, ‘লাল শাড়ি তাঁতি সম্প্রদায়ের গল্প। বাংলাদেশের শাড়ি একসময় পৃথিবীজুড়ে সুনাম ছিল। আমরা জামদানির হারানো ঐতিহ্য তুলে ধরব এই সিনেমায়।’
অভিনেতা সায়মন সাদিক বলেন, ‘লাল শাড়িতে আমার চরিত্রের নাম রাজু। অপু বিশ্বাসের চরিত্রের নাম শ্রাবণী। আমরা একই গ্রামে বসবাস করি। আমি তাঁতশিল্পী।’
অপু বিশ্বাসের সঙ্গে করা এটাই প্রথম সায়মনের সিনেমা। এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘অপু বিশ্বাসের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ। তিনি খুবই সহযোগী মনোভাব দেখিয়েছেন। আমরা ৮০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। বাকি কাজও সপ্তাহখানেকের মধ্যে শেষ হবে। সামনের ১ বৈশাখে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।’ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৫ লাখ টাকা অনুদান পায় অপু-জয় কথাচিত্র প্রযোজিত সিনেমা ‘লাল শাড়ি’।
এখন আর লুকাতে চাই না। আমি মানুষটা একাকিত্বকে মৃত্যুর মতো ভয় পাই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
‘আমি ঘুমাবার চেষ্টা করছি; কিন্তু আমার চোখের পাশ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমি কাত হয়ে শুয়ে, যাতে তিশা টের না পায়। ও আমার মেয়েকে ছড়া শোনাচ্ছে।’ এ ছাড়াও সহজেই স্বীকারোক্তি দিলেন, ‘আমি মানুষটা একাকিত্বকে মৃত্যুর মতো ভয় পাই। সহকর্মীদের কৃতজ্ঞতায় আবেগেই ভেসেছেন দেশের শীর্ষ সারির নির্মাতা। নিজের ফেইসবুক হ্যান্ডেলে এমনটাই জানালেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মূলত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমা মুক্তির দাবি জোরালো হচ্ছে, আর দাবির যে মিছিল তার অগ্রভাগে রয়েছেন সহকর্মীরা। নিজের লুকানো অভিমানের কথা বলতে গিয়ে ফারুকী বলেন, ‘‘এখন আর লুকাতে চাই না। আমি মানুষটা একাকিত্বকে মৃত্যুর মতো ভয় পাই। গত তিন বছর আমার প্রচ- অভিমান হয়েছিল আমার সহযোদ্ধাদের ওপর, বাংলাদেশের ওপর। ‘শনিবার বিকেল’কে কেন্দ্র করে আমার ওপর যে অন্যায় করা হচ্ছিল তা কেবল আমাকে এবং আমার বউকেই একা একা বইতে হচ্ছে ভেবে কত রাত যে মনে মনে অভিমানে দেশ ছেড়ে চলে গেছি তার ইয়ত্তা নেই। কত রাত যে ঘুমাতে পারিনি, হিসাব নেই।” গত রাতে আবেগে চোখের জল ঝরেছে। টের পেতে দেননি স্ত্রীকেও। ফারুকী বলেন, “কালকে রাতেও আমি ঘুমাতে পারিনি। তবে কষ্টে না, কৃতজ্ঞতার আনন্দে। মানুষের হৃদয়ের জন্য কৃতজ্ঞতার চেয়ে ভালো কোনো ওষুধ আজও আবিষ্কার হয়নি। কাল রাত সিডনি সময় ৩টায় যখন ঘুমাতে যাই তখনো বাচ্চু ভাই, পিপলু ভাই, অমিতাভ, জুলহাজরা হয়তো আমাদের বন্ধুদের ফোন দিয়ে যাচ্ছে ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তির দাবিতে বিবৃতিতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য। আর আমি ঘুমাবার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমার চোখের পাশ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমি কাত হয়ে শুয়ে, যাতে তিশা টের না পায়। ও আমার মেয়েকে ছড়া শোনাচ্ছে।”
‘শনিবার বিকেল’ সিনেমা মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে নির্মাতা বললেন, “সব সময় তো এ রকম হয় না যে আমরা আমাদের জড়তাকে ঠেলে একটা কোনো উদ্যোগ নিতে পারি, এক সঙ্গে। সেই হিসেবে আজকের দিনটা আমাদের দেশের শিল্পীদের জন্য একটা মনে রাখার মতো দিন। ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তির দাবিতে ১৩০ জন শিল্পী একটা বিবৃতি দিয়েছেন, যেটা হয়তো কাল পত্রিকায় দেখবেন সবাই। আপনি যদি নামের লিস্ট দেখেন, তাহলে বুঝবেন কেন এটা আমাদের জন্য, আমাদের পরের জেনারেশনের জন্য একটা বিশেষ মানে বহন করে।”
ফারুকী বলেন, ‘এখানে এমন মানুষেরা আছেন যাদের আপনি নিয়মিত বিবৃতিতে খুঁজে পাবেন না। এখানে মূলধারা-বিকল্প ধারা-নতুন ধারা-পুরাতন ধারা নানা মত-পথের মানুষ আছেন। আমাদের মত ভিন্ন হতে পারে, পথ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু শিল্পীর স্বাধীনতার প্রশ্নে আমরা এক। আমাদের ভবিষ্যতের প্রশ্নে আমরা এক। এখন আমরা জানি, আমরা যখন এক হয়েছি, আর কোনো কিছুই আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বললেন, “বিশ্বাস করি, আপিল কমিটি আগামী পরশু যে সভায় বসবে সেখানে তাদের সুবিবেচনার পরিচয় দেবে। এবং দ্রুত ‘শনিবার বিকেল’ দর্শকদের কাছে যেতে পারবে। আমি আমার কলিগদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মশারি’ নিয়ে আবারও আলোচনায় নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জোর গুঞ্জন, এবারের অস্কারে প্রতিযোগিতা করতে যাচ্ছে ছবিটি। এ নিয়ে নুহাশের সঙ্গে কথা বলেছেন মাসিদ রণ
অস্কারের গুঞ্জন...
প্রতি বছরই একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের আগে লাইভ অ্যাকশন শর্ট লিস্টে কোন কোন ছবি থাকতে পারে তার একটা ধারণা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘ফিল্ম বিজনেস’। যা অনেকাংশে মিলেও যায়। বিশ্বজুড়ে চলচ্চিত্র মার্কেটের অন্যতম নির্ভরযোগ্য এই সংবাদমাধ্যমের তালিকায় এসেছে বাংলাদেশের নুহাশ হুমায়ূনের আলোচিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মশারি’র নাম। গত শুক্রবার সম্ভাব্য চলচ্চিত্রগুলোর নাম প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি। ‘ফিল্ম বিজনেস’ অনুমান করছে এ বছর অস্কারের সেরা লাইভ অ্যাকশন শর্ট লিস্টে থাকবে মশারি। ফিল্ম বিজনেস তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘প্রতি বছরই আমরা লাইভ অ্যাকশন শর্ট লিস্ট প্রকাশ করি। বেশ কয়েক বছর ধরেই আমাদের পূর্বানুমানের বেশির ভাগই মিলে যায়।’ প্লিজ আমাদের ছোট্ট এই বাংলাদেশের ছবিটিকে আপনাদের প্রার্থনায় রাখুন।
তালিকায় অন্য ছবি...
এবারের তালিকায় ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি নিয়ে বাজি ধরেছে ফিল্ম বিজনেস। তালিকার পাঁচ নম্বরে রয়েছে ‘মশারি’। বাংলাদেশের ছবিটি ছাড়াও তালিকায় আরও আছে ‘দ্য লোন উলফ’, ‘নর্থ স্টার’, ‘লুক অ্যাট মি’, ‘ট্রিগার্ড’, ‘দ্য রেড স্যুটকেস’, ‘দ্য ওয়েক’, ‘মাই আইজ’, ‘বুরোস’, ‘ইভালু’, ‘বাজিগাগা’, ‘রিমেমবারিং’, ‘আয়েশা’, ‘এনজয়’, ‘নাইট রাইড’, ‘ওয়ার অব কালারস’ ও ‘সেøা পালস’।
‘মশারি’র গল্প...
বিশ্ব রক্তপিপাসু মশা দিয়ে ভরে গেছে। শেষ মানুষ হিসেবে দুজন নারী বাংলাদেশে বেঁচে থাকে। তারা অজানা আতঙ্কে মশারির নিচে রাত পার করতে থাকে। এই নতুন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য দুই বোন অপু ও আয়রা লড়াই করে। এক রাতে, আয়রা মশারি ঠিক করতে বাইরে বের হয়, অপুকেও উঠতে হয় সে সময়। তখন তারা একসঙ্গে ভূতের মুখোমুখি হয়। এতে অভিনয় করেন সুনেরাহ বিনতে কামাল এবং আমার ভাগ্নি নাইরা।
বিশ্ব মঞ্চে সমাদৃত...
কান চলচ্চিত্র উৎসবের মার্শে দ্যু ফিল্মেও স্থান পায় ছবিটি। ‘আটলান্টা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ ন্যারেটিভ শর্ট বিভাগে গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার জিতেছে ‘মশারি’। এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য ভালো খবর। হরর শর্টফিল্মটি এত দূর পৌঁছেছে তাতে আমি অনেক খুশি। এই পুরস্কার জেতায় ছবিটি অস্কারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অস্কারে পুরস্কৃত প্রতিটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেরই যাত্রা শুরু হয় কোনো না কোনো চলচ্চিত্র উৎসব থেকে। এর কারণ হলো, একাডেমি অব মোশন পিকচার্স আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস বিশ্বজুড়ে নির্দিষ্ট কিছু উৎসবের নির্দিষ্ট কিছু পুরস্কার বিজয়ী ছবিকে অস্কারে মনোনয়নের তালিকায় রাখার জন্য বেছে নেয়। বিশ্বব্যাপী ৭ হাজার চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে মাত্র ৬৩টি উৎসবের ‘অস্কার কোয়ালিফাইং’ হিসেবে স্বীকৃতি রয়েছে। সেই উৎসবগুলোর পুরস্কার বিজয়ী সিনেমাগুলোকে ‘অস্কার কোয়ালিফাইং’ বিবেচনা করা হয়। আটলান্টা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল সেগুলোর মধ্যে একটি উৎসব। এই উৎসব থেকে যে তিনটি ক্যাটাগরির পুরস্কৃত ছবিগুলো অস্কারে মনোনয়নের সুযোগ মেলে, আমার পুরস্কারটি তার মধ্যে একটি। অস্কার পর্যন্ত পৌঁছতে পারলে আমাদের দেশের সিনেমার নতুন একটি দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
‘লাল সিং চাড্ডা’ বক্স অফিসে আশানুরূপ ব্যবসা করতে না পারলেও ওটিটিতে প্ল্যাটফর্মে কিছুটা সফল। অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে অভিনয় করবেন। পরিচালক আর এস প্রসন্ন’র এই ছবি স্প্যানিশ ‘চ্যাম্পিয়ন’র রিমেক বলেই শোনা যাচ্ছিল। স্প্যানিশ এই ছবি একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। অস্কারের জন্য মনোনীতও হয়েছিল। কথা ছিল শিগগির এই ছবির হিন্দি রিমেকের শ্যুটিংও শুরু হবে। কিন্তু আমির খান জানালেন এবার আর অভিনয় নয়।
‘চ্যাম্পিয়ন’ ছবির প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, আপাতত কোনো ছবিতেই অভিনয় করবেন না। বছর দেড়েকের মতো বিরতি চাই তার। এ সময়টা তিনি তার পরিবার, সন্তান ও মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। তাই ‘চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে আমিরের অভিনয় করা নিয়ে যে কথা শোনা যাচ্ছিল তা সরাসরি নাকচ করেন অভিনেতা। তবে অভিনয় না করলেও এই ছবির প্রযোজনা করবেন সেটাও স্পষ্ট করেন আমির। এই ছবি প্রসঙ্গে আমির খান বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন ছবিটা আমি প্রযোজনা করছি কারণ ছবিটার ওপর বিশ্বাস আছে, গল্পটাও খুব ভালো।’ আপাতত অভিনয় থেকে বিরতি নিয়ে নিজের পরিবারকে সময় দিতে চান অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘আমার ৩৫ বছরের কর্মজীবনে আমিই শুধু নিজের কাজকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। যারা আমার কাছের মানুষ তাদের প্রতি অবিচার করেছি। আমার মনে হয় এবার পরিবারকে সময় দেওয়া উচিত।’
আপাতত বছর দেড়েক বড়পর্দায় আর দেখা যাবে না আমিরকে। কোন ছবির মাধ্যমে কামব্যাক করেন বলিউডে আপাতত তার অপেক্ষায় থাকল আমির অনুরাগীরা।
তেলেগু ছবির সুপারস্টার মহেশ বাবু বাবা হারালেন। দক্ষিণী ছবির কিংবদন্তি তারকা গট্টামানেনি শিব রামা কৃষ্ণমূর্তি ছিলেন অভিনেতা মহেশ বাবুর বাবা। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮০। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৪টায় মারা যান কিংবদন্তি তারকা মহেশ বাবুর বাবা। কয়েক দিন ধরেই শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না তার। সোমবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কৃষ্ণমূর্তিকে। পুত্রবধূ নম্রতা শিরোদকরই শ্বশুরকে হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখার কথা বললেও এক দিন কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান। শিব রামা কৃষ্ণমূর্তি ছিলেন একাধারে প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা। ৩৫০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। একের পর এক হিট ছবি দিয়েছেন তার দর্শকদের। এমন একটা সময় গিয়েছে অভিনেতার বাবা কৃষ্ণ তিনটি শিফটেই কাজ করেছেন। তবে এমনও হয়েছে, বহু ছবিতে বিনা পারিশ্রমিকেও কাজ করেছেন এই কিংবদন্তি তারকা। পদ্মভূষণ সম্মান পান প্রয়াত এই কিংবদন্তি শিল্পী। শুধু অভিনয় নয়, রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন মহেশ বাবুর বাবা।
বিদ্যা সিনহা মিম গিয়েছেন টাঙ্গাইলে। লাক্সের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। নায়িকাকে এক নজর দেখতে ভিড়। হঠাৎ করেই টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে মঙ্গলবার মিমকে দেখে ভক্তরা অবাক। ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত মিম, ভক্তদেরও নিরাশ করেননি; প্রকাশ্যেই গেয়ে শোনালেন গান। হাজার হাজার দর্শকের মাঝে মিমকে নিয়ে যখন উন্মাদনা চলছে তখন নায়িকা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে পরাণ সিনেমার একটি গান গাইতে শুরু করেন। মিমের কণ্ঠের সঙ্গে তখন যুক্ত হয়েছে শত-সহস্র কণ্ঠ। মিম ফের গাইতে শুরু করেন, ‘কী জাদু করেছ বলো না, ঘরে আর থাকা তো গেল না...’ এই সুরের সঙ্গে কিছুতেই দর্শকদের দমিয়ে রাখা যায়নি, সুরের ঢেউ তখন ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ভিক্টোরিয়া রোড হয়ে শহরময়... অনুষ্ঠানস্থল থেকে মিম বললেন, ‘আমি টাঙ্গাইলে লাক্সের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে এসেছি। এখানে এসে আমি রীতিমতো মুগ্ধ। টাঙ্গাইলের মানুষ আমাকে এতটা ভালোবাসে না এলে বুঝতে পারতাম না। অনুষ্ঠানে এসে নিজের চলচ্চিত্র দামালের প্রচারও করেছেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।