
অঞ্জনা রহমান, চিত্রনায়িকা
ছোটবেলায় তো আর তারকা ছিলাম না। তখন থেকেই আসলে নাচ, গান আর অভিনয় করতে আমার ভালো লাগত। এরপর তো নাচের স্কুলে ভর্তি হই। জাতীয় পর্যায়ে এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সেরা নৃত্যশিল্পীর পুরস্কার আমি পেয়েছি একাধিকবার। এ কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু এ কথা জানেন না যে, আমি একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্ল্যাসিক্যাল সিঙ্গারও বটে। এরপর এলাম অভিনয়ে। দেশ-বিদেশেও শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করার পরও নাচ, গান, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা আজও এক বিন্দু কমেনি। এখনো ভালো কোনো গান শুনলে মনের অজান্তেই গুনগুন করি। সাবিনা ইয়াসমীন আর রুনা লায়লা আমাদের দেশের সম্পদ। তাদের দুজনের গান সবচেয়ে পছন্দের। দারুণ তালের কোনো গান বাজলে নেচে উঠি। এখনো নিয়ম করে নাচের প্র্যাকটিস করি। এসবই আমাকে আসলে বিনোদন দেয়। আর সিনেমা দেখাও আমার নিয়মিত অভ্যাস। সেন্সর বোর্ডের সদস্য থাকাকালীন তো কাজের খাতিরেই প্রচুর দেশি ছবি দেখতে হয়েছে। আপাতত আমি সেন্সর বোর্ডে নেই, আবারও হয়তো সামনে থাকব। কিন্তু সিনেমা দেখা বন্ধ হয়নি। এখন আমাদের দেশে দারুণ সব সিনেমা হচ্ছে। নতুনদের কাজ আমার খুব ভালো লাগে। আমি চাই তাদের সঙ্গেও কাজ করতে। সম্প্রতি দেখা ছবিগুলোর মধ্যে শাকিব খান-পূজা চেরির ‘গলুই’, সিয়াম-পূজার ‘শান’, চঞ্চল চৌধুরীর ‘হাওয়া’, রাজ-বিদ্যা সিনহা মিমের ‘পরাণ’ ছবিগুলো আমার খুব ভালো লেগেছে।
কথা বলেছেন রণ
রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ সেøাগান সামনে রেখে আজ থেকে ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একবিংশতম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২৩। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বরাবরের মতো এবারের উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম সেকশনে বাংলাদেশসহ ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। উৎসবের ২৫২টির মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য (৫০ মিনিটের বেশি) চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১২৯টি, স্বাধীন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১২৩টি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আছে ৮১টি যার মধ্যে ৬৯টি স্বাধীন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই দেখানো হবে ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, ‘জেকে ১৯৭১’।
১৫-১৬ জানুয়ারি ২০২৩ উৎসবের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকাবিষয়ক সেমিনার ‘নবম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস কনফারেন্স’ ঢাকা ক্লাবের স্যামসন লাউঞ্জের তৃতীয়তলায় হবে। উৎসবের মূল আকর্ষণগুলোর একটি এই উইমেন্স কনফারেন্স। ১৫-১৮ জানুয়ারি আঁলিয়স ফ্রঁসেজ গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্মাতাদের মিথস্ক্রিয়ামূলক চার দিনব্যাপী সেমিনার ও কর্মশালা ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট : চিত্রনাট্য প্রতিযোগিতা’। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর চলচ্চিত্রেরও রয়েছে নিজস্ব শৈল্পিক বহিঃপ্রকাশ, কিন্তু তা প্রাচ্য থেকে একেবারেই ভিন্ন। এটা ধারণা করা হতো যে, ‘এই দুই অঞ্চলের শিল্প কখনো এক হবে না।’ কিন্তু বিগত কয়েক বছরে চলচ্চিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। ফলে চলচ্চিত্র হারিয়েছে নিজ সীমানা, পেয়েছে বৈশি^ক পরিচিতি। এই একাত্মতাকে কীভাবে আরও সমৃদ্ধ করা যায়, সেই ভাবনা উসকে দিতেই এ আয়োজন।
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য পাবে ৫ হাজার ডলার, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী চিত্রনাট্য পাবে ৩ হাজার ডলার এবং তৃতীয় স্থানজয়ী চিত্রনাট্য পাবে ২ হাজার ডলার। এবার বাংলাদেশ প্যানোরামাতে যুক্ত করা হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ছবি। এগুলোর ভেতর থেকে বাছাই করা হবে তিনটি শীর্ষ ছবিকে। এ তিনের ভেতর সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিটি আড়াই লাখ, প্রথম রানারআপ দেড় লাখ আর দ্বিতীয় রানারআপ পাবে এক লাখ টাকা। বাংলাদেশ প্যানোরামা একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পাবে চলচ্চিত্র সমালোচকদের আন্তর্জাতিক ফেডারেশন ফিপ্রেসির সেরা ছবির সনদ। এ ছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো উৎসবে থাকছে মাস্টার ক্লাস। ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্সে সারাদিন ধরে এ মাস্টার ক্লাস হবে। বাংলাদেশের তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষার্থীরা এ মাস্টার ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
প্রতিযোগিতা বিভাগ
এশিয়ান সিনেমা কম্পিটিশন : এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৪টি চলচ্চিত্র নিয়ে গঠিত (ন্যূনতম ৭০ মিনিটব্যাপী ফিকশন ফিল্ম) প্রতিযোগিতা বিভাগ সেরা চলচ্চিত্র নির্ধারণে থাকবে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং এক লাখ টাকা। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট।
রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ : বিশ্ব চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফরাসি অতর চলচ্চিত্র নির্মাতা ফ্রাসোয়াঁ ত্রুফোর চারটি চলচ্চিত্র দেখানো হবে এ বিভাগে।
বাংলাদেশ প্যানোরামা : উৎসবের এ বিভাগে বাংলাদেশের ৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশন এ বিভাগে বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের নির্মিত বাছাইকৃত সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের ২০টি স্বল্পদৈর্ঘ্যে চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার সুযোগ পাবে।
সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ডবিভাগ এ বিভাগে বিভিন্ন দেশের সমকালীন সেরা ৪৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এ বিভাগের জন্য দর্শক জরিপে একটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হবে। চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার থাকবে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট।
চিলড্রেনস বিভাগ এ বিভাগে ১৮টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। ‘বেস্ট জুভেনাইল অডিয়েন্স বাদল রহমান অ্যাওয়ার্ডে’র জন্য মনোনীত হবে। এ পুরস্কার হিসেবে থাকছে সনদ ও ক্রেস্ট।
স্পিরিচুয়াল ফিল্মস এ বিভাগে প্রায় ১৪টি ছবি প্রদর্শিত হবে। মূলত ধর্মীয় বিশ্বাস, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মানবতাবাদী চলচ্চিত্র এ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
উইমেন ফিল্ম মেকারস সেশন দেশ ও বিদেশের নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নিয়ে এ বিভাগটি সাজানো হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি ২৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ বিভাগের একটি শ্রেষ্ঠ কাহিনীচিত্র ও একটি শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করবেন। এ ছাড়া এ বিভাগ থেকে একজন শ্রেষ্ঠ নারী নির্মাতাকেও পুরস্কৃত করা হবে।
শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মস বিভাগ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নবীন ও স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তথ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে। এতে দেশি-বিদেশি ৮৪টি ছবি প্রদর্শিত হবে যেখানে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক পরিম-লে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করতেই এ বিভাগটি উৎসবে উন্মুক্ত করা হয়েছে।
উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর স্থানগুলো জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তন (প্রধান মিলনায়তন) ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, আঁলিয়স ফ্রঁসেজ মিলনায়তন।
৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রয়াত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খানের মৃত্যুর তিন বছর পর দর্শকের সামনে আসছে প্রামাণ্যচিত্র ‘থার্টি ফাইভ’। নির্মাতা আশিক মুস্তফার প্রামাণ্যচিত্রটির দৃশ্যধারণ শেষ হওয়ার পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যু হয়েছে মাহফুজুর রহমানের। ৩৫ মিলিমিটার যুগের সেই সময়ের এফডিসি কেমন ছিল, কীভাবে দৃশ্যধারণ করা হতো মাহফুজুর রহমানের বয়ানে তা তুলে আনা হয়েছে। উৎসবে ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রিমিয়ার হবে। এর আগে ইরানের একটি উৎসবে ‘থার্টি ফাইভ’-এর বিশ্ব প্রিমিয়ার হয়েছে। এতে একটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইরিন। অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরুর পর চিত্রগ্রহণে নাম লেখান মাহফুজুর রহমান; এরপর নিজেকে দেশসেরা চিত্রগ্রাহকে পরিণত করেছেন
‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে নৃত্যপরিচালক ক্যাটাগরিতে এবার কোনো পুরস্কার দেওয়া হয়নি। আর এদিকে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারেও নৃত্যশিল্পী/কোরিওগ্রাফার কোনো ক্যাটাগরি নেই। আপনাদের ইভেন্টের প্রধান আকর্ষণ কিন্তু নাচ-ই। নাচ/নৃত্যশিল্পীকে দয়া করে প্রমোট করুন। একটা চরম ভয়াবহ দিকে ধাবিত হচ্ছে আস্তে আস্তে!!! এটা নিয়েও বিস্তারিত একটা লাইভ করব। #হোক প্রতিবাদ’
তরুণ প্রজন্মের কনটেম্পরারি নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার মোফাস্বাল হোসেন আলিফ নিয়মিত নাচ নিয়ে কাজ করছেন শোবিজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সম্প্রতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২-এর বিজয়ীর তালিকায় দেখা যায় সেরা নৃত্যপরিচালক শাখায় কাউকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না। কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে, কাউকেই জুরিবোর্ড যোগ্য মনে করেনি। জাতীয়ভাবে স্বীকৃত দেশের বিভিন্ন পুরস্কারে নৃত্যশিল্প ও নৃত্যপরিচালকদের এমন অবহেলা সইতে না পেরে আলিফ গত বৃহস্পতিবার তার ফেইসবুক ওয়ালে আবেগ ও অনুভূতির কথা এভাবেই ব্যক্ত করেন। তার স্ট্যাটাসের নিচে নৃত্যশিল্পী, সাংবাদিকসহ অনেকেই একমত পোষণ করেন।
চলতি বছরই ভারতের কিংবদন্তি নির্মাতা মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী। তাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে প্রয়াত পরিচালকের জীবন ও তার সময়ের গল্প নিয়ে সৃজিত মুখার্জি তৈরি করছেন সিনেমা ‘পদাতিক’। সিনেমাটিতে মৃণাল সেনের চরিত্রে যে বাংলাদেশি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করছেন, সেটা এত দিনে সবারই জানা। দিন-দুই আগে সিনেমার নির্মাতা ও চঞ্চল চৌধুরীকে শুভকামনা জানিয়েছেন খোদ অমিতাভ বচ্চন। আগে প্রকাশিত হয়েছিল সিনেমাটির একটি পোস্টার, যেখানে মৃণালের চরিত্রে চঞ্চলকে দেখে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন দর্শকরা। এবার প্রকাশ পেল সিনেমার বেশ কয়েকটি চরিত্রের ফার্স্ট লুক। সিনেমাটির প্রযোজক ফিরদাসুল হাসান ফেইসবুকে ছবিগুলো প্রকাশ করেছেন, যেখানে নানা বয়সের মৃণাল সেনের চরিত্রে দেখা গেছে চঞ্চলকে, যা দেখে চমকে গেছেন অনেক দর্শক। অনেকেই বলেছেন, কোনটি মৃণাল সেন আর কোনটি চঞ্চল চৌধুরী, সেটা বুঝতেই পারছেন না তারা। সবচেয়ে আলোড়ন তুলেছে এ ছবি। যেখানে মৃণাল সেনের সেই চেনা ভূমিকায় দেখা গেছে চঞ্চল চৌধুরীকে। গায়ে সাদা পাঞ্জাবি, হাতে ধরা সিগারেট আর চোখে সেই পরিচিত মোটা ফ্রেমের কালো চশমা। ‘পদাতিক’-এ মৃণাল সেনের ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে উঠে আসবে তার নির্মাণের গল্পও। এই ছবিতে আরও বয়োজ্যেষ্ঠ রূপে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশি অভিনেতাকে। সাদা চুল, সামনের অংশে টাক পড়ে যাওয়া রূপটিও পছন্দ করেছেন ভক্তরা। সিনেমায় মৃণাল সেনের ছেলে কুণাল সেনের কম বয়সী চরিত্রে দেখা যাবে কোরাক সামন্তকে। কুণাল সেনের বর্তমান চরিত্রে অভিনয় করবেন সম্রাট চক্রবর্তী। মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনের ভূমিকায় মনামী ঘোষ। সিনেমার প্রযোজক বাস্তবের চরিত্র ও সিনেমার চরিত্রের পাশাপাশি ছবি দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন, যা নিয়ে সাধারণ দর্শক তো বটেই, অনেক পরিচালকও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এই যেমন পরিচালক অরিন্দম শীল লিখেছেন, ‘দুর্দান্ত লুক।’ মেকআপ শিল্পী সোমনাথ কু-ুর প্রশংসাও করেছেন তিনি।
‘পাঠান’ সিনেমার গান ‘বেশরম রং’ মুক্তির পর যেন ঝড় শুরু হয়েছিল নেট-দুনিয়ায়। কেউ বলেছিলেন গানটিতে দীপিকা পাড়ুকোনের পোশাক তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে; কেউ অভিযোগ তুলেছিলেন অশ্লীলতার। পরে ১০টি দৃশ্যে কাঁচি চালানোর মাধ্যমে সেন্সর পেয়েছে ছবিটি। তবে ‘পাঠান’ নিয়ে এত আলোচনার মধ্যে আড়ালে পড়ে গেছে ‘কুত্তে’ সিনেমা নিয়ে আলোচনা। সম্প্রতি সেন্সর পেয়েছে এ ছবিও। তবে সে জন্য বেশ কয়েকটি সংলাপ ও নগ্ন দৃশ্যে কাঁচি চালাতে হয়েছে। জানা গেছে, ‘পাঠান’-এর মতো ‘কুত্তে’ সিনেমার ১০টি দৃশ্য ছেঁটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। ছবিটিতে যুক্ত করতে বলা হয়েছে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ। ভারতীয় সেন্সর বোর্ড একটি সংলাপ বদলাতে বলেছে। এ ছাড়া ছবিতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে ‘মধ্যপ্রদেশ’ ও ‘ছত্তিশগড়’ শব্দ ছেঁটে ফেলতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ছবিটির একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের নগ্নতাকে ‘সংযত’ করতেও বলা হয়েছে। ঘনিষ্ঠ দৃশ্যটিতে অভিনয় করেছেন রাধিকা মদন ও শার্দূল ভরদ্বাজ। ‘পাঠান’ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে কিছুটা আড়ালেই পড়ে গেছে ছবিটি। গতকাল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। ট্রেলার মুক্তির পর অবশ্য গত মাসে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় সিনেমাটি। ‘কুত্তে’ আসমান ভরদ্বাজের প্রথম সিনেমা। তিনি নন্দিত পরিচালক বিশাল ভারদ্বাজ ও সংগীতশিল্পী রেখা ভরদ্বাজের সন্তান। অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার সিনেমা ‘কুত্তে’। বাবা বিশালের সঙ্গে ছবিটির গল্প লিখেছেন আসমান। এতে অভিনয় করেছেন টাবু, নাসিরউদ্দিন শাহ, কঙ্কণা সেন শর্মা, কুমুদ মিশ্র, অর্জুন কাপুর, রাধিকা মদন প্রমুখ।
‘রক অ্যান্ড রোলের রাজা’খ্যাত এলভিস প্রিসলির একমাত্র মেয়ে লিসা মেরি প্রিসলি মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালে মারা যান এই সংগীতশিল্পী। লিসার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তার মা প্রিসিলা এক বিবৃতিতে বলেন, অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি একটি মর্মান্তিক খবর সবাইকে জানাচ্ছেন। তার মেয়ে লিসা সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। প্রিসিলা তার বিবৃতিতে বলেন, লিসা ছিল তার জানা সবচেয়ে উৎসাহী, শক্তিশালী ও স্নেহময় নারী। বিনোদন ওয়েবসাইট টিএমজেডের তথ্য অনুযায়ী, লিসা লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরতলি ক্যালাবাসাসে তার বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। লিসা ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে তার বাবা এলভিস মারা যান। তখন লিসার বয়স মাত্র ৯ বছর। লিসা ২০০৩ সালে তার সংগীত ক্যারিয়ার শুরু করেন। তার প্রথম স্টুডিও অ্যালবাম ‘টু হুম ইট মে কনসার্ন’। ব্যক্তিজীবনে লিসা চারটি বিয়ে করেছিলেন। ১৯৮৮ সালে সংগীতশিল্পী ড্যানি কেওফকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পপসম্রাট খ্যাত মাইকেল জ্যাকসনকে ১৯৯৪ সালে বিয়ে করেন লিসা। ১৯৯৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। ২০০২ সালে লিসা অভিনেতা নিকোলাস কেজকে বিয়ে করেন। ২০০৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সংগীতশিল্পী মাইকেল লকউডকে ২০০৬ সালে বিয়ে করেন লিসা। ২০২১ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। লিসার চার সন্তানের মধ্যে একজন ২০২০ সালে আত্মহত্যা করেন।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
এক লোক হজরত সুফিয়ান সাওরি (রহ.) কে প্রশ্ন করল, নামাজের সময় কাতারের কোন পাশে দাঁড়ানো উত্তম? প্রথম কাতারের ডান পাশে না কি বাম পাশে? তখন সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, প্রথমে দেখো খাবারের জন্য রুটির যে টুকরোটা নিয়েছে তা হালাল না কি হারাম? তুমি কাতারের যেখানেই নামাজ আদায় করো তা তোমার কোনো ক্ষতি করবে না। তুমি নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করো, তুমি নামাজ কোথায় আদায় করবে? অথচ তুমি এমন একটি কাজে লিপ্ত যা তোমাকে নামাজ কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে!
একবার হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা কি জানো প্রকৃত দরিদ্র কে? তারা বললেন, দরিদ্র তো সে যার কোনো দিনার-দেরহাম নেই (অর্থকড়ি নেই)। তখন তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র সে, কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাতের সওয়াব নিয়ে আসবে; কিন্তু সে একে গালি দিয়েছে, ওকে প্রহার করেছে, অন্যায়ভাবে অন্যের মাল ভক্ষণ করেছে, তখন এই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, ওই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, অতঃপর যখন তার সওয়াব শেষ হয়ে যাবে তখন অন্য পাওনাদাররা তাদের অপরাধগুলো এই লোককে দিয়ে দেবে, এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর সুফিয়ান সাওরি (রহ.) লোকটিকে বলেন, তুমি প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করলে তাতে কী লাভ; যদি তুমি মানুষের হক নষ্ট করো, অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো? সুতরাং তুমি হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো।
নবী কারিম (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না এবং তিনি মুমিন বান্দাদের তাই আদেশ করেছেন যা তিনি নবী-রাসুলদের আদেশ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসুলরা, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎ কাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।’ সুরা মুমিনুন : ৫১
এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা পবিত্র খাবারকে নেক আমলের পূর্বে এনেছেন। অর্থাৎ নামাজ আদায়, দিনের বেলা রোজাপালন, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতের পূর্বে হালাল খাবারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুলদের উদ্দেশ করে বলেছেন, হে রাসুলরা! তোমরা হালাল খাবার গ্রহণ করো। এরপর তিনি বলেছেন এবং সৎ আমল করো। অর্থাৎ নেক আমলের পূর্বে হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো, যাতে হারাম খাবার গ্রহণের কারণে নেক আমলগুলো নষ্ট না হয়ে যায়। এ কারণেই আল্লাহতায়ালা বলেছেন, তোমরা পবিত্র বস্তু গ্রহণ করো এবং সৎ আমল করো।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ধূলোমলিন চুল ও চেহারাওয়ালা এক লোকের উপমা দিয়ে বলেছেন, সে আসমানের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! তিনি বলেন, অথচ তার খানাপিনা হারাম, তার পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম, সে যা ভক্ষণ করে তা হারাম, তাহলে তার দোয়া কবুল হবে কীভাবে?
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, হালাল খাবার মানুষের মেধা, ইলম ও আমলের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সুতরাং এ প্রশ্ন করা অবান্তর, আমাদের দোয়া কবুল করা হয় না। দোয়া কবুল না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ না করা। বস্তুত সমস্যা দোয়ার মধ্যে নয়, সমস্যা আমার-আপনার মধ্যে। আপনি খাবারকে পবিত্র রাখুন, দেখবেন আপনার দোয়াগুলো কবুল হচ্ছে।
একজন হারাম কজে লিপ্ত, অন্যায়ভাবে মানুষের হক ভক্ষণকারী, শ্রমিকের পারিশ্রমিক পরিশোধ করেন না, বাড়ির অসহায় কাজের মেয়েটির প্রাপ্য ভাতা প্রদান করেন না, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না আর সেই আপনিই আবার অভিযোগ করেন আমার দোয়া কবুল হয় না?
একটু ভাবুন, চিন্তা করুন। সর্বদা পবিত্র খাবার খাওয়ার, পবিত্র পোশাক পরিধানের চেষ্টা করুন। দয়াময় আল্লাহ আপনাকে বঞ্চিত করবেন না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।