
‘ঠিক ১৩ বছর আগে আজকের এই দিনে আমার জীবন একেবারেই পাল্টে গিয়েছিল। ২২ জানুয়ারি, ২০১০ থেকে ২২ জানুয়ারি, ২০২৩’ ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী গত পরশু তার ফেইসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে এ কথাগুলো লেখেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘোষণার মাধ্যমে তার মাথায় লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারের বিজয়ীর মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়। মূলত এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা জয়ের পরই মেহজাবীনের কাছে বাংলাদেশের শোবিজের দরজা খুলে যায়। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ছোটপর্দায় নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। মাঝে কয়েকবার সিনেমায় কাজের ঘোষণা বা গুঞ্জন এলেও সে পথে এখনো দেখা যায়নি তাকে। তবে বেশ কিছু বছরের স্ট্রাগলের পর মেহজাবীন আজ ছোটপর্দার অন্যতম দক্ষ অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন। যদিও তিনি বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে নিজের গ্ল্যামার আর মেধার কারণে শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে নাটকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তাকে অনেক বাধা পেরোতে হয়েছে। কারণ তিনি বিদেশে বড় হওয়ার কারণে বাংলা ভাষায় ভালো দখল ছিল না। সেটি তিনি চর্চা করে ঠিক করে নিয়েছেন। এমনকি বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের ভালোবাসার পাশাপাশি দেশের অনেক নামিদামি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
অনেক দিন গানে নিয়মিত ছিলেন না। স্বভাবতই দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর মুক্তি পাওয়া বিয়ন্সের অ্যালবাম ‘রেনেসাঁ’ ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়। সমালোচকদের প্রশংসা জোটে, প্রিয় শিল্পীর গান ভালোবাসায় ভরিয়ে দেন ভক্তরা। এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় গায়িকা বিয়ন্সে এবার গাইতে এসেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। সেই কনসার্টের জন্য বিয়ন্সে যে পারিশ্রমিক নিয়েছেন, তা চমকে দিতে যথেষ্ট। দুবাই অনেক দিন ধরেই সারা দুনিয়ার পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য। শহরটিতে তাই একের পর এক গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল হোটেল। আটলান্টিস দ্য রয়্যাল তেমনই একটি। নতুন এই বিলাসবহুল হোটেলেই গত শনিবার পারফর্ম করেন বিয়ন্সে। এদিন গায়িকা হাজির হয়েছিলেন হলুদ গাউনে। কনসার্টটিতে গায়িকা পারফর্ম করেন তার আলোচিত গান ‘ব্রাউন স্কিন গার্ল’। যে গানে মায়ের সঙ্গে পারফর্ম করেন বিয়ন্সের এগারো বছর বয়সী কন্যা আইভি কার্টারও। তবে ভিন্ন একটি কারণে এই কনসার্টে অংশ নিয়ে খবরের শিরোনামে বিয়ন্সে। দুবাইয়ের কনসার্টে গাওয়ার জন্য ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার নিয়েছেন গায়িকা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫৩ কোটি টাকার বেশি! আলোচিত কনসার্টটিতে অবশ্য সাধারণ ভক্তদের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না, হাজির ছিলেন কেবল আমন্ত্রিত অতিথিরাই। কনসার্টে গেয়েছিলেন ‘ম্যায় হু না’, ‘ওম শান্তি ওম’খ্যাত ভারতীয় পরিচালক ফারাহ খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কনসার্টে যাওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। গত বছর নতুন অ্যালবাম মুক্তির পর বিয়ন্সে এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার বহুল প্রতীক্ষিত ‘রেনেসাঁ’ ট্যুরের। পুরো ট্যুরের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে।
দুই বাংলার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া সম্প্রতি কলকাতার ‘বিবাহ অভিযান ২’ সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। প্রতিবারের মতো এবারের শীতেও তাই ঢাকায় অবসর কাটাচ্ছেন। এরইমধ্যে খবর এলো, ‘পটাকা’, ‘আমি চাই থাকতে’ ও ‘হাবিবি’র পর আসছে তার গাওয়া নতুন গান। এ বিষয়ে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গানটির কাজ খুব বেশি এগোয়নি। আমার পরিকল্পপনা আছে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে মিউজিক ভিডিওর কাজ করার। তার আগে মিউজিক, রেকর্ডিং ও মিক্সিংয়ের কাজ হবে। এবার তো মার্চে রোজা শুরু হচ্ছে। আমার ইচ্ছা আছে এপ্রিলে ঈদুল ফিতরে গানটি মুক্তি দিতে। চাঁদ রাতকেই টার্গেট করছি। কারণ আমার গানটি হবে উচ্ছ্বাস আনন্দের গান। ফলে উৎসবমুখর পরিবেশে গানটি এলে দর্শক বেশি আনন্দ পাবেন বলে আমার ধারণা।’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গানটির নাম আসলে ‘চিল’ নয়। আমি বোঝাতে চেয়েছি, আমার নতুন গানটি হবে ফান চিলিং সং। সেটিকেই অনেকে ‘চিল’ নাম দিয়ে ফেলেছে। তাতে অসুবিধা নেই। গানটি ভুল নামে প্রচারণা হলেও দিনশেষে মানুষজন গানটি নিয়ে জানতে পেরেছে, কথা বলছে, অপেক্ষা করছে। আসলে গান তৈরির পর মানানসই একটি সুন্দর নাম দেব।’’
তবে ফারিয়া তার বিয়ে ভাঙনের খবরের কারণে বেশ বিপাকে পড়েছেন। জানালেন, ‘আর বলবেন না। আমার বিয়েশাদির খবর যেভাবে লেখা হলো, তাতে কিন্তু সত্যিই আমার মানসিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমি এমন একটা মেয়ে যে তার প্রতিটি বিষয় নিয়ে বরাবরই অকপট। আমার কোনো লুকোচুরি নেই। আমি প্রকাশ্যে প্রেমের কথা বলেছি, বাগদানের কথাও বলেছি। তাহলে বিয়ের কথা নিয়ে কেন গোপনীয়তা বজায় রাখব? ফলে এই বিষয়ে আমাকে নিয়ে যদি ঠিকঠাকভাবে প্রশ্নটা করা হতো আমি অবশ্যই সব স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিতাম। কিন্তু কেউ আমার কাছে সেভাবে কিছু না জেনে মনগড়া কথাবার্তা লিখেছেন। এর কারণে আমি ইমেজ সংকটে পড়ি। কারণ আমি এতদিনের ফিল্ম ক্যারিয়ারে খুব পরিষ্কার একটা ইমেজ রক্ষা করে চলেছি। আমার কোনো সুগার ড্যাডি আছে সেটাও কেউ বলতে পারবে না। সেখানে আমার নামে এসব কথা লেখা হলে সেই ইমেজে একটু হলেও আঘাত হানে। তাছাড়া আমার পরিবার শোবিজের মানসিকতার চেয়ে খানিক আলাদা। বেশিরভাগই আর্মি ব্যাকগ্রাউন্ডের। সবমিলিয়ে বিয়ে ভাঙার ভুলভাল খবরগুলো আমাকে পীড়া দিয়েছে।’
অবশেষে বিয়ের বিষয়টি পরিষ্কার করেই বললেন ফারিয়া, ‘বিয়েটা হবে, তবে এটা সময়ের ব্যাপার। এটাকে এত বাজেভাবে লেখার কিছু নেই। সব নায়ক-নায়িকাকে এখনই বিয়ে করতে হবে, এটা কোথায় লেখা আছে? আমি এখন ২৭ বছরের। জীবনটা পড়ে আছে। এখনো একটা বাড়ি কিনতে পারিনি। যদিও আমি এদেশের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রীদের একজন। কিন্তু আমাদের শোবিজের যে অবস্থা তাতে শুধু সিনেমা, বিজ্ঞাপন কিংবা আনুষঙ্গিক কাজ করে সৎপথে এত আয় করা যায় না যা দিয়ে রাতারাতি একটি বাড়ি কিনে ফেলব।’
বিভিন্ন ইন্টারভিউয়ে আপনার সহকর্মীরা আপনাকে নিয়ে নানা মন্তব্য করে। সেগুলোকে কীভাবে দেখেন? জানতে চাইলে এই নায়িকা বলেন, ‘দেখেন, আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কারও কোনো শত্রুতা নেই। বরং কেউ কেউ আমার বন্ধু। কেউ ভালো কাজ করলে আমারও ভালো লাগে, সে কথা আমি প্রকাশ্যে উল্লেখও করি। নেতিবাচক দিকগুলো আমি বরাবরই এড়িয়ে যাই। তারপরও যদি কেউ আমাকে নিয়ে নেতিবাচক কথা ছড়ায়, আমাকে ভ্যাঙানো, হাসি-তামাশা করার চেষ্টা করে সেটা তাদের রুচির ব্যাপার। এতদিন অনেকে অনেক কথাই তো বলেছে আমাকে নিয়ে। কোনোদিন সেটি নিয়ে আমার কোনো রি-অ্যাকশন কি কেউ দেখেছে? তার মানে হলো এগুলো আমি পাত্তাই দিই না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এড়িয়েই যাই। আর যদি কান পর্যন্ত চলেও আসে তখনো আমি চুপ থাকি। এসব নিয়ে কথা বলার মতো এত সময় কোথায়? কথায় আছে, খালি কলসি বাজে বেশি। তারা সেটাই প্রমাণ করেন। শুধু আমি কেন? এই যে আমাকে এত জায়গায় ট্রল করা হয়, সেগুলো কি কোনো দর্শক মনে রাখে? পাত্তা দেয়? নাকি এন্টারটেইন হয়? যদি তাই হতো তবে আমাকে নিয়ে মানুষের যে ভালোবাসা লক্ষ করি সেটা তো থাকত না, তাই না? আমি শুধু মন দিয়ে ভালো কিছু কাজ করতে চাই। আমি জানি, ভালো কাজ করতে থাকলে দিনশেষে সব নেতিবাচকতা হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে। ফলে আমি ভালো করলে তাদের কাছ থেকেও ভালো ভালো মন্তব্য আশা করি।’
ফারিয়া এখন কোনো সিনেমার শ্যুটিং না করলেও মাঝেমধ্যেই দুই বাংলার স্টেজে তার শো থাকে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি স্টেজ শো করাটা দারুণ উপভোগ করি। দর্শকের ভালোবাসা কাছ থেকে পাওয়া যায়। এজন্য আমি তাদের ফাঁকি দিতে চাই না। আমি স্টেজে ২০ মিনিট পারফর্ম করি। এরজন্য অনেক ইনভেস্ট করতে হয়। ভারত থেকে পোশাক, মিউজিক মিক্স করে নিয়ে আসি। আমার স্টেজ পারফরমেন্স যারা দেখেছেন তারা জানেন, এটা অনেকটা জেনিফার লোপেজের আদলে। এজন্যই হয়তো আমাকে আয়োজকরা মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশে একমাত্র শাকিব খানই আমার চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেন।’
শোবিজ তারকারা দর্শকদের বিনোদনের জন্য কাজ করেন। কিন্তু তারা কীসে বিনোদিত হন? তা নিয়ে এই আয়োজন আফজাল হোসেন
অভিনেতা ও নির্মাতা
এখন দুনিয়া আমাদের হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা আজ সহজেই বিশ^শিল্প সাহিত্য নিয়ে অনায়াসেই জানতে পারি, যা আমাদের তরুণ বয়সে কল্পনাও করা যেত না। তাই আমি এই প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করি। আমি সারা বিশ্বের বিভিন্ন লেখকের বই পড়ি, বিভিন্ন পেইন্টারের চিত্রকর্ম দেখি, বিভিন্ন শিল্পীর অভিনয় দেখি, গান শুনি। কিন্তু প্রিয় অথবা মুগ্ধতার কথা বলতে গেলেই সবাই কেমন যেন গণ্ডির মধ্যে আটকে যান। সবাই শুধু বিখ্যাত লোকদের কথাই বলতে চান। কিন্তু তার বাইরেও যে কত দারুণ শিল্পকর্ম হচ্ছে, তা কেউ কাউকে জানাতে আগ্রহবোধ করে না। ফলে আমার বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে আমি নির্দিষ্ট কারও নাম বা নির্দিষ্ট কোনো শিল্পকর্মের কথা বলতে পারব না। নিজে যেহেতু অভিনয়ের পাশাপাশি ছবি আঁকি, তাই পিন্টারস্ট নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনেক ধরনের পেইন্টিং দেখি। আর তাতে মুগ্ধ হই, কত ধরনের চিত্রকর্ম হচ্ছে। নিয়মের বলয় ভেঙে আর্টিস্টরা কত ধরনের কাজ করছেন। আর বইয়ের কথা বলতে গেলে, এমন কিছু বই আছে যেগুলো কিছুদিন পরপরই পড়তে ইচ্ছে করে। তেমনি একটি বই প্রমথনাথ বিশী রচিত উপন্যাস ‘কেরী সাহেবের মুন্সী’। বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে। বইটির মূল উপজীব্য উইলিয়াম কেরি ও রামরাম বসুর পারস্পরিক সম্পর্ক এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগের কলকাতা শহরের ইতিহাস ও ইংরেজ-বাঙালি সম্পর্কের জটিল সাংস্কৃতিক সম্পর্ক।
‘ইমার্জেন্সি’ ছবিতে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করছেন কঙ্গনা রনৌত। এই ছবিতে কঙ্গনার ফার্স্ট লুক যখন প্রকাশ্যে আসে, তখন সবাই প্রশংসা করে। এমনকি কঙ্গনাকে দেখতে হুবহু ইন্দিরা গান্ধীর মতো মনে হচ্ছিল। এই ছবির কাহিনী কঙ্গনা নিজে লিখেছেন। এমনকি ‘ইমার্জেন্সি’ ছবির পরিচালনা আর প্রযোজনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। আর ছবিটি প্রযোজনা করতে গিয়ে টাকার জন্য নিজের সব সম্পত্তি বন্ধক রাখতে হয়েছে তাকে। সদ্য শেষ হয়েছে এই ছবির শ্যুটিং। শ্যুটিং সেট থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করে এই ছবির পেছনের গল্প ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন কঙ্গনা। তিনি জানান, এই ছবির জন্য কত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। এই ছবির শ্যুটিং সম্পন্ন করতে কঙ্গনা তার ব্যক্তিগত সব সম্পত্তি আমানত রেখে টাকা নিয়েছেন। অবশেষে সেই টাকা দিয়ে শ্যুটিং সম্পন্ন করেছেন। এই ছবির শ্যুটিং সম্পন্ন করতে গিয়ে শুধু যে টাকা বাধা হয়েছিল, তা নয়। শ্যুটিংয়ের শুরুর দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। এই সময় তার রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ অনেক কমে যায়। এ ছাড়া চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে সফলভাবেই শেষ করেছেন এই ছবির শ্যুটিং। এই বাধাবিপত্তি থেকে অনেক কিছু শিখেছেন কঙ্গনা। সেগুলোও তিনি শেয়ার করেছেন ভক্তদের জন্য। তিনি বলেন, ‘স্বপ্ন সার্থক করার জন্য কঠোর পরিশ্রম যথেষ্ট নয়। স্বপ্নের পথ পাড়ি দিতে অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এই সময় শান্ত আর শক্ত থাকতে না পারলে স্বপ্নকে ছোঁয়া যাবে না। আমি আমার স্বপ্নকে ছুঁয়েছি।’ আর এর জন্য কঙ্গনা তার টিমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং ভক্তদের থেকে ভালোবাসা চেয়েছেন।
ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জীবনকে নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিটি। তবে এই ছবিতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন থেকে টানা ২১ মাস ভারতে জারি করা জরুরি অবস্থার ঘটনাটি। কঙ্গনা আগেই বলে দিয়েছেন, ছবিটি কোনো বায়োপিক নয়, এটা একটা রাজনৈতিক ছবি। আর ছবিটি বর্তমান প্রজন্মকে সাহায্য করবে ভারতের বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে বুঝতে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।