
দেশে হিন্দি সিনেমা আমদানি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। নির্মাতা অনন্য মামুন তার অ্যাকশন কাট নামের প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘পাঠান’ সিনেমাটি আমদানি করার আগ্রহ দেখান। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেন। পরে সেই আবেদন পাঠানো হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর থেকেই আলোচনা নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। সেই চেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো। তবে জুড়ে দিচ্ছেন শর্ত।
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার জানিয়েছেন, হিন্দি সিনেমা আমদানিতে আপত্তি নেই তাদের। তবে সিনেমার লভ্যাংশের ১০ শতাংশ দিতে হবে শিল্পী সমিতিকে। শিল্পী সমিতির পর শর্তজুড়ে দিল পরিচালক সমিতি।
অন্যদিকে পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের হলে হিন্দি সিনেমার প্রদর্শনের বেলায় মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে হলগুলোতে হিন্দি সিনেমা চালানো যাবে না। বছরের দুই ঈদে মুক্তি দেওয়া যাবে না কোনো হিন্দি সিনেমা। বছরে ৬ থেকে ১০টি সিনেমা আনা যেতে পারে। হিন্দি সিনেমা আমদানির মেয়াদকাল হবে দুই বছর।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‘আমাদের হল বাঁচাতে ভারতীয় হিন্দি সিনেমা চলবে কি চলবে না, এ ব্যাপারে আমি মিটিংয়ে কমিটির সবার মতামত চেয়েছিলাম। কিছু শর্ত যোগ করে হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশে মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছি আমরা। মিটিংয়ের সিদ্ধান্তগুলোতথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হবে। তার আগে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ১৮ সংগঠনেরও মতামত নেওয়া হবে।’
হিন্দি সিনেমা আমদানির এখন মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় আছে। সবুজসংকেত পেলে ফেব্রুয়ারিতেই দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পেতে পারে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমাটি।
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে ওড়া’ শোবিজ তারকারা সারা বছর দর্শকদের বিনোদনের জন্য কাজ করেন। কিন্তু তারা কীসে বিনোদিত হন? তা জানাতেই এই আয়োজন
বন্যা মির্জা, অভিনয়শিল্পী
আমার কাছে বই পড়া এন্টারটেইনমেন্ট নয়। বই পড়া আমার জন্য জরুরি এবং এটা একটা অভ্যাস। একটু সময় পেলেই কেউ বই পড়েন না। বরং যাদের অভ্যাসটা থাকে তারাই শুধু বইটা পড়েন। বই মানুষকে বিনোদন দিতে পারে, তবে সব বই যে বিনোদন দেবে তেমনও নয়। ধরেন আমি যখন প্রবন্ধ পড়ি, তখন বিনোদন নাও পেতে পারি। আবার কেউ যদি দারুণ একটা গল্প বা উপন্যাস পড়েন তখন সে তার মধ্য থেকে বিনোদন খুঁজে পেতেই পারেন। আমি বরং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে খুব এন্টারটেইন হই। তাদের সঙ্গে বই নিয়ে আলোচনা করেও সেই আনন্দটা পেতে পারি। আর তারকা হলেও অন্য তারকাদের কাজ দেখে দর্শকের মতো আমরাও বিনোদিত হই। দেশে বা দেশের বাইরে যেখানেই থাকি না কেন, আমি নিয়মিত সিনেমা বা থিয়েটার দেখি। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের একটি স্টেজে দেখলাম খালিদ হোসেনের উপন্যাস থেকে করা নাটক ‘কাইট রানার’। সঙ্গী ছিলেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা সুমন মুখোপাধ্যায়। বাংলাদেশে এসেছি মঞ্চের শোয়ের জন্যই। তাই এখনো নতুন নাটক বা সিনেমা দেখা হয়নি। ‘সখী রঙ্গমালা’ নাটকটি দেখব, ‘প্রীতিলতা’, ‘সাঁতাও’ সিনেমা দুটি দেখব, আরও কিছু কাজ আছে দেখাতে চাওয়ার লিস্টে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো সিনেমা ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে ওড়া’।
কথা বলেছেন মাসিদ রণ, ছবি শেখ সাদী
অভিনয়ের পাশাপাশি মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবে দেখা যায় প্রার্থনা ফারদিন দীঘিকে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ওয়েডিং মিক্স’ শিরোনামে আরও একটি গানের মডেল হলেন এ অভিনেত্রী। শাওন ও ডিজে রাহাতের সংগীতায়োজনে গানটি গেয়েছেন সায়রা রেজা ও অপু মাহফুজ। সোহেল রাজের নির্দেশনায় এর ভিডিওতে দীঘির সঙ্গে রয়েছেন চিত্রনায়ক ইমন। গানটি গতকাল মুক্তি পেয়েছে চ্যানেল আইয়ের ইউটিউব চ্যানেলে।
গানটি নিয়ে দীঘি বলেন, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজটি করা হয়েছে। যখন কাজটির প্রস্তাব আসে তখন লিগামেন্টে সমস্যার কারণে সম্পূর্ণ বিশ্রামে আমি। কিন্তু গানটি শোনার পর এবং পুরো টিম সম্পর্কে জানার পর না করতে পারিনি। মনে হচ্ছিল ফাটিয়ে নাচতে হবে। আসলে গানটি এ রকমই। টানা ২২ ঘণ্টা কাজ করে শ্যুটিং শেষ করেছিলাম। পুরো টিমের সবাই দুর্দান্ত কাজ করেছে।’
গানটির শ্যুটিংয়ের আগে ওজন কমিয়েছেন দীঘি। এরপর দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সামনে। এখনো সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে তার। দীঘি বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল, জিদ ছিল যে পর্যন্ত ওজন কমাতে না পারব, ততক্ষণ থামব না। এ পর্যন্ত ৭ কেজি ওজন কমিয়েছি।’
এদিকে দীঘি সম্প্রতি শেষ করেছেন ‘শ্রাবণ জোছনা’ নামে একটি সিনেমার কাজ। এটা দীঘি অভিনীত প্রথম অনুদানের সিনেমা। ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস অবলম্বনে এটি পরিচালনা করেছেন আবদুস সামাদ খোকন। এ ছাড়া এ মাসেই সুমন ধরের পরিচালনায় ‘ফেরা’ নামে নতুন একটি ওয়েব ফিল্মের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন দীঘি। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন ইয়াশ রোহান। এতে শাহানাজ চরিত্রে অভিনয় করবেন দীঘি। চরিত্রটি নিয়ে দীঘি বলেন, ‘আমার জন্য এ চরিত্রটি একেবারেই আলাদা। খুবই মজার ও চমকে দেওয়ার মতো চরিত্র। পর্দায় দর্শকরা দেখলেই বুঝতে পারবেন। এ ধরনের চরিত্রে আমি আগে কখনো অভিনয় করিনি।’
বেশ কিছুদিন আগে দীঘির ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাস নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে আলোচনা হয়। সিনেমায় সিন্ডিকেট বিষয়ে কথা বলেছেন এই নায়িকা। রায়হান রাফী পরিচালিত সুড়ঙ্গ সিনেমায় তাকে চূড়ান্ত করে বাদ দেওয়ায় অভিযোগ তুলেছিলেন এই নায়িকা।
ভূতের ছবির ভক্তদের নড়েচড়ে বসার সময় চলে এসেছে। নতুন বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা হলগুলোতে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে পুতুলের মতো দেখতে এক ভয়ংকর ভূত। এবার সেই ভূত আসছে বাংলাদেশে! গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীনির্ভর ভৌতিক ছবি ‘মেগান’। মুক্তির পর থেকে ছবিটি দেখার জন্য দর্শকদের বিপুল সমাগম ঘটে সিনেমা হলগুলোতে।
১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেটের ছবি এরই মধ্যে আয় করেছে ১০৪ মিলিয়ন ডলার। প্রশংসা পেয়েছে সমালোচকদের কাছ থেকেও। যার ফলে বিশ্বজুড়ে ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে ক্রমাগত। শিগগিরই বাংলাদেশের দর্শকরা ছবিটি দেখার সুযোগ পাবেন। ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে ‘মেগান’।
ভৌতিক ছবি যারা নিয়মিত দেখেন তাদের ‘অ্যানাবেল’ ছবির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ছবিতে দেখা গেছে, আদরের মেয়েটির আকস্মিক মৃত্যুর ২০ বছর পর এক পুতুল-নির্মাতা ও তার স্ত্রী তাদের বাড়িতে এক সন্ন্যাসিনী ও কিছু অনাথ বাচ্চাকে জায়গা দেন। তারপর শুরু হয় ভয়ংকর সব কাণ্ড। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে অ্যানাবেল নামের পুতুলটি। কী সাংঘাতিক সব দৃশ্য!
‘মেগান’-এর গল্পে দেখা যাবে, একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানির দক্ষ রোবট বিশেষজ্ঞ জেমা (অ্যালিসন উইলিয়ামস) মেগান নামে একটি মানুষের আকারের রোবট পুতুল ডিজাইন করে; এই রোবট পুতুলটি এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তার মানে মেগান মানুষের মতো অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে। মেগানকে এমন করে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে সেটি শিশুদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী আর অভিভাবকদের সহায়ক হতে পারে। জেমার বোন ও তার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তাদের একমাত্র কন্যা কেডি (ভায়োলেট ম্যাকগ্রো) জেমার কাছে আশ্রয় পায়। জেমা কেডির অভিভাবক হলেও সব দায়িত্ব দেওয়া হয় মেগানকে। তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় সে যাতে কেডির কোনো ক্ষতি না হয় তা নিশ্চিত করে। আর এই দায়িত্বটি মেগান বাড়াবাড়িভাবে পালন করতে শুরু করে। সহিংস হয়ে ওঠে মেগান আর একসময় সে জেমার নির্দেশ মানতেও অস্বীকৃতি জানায়। একের পর এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটতে থাকে।
শ্রদ্ধেয় Emon Shaha ভাইয়ার সঙ্গে কাজ সব সময় আমার কাছে একটু Special. . আজকে বৃষ্টির চোখে জল সিনেমার চমৎকার একটা গান গাইলাম। আহা কী সুন্দর সুর, কী ভালো Music Arrangement, কী দারুণ লিখল SK Dip ভাই।
Im blessed ।
লিজা, সংগীতশিল্পী
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী লিজা তার ভেরিফাইড ফেইসবুকে গতকাল এমন একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। বৃষ্টির চোখে জল সিনেমার একটি গানের প্লেব্যাক করে দারুণ উচ্ছ্বসিত। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি সুরকার ইমন সাহা, গীতিকার সুদ্বীপ কুমার দ্বীপকে ধন্যবান জানিয়েছেন।
নুহাশ হুমায়ূন পরিচালিত অ্যান্থোলজি সিরিজ ‘ষ’-এর আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হয়েছে ইউরোপের সম্মানজনক চলচ্চিত্র উৎসব রটারড্যাম ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। প্রযোজনা সংস্থা চরকি জানিয়েছে, ‘ষ’ বাংলাদেশের ওটিটিতে প্রচার হওয়া প্রথম কনটেন্ট, যা এ উৎসবে অফিশিয়াল সিলেকশন পেয়েছে। গত বুধবার রটারড্যামের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিনেমা হলে ‘ষ’-এর প্রথম প্রদর্শনী হয়। এর মধ্য দিয়ে পেট কাটা ‘ষ’ সিরিজের ১১০ মিনিটের সিনেমা ভার্সনের আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হয়।
হেলেন ওয়েস্টরিকের সঞ্চালনায় হলভর্তি দর্শকের মধ্যে পরিচালক নুহাশ ও প্রযোজক রেদওয়ান রনিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় প্রাথমিক পর্বে। সিনেমা শেষে দর্শকের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন পরিচালক নুহাশ হুমায়ূন। ‘ষ’-এর স্ক্রিনিং শেষে সঞ্চালক হেলেন ওয়েস্টরিক স্মারক হিসেবে ‘টাইগার’ রটারড্যামের লোগো নুহাশের হাতে তুলে দেন। পরিচালক নুহাশ হূমায়ূন বলেন, ‘এটা আমার জন্য যেমন আনন্দের, দেশের জন্য আরও গৌরবের। লোকাল কনটেন্ট গ্লোবাল দর্শক যে গ্রহণ করছে, পুরো সিনেমার মধ্যে দর্শক খুবই ইন্টারেকটিভ ছিল। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিল। যেখানে যেমন রি-অ্যাক্ট করার, তেমন রি-অ্যাক্ট করছিল।’ চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেছেন, ‘নুহাশ হূমায়ূন ও ফেস্টিভ্যাল প্রোগ্রামারদের ধন্যবাদ যে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনার সুযোগ দিয়েছেন। নতুন, তরুণ ও নবীন ফিল্মমেকারদের জন্য এটা একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের আয়োজনে প্রদর্শিত হচ্ছে ৭১টি দেশের চারশর বেশি সিনেমা। ‘ষ’-এর পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘শবনম’-এর দুটি প্রদর্শনী হয়েছে এ ফেস্টিভ্যালে। ভৌতিক ঘরানার চারটি ভিন্ন গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল অ্যান্থোলজি সিরিজ পেট কাটা ‘ষ’।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।