
তারকাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে আগ্রহ থাকে সবার। কেউ পাঁড় ভক্ত হলে তো কথাই নেই। এ নিয়ে বিড়ম্বনাও কম সইতে হয় না তাদের। টিভি পর্দার জনপ্রিয় মুখ শবনম ফারিয়া এই জায়গাটায় যেন ক্লান্ত। বিড়ম্বনা নয়, তার বেলায় বিরক্ত শব্দটাই ব্যবহার করতে হয়। ফারিয়ার দাবি, তার ব্যক্তিজীবন নিয়ে চর্চা একটু বেশিই হয়। তাই ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এখন আর কোনো কথাই বলতে চান না তিনি!
দেশ রূপান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ফারিয়া বলেন, ‘বিয়ে-প্রেম নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে আমি আসলে কিছুই বলতে চাই না। আমাকে জড়িয়ে এই বিষয়ে এত নিউজ হয়েছে। যেটা ঘটছে সেটা নিয়েও হয়েছে, যা আদৌ ঘটেনি সেসব নিয়েও হয়েছে। ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে এখন যদি কিছু বলি সেটা নিয়েও দেখা যায় বিতর্ক তৈরি হবে। আমি তাই এক-দুই বছর ধরে ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি।’
ফারিয়া মনে করেন তার ব্যক্তিজীবন নিয়ে নয়, আলোচনা হওয়া উচিত তার কাজ নিয়ে। ‘আমাকে নিয়ে এত বেশি নিউজ আর আলোচনা হয়। আলোচনা করলে করবে আমার কাজ নিয়ে, আমার পেশা নিয়ে। আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এত বেশি চর্চা হয়ে যায়, এটা নিয়ে আর কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আমাকে জড়িয়ে এত ভুয়া নিউজ হয়েছে যে আমার আত্মীয়-স্বজনও কনফিউসড হয়ে গেছেন অনেক সময়।’- বলছিলেন ফারিয়া।
শখ থেকে অভিনয় শুরু, যা এখন শবনম ফারিয়ার পেশা। টিভি নাটকের সঙ্গে ওটিটিতেও কাজ করে যাচ্ছেন। যেখানে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ‘মুন্সিগিরি’ ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা পান তিনি। বড় পর্দাতে অভিষেক হয়েছে তার বছর কয়েক আগেই। হুমায়ূন আহমেদের গল্পে অনম বিশ্বাসের পরিচালনায় দেবী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার করা নীলু চরিত্রটি স্মরণীয় হয়ে আছে ভক্তদের কাছে। তবে ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমার পর আর বড় পর্দার কোনো কাজে যুক্ত হননি তিনি।
কারণ জানতে চাইলে ফারিয়া বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি ও রকম স্ক্রিপ্ট পাইনি, যেটা দেখে আমার মনে হবে অনেক ভালো কিছু। যেগুলো এসেছে সেগুলো খুবই এভারেজ কাজ ছিল। যেটা আমি করতে চাই না।’ সরকারি অনুদানের একটি ছবিতে কাজের ব্যাপারে কথা হচ্ছে ফারিয়ার। যদিও এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাইলেন না তিনি, ‘এটা জানানোর বিষয়ে এখনো আমাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
এই মুহূর্তে ‘মামা বাবা ভাই বোন’ সিরিয়ালে অভিনয় করছেন শবনম ফারিয়া। বেশ কিছু সিঙ্গেল নাটকের কাজ শেষ করেছেন। আরও কিছু কাজ হাতেও রয়েছে। দুটি ওয়েব ফিল্মের শ্যুটিংও শেষ করেছেন। যে কাজই করছেন, সেটা অনেক হিসাব করেই করছেন। ফারিয়ার কথায়, ‘শুধু মাত্র পেশা বলে অভিনয় থেকে টাকা ইনকাম করতে হবে এমন মানসিকতা নিয়ে আমি কাজ করতে চাই না। আমি প্রথম অভিনয় শুরু করি শখের বসে। এরপর ধীরে ধীরে পেশায় পরিণত হয়েছে। তবে আমি ওই প্যাশনটা রাখতে চাই, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আমার আগ্রহ থাকবে সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রটা আমি করব। এক্সাইটমেন্ট না থাকলে অভিনয়টা অন্য দশটা কাজের মতো হয়ে যায়। তখন আর ওই পারফরম্যান্স দেওয়া যায় না।’
নিজের অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই উদাহরণ টানেন ফারিয়া, ‘করোনার আগে আমি প্রচুর কাজ করতাম। তখন আসলে আমি টায়ার্ড হয়ে যেতাম। আমার অভিনয়ও ভালো হতো না, স্ক্রিপ্টের বাছ-বিচারের সুযোগও কমে আসছিল। এখন আর সেটা চাই না। আমি চাই দরকার হলে কমই কাজ করব, কিন্তু ভালো কাজ করব।’ যোগ করেন, ‘অভিনয়ের পাশাপাশি মাস্টার্স শুরু করছি। দুই-তিন দিন ক্লাস করতে হয়। এ জন্য আমি যদি চাপ নিয়ে কাজই করি, সেটা ভালো স্ক্রিপ্টেই করতে চাই।’
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজমে মাস্টার্স করছেন ফারিয়া। জানালেন ছোটবেলা থেকেই শখ ছিল সাংবাদিকতা করার। সেই শখ বা আগ্রহের জায়গা থেকেই জার্নালিজমকে সাবজেক্ট হিসেবে বেছে নেওয়া তার।
শোবিজ তারকারা সারা বছর দর্শকদের বিনোদনের জন্য কাজ করেন। কিন্তু তারা কীসে বিনোদিত হন? তা জানাতেই এই আয়োজন
সামিনা হোসেন প্রেমা
নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক
নাচ তো আমার মনের খোরাক। নাচের সঙ্গে কিছুর তুলনা হবে না। আমার সব আনন্দ নাচেই কেন্দ্রীভূত। যখন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নিজের পছন্দ মতো নাচ করতে পারি তার চেয়ে আনন্দ আর কিছুতেই খুঁজে পাই না। কারণ নাচকে কর্মাশিয়াল করার জন্য এখন পৃষ্ঠপোষক আর আয়োজকদের যে ধরনের ডিমান্ড থাকে তা ফুলফিল করে নাচ করাটা মানে হলো শিল্পের মানের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করা। যদিও আমার ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি কমই হয়। কারণ আমার এমন কিছু নিজস্ব কোরিওগ্রাফি আছে, যেগুলো আমি আমার পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও ভালোলাগা থেকে করেছি। আর সেই নাচগুলোই যখন মঞ্চে পরিবেশনা করি, দর্শক ভীষণ উপভোগ করে। ‘সোহাগ চাঁদ বদনী’, ‘তাকধুম তাকধুম’ বা ‘কোন গাঙে আইল পানি’ আমি যে কতবার স্টেজে করেছি তার কোনো হিসাব নেই। নাচের বাইরে পেইন্টিং এক্সিবিশন দেখতে ভালো লাগে। প্রচুর নাটক সিনেমা দেখা হয়। হইচইয়ের ওয়েব সিরিজ ‘তকদীর’ আমার খুব ভালো লেগেছে। তবে যাই দেখি না কেন, সেই গল্পের সঙ্গে নাচকে রিলেট করি। যেমন ঋতুপর্ণ ঘোষ তার ‘চিত্রাঙ্গদা’ সিনেমার গল্পের সঙ্গে নাচকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমারও ইচ্ছা তেমন কিছু কাজ করার। যদিও আমাদের দেশে সে ধরনের সুযোগ-সুবিধা একেবারেই নেই।
কথা বলেছেন মাসিদ রণ
সিদ্ধার্থ-কিয়ারার বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে গুঞ্জন চলছে অনেকদিন ধরেই। শোনা যাচ্ছে সোমবারই তারা গাঁটছড়া বাঁধছেন। বলিউডে আবার বিয়ের সুবাস ছড়াচ্ছে। গত বছর থেকে আলিয়া ভাট-রণবীর কাপুর, রিচা চড্ডা-আলি ফজল, ফারহান আখতার-শিবানী দন্ডেকর, বিক্রান্ত মেসি-শীতল ঠাকুরের মতো একঝাঁক তারকার পর এবার নতুন দম্পতি পাবে বলিউড।
এবার একসঙ্গে ঘর বাঁধবেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা আর কিয়ারা আদভানি। আনুষ্ঠানিকভাবে সাতপাকে না ঘুরলেও ‘জুটি’ হিসেবে একে অপরকে বেছে নিয়েছেন সিদ্ধার্থ-কিয়ারা। মুম্বাইয়ের সিন্ধি পরিবারের মেয়ে কিয়ারা সে সব নিয়ে ঢাকঢাক গুড়গুড়ও করেননি। করন জোহরের ‘কফি উইথ করন’ শো-এ তো খোলাখুলিই জানিয়েছেন, সিদ্ধার্থের সঙ্গে তার প্রথম দেখার গল্প।
করনের শো-এ বসে তিনি বলেছিলেন, ‘সিড (সিদ্ধার্থকে ওই নামেই ডাকেন কিয়ারা) আর আমি ‘শেরশাহ’-এর আগে থেকেই একে অপরকে চিনি। ২০১৮ সালের ‘লাস্ট স্টোরিজ’-এর শ্যুটিং শেষ হওয়ার পার্টি চলছিল আমাদের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখানে আমরা অনেকেই ভিড় করেছিলাম। ওই পার্টিতে সিডও এসেছিল। সেই প্রথম আলাপ।’ ২০২১ সালের হিট ছবি ‘শেরশাহ’-তে পর্দায় একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল সিদ্ধার্থ-কিয়ারাকে। ফলে তাদের প্রেম যে আনকোরা নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কিয়ারা। কিয়ারার সঙ্গে ব্যক্তিজীবনে জুটি বাঁধা নিয়ে জোরালো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। করনের শো-এ জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যৎ জীবনে সুখী হওয়ার লক্ষ্যে রয়েছেন। তাতে কি কিয়ারা সঙ্গ দেবেন? প্রশ্ন ছিল করনের। মৃদু হেসে সিদ্ধার্থ বলেছিলেন, ‘তার (কিয়ারা) সঙ্গ পেলে তো দারুণ হবে।’
সোমবার জয়সলমেরে সূর্যগড় প্যালেস হোটেলে সিদ্ধার্থ-কিয়ারার চার হাত এক হবে। যোধপুর বিমানবন্দর থেকে মোট ২৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সূর্যগড় প্যালেস। অতিথিদের জন্য ৮৩টি বিলাসবহুল রুম। রয়েছে ২টি বিশাল বাগান, সুইমিং পুল। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য ৭০টি বিলাসী গাড়ির বন্দোবস্ত করেছেন হবু দম্পতি। রয়েছে মার্সিডিজ জ্যাগুয়ার, বিএমডব্লিউ-র মতো গাড়ি। বিমানবন্দর থেকে এসব গাড়িতে অতিথিদের হোটেলে আনা হবে বলে সংবাদমাধ্যমের দাবি।
১৫০ জনের অতিথি তালিকায় করন ছাড়াও রয়েছেন সস্ত্রীক শাহিদ কাপুর, মণীশ মালহোত্রা, ঈশা অম্বানিরা। তাদের বিমানবন্দর থেকে হোটেল পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে একদল রক্ষীও থাকবেন। সংবাদমাধ্যমের দাবি, সিদ্ধার্থ-কিয়ারার বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সূর্যগড় প্যালেসের ৮০টি ঘরই নাকি বুক হয়ে গিয়েছে। একলাফে হোটেলের ঘরভাড়াও আকাশ ছুঁয়েছে। এক রাতের জন্য সবচেয়ে কমদামি ঘরভাড়া ২০ হাজার টাকা। আর ১,১০,৫০০ টাকায় সবচেয়ে দামি ঘরে থাকা যাবে। এবার শুধু সেই শুভদিনের অপেক্ষায় বলিউড।
এবার সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে নিয়ে সিরিজ নির্মাণ করতে যাচ্ছেন নির্মাতা শিহাব শাহীন। রসু খাঁ চরিত্রে থাকতে পারেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। এমনটিই জানিয়েছেন নির্মাতা। প্রধান চরিত্রে আফরান নিশো থাকার ব্যাপারে নির্মাতা বলেন, ‘এটাও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সবকিছু ঠিক থাকলে তার থাকার সম্ভাবনাই বেশি।’
২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার হন রসু খাঁ। পরে তার মোবাইল ফোনের সূত্রে স্থানীয় এক কিশোরী হত্যার ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বেরিয়ে আসে রোমহর্ষক ঘটনা। আদালতে দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিয়ের পর অন্য এক নারীর প্রেমে পড়েন রসু খাঁ। সেই নারীর ভাড়াটে গু-াদের হাতে বেদম পিটুনি খান তিনি। এরপরই ১০১টা হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পুলিশের হাতে আটকের আগে পর্যন্ত ১১ জন নারীকে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন রসু খাঁ।
সিন্ডিকেট, মায়াশালিক-এর সাফল্যের পর নির্মাতা শিহাব শাহীন বর্তমানে ব্যস্ত আছেন সিন্ডিকেট-এর স্পিন-অফ সিরিজ চরকি অরিজিনাল ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে। নাসির উদ্দিন খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, সুমন আনোয়ার, রফিকুল কাদের রুবেল, শিমলা, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আনিসুল হক বরুণদের মতো অভিনেতার দেখা মিলবে সিরিজটিতে। সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ অপহরণ মামলায় খালাস সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ।
চট্টগ্রামের ইয়াবা সম্রাট থেকে সিন্ডিকেটের মানি লন্ডারিংয়ের মূল হোতা হয়ে ওঠার জার্নি উঠে আসবে ৬ পর্বের এই সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে হয়েছে এই সিরিজটির দৃশ্য ধারণ। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে দেখা যাবে সিরিজটি।
ক্লোয়ি চেরির শুরুটা মডেলিং দিয়ে শুরু করলেও এইচবিওর জনপ্রিয় সিরিজ ‘ইউফোরিয়া’ দিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। তবে টিন ড্রামা সিরিজ ‘ইউফোরিয়া’য় ফেয়ি চরিত্র করে প্রশংসা পান। এবার খবরের শিরোনাম হলেন অন্য কারণে। ক্লোয়ির বিরুদ্ধে পোশাক চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
গেল ডিসেম্বরে ঘটে যাওয়া এক চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ক্লোয়িকে। অভিযোগ উঠেছে, ক্লোয়ি পেনসিলভানিয়ার স্থানীয় এক দোকান থেকে গত ২৭ ডিসেম্বর ২৮ ডলারের একটি জামা নিয়ে ট্রায়াল রুমে যান। পরে পোশাকটির মূল্য পরিশোধ করেননি, ফেরতও দেননি। মার্কিন গণমাধ্যম পেজ সিক্সের কাছে দোকানের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, ক্লোয়ি যে গত ডিসেম্বরে তাদের দোকানে ঢুকেছিলেন, সেই ভিডিও ফুটেজ তাদের কাছে আছে। গণমাধ্যম সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, ক্লোয়ি পুলিশের কাছে পোশাক নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। পরে তিনি পোশাকটি ফেরতও দিয়েছেন।
ক্লোয়ি চেরির প্রতিনিধি বলেন, ‘আমার মক্কেল ক্রেডিট কার্ডে ঠিকমতো মূল্য পরিশোধ না করেই জামাটি নিয়ে গেছেন, যা আদৌ সত্যি নয়। সম্ভবত স্থানীয় দোকানটি তারকার নাম ব্যবহার করে জনপ্রিয় হতে চাইছে।’ আগামী ১ মার্চ মামলাটির শুনানি হবে।
শুভ সকাল, কলকাতা বইমেলায় আমাকে যে সম্মান দিয়েছে আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ, সঙ্গে সাংবাদিক ভাই-বোনেরা আপনাদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ, এই প্রাপ্তি আমার নয় বাংলাদেশের। ধন্যবাদ, এই আয়োজনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সবাইকে আমার শুভেচ্ছা।
অপু বিশ্বাস, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
গতকাল নিজের অফিশিয়াল ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে দেশ রূপান্তরকে বলেছেন শুরু হওয়া কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ সময় কাটালাম বঙ্গভবনের আদলে তৈরি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে। এরপর ঘুরে দেখলাম পুরো বইমেলা। মেলার আয়োজক বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়সহ বিশিষ্টরা আমাকে সংবর্ধনা দেন, হাতে তুলে দেন উপহার। আমি অভিভূত হয়েছি। এর আগে কলকাতায় ইন্দো-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব সংবর্ধিত করে। আমি তাদেরই একজন। কলকাতা বইমেলায় আমার আসার সৌভাগ্য হয়েছে এবং বইমেলায় সংবর্ধনা পাওয়া অনেক গর্বের। আমার মনে হয় শিক্ষার শুরু যেখান থেকে, মানুষ যেখান থেকে নিজেকে তৈরি করতে পারেন তার নাম বই। তাই আমার বইমেলা একটা ভালো লাগার জায়গা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।