
কলকাতার অন্যতম মেধাবী অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। বাংলাদেশেও তার ভক্তের অভাব নেই। এই অভিনেতা এবার ঢাকায় আসছেন। তার মুক্তির প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘মায়ার জঞ্জাল’-এর প্রচারণার জন্যই তিনি গত রাতেই ঢাকা পৌঁছেছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও ভারতে একসঙ্গে মুক্তি পাবে ‘মায়ার জঞ্জাল’। এই ছবি দিয়ে প্রথমবারের মতো ঋত্বিক বাংলাদেশের বড় পর্দায় আসতে যাচ্ছেন। ছবিটিতে তিনি অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপি করিমের বিপরীতে। গতকাল সিনেমাটির প্রযোজক জসীম আহমেদ জানান, আজ রাতে ঢাকায় পা রাখবেন ঋত্বিক। আগামীকাল বিকেলে ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। জানাবেন ‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমায় অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কথা, অপি করিমের সঙ্গে অভিনয়ের কথা, সিনেমাটি নিয়ে তার প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা। দুই বাংলায় একই দিনে সিনেমার মুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বসিত ঋত্বিক চক্রবর্তী। তিনি কলকাতা থেকে বলেন, ‘আমরা দুই বাংলার দর্শকের কাছে সিনেমাটি পৌঁছে দিতে চাই। প্রথমবার সিনেমার প্রচারে ঢাকায় যাচ্ছি। অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে। আশা করছি খুব ভালো সময় কাটবে।’ ঢাকায় মাত্র এক দিন কাটিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ফিরে যাবেন ঋত্বিক। পরদিন সেখানে ‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমার আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী পরিচালিত এ সিনেমায় ঋত্বিক অভিনয় করেছেন ‘চাঁদু’ নামের একটি চরিত্রে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে চাঁদু নানা সমস্যায় জর্জরিত। একটা প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে চাকরি করত, চাকরিটা হারিয়েছে। তবু ছেলেকে সে ইংরেজি মিডিয়ামে পড়ানোর স্বপ্ন দেখে। ‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন ওয়াহিদা মল্লিক জলি, সোহেল ম-ল, ব্রাত্য বসু, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, কমলিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
গেল ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় ঘরানার নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের ওয়েব সিনেমা ‘উনিশ ২০’ যারা দেখছেন তারাই প্রেমে পড়ছেন অপুর; অন্তত অন্তর্জালে জুড়ে চলা লেখালেখি সেই কথাই বলছে। সেই আলোচনার চুম্বক অংশ এমন, আরিফিন শুভর রোমান্সে মুগ্ধ শুভ। ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমার সিক্স প্যাকে দর্শক মুগ্ধ করা আরিফিন শুভকে মাত্র ৩০ দিনের ব্যবধানে এমন একটি চরিত্রে হাজির হয়েছেন শুভ। বড়পর্দায় তিনি অ্যাকশন ইমেজই পড়ার চেষ্টা করেছেন বেশি। কিন্তু এখনো সেই ধারায় নিজেকে শতভাগ প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। পাশাপাশি তার অভিনয় নিয়ে দর্শকরা সব সময় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে না। তবে তিনি যখন নাটকে প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করতেন তখন তার অভিনয়ের প্রশংসা শোনা যেত অনেক বেশি। অনেক বছর পর নিজের চেনা ইমেজে ফিরেছেন শুভ। আর সেই প্রেমিক চরিত্রের শুভকেই দর্শকের মনে ধরেছে বেশি।
অন্তর্জালে এমন আলোচনা চোখে পড়েছে আরিফিন শুভরও। এমন প্রশংসা দেখে শুভর ভাষ্য, ‘দর্শকদের একটু ভালো লাগানোর জন্য আমার এত পরিশ্রম। অপু দর্শকের মন ভালো করছে সেটা শুনে আমার পরিশ্রম কিছুটা সার্থক মনে হচ্ছে। অপুর জন্য প্রচুর ফিডব্যাক পাচ্ছি, সেই সঙ্গে এখনো ভালোবাসা পাচ্ছে নাবিদের জন্যও।’
১৫১ মিনিটের ফিল গুড লাভ স্টোরি ‘উনিশ ২০’ সিনেমায় আরিফিন শুভর নায়িকা আফসান আরা বিন্দু। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে দেখা যাচ্ছে সিনেমাটি। একজন মানুষের ছন্নছাড়া জীবনের এলোমেলো গল্পগুলোর মাঝেই কখনো কখনো এমন কারোর আগমন ঘটে যার আগমনের কারণেই হয়তো একটা সময় ওই মানুষটার জীবনের গল্পগুলো রঙিন হয়ে ওঠে। তবে রঙিন হয়ে ওঠা সেই গল্পগুলো ক্ষণিকের জন্য ভালোবাসার মায়াজালে বন্দি হওয়ার সুযোগটা পেলেও সেই গল্পগুলোর মাঝেই যখন বিচ্ছেদের জন্ম হয় তখনই একটা সম্পর্ক অদৃশ্য এক দেয়ালের মধ্যে বন্দি হয়ে যায়। তবে বিচ্ছেদের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া গল্পটাই যখন দুজন মানুষের প্রিয় অনুভূতিগুলোর সঙ্গে মিশে যায় তখনই হয়তো একটা গল্প তার সুন্দর উপসংহারটাকে খুঁজে পায়। এবারের ভালোবাসা দিবসে মিজানুর রহমান আরিয়ানের হাত ধরে এমন একটা ভালোবাসার গল্প দর্শকদের সামনে এসেছে যে গল্পটার রেশ হয়তো দর্শকদের মধ্যে রয়ে যাবে অনেকদিন। সম্পর্ক, ভালোবাসা, বিরহ কিংবা বিচ্ছেদ এই সবকিছুই যেন ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর গল্পটার মধ্যে খুঁজে পেয়েছে তাদের পরিপূর্ণতা।
দর্শকদের অনুভূতিগুলোকে খুব সুন্দর করে পড়ে নিতে পারেন বলেই হয়তো তার বলা গল্পগুলো সবসময় দর্শকদের অনুভূতিগুলোর মধ্যে গেঁথে যায়। আর এবার ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর গল্পটা তাই দর্শকদের ওই অনুভূতিগুলোর মধ্যেই খুঁজে পাবে তাদের নতুন গন্তব্যের ঠিকানা। গল্পটা আমার মধ্যে দারুণ মুগ্ধতা ছড়িয়েছে তবে গল্পের পাশাপাশি এই ওয়েবফিল্মের অন্যান্য আরও অনেক বিষয়ও দারুণভাবে আমার নজর কেড়েছে। পাশাপাশি ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফির কাজ, দারুণ কালার গ্রেডিং কিংবা মনোমুগ্ধকর সব লোকেশনের সৌন্দর্য যেমন আমার চোখের কোণে আটকে গেছে তেমনি ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর তিনটা শ্রুতিমধুর গানও ইতিমধ্যেই আমার স্মৃতির মধ্যে গেঁথে গেছে। শুভর সঙ্গে আফসান আরা বিন্দুর রসায়নটাও জমেছিল বেশ। কৈশোরের সেই ছেলেটা যার সবকিছুতেই হেঁয়ালি। দুয়েকটা জায়গায় মিস এক্সপ্রেশন মনে হয়েছে কিন্তু এটা দিয়ে তাকে জাজ করার সুযোগ সে রাখেনি। শেষ পর্যন্ত মুগ্ধ করেছে, প্রশংসার দাবিদার।
‘অনেক দিন পর মায়ের মুখে এমন হাসি দেখে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। বাবা চলে যাওয়ার পর আমরা সবাই যখন শোকে ভেঙে পড়ি। উল্টো আমাদের মা-ই আমাদের বুকের কাছে টেনে নিয়ে সান্ত¡না দেয়। আমি সৃজিত মুখার্জীর পদাতিক-এর শ্যুটিং এর কারণে মায়ের কাছে বেশিদিন থাকতেও পারিনি, কলকাতা চলে আসতে হয়েছে। মাঝে মাঝে ভিডিও কলে কথা বলি সবার সঙ্গে, মায়ের সঙ্গে। শক্তি আর সান্ত¡না খুঁজে বেড়াই, কাজ করে চলি। এমনভাবে কাজের ভেতর ডুবে থাকি যে, মাঝে মধ্যে ঘোর কাটে না। মনে হয় দেশে ফিরলেই তো বাবাকে দেখতে পাব। চোখের কোনায় জল জমে, আবার বাস্তবে ফিরে আসি। মা খুব সুন্দর করে ভিডিও কলে কথা বলতে পারে, মানে ফ্রেমিংটা খুব সুন্দর হয়। আর বাবা ছিল ঠিক বিপরীত, ফ্রেমিং খুব বাজে। ভিডিও কলে বাবার পুরো চেহারাটা কখনো দেখা হয়নি। কেমন ভাবে যেন ফোনটা মুখের সামনে ধরত, হয় শুধু কপাল, না হয় শুধু থুঁতনি দেখা যেত। প্রায়ই তার আঙুল লেগে ভিডিও অফ হয়ে যেত। অনেক রাগ করতাম বাবার ওপর, কেন ভিডিও কল করা ভালোমতো শিখছে না। শেষের দিকে এসে বাবার শ্রবণশক্তিও কমে গিয়েছিল। মুখস্থ কিছু কথা বলেই ফোনটা মাকে ধরিয়ে দিত। বাবার এই টেকনিকটা আমরা ধরে ফেলেছিলাম। এ নিয়ে আমরা ভাইবোনেরা সবাই হাসাহাসিও করতাম। তবে সত্য এটাই, বাবার ঐ আংশিক থুঁতনি আর কপালও কোনোদিন দেখা হবে না ভিডিও কলে।’ আমি কলকাতা আর আমার মা ঢাকাতে আমার বাসায়। প্রতিদিনই ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন মাকে দেখতে আসে। মা সবার সাথে গল্পগুজবে, আনন্দে মেতে উঠে। মায়েদের মুখের হাসি মনে হয় সকল সন্তানের অন্তরেই শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। মায়ের কপাল থেকে লাল টকটকে সিঁদুর মুছে গেছে সত্য, তবে হাসিটুকু যেন আমৃত্যু থেকে যায়।
জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী কদিন আগে তার মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার স্ক্রিনশট শেয়ার দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে তার অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন। ভক্তরা তার এই পোস্ট দারুণ পছন্দ করেছে।
‘দম লাগাকে হাইসা’, ‘টয়লেট : এক প্রেম কথা’, ‘বালা’ থেকে ‘বাধাই দো’ সব ছবিতেই সামাজিক বার্তা আছে। এমন সিনেমাতেই কাজ করে সফলতা পেয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী ভূমি পেডনেকার। এই তারকা নিজেই এবার বললেন, সিনেমা দিয়ে সমাজে প্রভাব রাখতে চান তিনি। ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ভূমি ও রাজকুমার রাও অভিনীত ‘বাধাই দো’। ছবিটিতে কমেডির মোড়কে সমকামীদের অধিকার নিয়ে বার্তা উঠে এসেছে, নিজেও একটি সমকামী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ভূমি। ছবিটির এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় গণমাধ্যম বলিউড হাঙ্গামার সঙ্গে কথা বলেছেন ভূমি, ‘আমরা ভারতে সমকামীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে চেয়েছি।’
ভূমি আরও বলেন, ‘আমি নিজেকে কখনো শুধু অভিনয়শিল্পী মনে করি না। আমার কাছে যখন চলচ্চিত্রের মতো এত বড় একটা মাধ্যম আছে, সেটার মাধ্যমে অনেক বার্তাই দেওয়া যায়। আমি বরাবরই নিজের ছবির মাধ্যমে সমাজ-সংস্কৃতিতে প্রভাব রাখতে চাই। অভিনয় মানে আমার কাছে দর্শকের সঙ্গে কথা বলা। এটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
সমালোচকদের প্রশংসা জুটলেও প্রেক্ষাগৃহে তেমন একটা ব্যবসা করতে পারেনি ‘বাধাই দো’। তার পরও ছবিটি ভূমির হৃদয়ে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে, “সমকামীদের মধ্যে আমার অনেক বন্ধু-স্বজন আছেন। তাদের গল্প যখন শুনি, নিজেকে অসহায় মনে হয়। তাদের গল্প কীভাবে সবাইকে জানাব, এ নিয়ে ভাবতে থাকি। ‘বাধাই দো’তে কিছুটা হলেও সেটা করতে পেরেছি।” যে উদ্দেশ্য নিয়ে ছবিটি করেছিলেন, তাতে তিনি সফল বলেও মনে করেন ভূমি, ‘ছবিটি মুক্তির সময় কভিডের কারণে আসনসংখ্যা অর্ধেক রাখতে হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে দর্শকের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি। কয়েক মাস পর বিশ্বজুড়ে ওটিটিতে যখন মুক্তি পেল, তখন ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে।’ চলতি বছর ভূমি পেদনেকরকে ছয়টি সিনেমায় দেখা যাবে।
ভূমি বলেন, ‘সিনেমাগুলোয় শক্তিশালী নারী চরিত্রে আমাকে দেখা যাবে। অভিনেত্রী হিসেবে এর চেয়ে বেশি আর কী চাই!’ ২০২৩ সালে ভূমিকে দেখা যাবে ‘ভেদ’, ‘দ্য লেডিকিলার’, ‘আফওয়া’, ‘ভক্ষক’, ‘মেরে হাজব্যান্ড কি বিবি’ ইত্যাদি সিনেমায়।
ভক্তরা প্রায়ই নানা ধরনের কাজ করে তারকাদের চমকে দেন। তারকারাও প্রতিদান দেন ভক্তদের। তবে এবার বিজয় দেবারাকোন্ডা যা করলেন সেটা খুব কম তারকাকেই করতে দেখা যায়। এই দক্ষিণি তারকা ব্যতিক্রমী এক উপহার দিয়ে ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত ১০০ ভক্তকে নিজ খরচে ৪ দিনের জন্য মানালি ঘুরতে পাঠিয়েছেন। তবে এবারই প্রথম নয়, আগেও ভক্তদের এমন ব্যতিক্রম উপহার দিয়েছিলেন এই তারকা। বিজয় তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে দেখা যায় বিমানে থাকা অভিনেতার ভক্তরা উল্লাস করছেন। এই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘আজ সকালে তারা তাদের ফ্লাইট থেকে আমাকে একটি ভিডিও পাঠিয়েছে। তারা পাহাড়ে যাচ্ছে। সারা দেশ থেকে ১০০ জন। আমি দারুণ খুশি।’
প্রতি বছরই ভক্তদের এমন ব্যতিক্রম উপহার দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানান বিজয় দেবারাকোন্ডা। এর আগে ৫০ জন ভক্তকে নিয়ে জওয়াহেরলাল নেহরু স্থাপত্য ও চারুকলা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেবারও ভোটের মাধ্যমে ভক্তদের নির্বাচন করেছিলেন তিনি। সবাইকে দিয়েছিলেন বিশেষ উপহারও। এরপর একটি ভিডিও পোস্ট করে সব ভক্ত-অনুসারীদের হ্যাশট্যাগ ‘দেবরা সান্তা’ লিখে নিজেদের ইচ্ছা জানাতে বলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ভক্তদের ইচ্ছা তিনি পূরণ করবেন। শুধু তা-ই নয়, বড়দিনে তিনি ১০০ জনকে ১০ হাজার রুপি করে উপহার দেন। বিজয়কে সামনে তেলেগু রোমান্টিক চলচ্চিত্র ‘কুশি’তে দেখা যাবে। এই সিনেমার শ্যুটিং শুরুর আগেই বিজয় ১০০ জন ভক্তকে ঘুরতে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। এই সিনেমায় তার সঙ্গে অভিনয় করছেন সামান্থা রুথ প্রভু। সিনেমাটির প্রায় চার সপ্তাহের শ্যুটিং বাকি আছে। শিবা নির্ভানা পরিচালিত সিনেমাটি ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়ার কথা।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।