
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ৯ মার্চ বসছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১-এর আসর। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। প্রায় এক ঘণ্টা দৈর্ঘ্যরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিটিভির মহাপরিচালক ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ।
জানা গেছে, পুরস্কার দেওয়ার পর হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত শিল্পীরা।
আয়োজন শুরু হবে ওয়ার্দা রিহাবের পাঁচ মিনিটের একটি নৃত্যানুষ্ঠান দিয়ে। থাকছে ‘বঙ্গবন্ধু’কে নিয়ে তার পরিবেশনা। এ ছাড়া এ আসরে মঞ্চ মাতাবেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, পূজা চেরী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, তমা মির্জা, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাইমন সাদিক, ইমন, নিরব ও জায়েদ খান। ‘বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’সহ একাধিক গানের সঙ্গে নৃত্যে অংশ নেবেন তারকা এই শিল্পীরা। এ আয়োজনের কোরিওগ্রাফি করছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। গতকাল থেকে নিকেতনে শুরু হয়েছে শিল্পীদের রিহার্সাল। কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে চূড়ান্ত মহড়া। এবারের আসরে উপস্থাপনা করবেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। ২০২১ সা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে যা আবিষ্কার করেছি তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। পুরো বিশে্ব প্রাচীন এমন দুটি পোশাকই থাকতে পারে। আর এ দুটোই রয়েছে টেক্সালেলে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হবে। মুজিববর্ষের বিশেষ সিনেমার পুরস্কার পাচ্ছে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’। যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পেতে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুর।
‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ভালো ছবির জন্য তৃষ্ণার্ত দর্শকদের নীরবতায় তিনি খুবই আশ্চর্য হয়ে পোস্টটি করেছেন। গত শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতে মুক্তি পেয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে নির্মিত যৌথ প্রযোজনার সিনেমাটি। গত সোমবার সকালে জয়া আহসান লেখেন, ‘মায়ার জঞ্জাল ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের সিনেমা হলে চলছে। আমাদের দেশে যারা ভালো ছবির জন্য তৃষ্ণার্ত, এমন একটি অপূর্ব ছবি নিয়ে তাদের নীরবতায় আমি খুবই আশ্চর্য হয়েছি।’
বাংলাদেশের দর্শকদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটি তো আমাদেরও, নাকি? অপি করিম আর সোহেল ম-ল এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবিটির মূলে আছে বাংলা ভাষার জাদুকর লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।’
চলচ্চিত্রটি নিয়ে বাংলাদেশের কলাকুশলীদের প্রতিও ক্ষোভ ঝাড়েন জয়া। তিনি লেখেন, ‘ভালো ছবি নিয়ে আমাদের পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীরা সরবে কথা বলতে থাকলে তবেই না ভালো ছবির আবহাওয়াটা গড়ে উঠবে, দর্শকদের তৃষ্ণা বাড়বে।’
জয়া আরও বলেন, ‘আমাদের নাগরিক সমাজের একেবারে প্রান্তে জীবনযাপন করা কিছু মানুষের এমন মায়াভরা সিনেমা আমি দেখিনি। জীবনের কঠিন কশাঘাত তাদের ম্রিয়মাণ, তিক্ত আর বাঁকা করে তুলেছে; কিন্তু সব ছাপিয়েও মমতা কীভাবে শেষ পর্যন্ত মানুষকে মানুষের সঙ্গে বেঁধে রাখে সেই গল্পই দেখিয়েছেন পরিচালক ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। ভালো বাংলা ছবির চৌহদ্দি বড় করতে চাইলে আমাদের মনটাও তো প্রসারিত করতে হবে। আমরা সবাই যেন ভালো ছবির সঙ্গে থাকি।’
ভারতীয় নির্মাতা ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী নির্মিত সিনেমাটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৯ বছর পর বড়পর্দায় ফিরেছেন অভিনেত্রী অপি করিম। অপি করিম ছাড়াও বাংলাদেশের সোহেল ম-ল ও কলকাতার ঋত্বিক চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসুসহ দুই বাংলার আরও অনেক শিল্পী এতে অভিনয় করেছেন। ২০২০ সালে চীনের ‘সাংহাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এর এশিয়ান নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ডের অফিশিয়াল সিলেকশনে আলোচিত মায়ার জঞ্জালের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হয় মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। একই বছর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় জোগজা-নেটপ্যাক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ১৫তম আসরে এশিয়ান পারসপেকটিভ বিভাগে আমন্ত্রণ পায় ছবিটি। এ ছাড়া ইতালির রোমে এশিয়াটিকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ২১তম আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগ অ্যানকাউন্টার উইথ এশিয়ান সিনেমায় আমন্ত্রিত হয়ে বেস্ট ফিচার ফিল্ম জুরি অ্যাওয়ার্ড জেতে মায়ার জঞ্জাল।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় ব্যাচেলর মুক্তির ১৫ বছর পর মায়ার জঞ্জালের মাধ্যমে বড়পর্দার জন্য কাজ করেন অপি করিম। ছবিটিতে তার চরিত্রের নাম সোমা। মেয়েটি কলকাতার। সে বিবাহিত। স্বামী আর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। তবে স্বামী বেকার। এ কারণে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে বর্ষীয়ান অভিনেতা পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসায় চাকরি করেন সোমা। তার স্বামী চাঁদু চরিত্রে আছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। গণেশ বাবু চরিত্রে ব্রাত্য বসু, বিউটির ভূমিকায় চান্দ্রেয়ী ঘোষ এবং সত্য চরিত্রে আছেন সোহেল রানা। ছবিটির শ্যুটিং হয়েছে ঢাকা ও কলকাতায়।
স্বাধীনতার মাস মার্চেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চার সিনেমা। প্রথম সপ্তাহেই মুক্তি পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত দুই সিনেমা। আগামী ৩ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে খিজির হায়াত খানের ‘ওরা ৭ জন’ ও ফাখরুল আরেফীন খানের ‘জেকে ১৯৭১’।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভিন্ন ভিন্ন পেশা থেকে আসা সাত বীর মুক্তিযোদ্ধার গল্প তুলে ধরা হয়েছে ‘ওরা ৭ জন’ সিনেমায়। কেউ পুলিশ, কেউ চিকিৎসক, কেউ সামরিক বাহিনীর মেজর, কেউবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দেশের জন্য সবাই হাতে তুলে নিয়েছে অস্ত্র। যুদ্ধের সময় তারা যখন একটি মিশনে যায়, মিশনে কী হয়, তা নিয়েই গল্পটা। সাত বীর মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার, ইমতিয়াজ বর্ষণ, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব, সাইফ খান, খালিদ মাহবুব তূর্য, নাফিজ আহমেদ ও খিজির হায়াত খান। তাদের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম। পরিচালনা ও অভিনয়ের পাশাপাশি কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খিজির হায়াত খান নিজেই। সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটির প্রিমিয়ার হয়। একই দিনে মুক্তি পাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা ‘জেকে ১৯৭১’। বানিয়েছেন ফাখরুল আরেফীন খান। যুদ্ধ চলাকালীন শরণার্থীশিবিরে থাকা শিশুদের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখা ফরাসি যুবক জ্যঁ ক্যুয়েরকে নিয়ে সিনেমা। শরণার্থীদের জন্য চিকিৎসাসামগ্রীর জোগান দিতে আস্ত এক বিমান ছিনতাই করেন জ্যঁ ক্যুয়ের। সেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি বানিয়েছেন ফাখরুল আরেফীন খান। নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের শুভ্র সৌরভ দাশ। পাইলটের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বিশেষ অডিয়েন্স পুরস্কার জিতেছে জেকে ১৯৭১। আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসা কুড়িয়েছে সিনেমাটি। জেকে ১৯৭১ এরই মধ্যে মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সেরা ঐতিহাসিক সিনেমার পুরস্কার। ১০ মার্চ মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘রেডিও’ সিনেমাটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গণমানুষের কাছে তথ্য ও যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে রেডিও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল, তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সিনেমায়। অভিনয় করেছেন রিয়াজ আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, নাদের চৌধুরী প্রমুখ। সিনেমাটি বিনা কর্তনে সেন্সর পেয়েছে। নির্মাতা জানিয়েছেন ১০ মার্চ মুক্তি দিতে চান সিনেমাটি।
১৭ মার্চ মুক্তি পাবে পঙ্কজ পালিত পরিচালিত ‘একটি না বলা গল্প’। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সন্তানকে সামনে রেখে একজন মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিসূত্রে উঠে আসে ১৯৭১। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এ গল্প। সরকারি অনুদানের সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, রুনা খান প্রমুখ।
‘এই যে আমরা প্রবাসী শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলায় দিন রাত পরিশ্রম কইরা রেমিট্যান্স কামাই, আপনারা নাকি আমগোরে রেমিট্যান্স যোদ্ধাও কন কিন্তু এয়ারপোর্টে প্লেন থেইকা নামার পর সবাই আমগো সাথে দূর দূর করে। মনে হয় যেন আমরা মানুষ না... অন্য কিছু। পারুলকথা। চ্যানেল আই।’
টিভি নাটকের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন নায়িকা সাবিলা নূর গতকাল বিকেলে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই ছবিটি পোস্ট করে কথাগুলো লিখেছেন। জানা যায়, চ্যানেল আইয়ের জন্য নির্মিত ‘পারুলকথা’ নাটকে একজন প্রবাসী শ্রমিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এ নাটকে উঠে এসেছে একজন প্রবাসী শ্রমিকের জীবনের নানা সংগ্রামের গল্প। কাজটি নিয়ে আশাবাদাী সাবিলা। এই অভিনেত্রী আজকাল খুব বেছে কাজ করছেন। গ্ল্যামারাস নায়িকার চরিত্রের চেয়ে বৈচিত্র্যময় জীবনঘনিষ্ঠ চরিত্রের প্রতিই গত কয়েক বছর ধরে তার বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। তাকে নানা ধরনের চরিত্রে দেখে ভক্ত-দর্শকরাও খুশি।
দক্ষিণী সুপারস্টার থালাপতি বিজয়ের ‘লিও’ ছবিকে ঘিরে আগ্রহ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিজয়ের এ ছবি মুক্তির আগেই প্রায় ৪০০ কোটি রুপি ব্যবসা করেছে বলে জানা গেছে।
‘লিও’ এ বিশাল অর্থ আয়ের মাধ্যম স্যাটেলাইট, ডিজিটাল, মিউজিক্যাল, আর থিওরিক্যাল স্বত্ব বিক্রি করে। গুঞ্জন যে, ছবির নির্মাতারা এ ছবির ডিজিটাল রাইটস এরই মধ্যে নেটফ্লিক্সকে বেচে দিয়েছেন। আর তার পরিবর্তে নির্মাতারা ভালোই অর্থ পেয়েছেন। ডিজিটাল রাইটস থেকে তারা ১২০ কোটি রুপি আয় করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আছে তামিল, তেলেগু, কন্নড় আর হিন্দি ভাষার রাইটস। নির্মাতারা সান টেলিভিশনকে ‘লিও’ ছবির স্যাটেলাইট রাইটস বিক্রি করে ৭০ কোটি রুপি মতো আয় করেছে। আর হিন্দি স্যাটেলাইট রাইটসের জন্য সেট ম্যাক্স আর গোল্ডমাইনস চ্যানেলের মধ্যে জোর প্রতিযোগিতা চলছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ের সুরাহা হবে।
হিন্দি রাইটস থেকে নির্মাতারা প্রায় ৩০ কোটি রুপি মতো আয় করেছেন। এদিকে এই প্যান ইন্ডিয়া ছবির মিউজিক রাইটস ১৮ কোটিতে বিক্রি করা হয়েছে। ছবির নির্মাতারা নন-থিওরিক্যাল রাইটস যেখানে প্রায় ২৪০ কোটির রুপি বিনিময়ে বিক্রি করেছেন, সেখানে থিওরিক্যাল রাইটস থেকে তারা আনুমানিক ১৭৫ কোটি রুপি ব্যবসা করছেন। আর এই অঙ্ক বিশ্বজুড়ে রাইটস থেকে বলা হচ্ছে। জানা গেছে, ‘লিও’ ছবির ওভারসিজ রাইটস থেকে প্রায় ৫০ কোটি পেয়েছেন নির্মাতারা।
তামিলনাড়ুতে এই রাইটসের অঙ্ক ৭৫ কোটি রুপি । তেলেঙ্গানা, কেরল, আর অন্ধ্রপ্রদেশে প্রায় ৩৫ কোটি রুপি দাবি উঠেছে। আর দেশের অন্যান্য অঞ্চলের থিওরিক্যাল রাইটস থেকে ১৫ কোটি ব্যবসা করেছেন তারা।
দক্ষিণের খ্যাতনামা পরিচালক লোকেশ কনগরাজ ‘লিও’ ছবিটি পরিচালনা করছেন। এর আগে তিনি ‘কাইথি’, ‘বিক্রম’, আর ‘মাস্টার’-এর মতো ছবি উপহার দিয়েছেন। লোকেশ আর থলাপতি জুটির ‘মাস্টার’ বক্স অফিসে দারুণ ঝড় তুলেছিল। তাই ‘লিও’কে ঘিরে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। ছবিতে থলাপতি বিজয় ছাড়া সঞ্জয় দত্ত, তৃষাকে মূল চরিত্রে দেখা যাবে। এ বছর অক্টোবরে ‘লিও’ মুক্তি পাওয়ার কথা।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত পপ ব্যান্ড ‘বিটিএস’-এর গায়ক ও র্যাপার জে-হোপ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন। এরই মধ্যে তার নাম অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জে-হোপ জানিয়েছেন, নতুন একক অ্যালবাম ‘অন দ্য স্ট্রিট’ প্রকাশের পর তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেবেন। বিটিএসের সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বিগহিট মিউজিকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় সব পুরুষ নাগরিকের ২৮ বছর বয়সের মধ্যে ১৮ মাস বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয়। তবে ২০২০ সালে দেশটির পার্লামেন্টে পপ তারকাদের জন্য বয়সসীমা শিথিল করে ৩০ বছর করে বিল পাস হয়। বিটিএসের জ্যেষ্ঠ সদস্য ৩০ বছর বয়সী গায়ক জিনের ঠিক এক মাস পর, ২৯ বছর বয়সী জে-হোপ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়া সেনাবাহিনীর ফ্রন্ট লাইনের বুট ক্যাম্পে অংশ নেবেন।
গত সোমবার বিগহিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩ মার্চ জে-হোপের ‘অন দ্য রোড’ একক অ্যালবামটি প্রকাশিত হবে। ২০১৩ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে বিশ্বব্যাপী ‘বিটিএস’-এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। টুইটারে তাদের ফলোয়ার ৪ কোটি ৮০ লাখের বেশি। ২০২০ সালে প্রথম গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় বিটিএস। গানের জন্য শুধু জনপ্রিয়তা নয়, বিটিএস গড়ে ৪৯ লাখ ডলার আয় করে দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপিতে দশমিক ৩ শতাংশ অবদান রেখে আসছে। ‘বিটিএস’ গত বছর ঘোষণা করে, সদস্যরা ব্যক্তিগত প্রকল্পের জন্য কয়েক বছর বিরতি নেবেন। বিগ হিট মিউজিক তখন জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের দিকে তারা আবার মিলিত হবেন।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
জার্মানির ফুটবল দলে বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্যটা পুরনো। পেপ গার্দিওলা ক্লাবটির কোচ হওয়ার পর ২০১৪ সালে দেশটি বিশ্বকাপ জিতে। সেসময় দলে ভারি ছিল মিউনিখের এই ক্লাবটি। এই ক্লাবের কোচ ছিলেন হ্যান্সি ফ্লিক। তার অধীনেই সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছে দলটি।
মিউনিখ মিশন শেষে এখন জার্মান জাতীয় ফুটবল দলকে সামলাচ্ছেন ফ্লিক। প্রাক্তন ক্লাবের প্রতি বাড়তি দরদ কাজ করাটা স্বাভাবিক। ক্লাবসহ সমর্থকদেরও প্রত্যাশা তাই থাকে। তবে পেশাদারিত্ব অনেক নিষ্ঠুর যে! আবেগকে নয়, বরং পারফরম্যান্সকে মূল্যায়ন করতে হয়। সেটাই প্রকাশ পেয়েছে ঘোষিত স্কোয়াডে।
আগামী ১২ জুন (সোমবার) প্রীতি ম্যাচ ইউক্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি হচ্ছে জার্মানি। সেই ম্যাচের আগে ২৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন হ্যান্সি ফ্লিক। সেখানে ফ্লিকের প্রাক্তন ক্লাব বায়ার্ন থেকে আছেন মাত্র ৪ জন খেলোয়াড়। ঘোষিত এই দলে নেই থমাস মুলার ও সার্জিও গিনাব্রের নাম। তাছাড়া চোটের কারণে দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার।
বায়ার্ন থেকে নেওয়া ৪ ফুটবলারও অবশ্য নিয়মিত মুখ। তারা হলেন মিডফিল্ডার জশুয়া কিমিচ, লিওন গোরেটজকা, ফরোয়র্ড লেরয় সানে ও জামাল মুসিয়ালা।
ঘোষিত সেই দলে আছেন-
গোলরক্ষক : বার্ন্ড লেনো, মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন, কেভিন ট্র্যাপ। ডিফেন্স : ম্যাথিয়াস জিন্টার, রবিন গোসেনস, বেঞ্জামিন হেনরিকস, থিলো কেহরের, লুকাস ক্লোস্টারম্যান, ডেভিড রাউম, আন্তোনিও রুডিগার, নিকো শ্লোটারবেক, ম্যালিক থিয়াও, মারিয়াস উলফ। মিডফিল্ড/আক্রমণ : জুলিয়ান ব্র্যান্ডট, এমরে ক্যান, নিকলাস ফুলক্রুগ, লিওন গোরেটজকা, ইকাই গুনদোয়ান, কাই হেভার্টেজ, জোনাস হফম্যান, জোশুয়া কিমিচ, জামাল মুসিয়ালা, লেরয় সানে, কেভিন শেড, টিমো ওয়ার্নার, ফ্লোরিয়ান উইর্টজ।
ইউক্রেন মিশন শেষে চলতি মাসে আরও দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে জার্মানি। বাকি আগামী ১৭ জুন পোল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ২১ জুন কলোম্বিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে জার্মানি।
টানা চার দিন ধরে বাড়ছে তাপমাত্রা। গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন সে তুলনায় না বাড়ায় লোডশেডিং ক্রমে বাড়ছে। এ অবস্থার মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা কয়লার অভাবে এক-দুই দিনের মধ্যে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমনটা হলে লোডশেডিং চরমে পৌঁছানোর আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
আগে রাজধানী ঢাকায় লোডশেডিং তেমন না হলেও এখন বিভিন্ন এলাকায় চার-পাঁচবার করে পাঁচ-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ঢাকার বাইরের শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।
তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় শিশু ও বয়স্কদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিদ্যুতের অভাবে কারখানার উৎপাদন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং অফিস-আদালতে কাজের ব্যাঘাত হচ্ছে। লোডশেডিংয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চালক ও অটোচালকরা ঠিকমতো চার্জ দিতে না পারায় তাদের আয় কমে গেছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায়ও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। মোটকথা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গরম থেকে আপাতত নিস্তার নেই। ৮ বা ৯ জুন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ ৭ জুন পর্যন্ত দেশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার শঙ্কা রয়েছে। আগামী এক মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে।
বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখছিল পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু কয়লার অভাবে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের একটি গত ২৫ মে বন্ধ করা হয়। ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার অন্য ইউনিটটি থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও সেটিও এক-দুই দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কয়লা কেনার অর্থের অভাবে।
বিল বকেয়া থাকায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে চীনা কোম্পানি সিএমসি। কয়লা আমদানি বাবদ বর্তমানে পায়রার ২৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার বকেয়া আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আপাতত ১০০ মিলিয়ন ডলার সংস্থান করা গেলেও কেন্দ্রটির জন্য নতুন করে কয়লা আমদানি করা যাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৮৮ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে। বাকি অর্থ এ সপ্তাহে পাওয়ার কথা রয়েছে। এরপর কয়লা আমদানির জন্য এলসি ওপেন করা হবে। এলসি খোলার পর কয়লা আসতে অন্তত ২৫ দিন সময় লাগবে। কয়লা এলেও সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ কেন্দ্র পুরোদমে চালু করা যাবে না। দ্রুত অর্থ সংস্থান হলেও অন্তত এক মাস এটি বন্ধ থাকবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জ্বালানির অভাবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। ডলার সংকটে জ্বালানি তেল, এলএনজি ও কয়লা আমদানি কমায় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে চাইলেও উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। সংকট সামলাতে এখন আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির অপেক্ষা করছে কর্তৃপক্ষ। তারা আশা করছে, এ সপ্তাহ শেষে গরম অনেকটা কমবে। গরম কমলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মনে করেন, বৈশ্বিক কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা পরিকল্পনা মাফিক চললেও প্রাথমিক জ্বালানির সরবরাহের ধারাবাহিকতা চ্যালেঞ্জে পড়েছে। কভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বের সব দেশের মতো বাংলাদেশেও পড়েছে। তবে দেশে কয়লা নিয়ে যে সংকট চলছে সেটা থাকবে না। আমরা চেষ্টা করছি; সে সঙ্গে আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে বকেয়া রয়েছে তা তারা পাবে। তবে একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘আজকের এ পরিস্থিতির জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতির চেয়ে সরকার বেশি দায়ী। ভুলনীতির কারণে প্রাথমিক জ্বালানির সংস্থান না করে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়ছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। অতিরিক্ত দাম দিয়েও মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। সামনে লোডশেডিং আরও বাড়বে।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম এখন অনেক কম। তারপরও জ্বালানি নিয়ে আমাদের দেশে কেন এ দুরবস্থা তা বোধগম্য নয়।’
পিডিবি সূত্রমতে, বর্তমানে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের ঘাটতি দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাস্তবে বিদ্যুতের ঘাটতি প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট।
এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট। জ্বালানির অভাবে গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের সক্ষমতা ব্যবহার করা যায় না। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াটের উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৪৭ শতাংশ গ্যাসভিত্তিক। পিডিবির হিসাবে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ১১ হাজার ৩৯ মেগাওয়াট। গড়ে উৎপাদন করা হচ্ছে ৬ হাজার ২২১ মেগাওয়াট। ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু উৎপাদন করা হচ্ছে দৈনিক ৩ হাজার ৮০৬ মেগাওয়াট। কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৩ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াট। উৎপাদিত হচ্ছে ২ হাজার ২২৬ মেগাওয়াট।
প্রাথমিক জ্বালানিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া না হলে বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান হবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বাবদ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ১৮ হাজার কোটি টাকার বিল বকেয়া হয়ে আছে। সরকার এ বকেয়া কমিয়ে না আনলে কয়েকটি কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে কয়েকটিতে উৎপাদন কমেছে।
গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি এবং লোডশেডিংয়ের কারণে অধিকাংশ শিল্পে ৩০-৪০ শতাংশ উৎপাদন কমে গেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমালিকরা। ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে অনেক কারখানায় উৎপাদন ঠিক রাখতে গিয়ে খরচ বাড়ছে। তারা বলছেন, অনেক সম্ভাবনা থাকলেও কারখানার চাকা ঠিক রাখতে না পারায় ব্যবসা গুটিয়েছেন বা উৎপাদনের পরিমাণ কমাচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা।
ডলার সংকটে পেট্রোবাংলা এলএনজি আমদানির বিল, এলএনজি টার্মিনালের চার্জ এবং বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির (আইওসি) বিল দিতে পারছে না। সময়মতো বিল দিতে না পারায় জরিমানা গুনতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটিকে। পেট্রোবাংলার মোট বকেয়া প্রায় ২৫ কোটি ডলার।
একই কারণে আমদানিকৃত জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না বিপিসি। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে তেলবাহী কার্গো না পাঠানোর হুমকি দিয়েছে। গত ১১ মে পর্যন্ত বিপিসির কাছে সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাওনা হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি ডলার।
বিপিসি জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধ না করায় ৩০ হাজার টনের একটি ডিজেল কার্গো বাতিল করেছে ভিটল সিঙ্গাপুর। আন্তর্জাতিক তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, এ মাসে তারা ১৫০ হাজার টন ডিজেল, ৫০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল সরবরাহ করবে না। বিপিসি জ্বালানি বিভাগকে জানিয়েছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখা কঠিন হবে। জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।