
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চলচ্চিত্রবিষয়ক সাময়িকী ভ্যারাইটি নারী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের সমন্বয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। ২০২২ সালে দারুণ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ভারত থেকে একমাত্র অভিনেত্রী হিসেবে এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন আলিয়া। আলিয়া ভাট ছাড়াও ‘হাউজ অব ড্রাগন’, ‘দ্য লর্ড অব দ্য রিংস : রিংস অব পাওয়ার’, ‘এলিস ইন বর্ডারল্যান্ড’ সিরিজে অভিনয় করা নারী তারকারাও স্থান পেয়েছেন এ তালিকায়। ২০২২ সালে বিনোদন অঙ্গনে অবদান, বড় কোনো প্রজেক্টে চুক্তিবদ্ধ হওয়া ইত্যাদি নানা বিষয় পর্যালোচনা করে তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। ভ্যারাইটির এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সাল আলিয়া ভাটের দারুণ কেটেছে। ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’, ‘আরআরআর’ ও ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান শিবা’ সিনেমায় এই অভিনেত্রী অসাধারণ অভিনয় করেছেন। ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান শিবা’ সিনেমায় তিনি জুটিবদ্ধ হয়েছেন স্বামী রণবীর কাপুরের সঙ্গে। এই সিনেমা নিয়ে আলিয়া ভাট ভ্যারাইটিকে বলেন, ‘সব সময় এমন একটি সিনেমা থাকে, যা সবকিছুকে অতিক্রম করে মানুষের হৃদয়ে তার ছাপ রেখে যায়। এই সিনেমা এমনই।’
নেটফ্লিক্সের ‘হার্ট অব স্টোন’-এ গাল গ্যাদতের সঙ্গে অভিনয়ের মাধ্যমে আলিয়া ভাটের হলিউডে অভিষেকের কথাও উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। এ ছাড়া চলতি বছরের জুলাই মাসে পরিচালক করণ জোহরের ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কাহানি’-তে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে দেখা যাবে আলিয়া ভাটকে।
গতকাল বিকেলে ২০২১ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪ জন শিল্পী-কলাকুশলীর হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তা-ই নয়, পুরস্কার বিতরণ শেষে দেশের শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্র তারকাদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরোটা উপভোগ করেন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন। শুধু তা-ই নয়, চলচ্চিত্রকে আরও উন্নত করতে কিছু বিষয়ে তিনি নতুনভাবে সিদ্ধান্তের কথা জানান। এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা চলচ্চিত্র, সেরা সিনেমা ও সেরা কাহিনিকারের পুরস্কার পেয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (চলচ্চিত্র : নোনাজলের কাব্য)।
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি জাতীয় পুরস্কারই সব নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীর আরাধ্য। সেখানে এই তরুণ বয়সে আমার হাতে তিন-তিনটি পুরস্কার এলো। এই ভার যেন আমি বইতে পারি, সবার কাছে সেই দোয়া কামনা করি। আমার অনুভূতি প্রকাশের ভাষা জানা নেই। তিনবার পুরস্কার আনতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে স্নেহ পেয়েছি সেটিও আমার চলার পথের অনেক বড় অনুপ্রেরণা। এই পুরস্কারের জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা)। এর আগেও তিনি বিশ^সুন্দরী সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। দ্বিতীয়বারের মতো সেরা অভিনেতার পুরস্কার গ্রহণ করার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘দর্শকের জন্যই মূলত আমরা কাজ করি। তাদের জন্য করা কাজ যখন কোনো মাধ্যমে সম্মান পায় আর সেটা যখন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা হয় তখন সবাই সেটার জন্য অপেক্ষা করে। তখন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আমাদের আসলে আর কোনো ভাষা থাকে না। কারণ একটা কাজ করতে গিয়ে আমাদের আসলে অনেক কষ্ট করতে হয়। যে চেষ্টা আমরা করি, সেটা যদি এ রকম গ্রহণযোগ্যতা পাই, তখন কাজের গতি আরও বেড়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগেরবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেও সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। এবার হাত থেকে সরাসরি পুরস্কার গ্রহণের অনুভূতি একেবারেই অন্যরকম। এই অনুভূতির সঙ্গে অন্যকিছুর তুলনা হয় না। আর যে অনুভূতি হয় সেটি ভাষায়ও প্রকাশ করা যায় না। আমি প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সঙ্গে জড়িত জুরি বোর্ডসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার জন্য আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন আজমেরী হক বাঁধন। এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক দেশি-বিদেশি পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। তার এই ছবিই বিশ^বিখ্যাত কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে অফিশিয়াল সিলেকশন পেয়ে ইতিহাস গড়ে। এই ছবির কাজ দেখেই বলিউডের প্রখ্যাত নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ বাঁধনকে তার নেটফ্লিক্সের হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘খুফিয়া’তে কাস্ট করেন। এবার সেই রেহানা চরিত্রই এনে দিল বাঁধনের হাতে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার আইডল। তার মতো ব্যক্তিত্বের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করা অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের। আমি সেই সম্মান ধরে রাখতে চাই। আজীবন ভালো কাজই করে যেতে চাই। যাতে জাতীয় পুরস্কারের ভার সঠিকভাবে বহন করতে পারি।’
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় এই সম্মান আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এজন্যই আমার মা-বাবা কন্যাসহ পরিবারের অনেককে নিয়ে আমি এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। তারা সবাই আমার অর্জনে গর্বিত। তবে রেহানা মরিয়ম নূর ছবিটি আরও বেশ কটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ছিল। এজন্য আমি কষ্ট পেয়েছি।’
‘নেশার বোঝা’, ‘ভালোবাসা বাকি’, ‘অপার্থিব’, ‘ভাবালে’ এর মতো আলোচিত গানের শিল্পী রাফফান ইমামকে প্রথমবারের মতো ঢাকার কোনো কনসার্টে পাওয়া যাবে। শ্রোতামহলে তিনি ‘পপাই’ নামে পরিচিত। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় তাকে নিয়ে হয়ে গেল ‘রক অ্যান্ড রিদম ২.০ : পপাই লাইভ ইন ঢাকা’ শীর্ষক কনসার্ট। ২০১০ সালের দিকে ‘পপাই বাংলাদেশ’ নামে একটি গানের প্রকল্প শুরু করেন পপাই। পরে ২০১৫ সালর যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন পপাই; সেখান থেকেই নিয়মিত গান প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রায় ১৩ বছরের পথচলায় কখনো কোনো কনসার্টে পাওয়া যায়নি তাকে, এবারই প্রথমবার শ্রোতাদের সামনে আসলেন তিনি। পপাই বলেন, ‘আমার গান এখানে জনপ্রিয়, এটা আমি শুনেছি। এবার সরাসরি দেখলাম, এটা দারুণ একটা ব্যাপার ঘটেছে।’ আয়োজক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পপাই দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তার গান শ্রোতারা খুব পছন্দ করেন, তাকে কখনোই সামনাসামনি দেখেননি। কখনো লাইভে আসেননি। তাকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। আমরা সাড়াও পেয়েছি খুব ভালো।’ পপাই ছাড়াও এই আয়োজনে গেয়েছে ব্যান্ডদল অ্যাশেজ, মেঘদল, সোনার বাংলা সার্কাস, আফটারম্যাথ, হাইওয়ে, অড সিগনেচার ও স্মুসেজ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্মরণে আয়োজিত হয়ে আসছে ‘জয় বাংলা কনসার্ট’। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধনের পরই সাকিব কণ্ঠে তোলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’; ক্রিপটিক ফেইটের ভাষ্যে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সবচেয়ে হেভি মেটাল গান এটি। এরপর একে একে ‘চোখে যত জল’, ‘ভবঘুরে’ পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি। এর আগে সন্ধ্যা নামার মুখে লালনের গানে জমিয়ে তুলেছে লালন ব্যান্ড, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ দিয়ে পরিবেশনা শুরুর পর একে একে ‘পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না’, ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ পরিবেশন করে স্টেডিয়ামজুড়ে তরঙ্গ ছড়িয়েছেন সুমি। বন্ধুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গানের তালে নাচতে দেখা গেছে দর্শকদের। দুই বছর পর জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলা। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটিকে স্মরণ করে প্রতিবছর ৭ মার্চ কনসার্টের আয়োজন করে ইয়ং বাংলা। পবিত্র শবেবরাতের কারণে ৭ মার্চের বদলে এবার কনসার্টের আয়োজন ছিল গতকাল; সরকারি ছুটির দিনে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছিলেন তরুণরা। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে, কেউ একা; কেউ পরিবারের সঙ্গে, ভিড় ঠেলে সবার পথ এসে মিলেছে আর্মি স্টেডিয়ামে। বিকেল থেকেই দর্শকের উপস্থিতি দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দর্শকের সংখ্যা। দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই বছর বিরতির মধ্যে অধীর হয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তারা। কেউ কেউ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের মতো দূর শহর থেকেও এসেছেন জমকালো এ আয়োজনে।
বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে কনসার্টে এসেছেন ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। তিনি বলেন, ‘ছুটির দিন হওয়ায় আমরা কয়েকজন বন্ধু এসেছি। প্রথমবারের মতো বড় কনসার্টে এসেছি, খুব উপভোগ করছি।’
লালন ব্যান্ডের আগে মঞ্চে আসে অ্যাভোয়েড রাফা, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ দিয়ে নিজেদের পরিবেশনা শুরুর পর ‘কষ্ট’, ‘আনমনে’, ‘আমি আকাশ পাঠাব’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করে ব্যান্ডটি। কালজয়ী দেশাত্মবোধক গান ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ পরিবেশন করেছে মেঘদল। এরপর আলোচিত গান ‘এ হাওয়া’, ‘এসো আমার শহরে’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি। এবারই প্রথমবারের মতো এ আয়োজনে পাওয়া গেল মেঘদলকে। মেঘদলের আগে মঞ্চে এসেছে আরেক ব্যান্ড কার্নিভ্যাল, শুরুতেই পরিবেশন করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, এরপর ‘আমার সত্য’, ‘সেই সব দিনরাত্রি’ পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি। গত বুধবার বেলা ৩টায় কনসার্টের শুরুতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘আমার এ দেশ সব মানুষের’ পরিবেশন করেছে আরেকটি রক ব্যান্ড। এরপর নতুন অ্যালবাম থেকে ‘ঘুম পাড়ানোর গান’ শোনায় ব্যান্ডটি। কনসার্টের শুরুতে গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া এলাকায় বিস্ফোরণে নিহত মানুষদের স্মরণ করে ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নিজের বিদায়ী ম্যাচ বলেই কিনা জ্বলে উঠলেন সার্জিও রামোস। শুরুতেই পেয়ে যান গোলের দেখা। কিলিয়ান এমবাপ্পে আছেন তার আগের মতোই। তিনিও ডাবল লিড এনে দেন। তবে বিদায়ী ম্যাচে নিষ্প্রভ রইলেন লিওনেল মেসি। তাতেই কিনা শুরুতেই এগিয়ে যাওয়া ম্যাচটি হার দিয়ে শেষ করেছে পিএসজি।
লিগ ওয়ানের শেষ ম্যাচে ক্লেরমো ফুতের সঙ্গে ৩-২ গোলে হেরে গেছে প্যারিসিয়ানরা। তাতে রাঙানোর বদলে বিষাদভরা বিদায় হলো মেসি-রামোসদের।
আগেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করা পিএসজি মৌসুমে নিজেদের এই শেষ ম্যাচে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছিল। হুগো একিতেকে ও আশরাফ হাকিমিকে ফেরান কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের।
শুরুতে গুছিয়ে উঠতে সময় লেগেছে পিএসজির। প্রথম ১০ মিনিটের পর ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২১ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে গিয়েছিল ২-০ গোলে। রামোস ১৬ মিনিটে হেড থেকে এবং তার ৫ মিনিট পর কিলিয়ান এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে গোল করেন।
২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ক্লেরম ফুতের পাল্টা লড়াই শুরু করতে সময় নিয়েছে মাত্র ৩ মিনিট। ২৪ মিনিটে গোল করেন ক্লেরমঁর গাস্তিয়েন। এর প্রায় ১২ মিনিট পরই পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন ক্লেরমঁ স্ট্রাইকার কেয়ি। পরে অবশ্য ৬৩ মিনিটে তাঁর গোলেই জিতেছে ক্লেরমঁ। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ক্লেরমঁর হয়ে সমতাসূচক গোলটি জেফানের।
বিরতির পর গোলের দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। ৫৪ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে এমবাপ্পে ঢুকে পড়েন ক্লেরমঁর বিপদসীমায়। তাঁর ক্রস পেয়ে যান ডান প্রান্ত দিয়ে দৌড় বক্সে ঢোকা মেসি। সামনে গোলকিপার একা, কিন্তু মেসি অবিশ্বাস্যভাবে বলটা পোস্টের ওপর দিয়ে মারেন।
সতীর্থ গোলকিপার সের্হিও রিকোর সুস্থতা কামনা করে বিশেষ জার্সি পরে মাঠে দাঁড়িয়েছিলেন মেসি-এমবাপ্পেরা। ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে দূর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন রিকো। ম্যাচে বিশেষ জার্সি পরে খেলেছে পিএসজি। মেসি-রামোসদের জার্সির পেছনে রিকোর নাম লেখা ছিল।
৩৮ ম্যাচে ৮৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে মৌসুম শেষ করল পিএসজি। ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে লেঁস। তৃতীয় মার্শেইয়ের সংগ্রহ ৭৩ পয়েন্ট। ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে ইউরোপা লিগ নিশ্চিত করা রেঁনে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।