
১৫ মার্চ ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির প্রযোজক অভিনেতা শাকিব খানের বিরুদ্ধে গুরুতর সব অভিযোগ করেছেন শিল্পী সমিতি ও প্রযোজক সমিতিতে। গতকাল বিকেলে প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু এবং ওই প্রযোজককে নিয়ে সমঝোতার জন্য বৈঠকে বসেন শাকিব। রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় ঘণ্টাব্যাপী সেই আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি বলে জানান খসরু। তিনি বলেন, ‘গতকাল শাকিব খানের সঙ্গে ওই প্রযোজক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আমি চেয়েছি বিষয়টির সমাধান হোক। তবে এখনই বলার মতো কিছু হয়নি। আমি নিজেও কিছু বলতে চাই না। আরেকটু সময় লাগবে।’
এদিকে শাকিব ইস্যুতে কথা বলেছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমাদের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন এখন দেশের বাইরে। তিনি চার-পাঁচ দিন পর দেশে ফিরবেন। আমরা তখন শাকিব খানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তার আগে শাকিবের সঙ্গে আমি কথা বলব। পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করব।’ নিপুণ আরও বলেন, ‘শাকিব খান আমাদের দেশের সুপারস্টার। আমরা অভিযোগের সত্যতা না যাচাই করে তাকে দোষী বলতে পারি না। মোট কথা, আমরা আমাদের শিল্পীদের প্রাধান্য আগে দেব। এরপর যিনি অভিযোগ করেছেন তার সঙ্গেও কথা বলব। তারপর সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেব।’ তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শাকিব খানকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি।
প্রযোজকের দাবি, শাকিব নিজেই উদ্যোগী হয়ে তার সঙ্গে মীমাংসায় বসতে চেয়েছেন। আজ বিকেল পাঁচটা থেকে এক ঘণ্টা ধরে চলে এই মীমাংসা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মীমাংসায় কী হলো, জানতে চাইলে প্রযোজক বলেন, ‘আমরা বসেছিলাম। কিন্তু ঘটনার এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে শাকিব আমাকে আলোচনার মাধ্যমে আশ্বাস দিয়েছেন, হয়তো তিনি ছবি করে দেবেন অথবা তিনি বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত দেবেন। তখন আমি তাকে বলেছি, অনেক পুরনো হয়ে গেছে। এখন আর আমি ছবিটি করব না। তখন শাকিব খান নিজ থেকেই বলেছেন, ‘আমরা প্রযোজক খুঁজে সিনেমাটির কাজ শেষ করব।’ প্রযোজক দাবি করেন, শাকিব খান ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছেন। তিনি এ সময় জানান, তার সিনেমায় লগ্নিকৃত অর্থের পরিমাণ দুই কোটি টাকা। ঘটনার মীমাংসায় উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা বিকেল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত মীমাংসার জন্য বসেছিলাম। আজ আমাদের আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। এটুকুই।’
খোরশেদ আলমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ধর্ষণের এই ঘটনা নিয়ে শাকিব খান কী বলেছেন? এমন প্রশ্নে এই প্রযোজক নেতা বলেন, ‘সবাই তো মীমাংসা চান, সে জন্যই আসছেন। সেসব নিয়েই শাকিব কথা বলেছেন। তিনি একটা সমাধান চান। সে লক্ষ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আজ এটুকু নিয়েই কথা হয়েছে।’
প্রযোজকের অভিযোগ, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার দৃশ্যধারণের সময় এক নারী সহপ্রযোজককে ‘ধর্ষণ’ করেন শাকিব খান, এরপর তিনি দেশে পালিয়ে আসেন। এই ঘটনা নিয়ে ছয় বছর পর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে শাকিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন প্রযোজক। অভিযোগে প্রযোজক উল্লেখ করেন, শাকিব খানের বিরুদ্ধে সেই ভুক্তভোগী অস্ট্রেলিয়া পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। সেই অভিযোগে নিজেকে একজন সাক্ষী হিসেবে দাবি করেন রহমত উল্ল্যাহ।
প্রযোজকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ঘটনাটা বেশ আগে ঘটেছিল। এত দীর্ঘ সময় পর কেন শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ করলেন? এমন প্রশ্নে রহমত উল্ল্যাহ বলেন, ‘শাকিব খান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন তিনি সিনেমাটি করে দেবেন। এর মধ্যে করোনা শুরু হয়ে গেছে।
কিন্তু সিনেমা নিয়ে কোনো কথা হচ্ছিল না। কোনো উপায় না দেখে আমি শেষ পর্যন্ত অভিযোগ করেছি।’
“বিভিন্ন টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রত্যেক বেলায় আম্মার (একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহ) শারীরিক অবস্থার অদলবদল হচ্ছে। এই ভালো তো, এই অনেক খারাপ। প্রথম দিকে ‘কিছুটা ভালো’ শব্দটি শুনলে খুব খুশি হয়ে যেতাম, কিন্তু এখন অতটা খুশি হতে পারি না। কেন যেন মনের মধ্যে ভয় এবং শঙ্কা কাজ করে আবার না জানি কী সংবাদ শুনতে হবে। এ নিয়ে আমার মা তিনবার আইসিইউতে (একবার লাইফ সাপোর্টসহ) আছেন। জীবন এবং মৃত্যুর বড় বড় তাৎক্ষণিক ডিসিশন আমাকে একাই নিতে হয়েছে আইসিইউর সামনে দাঁড়িয়ে। সৃষ্টিকর্তার দোয়ায় এবং ডাক্তারদের পূর্ণ সমর্থন এবং সহযোগিতায় তিনি গত দুবার নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন। শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে তাকে অমানুষিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে সময় পার করায়, আম্মার সম্পূর্ণ চিকিৎসার যাবতীয় কর্মকা- গুগল সার্চ করে আমি ও আমাদের পুরো পরিবার মোটামুটি পিএইচডি লাভ করে ফেলেছি। পরিবারের মধ্যমণি আমার মা। করোনায় বাবা চলে যাওয়ার পরই বুঝতে পেরেছি মাথার ওপর কত বড় ছাদটা হারিয়ে শিশুর মতো মাকে আঁকড়ে জীবন পার করছি। তার সব সমস্যা আফটার কভিড কমপ্লিকেশন্স বলা হচ্ছে। আইসিইউর বাইরে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো লিখছি। যন্ত্রের ভেতর মায়ের জীবনটাকে ঢুকিয়ে অসহায়ের মতো সময় গুনছি। এখানে মাথা কাজ করে না, সময়কে বড্ড দীর্ঘ মনে হয়। পৃথিবীর সব অর্জনও এখানে ব্যর্থ। কতশত অভিজ্ঞতা, কতশত মানুষের অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ জমে আছে এই করিডরে, এমনকি আমার নিজের চোখের সামনে। ডাক্তারদের চোখাচোখি হলেই সবাই একই কথা বলে ধৈর্য ধরুন, চেষ্টা চলছে, দেখা যাক, দোয়া করুন। শুধু একজন ডাক্তার আমাকে বলেছিলেন এক পার্সেন্টও যদি চান্স থাকে আপনি ধৈর্য হারাবেন না। গত দুবছরে সেই পার্সেন্টেজই গুনছি, সেই সঙ্গে আমি নিজেই আবিষ্কার করলাম আমি বিশাল এক ধৈর্যশীল নারী। এই ধৈর্য নিয়েই আমাকে যুদ্ধে জয়ী হতে হবে এবারও।”
মায়ের অসুস্থতা নিয়ে কথাগুলো ফেসবুকে লিখেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিজরী বরকতউল্লাহ।
ভক্তদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে গত বছর ওয়ারফেজ কথা দিয়েছিল, ২০২৩ সালে নিয়মিত গান উপহার দেবে তারা। বছরের তৃতীয় মাসে এসে কথা রাখতে চলেছে ব্যান্ডটি। স্বাধীনতার মাসে নিয়ে আসছে নতুন গান ‘মা’। প্রয়াত গীতিকার নঈম গহরের কথায় গানটিতে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন বাবনা করিম। গানটি প্রযোজনা, সংগীতায়োজন ও পরিবেশনা করেছে ওয়ারফেজ, রেকর্ড লেভেল ও লয় রেকর্ডস। ২২ মার্চ ওয়ারফেজ ও লয় রেকর্ডসের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গানটি প্রকাশ পাবে। স্পটিফাই, আইটিউনসসহ অন্যান্য অডিও প্ল্যাটফর্মেও গানটি শোনা যাবে। এর আগে ১৯ মার্চ স্বাধীন মিউজিক অ্যাপে সারা বিশ্বের শ্রোতাদের জন্য গানটির অডিও প্রকাশ করবে ওয়ারফেজ। তিন দিনের জন্য এই অ্যাপে গানটি শোনা যাবে। ১৯৮৪ সালের ৬ জুন যাত্রা শুরু করে ওয়ারফেজ। দীর্ঘ ৩৯ বছরে ‘অসামাজিক’, ‘জীবনধারা’, ‘অবাক ভালোবাসা’, ‘মৌনতা’, ‘তোমাকে’, ‘মহারাজ’, ‘কৈশোর’-এর মতো জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছে তারা।
উৎপত্তি কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মো. সারোয়ার হোসেন শাকিল। তরুণ এই নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যপরিচালক বেশ ক’বছর ধরে ব্যস্ততার সঙ্গে কাজ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি তার ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। গত মাসে জেপি টিভি স্টার অ্যাওয়ার্ডে শ্রেষ্ঠ নৃত্যপরিচালকের পুরস্কারও জিতেছেন। এ মাসের ৪ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত তিনি কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। প্রথম অনুষ্ঠানটি করেন কলকাতা নজরুল তীর্থ হলে, দ্বিতীয় অনুষ্ঠানটি মগরা স্টার ডান্সের আয়োজনে, তৃতীয় দিন হুগলি ও শেষ অনুষ্ঠানটি করেন শান্তিনিকেতনে। দেশে ফিরে আবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মো. সারোয়ার হোসেন শাকিল। নবীনদের মেধাকে প্রকাশের সুযোগ করে দিতে ভালোবাসেন তিনি। নাচের পাশাপাশি কাজ করছেন ফটোশুট স্টাইলিং, ফ্যাশন কোরিওগ্রাফি ও মিউজিক ভিডিও কোরিওগ্রাফার হিসেবে। বিভিন্ন টেলিভিশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে এশিয়া কাপ হকি ২০১৬-এর উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান, জাতীয় রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ও নজরুল জন্মজয়ন্তী, বাবিসাস পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তিনি ২০১০ সালে উৎপত্তি কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রী সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে শোবিজে। তার পরিচালনায় ও কোরিওগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নৃত্যনাট্য হলো- মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘ফিরে দেখা’, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’, ‘চন্ডালিকা’, ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘সামান্য ক্ষতি’, ‘কালমৃগয়া’ ইত্যাদি।
‘রানী মুখার্জি ভালো অভিনেত্রী, এ কথা আমরা সবাই জানি, কিন্তু ছবিটি দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল রানী সবটা উজাড় করে দিয়েছেন।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এভাবেই রানীর নতুন ছবি ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ দেখে প্রশংসায় ভাসাচ্ছে। গতকাল প্রিমিয়ারে ছবিটি দেখে নীতু সিং, সুভাষ ঘাই, ক্যাটরিনা কাইফ, কিয়ারা আদভানি, ভিকি কৌশল, অর্জুন কাপুরের মতো তারকারাও আবেগাপ্লুত। আজ ভারতের সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’। ছবিটির জন্য রানী ওজন বাড়িয়েছিলেন, ঢাকেননি মুখের দাগ। কারণ মিসেস চ্যাটার্জি হয়ে উঠতে হবে। ছবিতে দেবিকা চট্টোপাধ্যায় নামে এক মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘মারদাঙ্গি’ অভিনেত্রী। এমন চ্যালেঞ্জিং একটা চরিত্র পেয়ে প্রধান ভাবনাটা কী ছিল? টাইমস অব ইন্ডিয়ার এমন প্রশ্নের উত্তরে রানী বলেন, ‘প্রথমে গল্পটার আবেগ, চরিত্রটির আবেগের যে ওঠাপড়া, সেটার সঙ্গে একাত্ম হয়েছিলাম। তারপর গুরুত্বপূর্ণ ছিল, দেবিকাকে দর্শকদের সামনে কীভাবে আনা হবে। ওকে কেমন দেখতে লাগবে, কেমন আচরণ হবে এসব।’ এক যুগ আগে সাগরিকা চট্টোপাধ্যায় এবং অনুরূপ ভট্টাচার্য নামে এক দম্পতির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা অবলম্বনেই তৈরি হয়েছে ছবি। সন্তানকে ফিরে পেতে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ভারতীয় নাগরিক সাগরিকা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি তার সন্তানদের ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছেন না। তাই শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেই দেশের সরকার সাগরিকার দুই সন্তানকে কোলছাড়া করে। ২০১১ সালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শুনে নড়ে বসেছিল ভারত সরকারও। রানী বলেন, ‘আমরা যখন দেখি বিদেশে কোনো ভারতীয় পরিবার থাকছে; ধরেই নিই, সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে তারা ভালো জায়গায় আছে, সুখী আছে। কিন্তু এই যে একটা ভারতীয় বাঙালি পরিবার, এমন কষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে এটা জনসমক্ষে আনা দরকার ছিল।’
ঈদুল ফিতরে বৈশাখী টেলিভিশনের জন্য সাত পর্বের নাটক নির্মাণ করলেন অভিনেতা হাসান জাহাঙ্গীর। থ্রিলার এবং সাসপেন্সভিত্তিক গল্পের এই নাটকের নাম ‘সিঁড়ি’। তবে সাত পর্বের এই ধারাবাহিকের বিশেষত্ব হলো, এতে অভিনয় করেছেন বড়পর্দায় দুই জনপ্রিয় তারকা কাজী হায়াৎ ও মিশা সওদাগর। হাসান জাহাঙ্গীরও অভিনয় করেছেন। আরও রয়েছেন চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী মারুফ, নিঝুম রুবিনা, আইভি নুর, নাদের খান, শাহিন, নিথর মাহবুব, সেলিমসহ অনেকে! শুধু এই নাকটিই নয়, হাসান জাহাঙ্গীর ঈদে নিয়ে আসছেন হাফ ডজন ঈদের নাটক। প্রতিটি নাটকে গল্প এবং শিল্পীদের নিয়ে থাকবে চমক। বৈশাখী টেলিভিশনের জন্য তিনি আরও নির্মাণ করেছেন দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক ‘ফ্যামিলি ডিসটেন্স’। এনটিভিতে ‘প্রবাসী পরিবার’ সিরিয়ালের অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত আছেন তিনি। ঈদ উপলক্ষে নির্মাণ করছেন প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপন। সম্প্রতি দুবাইয়ে নির্মাণ করে এলেন একটি ট্যুরিজম কোম্পানির বিজ্ঞাপন। ঈদের পরপর টিভিসি নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে উড়াল দেবেন আমেরিকা, কানাডা এবং ইতালিতে। হাসান জাহাঙ্গীর জানান, খুব শিগগিরই ‘ট্রল’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণের কাজ শুরু করবেন। ইতিমধ্যে সিনেমাটির নাম এফডিসিতে এন্ট্রি করা হয়ে গেছে। গান রেকর্ডিংয়ের কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরে নতুন চমক নিয়ে আসবেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।