যা হয় ভালোর জন্যই হয়: কুরাতুলাইন
অনলাইন ডেস্ক | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:৩৪
নিজ দেশ পাকিস্তানে কুরাতুলাইন বেলুচের পরিচিতি সুপার-হিট টিভি ড্রামা ‘হামসফর’-এর কণ্ঠশিল্পী হিসেবে। আর কোক স্টুডিও’র একাধিক সিজনের উপস্থিতির কারণে বিদেশের সংগীতপ্রেমীদের কাছেও পরিচিত তিনি।
অনুষ্ঠানটির সর্বশেষ সিজনে বিখ্যাত ‘লাল মেরি পাট’ গানে কণ্ঠ দেন কুরাতুলাইন। তবে নিজের পারফর্ম্যান্সে একদমই খুশি নন। জানালেন, নিজের কট্টর সমালোচক তিনি।
সম্প্রতি ডন পত্রিকার পক্ষ থেকে কুরাতুলাইনের মুখোমুখি হন মাদিহা সৈয়দ। নিজের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে মুখ খুলেন কুরাতুলাইন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সে দিন কুরাতুলাইনের আউটফিট ছিল সাদাসিধে, ছিল না মেকআপ। চোখে ছিল চমশা, আর হাতে একটা বই। কী বই পড়ছেন? এর প্রশ্নে বলেন, জর্ডান পিটারসনের লেখা ‘টুয়েলভ রুলস ফর লাইফ’। যখন আমি ভ্রমণ থাকি তখন পড়ি। আমি এ মুহূর্তে ভ্রমণে আছি। বাড়ি থেকে দূরে আছি।
আপনাকে ‘কিউবি’ ডাকা পছন্দ করেন না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কারণ কান্দিল বেলুচকেও ‘কিউবি’ ডাকা হতো। এ নামে ডাকলে আমি স্বস্তিবোধ করি না।”
২০১৬ সালে মডেল কান্দিল বেলুচ খুন হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হন কুরাতুলাইন। এ বিষয়ে জনপ্রিয় এ গায়িকা বলেন, তখন আমার প্রথম নামে ডাকার জন্য বললাম লোকজন। কান্দিল বেলুচ ছিলেন সমাজের প্রতিবিম্ব। সে নিজের সত্যটা জানিয়েছিল।
কুরাতুলাইন জানান, বাড়িতে তাকে ‘শেরি’ নামে ডাকা হয়। তিনি হেসে বললেন, আমার বাবা প্রথমে নাম দিয়েছিলেন শাহেরা। দুই বছর পর আমার বোন জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয় নূরুলাইন। তখন আমার নাম দেওয়া হয় কুরাতুলাইন কিন্তু শেরি থেকে গেল। পরিবারের কাছে আমি শেরি কিন্তু কোনো বন্ধু এ নামে ডাকুক আমার পছন্দ নয়। কারণ, এটা কিছুটা ব্যক্তিগত।
নিজের নাম কুরাতুলাইনের অর্থ ‘চক্ষু শীতলকারী’ অথবা বাগধারা হিসেবে ‘চোখের মণি’ বলে জানান এই পাকিস্তানী। তবে শাহেরার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জানি না! হাসতে হাসতে বললেন, বিখ্যাত কেউ হবেন।
কুরাতুলাইনের জন্ম ও বেড়ে উঠা পাকিস্তানে। কিশোরী বয়সে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান, মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন ২০১১ সালে।
নিজের বিষয়ে তার মত “আমি অনেকটা পর্যটকের মতো। খুঁজছিলাম এ জীবনে কী করতে চাই। গতানুগতিক কিছু নয়, এটা নিশ্চিত। কিন্তু এমন কিছু যা আমাকে প্রতিফলিত করবে। এনজিও’র সঙ্গে যুক্ত হলাম। ত্রাণ নিয়ে খাইবার পাখতুনওয়া ও আজাদ কাশ্মিরে গিয়েছিলাম, তখন দারুণ কিছু মানুষের সংস্পর্শে আসি।”
ওই সময় আলী নূর, আলী হামজা, মেকাল হাসানের মতো পাকিস্তানি সংগীতশিল্পের নামি ব্যক্তিদের সাথে কুরাতুলাইনের পরিচয়। একদিন তাদের গান শোনান। এর আগে তারা কেউ কুরাতুলাইনের গান শুনেননি।
তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল জানতে চাইলে হাসতে হাসতে বলেন তিনি বলেন, তারা খুব অবাক হয়েছিল। কারণ এতটা আশা করেনি। তারা বলেছিল ‘এ পকেট রকেট’।
এর পর বিখ্যাত লোক গায়িকা রেশমা’র গান ‘আঁখে নু রেহ দে’ কাভার করে ইউটিউবে আপ করলে জাল ব্যান্ডের নজরে পড়েন কুরাতুলাইন।
পরের খবর সবার জানা। ২০১১ সালে দলটির সাথে কোক স্টুডিওতে ‘পাঞ্চি’ গানে পারফর্ম করেন। কুরাতুলাইন স্বীকার করেন, খুবই ভয়ের মধ্যে ছিলেন। কিন্তু মাথা নিচু করে পারফর্ম্যান্সে নিজেকে উজাড় করা দেওয়ার চেষ্টা করেন আর দেশব্যাপী মনোযোগ কাড়েন।
জনপ্রিয়তার মহিমার দিকে কুরাতুলাইনের নজর ছিল অন্যরকম। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের কিছু সময় স্বেচ্ছায় লাইমলাইটের আড়ালে যান।
তিনি জানান, স্পটলাইট অনেক চাপে থাকার বেশি কিছু নয়। সঙ্গে যোগ করেন, আমি শিখেছি সৃজনশীল প্রকাশ থেকে আপনি যা-ই করেন তা পুরো সততার সঙ্গে করা উচিত। কারণ এর সঙ্গে যদি আপনি সংযোগ স্থাপন করতে না পারেন, জনগণের সঙ্গেও পারবেন না।
‘এ কারণে যখন আমি আড়ালে চলে গেলাম এটা ছিল নিজের সঙ্গে সংযোগের চেষ্টা। কারণ আমি নির্ভরশীল ছিলাম বাইরের শক্তির উপর’।
কুরাতুলাইন বলেন, তারা আপনার সামনে একরকম, আর পেছনে অন্যরকম। এন্টারটেইনমেন্ট ব্যবসা খুব প্রতারণাপূর্ণ। শুরুতে আমি খুঁটিনাটি কিছু জানতাম না কিন্তু এখন অনেক কিছু বুঝতে পারি।
কুরাতুলাইন মনে করেন, তার সামাজিক আবহে বেশিরভাগ মানুষ গানকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে না।
এ গায়িকার ভাষ্য, এর মাঝে ভুল কিছু নেই। কিন্তু বিখ্যাত হওয়া অনেক চাপের ও দায়িত্বের। এখনো আমি সেই দায়িত্ব হিসেবে ইচ্ছুক নই। আমি আইডল হতে চাই না। চাই না অনুপ্রেরণা হতে। আসলেই না। আমি শুধু একজন মানুষ। আমি শিখছিও।
‘হামসফর’ সিরিয়ালের গান কুরাতুলাইনের নাম ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কোক স্টুডিও’র সিজন ফোর আমাকে মূলধারায় নিয়ে আসে। ওয়াকার আলী আমাকে ডাকলেন। কারণ হামটিভি চাইছিল আবিদা পারভীনজীর গজলে কণ্ঠ দিই। আমি বিস্মিত ও নার্ভাস হয়ে গেলাম।
তিনি জানান, ওই গানের প্রতিক্রিয়া ছিল বিস্ময়কর।
কুরাতুলাইন নিজের কোন গান তার বেশি পছন্দের এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, সবই। লাল মেরি পাট বাদ দিয়ে।
কোক স্টুডিও সিজন দশের জন্য আকবর আলী ও আরেব আজহারের সঙ্গে গানটি নিয়ে যেমন পরিকল্পনা ছিল সেভাবে হয়নি। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। তিনি মনে করেন নিজের সেরাটা দিতে পারেননি।
নিজেকে সমালোচনা করতে পিছপা হন না কুরাতুলাইন। নিজেকে কট্টর সমালোচক মনে করেন। তার মতে, ‘লাল মেরি পাট’-এ ভালো করা ছিল তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার মনোযোগ ছিল অন্য কোথাও। গানে পুরোপুরি উপস্থিত ছিলেন না। দ্বিতীয়ত গানের স্কেল নির্বাচনে তিনি ভুল করেছিলেন।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউড সিনেমা ‘পিঙ্ক’-এ ‘কারি কারি’ গানে কণ্ঠ দেন কুরাতুলাইন। এর আগেও বলিউডের আরেক সুরকার অমিত ত্রিবেদির সঙ্গে একটি গান করেন, কিন্তু প্রকাশ হয়নি। কুরাতুলাইনের মতে, ধন্যবাদ যে গানটি প্রকাশ হয়নি। এ কারণে আমি মনে করি- যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
‘কারি কারি’ নিয়ে বলেন, যখন আমাকে লিরিক পাঠানো হলো খুবই পছন্দ করলাম। ভাবলাম আমাকে এটা করতেই হবে। যদি এক টাকাও না দেয় তারপরও গানটি করতে চাই।
অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা হিসেবে ‘পিঙ্ক’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন কুরাতুলাইন, কিন্তু গানটিই ছিল মনোযোগের কেন্দ্র।
বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গান নিয়ে কাজ করছি। আমি চেষ্টা করছি লেখার কিন্তু যে ভাব প্রকাশ করতে চাই শব্দ ভাণ্ডার সম্পর্কে কম জানায় সঠিক শব্দের অভাবে ভুগছি। এছাড়া ধ্রুপদী তালিম নিচ্ছি।
কুরাতুলাইনের কণ্ঠের জোর নিয়ে দ্বিমত নেই কারো। কমপ নতুন তালিম কোনো পার্থক্য তৈরি করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমার পরিধিকে বিস্তৃত করছে। কণ্ঠস্বর দিয়ে কী করতে পারি অবহিত করছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:৩৪

নিজ দেশ পাকিস্তানে কুরাতুলাইন বেলুচের পরিচিতি সুপার-হিট টিভি ড্রামা ‘হামসফর’-এর কণ্ঠশিল্পী হিসেবে। আর কোক স্টুডিও’র একাধিক সিজনের উপস্থিতির কারণে বিদেশের সংগীতপ্রেমীদের কাছেও পরিচিত তিনি।
অনুষ্ঠানটির সর্বশেষ সিজনে বিখ্যাত ‘লাল মেরি পাট’ গানে কণ্ঠ দেন কুরাতুলাইন। তবে নিজের পারফর্ম্যান্সে একদমই খুশি নন। জানালেন, নিজের কট্টর সমালোচক তিনি।
সম্প্রতি ডন পত্রিকার পক্ষ থেকে কুরাতুলাইনের মুখোমুখি হন মাদিহা সৈয়দ। নিজের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে মুখ খুলেন কুরাতুলাইন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সে দিন কুরাতুলাইনের আউটফিট ছিল সাদাসিধে, ছিল না মেকআপ। চোখে ছিল চমশা, আর হাতে একটা বই। কী বই পড়ছেন? এর প্রশ্নে বলেন, জর্ডান পিটারসনের লেখা ‘টুয়েলভ রুলস ফর লাইফ’। যখন আমি ভ্রমণ থাকি তখন পড়ি। আমি এ মুহূর্তে ভ্রমণে আছি। বাড়ি থেকে দূরে আছি।
আপনাকে ‘কিউবি’ ডাকা পছন্দ করেন না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কারণ কান্দিল বেলুচকেও ‘কিউবি’ ডাকা হতো। এ নামে ডাকলে আমি স্বস্তিবোধ করি না।”
২০১৬ সালে মডেল কান্দিল বেলুচ খুন হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হন কুরাতুলাইন। এ বিষয়ে জনপ্রিয় এ গায়িকা বলেন, তখন আমার প্রথম নামে ডাকার জন্য বললাম লোকজন। কান্দিল বেলুচ ছিলেন সমাজের প্রতিবিম্ব। সে নিজের সত্যটা জানিয়েছিল।
কুরাতুলাইন জানান, বাড়িতে তাকে ‘শেরি’ নামে ডাকা হয়। তিনি হেসে বললেন, আমার বাবা প্রথমে নাম দিয়েছিলেন শাহেরা। দুই বছর পর আমার বোন জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয় নূরুলাইন। তখন আমার নাম দেওয়া হয় কুরাতুলাইন কিন্তু শেরি থেকে গেল। পরিবারের কাছে আমি শেরি কিন্তু কোনো বন্ধু এ নামে ডাকুক আমার পছন্দ নয়। কারণ, এটা কিছুটা ব্যক্তিগত।
নিজের নাম কুরাতুলাইনের অর্থ ‘চক্ষু শীতলকারী’ অথবা বাগধারা হিসেবে ‘চোখের মণি’ বলে জানান এই পাকিস্তানী। তবে শাহেরার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জানি না! হাসতে হাসতে বললেন, বিখ্যাত কেউ হবেন।
কুরাতুলাইনের জন্ম ও বেড়ে উঠা পাকিস্তানে। কিশোরী বয়সে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান, মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন ২০১১ সালে।
নিজের বিষয়ে তার মত “আমি অনেকটা পর্যটকের মতো। খুঁজছিলাম এ জীবনে কী করতে চাই। গতানুগতিক কিছু নয়, এটা নিশ্চিত। কিন্তু এমন কিছু যা আমাকে প্রতিফলিত করবে। এনজিও’র সঙ্গে যুক্ত হলাম। ত্রাণ নিয়ে খাইবার পাখতুনওয়া ও আজাদ কাশ্মিরে গিয়েছিলাম, তখন দারুণ কিছু মানুষের সংস্পর্শে আসি।”
ওই সময় আলী নূর, আলী হামজা, মেকাল হাসানের মতো পাকিস্তানি সংগীতশিল্পের নামি ব্যক্তিদের সাথে কুরাতুলাইনের পরিচয়। একদিন তাদের গান শোনান। এর আগে তারা কেউ কুরাতুলাইনের গান শুনেননি।
তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল জানতে চাইলে হাসতে হাসতে বলেন তিনি বলেন, তারা খুব অবাক হয়েছিল। কারণ এতটা আশা করেনি। তারা বলেছিল ‘এ পকেট রকেট’।
এর পর বিখ্যাত লোক গায়িকা রেশমা’র গান ‘আঁখে নু রেহ দে’ কাভার করে ইউটিউবে আপ করলে জাল ব্যান্ডের নজরে পড়েন কুরাতুলাইন।
পরের খবর সবার জানা। ২০১১ সালে দলটির সাথে কোক স্টুডিওতে ‘পাঞ্চি’ গানে পারফর্ম করেন। কুরাতুলাইন স্বীকার করেন, খুবই ভয়ের মধ্যে ছিলেন। কিন্তু মাথা নিচু করে পারফর্ম্যান্সে নিজেকে উজাড় করা দেওয়ার চেষ্টা করেন আর দেশব্যাপী মনোযোগ কাড়েন।
জনপ্রিয়তার মহিমার দিকে কুরাতুলাইনের নজর ছিল অন্যরকম। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের কিছু সময় স্বেচ্ছায় লাইমলাইটের আড়ালে যান।
তিনি জানান, স্পটলাইট অনেক চাপে থাকার বেশি কিছু নয়। সঙ্গে যোগ করেন, আমি শিখেছি সৃজনশীল প্রকাশ থেকে আপনি যা-ই করেন তা পুরো সততার সঙ্গে করা উচিত। কারণ এর সঙ্গে যদি আপনি সংযোগ স্থাপন করতে না পারেন, জনগণের সঙ্গেও পারবেন না।
‘এ কারণে যখন আমি আড়ালে চলে গেলাম এটা ছিল নিজের সঙ্গে সংযোগের চেষ্টা। কারণ আমি নির্ভরশীল ছিলাম বাইরের শক্তির উপর’।
কুরাতুলাইন বলেন, তারা আপনার সামনে একরকম, আর পেছনে অন্যরকম। এন্টারটেইনমেন্ট ব্যবসা খুব প্রতারণাপূর্ণ। শুরুতে আমি খুঁটিনাটি কিছু জানতাম না কিন্তু এখন অনেক কিছু বুঝতে পারি।
কুরাতুলাইন মনে করেন, তার সামাজিক আবহে বেশিরভাগ মানুষ গানকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে না।
এ গায়িকার ভাষ্য, এর মাঝে ভুল কিছু নেই। কিন্তু বিখ্যাত হওয়া অনেক চাপের ও দায়িত্বের। এখনো আমি সেই দায়িত্ব হিসেবে ইচ্ছুক নই। আমি আইডল হতে চাই না। চাই না অনুপ্রেরণা হতে। আসলেই না। আমি শুধু একজন মানুষ। আমি শিখছিও।
‘হামসফর’ সিরিয়ালের গান কুরাতুলাইনের নাম ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কোক স্টুডিও’র সিজন ফোর আমাকে মূলধারায় নিয়ে আসে। ওয়াকার আলী আমাকে ডাকলেন। কারণ হামটিভি চাইছিল আবিদা পারভীনজীর গজলে কণ্ঠ দিই। আমি বিস্মিত ও নার্ভাস হয়ে গেলাম।
তিনি জানান, ওই গানের প্রতিক্রিয়া ছিল বিস্ময়কর।
কুরাতুলাইন নিজের কোন গান তার বেশি পছন্দের এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, সবই। লাল মেরি পাট বাদ দিয়ে।
কোক স্টুডিও সিজন দশের জন্য আকবর আলী ও আরেব আজহারের সঙ্গে গানটি নিয়ে যেমন পরিকল্পনা ছিল সেভাবে হয়নি। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। তিনি মনে করেন নিজের সেরাটা দিতে পারেননি।
নিজেকে সমালোচনা করতে পিছপা হন না কুরাতুলাইন। নিজেকে কট্টর সমালোচক মনে করেন। তার মতে, ‘লাল মেরি পাট’-এ ভালো করা ছিল তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার মনোযোগ ছিল অন্য কোথাও। গানে পুরোপুরি উপস্থিত ছিলেন না। দ্বিতীয়ত গানের স্কেল নির্বাচনে তিনি ভুল করেছিলেন।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউড সিনেমা ‘পিঙ্ক’-এ ‘কারি কারি’ গানে কণ্ঠ দেন কুরাতুলাইন। এর আগেও বলিউডের আরেক সুরকার অমিত ত্রিবেদির সঙ্গে একটি গান করেন, কিন্তু প্রকাশ হয়নি। কুরাতুলাইনের মতে, ধন্যবাদ যে গানটি প্রকাশ হয়নি। এ কারণে আমি মনে করি- যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
‘কারি কারি’ নিয়ে বলেন, যখন আমাকে লিরিক পাঠানো হলো খুবই পছন্দ করলাম। ভাবলাম আমাকে এটা করতেই হবে। যদি এক টাকাও না দেয় তারপরও গানটি করতে চাই।
অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা হিসেবে ‘পিঙ্ক’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন কুরাতুলাইন, কিন্তু গানটিই ছিল মনোযোগের কেন্দ্র।
বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গান নিয়ে কাজ করছি। আমি চেষ্টা করছি লেখার কিন্তু যে ভাব প্রকাশ করতে চাই শব্দ ভাণ্ডার সম্পর্কে কম জানায় সঠিক শব্দের অভাবে ভুগছি। এছাড়া ধ্রুপদী তালিম নিচ্ছি।
কুরাতুলাইনের কণ্ঠের জোর নিয়ে দ্বিমত নেই কারো। কমপ নতুন তালিম কোনো পার্থক্য তৈরি করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমার পরিধিকে বিস্তৃত করছে। কণ্ঠস্বর দিয়ে কী করতে পারি অবহিত করছে।