সিনেমার চরিত্রে গানের পিন্টু ঘোষ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ মার্চ, ২০২১ ২৩:৩৯
আগে অল্প বিস্তর নাটকে অভিনয় করলেও এবার সিনেমায় নাম লেখালেন গানের পিন্টু ঘোষ। তাকে দেখা যাবে তৌকির আহমেদ পরিচালিত ‘স্ফুলিঙ্গ’ সিনেমায়। এ বিষয়ে পিন্টু ঘোষ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিনেমায় অভিনয় করলাম। যদিও এর আগে বেশ ক’টি উল্লেখযোগ্য নির্মাতার সঙ্গে নাটকে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবু বলছি, আমি অভিনয়ের আমি কিছুই জানি না। ভাগ্যক্রমে কিছু কাজ করেছি মাত্র।’
পর্দায় পিন্টু ঘোষকে দেখা যাবে রাজু নামের একজন মিউজিশিয়ানের চরিত্রে। তার ভাষায়, ‘বড় কোনও চরিত্র নয় এটা। গল্পের কেন্দ্রে যে চরিত্রগুলো থাকে তাদের জন্য সাপোর্টিভ একটা ক্যারেক্টার হলো রাজু। আর পুরো গল্পের সিংহভাগজুড়েই থাকে একদল তরুণ মিউজিশিয়ান। ফলে পর্দার পেছনে ও সামনে কাজ করতে আমার দ্বিধা হয়নি, বরং আরামই লেগেছে।’
পিন্টু ঘোষ প্রথম অভিনয় করেন ২০০৫ সালে। গোলাম সোহরাব দোদুলের নাটক ‘কৃষ্ণগহ্বর’-এ। তারপর একই নির্মাতার ‘আগন্তুক’ এবং গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কেউ কেউ মৃত জোনাকি’ নাটকে কাজ করেন পিন্টু।
অভিনয় নিয়ে পিন্টু বলেন, ‘আমি মূলত মিউজিকটাই করার চেষ্টা করি। অভিনয়ের বিষয়টি একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা ঠিক, এখন পর্যন্ত যে কয়েকটি নাটক করেছি অসম্ভব গুণী নির্মাতাদের সঙ্গ পেয়েছি। আর তৌকীর ভাইয়ের সঙ্গে শেষের কাজটা তো নিজের বলেই দাবি করছি। কাজটির জন্য খুব অল্প সময় পেয়েছি। তবে প্রজেক্টটির সঙ্গে মিশে গেছি সবাই। পুরো টিম মিলে অভিনয়-মিউজিকের কাজটি করেছি। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম শট নেয়া হল রাত ২.১৫ এর দিকে। গাজীপুরে শুটিং করছিলাম আমরা, খুবই শীত তখন। তার উপরে সিনেমায় শীতকাল দেখানো হচ্ছে না, তাই আমি চাইলেও গরম কাপড় পরতে পারব না। তার উপরে আমার প্রথম শটই নেয়া হচ্ছিল সুইমিংপুলের পাশে। ঠান্ডা কাকে বলে!!! আমার মনে হচ্ছিল আমার গলা দিয়ে কোন আওয়াজই বের হবে না। তখন বুঝলাম অভিনয় করাটা আসলে কী পরিমাণ কঠিন কাজ! বিশাল ধৈর্য লাগে আসলে। সাধারণত মনে হয়- ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে দুইটা সংলাপ বলে দিলাম- অভিনয় আর এর চেয়ে বেশি কি জিনিস? জিনিসটা যতটা সোজা মনে হয়, জিনিসটা আসলে ততটাই কঠিন। তবে ডিরেক্টর আর বাকিদের কো অপারেশন থাকলে জিনিসটা অসম্ভব কিছু না। ডিরেক্টর তৌকীর আহমেদ আমাকে খুবই হেল্প করেছেন। আমি গানের মানুষ। সাধারণত কোন গান গাওয়ার সময় মিউজিক ডিরেক্টরের সামনে দাঁড়ালে এখনও প্রথম প্রথম একটু ভয় লাগে, গলাটা খানিকটা কাঁপে। তখন গানটা খুব একটা ভাল না হলেও মিউজিক ডিরেক্টররা বলেন- হচ্ছে হচ্ছে, আরেকবার যাই চলেন। তৌকীর ভাইও সেম জিনিসটা এপ্লাই করেছিলেন।
নিয়মিত অভিনয় করবেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনয় তো আমার জায়গা না, গান আমার জায়গা। তবে যদি কেউ কখনও কোন ক্যারেক্টর এপ্রোচ করে আর আমাকে যদি পর্যাপ্ত সময় দেয়, আমি তাহলে চেষ্টা করে দেখব। আমি ক্যারেক্টর হয়ে ওঠার জন্য সময় দেব। হুট করে ফোন করে কেউ বলবে- ভাই, কাল আপনার শুটিং, কস্টিউম নিয়ে চলে আসেন- সেই ধরনের কাজ আমার দ্বারা হবে না।’
এদিকে শুধু অভিনয় নয়,‘স্ফুলিঙ্গ’র সংগীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন পিন্টু ঘোষ। এতে তার সঙ্গে আছেন রোকন ইমন। দুজনে মিলে নির্মাতার সমর্থন নিয়ে সিনেমার জন্য নতুন করে বেঁধেছেন জর্জ হ্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ গানটি। থাকছে প্রেম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নিয়েও গান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্ফুলিঙ্গ’ মুক্তি পাচ্ছে ১৯ মার্চ। তবে ১৭ মার্চ হবে ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনী। মামুনুর রশীদ, আবুল হায়াত, আজাদ আবুল কালাম, জাকিয়া বারী মম, ওবিদ রেহান, পরীমনি, শ্যামল মাওলা, এ কে আজাদ সেতুসহ ৫০ জনের মতো শিল্পী অভিনয় করেছেন ছবিটিতে। স্বপ্নের বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রযোজনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে তরুণদের একটি ব্যান্ডকে ঘিরে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ মার্চ, ২০২১ ২৩:৩৯

আগে অল্প বিস্তর নাটকে অভিনয় করলেও এবার সিনেমায় নাম লেখালেন গানের পিন্টু ঘোষ। তাকে দেখা যাবে তৌকির আহমেদ পরিচালিত ‘স্ফুলিঙ্গ’ সিনেমায়। এ বিষয়ে পিন্টু ঘোষ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিনেমায় অভিনয় করলাম। যদিও এর আগে বেশ ক’টি উল্লেখযোগ্য নির্মাতার সঙ্গে নাটকে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবু বলছি, আমি অভিনয়ের আমি কিছুই জানি না। ভাগ্যক্রমে কিছু কাজ করেছি মাত্র।’
পর্দায় পিন্টু ঘোষকে দেখা যাবে রাজু নামের একজন মিউজিশিয়ানের চরিত্রে। তার ভাষায়, ‘বড় কোনও চরিত্র নয় এটা। গল্পের কেন্দ্রে যে চরিত্রগুলো থাকে তাদের জন্য সাপোর্টিভ একটা ক্যারেক্টার হলো রাজু। আর পুরো গল্পের সিংহভাগজুড়েই থাকে একদল তরুণ মিউজিশিয়ান। ফলে পর্দার পেছনে ও সামনে কাজ করতে আমার দ্বিধা হয়নি, বরং আরামই লেগেছে।’
পিন্টু ঘোষ প্রথম অভিনয় করেন ২০০৫ সালে। গোলাম সোহরাব দোদুলের নাটক ‘কৃষ্ণগহ্বর’-এ। তারপর একই নির্মাতার ‘আগন্তুক’ এবং গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কেউ কেউ মৃত জোনাকি’ নাটকে কাজ করেন পিন্টু।
অভিনয় নিয়ে পিন্টু বলেন, ‘আমি মূলত মিউজিকটাই করার চেষ্টা করি। অভিনয়ের বিষয়টি একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা ঠিক, এখন পর্যন্ত যে কয়েকটি নাটক করেছি অসম্ভব গুণী নির্মাতাদের সঙ্গ পেয়েছি। আর তৌকীর ভাইয়ের সঙ্গে শেষের কাজটা তো নিজের বলেই দাবি করছি। কাজটির জন্য খুব অল্প সময় পেয়েছি। তবে প্রজেক্টটির সঙ্গে মিশে গেছি সবাই। পুরো টিম মিলে অভিনয়-মিউজিকের কাজটি করেছি। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম শট নেয়া হল রাত ২.১৫ এর দিকে। গাজীপুরে শুটিং করছিলাম আমরা, খুবই শীত তখন। তার উপরে সিনেমায় শীতকাল দেখানো হচ্ছে না, তাই আমি চাইলেও গরম কাপড় পরতে পারব না। তার উপরে আমার প্রথম শটই নেয়া হচ্ছিল সুইমিংপুলের পাশে। ঠান্ডা কাকে বলে!!! আমার মনে হচ্ছিল আমার গলা দিয়ে কোন আওয়াজই বের হবে না। তখন বুঝলাম অভিনয় করাটা আসলে কী পরিমাণ কঠিন কাজ! বিশাল ধৈর্য লাগে আসলে। সাধারণত মনে হয়- ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে দুইটা সংলাপ বলে দিলাম- অভিনয় আর এর চেয়ে বেশি কি জিনিস? জিনিসটা যতটা সোজা মনে হয়, জিনিসটা আসলে ততটাই কঠিন। তবে ডিরেক্টর আর বাকিদের কো অপারেশন থাকলে জিনিসটা অসম্ভব কিছু না। ডিরেক্টর তৌকীর আহমেদ আমাকে খুবই হেল্প করেছেন। আমি গানের মানুষ। সাধারণত কোন গান গাওয়ার সময় মিউজিক ডিরেক্টরের সামনে দাঁড়ালে এখনও প্রথম প্রথম একটু ভয় লাগে, গলাটা খানিকটা কাঁপে। তখন গানটা খুব একটা ভাল না হলেও মিউজিক ডিরেক্টররা বলেন- হচ্ছে হচ্ছে, আরেকবার যাই চলেন। তৌকীর ভাইও সেম জিনিসটা এপ্লাই করেছিলেন।
নিয়মিত অভিনয় করবেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনয় তো আমার জায়গা না, গান আমার জায়গা। তবে যদি কেউ কখনও কোন ক্যারেক্টর এপ্রোচ করে আর আমাকে যদি পর্যাপ্ত সময় দেয়, আমি তাহলে চেষ্টা করে দেখব। আমি ক্যারেক্টর হয়ে ওঠার জন্য সময় দেব। হুট করে ফোন করে কেউ বলবে- ভাই, কাল আপনার শুটিং, কস্টিউম নিয়ে চলে আসেন- সেই ধরনের কাজ আমার দ্বারা হবে না।’
এদিকে শুধু অভিনয় নয়,‘স্ফুলিঙ্গ’র সংগীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন পিন্টু ঘোষ। এতে তার সঙ্গে আছেন রোকন ইমন। দুজনে মিলে নির্মাতার সমর্থন নিয়ে সিনেমার জন্য নতুন করে বেঁধেছেন জর্জ হ্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ গানটি। থাকছে প্রেম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নিয়েও গান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্ফুলিঙ্গ’ মুক্তি পাচ্ছে ১৯ মার্চ। তবে ১৭ মার্চ হবে ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনী। মামুনুর রশীদ, আবুল হায়াত, আজাদ আবুল কালাম, জাকিয়া বারী মম, ওবিদ রেহান, পরীমনি, শ্যামল মাওলা, এ কে আজাদ সেতুসহ ৫০ জনের মতো শিল্পী অভিনয় করেছেন ছবিটিতে। স্বপ্নের বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রযোজনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে তরুণদের একটি ব্যান্ডকে ঘিরে।