`আমি পেয়েছিলাম ওই দুর্লভেরে, মিলিবে কি আর…’
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ মে, ২০২২ ২১:৪৩
‘পরীমণি তুমি আমার জন্য কেঁদো না’ শিরোনামে কবিতা লিখেছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। সেই কবিতা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে সদ্য প্রয়াত এই বরেণ্য কলামিস্ট ও সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নায়িকা পরীমণি।
বৃহস্পতিবার রাতে এই চিত্রনায়িকা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি পেয়েছিলাম ঐ দুর্লভেরে। মিলিবে কি আর...।’
আলোচিত বোটক্লাবে হেনস্তার শিকার হন নায়িকা পরীমণি। সেই ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর ঢালিউড নায়িকা পরীমণিকে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। গ্রেপ্তারের পর নায়িকার মুক্তির জন্য সরব ছিলেন তিনি।
শাহবাগ, প্রেসক্লাবসহ যেখানে পরীমণির মুক্তির জন্য মানববন্ধন হয়েছে, সেখানে লন্ডন থেকে মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, পরীমণির মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেন তিনি। পরে নায়িকা পরীমণিকে নিয়ে একটি কবিতাও লেখেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
তুমি আমার জন্য কেঁদেছ, শরতের আকাশের
চুপিসারি কান্না,
যা শিশির হয়ে টুপটাপ ঝরে।
আমি রোগশয্যায় শুয়ে শুনেছি সেই রোদন
তুমি কেন আমার জন্য কাঁদলে
আমি টেলিফোনে শুনেছি তোমার সেই কান্না
নায়াগ্রায় দাঁড়িয়ে যে জলপ্রপাতের
শব্দ শুনেছিলাম
তোমার কান্না সেই শব্দের সংগীতকে স্তব্ধ করেছে।
এখানে বড় ঠান্ডা, সেই ঠান্ডায় তোমার কান্না
উষ্ণ জলপ্রপাতের কাজ করেছে
আমার হৃদয়ে।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেন কাঁদলে
কেন হৃদয় দিয়ে হৃদয় বাঁধলে
ওরা তোমাকে বলে চরিত্রহীনা, আকাশনীলা পাখি
আমি জানি, তুমি শরতের শিশির ধোয়া
শিউলির মতো সুচরিতা।
ছবি দেখেছি, জেল থেকে বেরিয়ে আসছো-
দুই হাত ঊর্ধ্বমুখী জোয়ান অব আর্কের মতো
ওরা তোমাকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল
তুমি স্ফিংসের মতো জেগে উঠেছ
দুই ডানায় আগুনের ফুল।
পরীমণি, ওরা তোমাকে দ্রৌপদী বানাতে চেয়েছিল
তুমি হয়ে গেলে দয়মন্তী।
তোমার কান্না আমার মগ্নচৈতন্যকে স্পর্শ করেছে
তোমার চোখের কান্নায় দেখেছি আমার মায়ের-
চোখের জল।
তুমি তেরো নদী সাত সমুদ্র পেরিয়ে
আমাকে সিক্ত করলে মায়ের সেই চোখের জলে।
তোমার কান্না আমার বেদনাকে
ছুঁয়ে গেছে।
তুমি স্কাইলার্কের গান শুনেছ
বিলাতের বসন্তের বাগানে?
সুন্দরী পাখিটির কণ্ঠে কান্নাই গান
তুমি ওই স্কাইলার্কের মতো
আমাকে তোমার কান্না শোনালে
কান্না নয় গান, চোখের জল নয়
হৃদয়ের প্লাবন।
ভারত মহাসাগর পেরিয়েছে
তোমার কান্না, বঙ্গোপসাগরেও
বনানীর জলপাই রঙের বাড়িটা ছেড়ে
চাঁদপুরের পুরোনো বন্দরটা পেরিয়ে
মেঘনার জলকে টেমসের সঙ্গে মিশিয়ে
কার্তিকের চাঁদ হয়ে ঝুলে আছে
আমার রোগশয্যার বারান্দায়।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
মায়ের মতো ভালোবাসার
দুবাহু বাড়ায়ে দিয়ো না
ভালোবাসা বড় দুর্লভ সৌরভ
সুগন্ধির দোকানে কখনো পাবে না।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ মে, ২০২২ ২১:৪৩

‘পরীমণি তুমি আমার জন্য কেঁদো না’ শিরোনামে কবিতা লিখেছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। সেই কবিতা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে সদ্য প্রয়াত এই বরেণ্য কলামিস্ট ও সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নায়িকা পরীমণি।
বৃহস্পতিবার রাতে এই চিত্রনায়িকা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি পেয়েছিলাম ঐ দুর্লভেরে। মিলিবে কি আর...।’
আলোচিত বোটক্লাবে হেনস্তার শিকার হন নায়িকা পরীমণি। সেই ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর ঢালিউড নায়িকা পরীমণিকে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। গ্রেপ্তারের পর নায়িকার মুক্তির জন্য সরব ছিলেন তিনি।
শাহবাগ, প্রেসক্লাবসহ যেখানে পরীমণির মুক্তির জন্য মানববন্ধন হয়েছে, সেখানে লন্ডন থেকে মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, পরীমণির মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেন তিনি। পরে নায়িকা পরীমণিকে নিয়ে একটি কবিতাও লেখেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
তুমি আমার জন্য কেঁদেছ, শরতের আকাশের
চুপিসারি কান্না,
যা শিশির হয়ে টুপটাপ ঝরে।
আমি রোগশয্যায় শুয়ে শুনেছি সেই রোদন
তুমি কেন আমার জন্য কাঁদলে
আমি টেলিফোনে শুনেছি তোমার সেই কান্না
নায়াগ্রায় দাঁড়িয়ে যে জলপ্রপাতের
শব্দ শুনেছিলাম
তোমার কান্না সেই শব্দের সংগীতকে স্তব্ধ করেছে।
এখানে বড় ঠান্ডা, সেই ঠান্ডায় তোমার কান্না
উষ্ণ জলপ্রপাতের কাজ করেছে
আমার হৃদয়ে।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেন কাঁদলে
কেন হৃদয় দিয়ে হৃদয় বাঁধলে
ওরা তোমাকে বলে চরিত্রহীনা, আকাশনীলা পাখি
আমি জানি, তুমি শরতের শিশির ধোয়া
শিউলির মতো সুচরিতা।
ছবি দেখেছি, জেল থেকে বেরিয়ে আসছো-
দুই হাত ঊর্ধ্বমুখী জোয়ান অব আর্কের মতো
ওরা তোমাকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল
তুমি স্ফিংসের মতো জেগে উঠেছ
দুই ডানায় আগুনের ফুল।
পরীমণি, ওরা তোমাকে দ্রৌপদী বানাতে চেয়েছিল
তুমি হয়ে গেলে দয়মন্তী।
তোমার কান্না আমার মগ্নচৈতন্যকে স্পর্শ করেছে
তোমার চোখের কান্নায় দেখেছি আমার মায়ের-
চোখের জল।
তুমি তেরো নদী সাত সমুদ্র পেরিয়ে
আমাকে সিক্ত করলে মায়ের সেই চোখের জলে।
তোমার কান্না আমার বেদনাকে
ছুঁয়ে গেছে।
তুমি স্কাইলার্কের গান শুনেছ
বিলাতের বসন্তের বাগানে?
সুন্দরী পাখিটির কণ্ঠে কান্নাই গান
তুমি ওই স্কাইলার্কের মতো
আমাকে তোমার কান্না শোনালে
কান্না নয় গান, চোখের জল নয়
হৃদয়ের প্লাবন।
ভারত মহাসাগর পেরিয়েছে
তোমার কান্না, বঙ্গোপসাগরেও
বনানীর জলপাই রঙের বাড়িটা ছেড়ে
চাঁদপুরের পুরোনো বন্দরটা পেরিয়ে
মেঘনার জলকে টেমসের সঙ্গে মিশিয়ে
কার্তিকের চাঁদ হয়ে ঝুলে আছে
আমার রোগশয্যার বারান্দায়।
পরীমণি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
মায়ের মতো ভালোবাসার
দুবাহু বাড়ায়ে দিয়ো না
ভালোবাসা বড় দুর্লভ সৌরভ
সুগন্ধির দোকানে কখনো পাবে না।