সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন আজ
একবার যদি কেউ ভালোবাসতো
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জুলাই, ২০২২ ০৯:৫৮
বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী, সংগীত ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আব্দুল হাদীর ৮২তম জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক।
সৈয়দ আব্দুল হাদী বেড়ে উঠেছেন আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কলকাতায়। তবে তার কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর আর ঢাকায়। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুল হাই। তার বাবা ছিলেন ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) অফিসার। তার বাবা গান গাইতেন আর কলেরগানে গান শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার শখের গ্রামোফোন রেকর্ডের গান শুনে কৈশোরে তিনি সঙ্গীত অনুরাগী হয়ে উঠেন। ছোটবেলা থেকে গাইতে গাইতে গান শিখেছেন।
১৯৫৮ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সৈয়দ আব্দুল হাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন।
সৈয়দ আবদুল হাদী দেশাত্ববোধক গানের জন্য জনপ্রিয়। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সঙ্গীত করছেন। ১৯৬০ সালে ছাত্রজীবন থেকেই চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী একক কণ্ঠে প্রথম বাংলা সিনেমায় গান করেন। সিনেমার নাম ছিল ‘ডাকবাবু’। মো. মনিরুজ্জামানের রচনায় সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেনের সুরে একটি গানের মাধ্যমে সৈয়দ আবদুল হাদীর চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু।
বেতারে গাওয়া তার প্রথম জনপ্রিয় গান ‘কিছু বলো, এই নির্জন প্রহরের কণাগুলো হৃদয়মাধুরী দিয়ে ভরে তোলো’। সালাউদ্দিন জাকি পরিচালিত ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের গানে সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন লাকী আখ্ন্দ। এই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গান ‘সখি চলনা, সখি চলনা জলসা ঘরে এবার যাই’- গেয়েছেন সৈয়দ আবদুল হাদী।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, এই পৃথিবীর পান্থশালায়, চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে, এমনও তো প্রেম হয়, কারও আপন হইতে পারলি না, কেউ কোন দিন আমারে তো, যেও না সাথী, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি, যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে, আমার বাবার কথা, আউল বাউল লালনের দেশে, বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয়, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো।
২০০০ সালে সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে ১০ হাজারের বেশি গান গেয়েছেন। তাঁর রয়েছে অজস্র একক অ্যালবাম ও মিশ্র অ্যালবাম।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জুলাই, ২০২২ ০৯:৫৮

বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী, সংগীত ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আব্দুল হাদীর ৮২তম জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক।
সৈয়দ আব্দুল হাদী বেড়ে উঠেছেন আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কলকাতায়। তবে তার কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর আর ঢাকায়। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুল হাই। তার বাবা ছিলেন ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) অফিসার। তার বাবা গান গাইতেন আর কলেরগানে গান শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার শখের গ্রামোফোন রেকর্ডের গান শুনে কৈশোরে তিনি সঙ্গীত অনুরাগী হয়ে উঠেন। ছোটবেলা থেকে গাইতে গাইতে গান শিখেছেন।
১৯৫৮ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সৈয়দ আব্দুল হাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন।
সৈয়দ আবদুল হাদী দেশাত্ববোধক গানের জন্য জনপ্রিয়। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সঙ্গীত করছেন। ১৯৬০ সালে ছাত্রজীবন থেকেই চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী একক কণ্ঠে প্রথম বাংলা সিনেমায় গান করেন। সিনেমার নাম ছিল ‘ডাকবাবু’। মো. মনিরুজ্জামানের রচনায় সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেনের সুরে একটি গানের মাধ্যমে সৈয়দ আবদুল হাদীর চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু।
বেতারে গাওয়া তার প্রথম জনপ্রিয় গান ‘কিছু বলো, এই নির্জন প্রহরের কণাগুলো হৃদয়মাধুরী দিয়ে ভরে তোলো’। সালাউদ্দিন জাকি পরিচালিত ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের গানে সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন লাকী আখ্ন্দ। এই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গান ‘সখি চলনা, সখি চলনা জলসা ঘরে এবার যাই’- গেয়েছেন সৈয়দ আবদুল হাদী।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, এই পৃথিবীর পান্থশালায়, চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে, এমনও তো প্রেম হয়, কারও আপন হইতে পারলি না, কেউ কোন দিন আমারে তো, যেও না সাথী, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি, যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে, আমার বাবার কথা, আউল বাউল লালনের দেশে, বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয়, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো।
২০০০ সালে সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে ১০ হাজারের বেশি গান গেয়েছেন। তাঁর রয়েছে অজস্র একক অ্যালবাম ও মিশ্র অ্যালবাম।