
পিওর রোমান্টিক ধাঁচের গল্পে সদ্যই উন্মুক্ত হয়েছে বিশেষ নাটক ‘ভালবাসার তিন দিন’। প্রচারে আসার পর থেকেই দর্শকমহলে প্রশংসিত হচ্ছে নাটকটি। মাত্র পাঁচ দিনেই নাটকটি দেখেছেন ৩২ লক্ষেরও বেশি দর্শক।
মহিদুল মহিমের পরিচালনায় নাটকটিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান ও সংগীতশিল্পী পড়শী। এর আগেও তারা জুটি বেঁধে দর্শকদের মন জয় করেছেন, এবারও তাই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে ইউটিউবে মন্তব্যের ঘরে সব ইতিবাচক মন্তব্য। দর্শক বলছে, নাটক নয়, যেন সিনেমা দেখলাম। এছাড়াও নাটকের গল্প, নির্মাণ, অভিনয়, মিউজিক, গান ও লোকেশন- সবকিছুতেই ছিল ভিন্নতার ছোঁয়া।
জোভান বলেন, কাজটি করতে গিয়ে আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। দর্শকরা এটি পছন্দ করেছেন। তাদের ভালো লাগাতে আমাদের সেই পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। আমাদের টিমের সবাইকে এবং দর্শকদের জানাই ভালোবাসা।
পড়শী বলেন, নাটকটি নিয়ে আমি প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলাম। প্রচারে আসার পর থেকে দর্শকদের কাছ থেকে এত এত ভালবাসা পাচ্ছি যে সত্যিই আমি মুগ্ধ। নাটকটির এই ব্যাপক সাফল্যে আমি সকল দর্শকদের প্রতি জানাই ভালোবাসা ও কাজের সাথে যুক্ত পুরো টিমকে জানাই অভিনন্দন।
নির্মাতা মহিদুল মহিম বলেন, আমার প্রতিটি নির্মাণ দর্শকদের জন্য। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি আমার কাজের মাধ্যমে দর্শকদের ভালোবাসা অর্জনের। আর সেই দর্শকদের কাছ থেকে নাটকটি নিয়ে এত রেসপন্স পাচ্ছি যে আমি সকল দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। জোভান ভাই ও পড়শীকে ধন্যবাদ তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য। নাটকটির প্রযোজক তানভীর মাহমুদ ভাইকে ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। সেই সাথে পুরো টিমকে অভিনন্দন।
নাটকটির বিজিএম করেন আভরাল সাহির। তারই সঙ্গীতায়োজনে নাটকের চারটি গানে তার সাথে কণ্ঠ দিয়েছেন কণা, কোণাল ও পড়শী।
মডেলদের নিয়ে এতদিন র্যাম্প শো করার কথা শোনা গেলেও বিড়াল নিয়ে দেশে কখনোই র্যাম্প শো আয়োজন করতে দেখা যায়নি। এবারই প্রথমবারের মত বিড়ালের র্যাম্প শো ও ‘যেমন খুশি তেমন সাজাও’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি)।
শনিবার (৩ জুন) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এগ্রিকালচারাল ক্লাব প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, র্যাম্প শোতে অংশ নিতে বিড়ালগুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে সাজিয়ে নিয়ে আসেন প্রতিযোগীরা। বিড়ালের চোখে সানগ্লাস, গায়ে শাড়ী-দামি পোশাক, গলায় বিভিন্ন রংয়ের ফিতা, মাথায় টুপি-মুকুট, কোমরে বেল্ট ও বিড়ালের গায়ে বিভিন্ন ধরণের কসমেটিকস দিয়ে সাজানো হয়।
‘যেমন খুশি তেমন সাজাও’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বিড়ালকে চিত্রনায়িকা পরীমণি রূপে উপস্থাপন করেন পদ্মা আবাসিক এলাকার রিদিতা। র্যাম্প শো-তে তার বিড়ালকে পরীমণি সাজিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে এবং পারফর্মেন্সের জন্য পুরস্কারও জিতেন।
রিদিতার ভাষ্য, আমার বিড়াল খুবই শান্তশিষ্ট। তাকে আজকে পরীমণি সাজিয়ে এখানে প্রদর্শন করা হয়েছে। দারুণ পারফর্ম করেছে আমার বিড়াল। তার (বিড়াল) ভালো পারফর্মে পুরস্কার পেয়েছি আমি।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন যাদের কেউ তাদের বিড়ালকে রানি এলিজাবেথ কেউবা আবার ডাক্তার সাজিয়ে প্রদর্শন করেন।
এ প্রতিযোগিতার আয়োজক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এগ্রিকালচারাল ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আমরা রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো বিড়াল র্যাম্প শো আয়োজন করেছি। রাজশাহীতে যারা বিড়াল পোষে তাদেরকে নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য ছিলো। আমরা অংশগ্রহণকারী বিড়ালগুলোকে ফ্রি মেডিকেল চেক-আপ, ভ্যাকসিন ও ডিওয়ার্মিং মেডিসিন দিয়েছি। এ র্যাম্প শো তে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের আমরা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দিয়ে থাকছি।
জানা গেছে, প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী জেলার প্রায় ৭০জন প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জন্য ছিলো আকর্ষণীয় পুরস্কার। র্যাম্প শো প্রদর্শন ও সাজানোর উপর ভিত্তি করে বিচারকদের মূল্যায়নে ৬ জন বিজয়ীকে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এদিকে র্যাম্প শো শেষে ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্পেইন-এর আয়োজন করা হয়।
এ প্রোগ্রামের আন্তর্জাতিক সমন্বয়ক ছিলেন ইন্টারন্যাশনয়াল সোসাইটি অব এপ্লাইড ইথোলজি প্রতিষ্ঠান। এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সস অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, কৃষি অনুষদের ডীন অধ্যাপক আব্দুল আলিম, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সভাপতি মোইজুর রহমান, এগ্রিকালচারাল ক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ প্রায় তিন শতাধিক দর্শক।
মুম্বাই এয়ারপোর্টে পাপারাজ্জির কবলে পড়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী অদিতি রাও ও তার প্রেমিক সিদ্ধার্থ। এ সময় পাপারাজ্জিরা তাদেরকে একসাথে ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে বললে রাজি হননি অভিনেত্রী।
তিনি বলেন, সম্ভব না। তবে সেটি মজার ছলেই বলেছিলেন অভিনেত্রী।
তাদের দুজনকে প্রায়ই একসাথে দেখা যায়। তাদের জন্মদিনের পোস্ট এবং একসাথে রিলস ভিডিওতে দেখা নিয়ে গুঞ্জন চারিদিকে যে তারা একে অপরকে ডেট করছেন। তবে এ বিষয়ে পাবলিকলি কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি তাদেরকে।
একটা টিকিট কিনলে আরেকটা ফ্রি! এই অফারের মধ্য দিয়েই শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ভিকি কৌশাল ও সারা আলি খান জুটির সিনেমা ‘জারা হটকে জারা বাঁচকে’। মুক্তির পর থেকেই ছবিটি নিয়ে মিলছে মিশ্র সমালোচনা।
সূত্রের খবর, ছবিটি এখন পর্যন্ত ৬ কোটি টাকা আয় করেছে। নানা সমালোচনার মাঝে সমালোচক কেআরকে ওরফে কমল আর খান তার টুইটারে একটি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। ছবিটির পর্যালোচনা শেয়ার করেছেন তিনি।
কমল লিখেন, ‘অবশেষে দেখেছি ‘জারা হটকে জারা বাঁচকে’ এবং কী যে খারাপ ছবি। টানা তিন ঘণ্টার অত্যাচার। এটা সময় এবং অর্থের সম্পূর্ণ অপচয়। ছবিটি এতটাই খারাপ যে প্রতিটি দৃশ্য বিরক্তিকর। এই ছবিটি কয়েকদিন পর জিও-তে বিনামূল্যে স্ট্রিম করা হবে। তাহলে প্রযোজকেরা এটিকে থিয়েটারে মুক্তি দিল? কাল্লু ভাই এবং সারা পুরো ওভার অ্যাক্টিং করেছেন। পরিচালনাও তেমন ছাপ ফেলার মতো নয়। আমার কাছ থেকে ওয়ান স্টার পাবে শুধু।’
অন্য একটি টুইটে, তিনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ করতে বলেছিলেন। কারণ, এখানে তার রাজ্যকে খারাপভাবে দেখান হয়েছে। কেআরকে লিখেছেন, ‘ছবিটি দেখাচ্ছে যে এমপি সরকারের সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তারা ঘুষ খেয়ে অযোগ্য লোকদেরকে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি দিচ্ছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী চৌহান শিবরাজজির উচিত এই ধরনের চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করা। যা তার সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকেও অভিযুক্ত করছে।’
কমল আরও যোগ করেছেন, ‘এমনকি জারা হটকে জারা বাঁচকে ছবিতে দেখানো হচ্ছে যে এমপিতে সবাই বদমাস। সে শিক্ষিত হোক বা অশিক্ষিত, আইনজীবী, বিচারক বা নিরাপত্তারক্ষী। তাই আমি মনে করি যে রাজ্য সরকারের অবিলম্বে এই ছবিটি নিষিদ্ধ করা উচিত।’
পরিচালক লক্ষ্মণ উতেকার পরিচালিত এবং জিও স্টুডিও এবং ম্যাডক ফিল্মস প্রযোজিত, এ সিনেমায় ইনামুল হক, সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়, নীরজ সুদ, রাকেশ বেদী এবং শরীব হাশমি মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন ছবিতে।
সূত্র: এই সময়
‘পাঠান’-এর ব্লকবাস্টার সাফল্যের পর এবার ‘টাইগার ৩’-এর জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে ওয়াইআরএফ (ইয়াশ রাজ ফিল্মস)। ‘পাঠান’-এর মতো ‘টাইগার ৩’ ছবিতেও এক ফ্রেমে ধরা দিতে চলেছেন শাহরুখ খান ও সালমান খান।
সিনেপর্দার করণ-অর্জুন জুটির সেই জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন যশরাজ কর্তা আদিত্য চোপড়া। ‘টাইগার ৩’-এর পর এবার ‘পাঠান ভার্সেস টাইগার’ ছবির পরিকল্পনা করেছেন আদিত্য চোপড়া। ছবিটি পরিচালনা করবেন সিদ্ধার্থ আনন্দ। ছবিটির জন্য পারিশ্রমিক হিসাবে কত টাকা পাচ্ছেন সিদ্ধার্থ?
খবর, ‘পাঠান’-এর সাফল্যের পরেই নিজের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে নিয়েছে পরিচালক। তার উপরে শাহরুখ ও সালমানের মতো দুই তারকাকে এক ছবিতে পরিচালনা করার দায়িত্ব। সিদ্ধার্থের পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে তাই কোন খামতি রাখতে চাইছে না যশরাজও।
শোনা যাচ্ছে, ‘পাঠান ভার্সের টাইগার’ ছবির জন্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন সিদ্ধার্থ। বলিউডে এখনও পর্যন্ত একজন পরিচালকের পারিশ্রমিক হিসাবে এই অঙ্কই সর্বোচ্চ। হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার ২’ ছবির জন্য অয়ন মুখোপাধ্যায় পাচ্ছেন ৩২ কোটি টাকা।
দক্ষিণী পরিচালক অ্যাটলির ‘জাওয়ান’ ছবির কাজ শেষ করে রাজকুমার হিরানির ‘ডাঙ্কি’ ছবির শুটিংয়ে ফিরবেন শাহরুখ খান। অন্যদিকে, আগামী বছর ঈদের ছবির জন্য করণ জোহর ও ধর্ম প্রোডাকশন্সের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন সালমান খান। দুই ছবির কাজ এগিয়ে রাখার পরেই ‘পাঠান ভার্সেস টাইগার’-এর সেটে দেখা মিলবে বলিউডের দুই নামী তারকার।
জনি ডেপের সঙ্গে মামলায় হারার পর নিজেকে অনেকটাই আড়াল করে নিয়েছিলেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ড। এরপর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে স্পেনে নিজের আবাস গড়েন অভিনেত্রী।
তখন থেকেই গুঞ্জন, হলিউড ছেড়ে দিচ্ছেন অ্যাম্বার। যদিও কিছুদিন আগে স্পেনের রাস্তায় প্রথমবারের মতো দেখা মেলে তার। তবে এবার প্রথমবারের মতো মিডিয়ার সামনে এলেন তিনি। জানান, এখনই হলিউড ছাড়ার কোনো কারণ নেই। সেই সঙ্গে এই মুহূর্তে জীবনটা বেশ উপভোগ করছেন বলেও জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পাপারাজ্জির টিকটকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে স্পেনে বসবাস এবং হলিউডে নিজের চলমান প্রজেক্ট সম্পর্কে কথা বলতে দেখা গেছে অ্যাম্বারকে। তিনি বলেন, আমি স্পেনকে অনেক ভালোবাসি। তবে হ্যাঁ, হলিউডে আমার কিছু প্রকল্প চলমান আছে। তাই আমার হলিউড ছাড়ার খবরটি নিছকই গুঞ্জন। আমি এগিয়ে যেতে চাই। এটাই জীবন।
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন স্বামী জনি ডেপের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার বিচারে হারার মাত্র তিন মাস পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে হার্ড ইউরোপে যাত্রা করেন। সে সময় আদালত ডেপকে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় অ্যাম্বার হার্ডকে। যা অ্যাম্বারের জন্য খুব কঠিন ছিল। তাই মামলাটির রায়ের জন্য পুনরায় আপিল করেছিলেন অ্যাম্বার। নভেম্বরের শেষের দিকে আপিল করে ৬৮ পৃষ্ঠার একটি নথি জমা দিয়েছিলেন অ্যাম্বার। তবে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না তারকার। তাই সেই আপিল তুলে নিয়ে স্পেনে স্থানান্তরিত হন এই তারকা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।