মাঠে নামতে পারেননি ধানের শীষের প্রার্থীরা
রেজাউল করিম লাবলু | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
হামলা ও গ্রেপ্তারের আতঙ্কের সঙ্গে মনোনয়ন না পেয়ে প্রত্যাখ্যাতদের অসহযোগিতার কারণে ধানের শীষের প্রার্থীরা পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট নেতারা।
তারা বলছেন, কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নপ্রত্যাখ্যাত নেতারা দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন না বলে তাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারা মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের ফোন করে নির্দেশনা দিলেও এলাকায় যাচ্ছেন না।
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারি দল ও পুলিশের আচরণের কারণে বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তারা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, গাজীপুর-৫ আসনের বিএনপিপ্রার্থী ফজলুল হক মিলনের সবকটি মামলায় জামিন থাকার পর গতকাল দুপুরে নিজ এলাকায় থেকে তাকে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এভাবে বিএনপির স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
দলের চূড়ান্ত প্রার্থীকে মনোনয়নবঞ্চিতদের সহযোগিতা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সহযোগিতা করবেন। রাগ-ক্ষোভ কমে এলে এমনিতেই তারা এলাকায় চলে যাবেন। এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে এস এম জিন্নাহ কবিরকে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, তিনি দলের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। আরো কয়েক দিন চেষ্টা করে যাবেন। তারপরও তিনি না এলে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। এ বিষয়ে জানতে ডাবলুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
কুষ্টিয়া-৩ আসনে বিএনপি নতুন প্রার্থী করেছে মো. জাকির হোসেনকে। তিনি এখনো জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারেননি; তবে এলাকায় অবস্থান করছেন। জাকির দেশ রূপান্তরকে বলেন, তার আসনের সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিনকে ফোন করলেও তিনি এলাকায় যাননি। তবে অধ্যক্ষ সোহরাব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভাইয়ের মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় এলাকায় যেতে পারছেন না। জটিলতা শেষ হলে এলাকায় যাবেন।
কুমিল্লা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে গণসংযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বলছিলেন, মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের দুই-চারজন সমস্যা করলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। মনোনয়নবঞ্চিতদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হচ্ছে। সবাই এক হয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাবেন।
সিলেট-৩ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে শফি আহমেদ চৌধুরীকে। সেখানে মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন সাবেক ছাত্র, যুবনেতা ও বর্তমান বিএনপি নেতা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। কাইয়ুম চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রার্থী ফোন না করলেও নিজের তাগিদে এলাকায় অবস্থান করছেন তিনি। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের দলের স্বার্থে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন এফ ই শরফুজ্জামান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া যাওয়ায় এলাকায় যাননি তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী সফর শেষ করে ঢাকা আসায় এখন দুয়েক দিনের মধ্যে এলাকায় যাবেন। সঙ্গে যাবেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সেলিমুজ্জামান সেলিম। এছাড়া গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে গোপালগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী এস এম জিলানী কারাগারে রয়েছেন। এ আসনে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শেয়ার করুন
রেজাউল করিম লাবলু | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

হামলা ও গ্রেপ্তারের আতঙ্কের সঙ্গে মনোনয়ন না পেয়ে প্রত্যাখ্যাতদের অসহযোগিতার কারণে ধানের শীষের প্রার্থীরা পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট নেতারা।
তারা বলছেন, কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নপ্রত্যাখ্যাত নেতারা দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন না বলে তাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারা মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের ফোন করে নির্দেশনা দিলেও এলাকায় যাচ্ছেন না।
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারি দল ও পুলিশের আচরণের কারণে বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তারা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, গাজীপুর-৫ আসনের বিএনপিপ্রার্থী ফজলুল হক মিলনের সবকটি মামলায় জামিন থাকার পর গতকাল দুপুরে নিজ এলাকায় থেকে তাকে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এভাবে বিএনপির স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
দলের চূড়ান্ত প্রার্থীকে মনোনয়নবঞ্চিতদের সহযোগিতা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সহযোগিতা করবেন। রাগ-ক্ষোভ কমে এলে এমনিতেই তারা এলাকায় চলে যাবেন। এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে এস এম জিন্নাহ কবিরকে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, তিনি দলের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। আরো কয়েক দিন চেষ্টা করে যাবেন। তারপরও তিনি না এলে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। এ বিষয়ে জানতে ডাবলুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
কুষ্টিয়া-৩ আসনে বিএনপি নতুন প্রার্থী করেছে মো. জাকির হোসেনকে। তিনি এখনো জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারেননি; তবে এলাকায় অবস্থান করছেন। জাকির দেশ রূপান্তরকে বলেন, তার আসনের সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিনকে ফোন করলেও তিনি এলাকায় যাননি। তবে অধ্যক্ষ সোহরাব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভাইয়ের মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় এলাকায় যেতে পারছেন না। জটিলতা শেষ হলে এলাকায় যাবেন।
কুমিল্লা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে গণসংযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বলছিলেন, মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের দুই-চারজন সমস্যা করলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। মনোনয়নবঞ্চিতদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হচ্ছে। সবাই এক হয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাবেন।
সিলেট-৩ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে শফি আহমেদ চৌধুরীকে। সেখানে মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন সাবেক ছাত্র, যুবনেতা ও বর্তমান বিএনপি নেতা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। কাইয়ুম চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রার্থী ফোন না করলেও নিজের তাগিদে এলাকায় অবস্থান করছেন তিনি। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের দলের স্বার্থে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন এফ ই শরফুজ্জামান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া যাওয়ায় এলাকায় যাননি তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী সফর শেষ করে ঢাকা আসায় এখন দুয়েক দিনের মধ্যে এলাকায় যাবেন। সঙ্গে যাবেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সেলিমুজ্জামান সেলিম। এছাড়া গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে গোপালগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী এস এম জিলানী কারাগারে রয়েছেন। এ আসনে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।