টঙ্গীতে ঐক্যফ্রন্টের পথসভায় রব পালানোর পথ খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে তা বন্ধে সময় বেঁধে দিয়েছে সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল শনিবার গাজীপুরের টঙ্গীতে এক পথসভায় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের মামলা-হামলা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন সবকিছুর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পেয়েছেনÑ মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন বন্ধ করার সুযোগ খুঁজছেন। তিনি নির্বাচন থেকে পালিয়ে যেতে চান।
গতকাল ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চে টঙ্গীতে প্রথম পথসভায় যোগ দেন জোটের নেতারা। টঙ্গীতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ির প্রাঙ্গণে এ সভা হয়। জোটের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের রোডমার্চে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না।
ভবিষ্যতে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যেতে চাইলে সে সুযোগ তাকে দেওয়া হবে। ফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে বিরোধী দলকে নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তারা যুদ্ধে নেমেছেন। ওদের কাছে অস্ত্র আছে, ফ্রন্টের নেতাকর্মীদের আছে ব্যালট। এ লড়াইয়ে ফ্রন্ট জিতবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে ঘুমানোর দরকার নেই। মার খেলেও জবাব দেওয়া যাবে না। সব জবাব ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া হবে।
দলের আটজন প্রার্থীকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অপকর্মের জবাব দেওয়ার ভয়ে সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। এটি দেশের অস্তিত্বের, দুঃশাসন হটানোর ও খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন বলে তিনি মন্তব্য করেন। এজন্য ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকার আহ্বান জানান এই নেতা।
নির্বাচনী প্রচার শুরুর পাঁচ দিনেই প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এবারের মতো এত সহিংসতা আগের নির্বাচনে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় হামলার জন্য লোক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি আগামীকালের মধ্যে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। আগামী ২ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসানউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে পথসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান, স্থানীয় প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।
পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় গাজীপুর-৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ইকবাল সিদ্দিকীর সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেন ফ্রন্ট নেতারা। সভায় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রব বলেন, আপনারা এ দেশের সন্তান। আমরাও এ দেশের নাগরিক। সুতরাং অন্যায় গ্রেপ্তার ও জুলুম করা থেকে বিরত থাকুন। আজকের পর থেকে আর কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করবেন না। তাহলে পরিণতি ভয়াবহ ও খুবই খারাপ হবে।
গতকাল রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন দেশ রূপান্তরকে জানান, টঙ্গীর পরে গাজীপুরের শ্রীপুর ও মাওনা, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ময়মনসিংহ সদরে পথসভার মধ্য দিয়ে রোডমার্চের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন তারা। রাতেই তারা ঢাকা ফিরবেন। প্রতিটি পথসভায় ফ্রন্টের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে তা বন্ধে সময় বেঁধে দিয়েছে সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল শনিবার গাজীপুরের টঙ্গীতে এক পথসভায় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের মামলা-হামলা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন সবকিছুর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পেয়েছেনÑ মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন বন্ধ করার সুযোগ খুঁজছেন। তিনি নির্বাচন থেকে পালিয়ে যেতে চান।
গতকাল ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চে টঙ্গীতে প্রথম পথসভায় যোগ দেন জোটের নেতারা। টঙ্গীতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ির প্রাঙ্গণে এ সভা হয়। জোটের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের রোডমার্চে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না।
ভবিষ্যতে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যেতে চাইলে সে সুযোগ তাকে দেওয়া হবে। ফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে বিরোধী দলকে নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তারা যুদ্ধে নেমেছেন। ওদের কাছে অস্ত্র আছে, ফ্রন্টের নেতাকর্মীদের আছে ব্যালট। এ লড়াইয়ে ফ্রন্ট জিতবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে ঘুমানোর দরকার নেই। মার খেলেও জবাব দেওয়া যাবে না। সব জবাব ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া হবে।
দলের আটজন প্রার্থীকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অপকর্মের জবাব দেওয়ার ভয়ে সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। এটি দেশের অস্তিত্বের, দুঃশাসন হটানোর ও খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন বলে তিনি মন্তব্য করেন। এজন্য ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকার আহ্বান জানান এই নেতা।
নির্বাচনী প্রচার শুরুর পাঁচ দিনেই প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এবারের মতো এত সহিংসতা আগের নির্বাচনে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় হামলার জন্য লোক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি আগামীকালের মধ্যে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। আগামী ২ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসানউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে পথসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান, স্থানীয় প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।
পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় গাজীপুর-৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ইকবাল সিদ্দিকীর সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেন ফ্রন্ট নেতারা। সভায় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রব বলেন, আপনারা এ দেশের সন্তান। আমরাও এ দেশের নাগরিক। সুতরাং অন্যায় গ্রেপ্তার ও জুলুম করা থেকে বিরত থাকুন। আজকের পর থেকে আর কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করবেন না। তাহলে পরিণতি ভয়াবহ ও খুবই খারাপ হবে।
গতকাল রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন দেশ রূপান্তরকে জানান, টঙ্গীর পরে গাজীপুরের শ্রীপুর ও মাওনা, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ময়মনসিংহ সদরে পথসভার মধ্য দিয়ে রোডমার্চের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন তারা। রাতেই তারা ঢাকা ফিরবেন। প্রতিটি পথসভায় ফ্রন্টের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।