প্রধানমন্ত্রীকে রবার্ট মিলার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র আসছেন ৩২ পর্যবেক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা করছে তার দেশ। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩২ জন পর্যবেক্ষক আসবেন বলেও জানান তিনি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তার দেশ ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে। মার্কিন দূতাবাসের ১১টা দলও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার দলের সংগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে তার সরকার তখনকার বিরোধী দলকে নির্বাচনকালীন সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু তারা তা গ্রহণ না করে দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং মানুষ হত্যা করেছে। নির্বাচনী প্রচারে হামলা হচ্ছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান নির্বাচনকালীন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে তার দলেরও দুজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছে। ‘এ বিষয়ে আমি আমার দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছি’Ñ বলেন তিনি।
রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব রোহিঙ্গার জন্য মিয়ানমারের এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত যাতে করে তারা নিরাপদে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যেতে পারে। ‘যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে’, যোগ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘শক্তিশালী’ আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দুপক্ষের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতাকে জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতে আরো বৃদ্ধি করতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বাংলাদেশের বিমানের সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর জন্য রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের সরকার ভোটে জয়লাভ করে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে আগামী অর্থবছরে ৮ শতাংশে উন্নীত করার।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা করছে তার দেশ। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩২ জন পর্যবেক্ষক আসবেন বলেও জানান তিনি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তার দেশ ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে। মার্কিন দূতাবাসের ১১টা দলও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার দলের সংগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে তার সরকার তখনকার বিরোধী দলকে নির্বাচনকালীন সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু তারা তা গ্রহণ না করে দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং মানুষ হত্যা করেছে। নির্বাচনী প্রচারে হামলা হচ্ছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান নির্বাচনকালীন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে তার দলেরও দুজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছে। ‘এ বিষয়ে আমি আমার দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছি’Ñ বলেন তিনি।
রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব রোহিঙ্গার জন্য মিয়ানমারের এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত যাতে করে তারা নিরাপদে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যেতে পারে। ‘যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে’, যোগ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘শক্তিশালী’ আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দুপক্ষের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতাকে জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতে আরো বৃদ্ধি করতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বাংলাদেশের বিমানের সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর জন্য রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের সরকার ভোটে জয়লাভ করে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে আগামী অর্থবছরে ৮ শতাংশে উন্নীত করার।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।