ভোটের পথ বন্ধ ইলিয়াসপত্নির
জামালপুরে প্রার্থীশূন্য বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক ও জামালপুর প্রতিনিধি | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সিলেট২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও জামালপুর১ আসনে দলটির প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের প্রার্থিতা আটকে গেছে আপিল বিভাগে। দুজনের মনোনয়নপত্রের বৈধতা স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তার ওপর গতকাল মঙ্গলবার কোনো আদেশ দেয়নি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ। এর ফলে এই দুই প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার শেষ সুযোগটিও রইল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর আগে মনোনয়নপত্রের বৈধতা স্থগিত করে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ যে আদেশ আদেশ দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন লুনা। তার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বেঞ্চ এ বিষয়ে কোন আদেশ দেননি (নো অর্ডার)। এর ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকে।
সর্বোচ্চ আদালতে লুনার পক্ষে শুনানি
করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ ও রুহুল কুদ্দুস কাজল। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবিদ চৌধুরী। আর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে ছিলেন মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
এ বিষয়ে লুনার আইনজীবী আবিদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, “আপিল বিভাগ এ বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দেওয়ায় হাইকোর্টের ওই আদেশটি বহাল রয়েছে। এর ফলে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। ”
সিলেটÑ২ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী ইয়াহহিয়া চৌধুরীর করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ই ডিসেম্বর লুনার প্রার্থিতা স্থগিত করেছিল বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু লুনা ছয় মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি নেন। ফলে আরপিওর বিধান অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বৈধ নয়।
এদিকে জামালপুর১ (দেওয়ানগঞ্জÑবকশীগঞ্জ) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাতের মনোনয়নপত্র স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে মিল্লাতের করা আবেদনের ওপরও আপিল বেঞ্চ কোনো আদেশ দেয়নি। ফলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে। বিএনপির প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে জামালপুর১ আসন।
গত ১৩ই ডিসেম্বর জামালপুর১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বিএনপির প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট আবেদনটি করেন। এর আগে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন মিল্লাত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জ্ঞাত আয়Ñবহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় দণ্ডিত থাকায় যাচাইÑবাছাইয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার। পরে ইসিতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। বিএনপি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয় তাকে। একপর্যায়ে ওই আসনে বিএনপির অপর দুই প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের ছেলে শাহাদাৎ বিন জামান ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এ কারণে আসনটিতে প্রার্থীশূণ্য হয়ে পড়ল বিএনপি।
জামালপুর১ আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির এমএ ছাত্তার, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সুরুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল মজিদ ও গণফোরামের সিরাজুল হক।
শেয়ার করুন
জামালপুরে প্রার্থীশূন্য বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক ও জামালপুর প্রতিনিধি | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সিলেট২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও জামালপুর১ আসনে দলটির প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের প্রার্থিতা আটকে গেছে আপিল বিভাগে। দুজনের মনোনয়নপত্রের বৈধতা স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তার ওপর গতকাল মঙ্গলবার কোনো আদেশ দেয়নি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ। এর ফলে এই দুই প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার শেষ সুযোগটিও রইল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর আগে মনোনয়নপত্রের বৈধতা স্থগিত করে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ যে আদেশ আদেশ দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন লুনা। তার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বেঞ্চ এ বিষয়ে কোন আদেশ দেননি (নো অর্ডার)। এর ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকে।
সর্বোচ্চ আদালতে লুনার পক্ষে শুনানি
করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ ও রুহুল কুদ্দুস কাজল। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবিদ চৌধুরী। আর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে ছিলেন মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
এ বিষয়ে লুনার আইনজীবী আবিদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, “আপিল বিভাগ এ বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দেওয়ায় হাইকোর্টের ওই আদেশটি বহাল রয়েছে। এর ফলে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। ”
সিলেটÑ২ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী ইয়াহহিয়া চৌধুরীর করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ই ডিসেম্বর লুনার প্রার্থিতা স্থগিত করেছিল বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু লুনা ছয় মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি নেন। ফলে আরপিওর বিধান অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বৈধ নয়।
এদিকে জামালপুর১ (দেওয়ানগঞ্জÑবকশীগঞ্জ) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাতের মনোনয়নপত্র স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে মিল্লাতের করা আবেদনের ওপরও আপিল বেঞ্চ কোনো আদেশ দেয়নি। ফলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে। বিএনপির প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে জামালপুর১ আসন।
গত ১৩ই ডিসেম্বর জামালপুর১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বিএনপির প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট আবেদনটি করেন। এর আগে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন মিল্লাত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জ্ঞাত আয়Ñবহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় দণ্ডিত থাকায় যাচাইÑবাছাইয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার। পরে ইসিতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। বিএনপি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয় তাকে। একপর্যায়ে ওই আসনে বিএনপির অপর দুই প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাতের ছেলে শাহাদাৎ বিন জামান ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এ কারণে আসনটিতে প্রার্থীশূণ্য হয়ে পড়ল বিএনপি।
জামালপুর১ আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির এমএ ছাত্তার, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সুরুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল মজিদ ও গণফোরামের সিরাজুল হক।