সিইসি ও ইসি মাহবুব দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে
খাইরুল বাশার | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদারের মধ্যকার বিরোধিতা প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান সুযোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন দুই কমিশনার।
গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচন ভবনে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। পুলিশ আমাদের কথা মান্য করে।’ এরপর ১৫ ডিসেম্বর শনিবার আরেক অনুষ্ঠানে এ কথার পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। সিইসির বক্তব্যের পর বিরোধী নেতাকর্মীদের হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার ও মাঠে নামতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম জোটের বেশ কিছু নেতা। এমন প্রেক্ষাপটে গত সোমবার সাংবাদিকদের মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।’
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে ইসির ৩৫তম সভা বর্জন করা মাহবুব তালুকদারের এমন বক্তব্যের পরের দিন গত মঙ্গলবার বিপরীত বক্তব্য দেন সিইসি। রাঙামাটিতে এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি বলেন, ‘মাহবুব তালুকদার সত্য বলেননি। নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।’
সিইসির বক্তব্যের রেশ না কাটতেই গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত প্রতিবাদলিপি পড়েন মাহবুব তালুকদার। সহকর্মীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। আমি তার বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ এ কথা বলে তিনি একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত করেছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সিইসিসহ সব নির্বাচন কমিশনার সমান।’
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে নিজ বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মাহবুব তালুকদার বিষয়টি বিবেচনার ভার আবারও সংবাদকর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন। তার ওই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি সিইসি। তবে একই দিনে আরেক কমিশনার রফিকুল ইসলাম রংপুরে বলেন, ‘ভোটারদের জন্য মাঠ একেবারে সমতল করা আছে।’
মুজিবনগর সরকারের তথ্যমন্ত্রী, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সময়ে উপসচিব মর্যাদার ‘স্পেশাল অফিসার’, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব তালুকদার। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে ‘বিএনপির মনোনীত’ বলে অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা।
মাহবুব তালুকদারের নোট অব ডিসেন্ট দেওয়া নিয়ে গত ১৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যিনি নোট অব ডিসেন্ট দিলেন বা বেরিয়ে গেলেন তিনি সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেছিলেন, সেখানে মাহবুব তালুকদার বিএনপির মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচন কমিশনে এসেছেন।’
শেয়ার করুন
খাইরুল বাশার | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদারের মধ্যকার বিরোধিতা প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান সুযোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন দুই কমিশনার।
গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচন ভবনে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। পুলিশ আমাদের কথা মান্য করে।’ এরপর ১৫ ডিসেম্বর শনিবার আরেক অনুষ্ঠানে এ কথার পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। সিইসির বক্তব্যের পর বিরোধী নেতাকর্মীদের হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার ও মাঠে নামতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম জোটের বেশ কিছু নেতা। এমন প্রেক্ষাপটে গত সোমবার সাংবাদিকদের মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।’
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে ইসির ৩৫তম সভা বর্জন করা মাহবুব তালুকদারের এমন বক্তব্যের পরের দিন গত মঙ্গলবার বিপরীত বক্তব্য দেন সিইসি। রাঙামাটিতে এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি বলেন, ‘মাহবুব তালুকদার সত্য বলেননি। নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।’
সিইসির বক্তব্যের রেশ না কাটতেই গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত প্রতিবাদলিপি পড়েন মাহবুব তালুকদার। সহকর্মীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। আমি তার বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ এ কথা বলে তিনি একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত করেছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সিইসিসহ সব নির্বাচন কমিশনার সমান।’
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে নিজ বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মাহবুব তালুকদার বিষয়টি বিবেচনার ভার আবারও সংবাদকর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন। তার ওই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি সিইসি। তবে একই দিনে আরেক কমিশনার রফিকুল ইসলাম রংপুরে বলেন, ‘ভোটারদের জন্য মাঠ একেবারে সমতল করা আছে।’
মুজিবনগর সরকারের তথ্যমন্ত্রী, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সময়ে উপসচিব মর্যাদার ‘স্পেশাল অফিসার’, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব তালুকদার। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে ‘বিএনপির মনোনীত’ বলে অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা।
মাহবুব তালুকদারের নোট অব ডিসেন্ট দেওয়া নিয়ে গত ১৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যিনি নোট অব ডিসেন্ট দিলেন বা বেরিয়ে গেলেন তিনি সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেছিলেন, সেখানে মাহবুব তালুকদার বিএনপির মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচন কমিশনে এসেছেন।’