দলীয় প্রধানের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিচ্ছেন ফখরুল
রেজাউল করিম লাবলু | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন স্থানে বিএনপি প্রার্থীদের প্রচারে হামলার প্রেক্ষাপটে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যার গাড়িবহরও হামলার শিকার হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে চেয়ারপারসনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ (সিএসএফ)-এর সদস্যরা এখন মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছেন। পাশাপাশি চেয়ারপারসনের বহরের গাড়িও ব্যবহার করছেন তিনি। মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
দলের উদ্যোগে মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর সারা দেশে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় বিএনপিদলীয় প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় হামলা করছে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সোনাইমুড়ী থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই গুলি করেছেন। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও বিএনপি নেতা সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। এতে করে সারা দেশে বিএনপি প্রার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। গুলি ও হামলার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানানো হলেও ইসি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই বিএনপি নিজ উদ্যোগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদার করেছে।’
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ১১ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল তার নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচার চালাতে যান। সেখানে তার গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় আটটি গাড়ি। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিব্রত হন খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এরপর গত বুধবার ঠাকুরগাঁও সদর ও
সোনাইমুড়ীসহ চার থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশন।
সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৭ সালের ৬ জুন রাঙ্গামাটিতে ত্রাণ বিতরণে যাওয়ার পথে মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাই সব দিক বিবেচনায় নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান দলের মহাসচিবের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেন।
গত সোমবার রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীতে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখানেও মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তায় সিএসএফ সদস্যরা ছিলেন। গত বুধবার সকালে নির্বাচনী প্রচারে কুমিল্লার পথে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সিএসএফ সদস্যরা ছাড়াও চেয়ারপারসনের বহরের গাড়িগুলোও মির্জা ফখরুলের বহরে ছিল। ওই গাড়িবহরে ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান। মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদার করা প্রসঙ্গে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুদূর লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় দলের মহাসচিব দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই দল মনে করে, তার নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। বিএনপির পক্ষ থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে চেয়ারপারসনের সব সুযোগ-সুবিধা এখন মির্জা ফখরুলকে দেওয়া হয়েছে।’
আবদুল আউয়াল জানান, সিএসএফ সদস্যরা ছাড়াও মহাসচিবের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সঙ্গে থাকছেন। তাদের মধ্যে তিনি ছাড়াও রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন।
শেয়ার করুন
রেজাউল করিম লাবলু | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন স্থানে বিএনপি প্রার্থীদের প্রচারে হামলার প্রেক্ষাপটে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যার গাড়িবহরও হামলার শিকার হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে চেয়ারপারসনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ (সিএসএফ)-এর সদস্যরা এখন মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছেন। পাশাপাশি চেয়ারপারসনের বহরের গাড়িও ব্যবহার করছেন তিনি। মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
দলের উদ্যোগে মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর সারা দেশে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় বিএনপিদলীয় প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় হামলা করছে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সোনাইমুড়ী থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই গুলি করেছেন। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও বিএনপি নেতা সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। এতে করে সারা দেশে বিএনপি প্রার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। গুলি ও হামলার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানানো হলেও ইসি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই বিএনপি নিজ উদ্যোগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদার করেছে।’
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ১১ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল তার নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচার চালাতে যান। সেখানে তার গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় আটটি গাড়ি। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিব্রত হন খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এরপর গত বুধবার ঠাকুরগাঁও সদর ও
সোনাইমুড়ীসহ চার থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশন।
সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৭ সালের ৬ জুন রাঙ্গামাটিতে ত্রাণ বিতরণে যাওয়ার পথে মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাই সব দিক বিবেচনায় নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান দলের মহাসচিবের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেন।
গত সোমবার রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীতে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখানেও মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তায় সিএসএফ সদস্যরা ছিলেন। গত বুধবার সকালে নির্বাচনী প্রচারে কুমিল্লার পথে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সিএসএফ সদস্যরা ছাড়াও চেয়ারপারসনের বহরের গাড়িগুলোও মির্জা ফখরুলের বহরে ছিল। ওই গাড়িবহরে ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান। মির্জা ফখরুলের নিরাপত্তা জোরদার করা প্রসঙ্গে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুদূর লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় দলের মহাসচিব দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই দল মনে করে, তার নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। বিএনপির পক্ষ থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে চেয়ারপারসনের সব সুযোগ-সুবিধা এখন মির্জা ফখরুলকে দেওয়া হয়েছে।’
আবদুল আউয়াল জানান, সিএসএফ সদস্যরা ছাড়াও মহাসচিবের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সঙ্গে থাকছেন। তাদের মধ্যে তিনি ছাড়াও রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন।