নির্বাচনী বছরে অর্থনীতি
বিরল স্বস্তির বছর বাংলাদেশের
রায়ান বণিক | ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে রাজনীতি, তার ঝাপটা লাগে অর্থনীতিতেও। চিরাচরিত এই রূপ এবার পাল্টেছে। নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগেও রপ্তানি আয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে আগের মতোই। অন্য নির্বাচনী বছরগুলোর মতো নুয়ে না পড়ে স্বাভাবিক গতিতে এগোচ্ছে অর্থনীতি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবার গতবারের চেয়েও বেশি।
রাজনৈতিক সহিংসতায় অর্থনৈতিক কর্মকা- সঙ্কুচিত হওয়ায় আগের বছর ও পরের বছরের তুলনায় নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপির প্রবৃদ্ধিও কমে যায়। স্বাধীনতার পর থেকেই এমনটি হয়ে আসছে বাংলাদেশে। ১৯৯০ সাল থেকে দেশের প্রতিটি নির্বাচনী বছরে কীভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার কমেছে, তা তুলে ধরে গত নভেম্বর মাসে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের (বিডা) কর্মকর্তা ও রপ্তানিকারকরা বলছেন, এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ২০১৮ সালে হরতাল-অবরোধ হয়নি। অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো দৃশ্যত বড় ধরনের কোনো সহিংসতাও ছিল না। ফলে অন্য নির্বাচনী বছরগুলোর মতো এবার প্রবৃদ্ধি কমার আশঙ্কা দেখছেন না তারা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এদেশ থেকে হরতাল-অবরোধ উঠে গেছে। কোনো দল হরতাল ডেকে জনগণের ক্ষতি করবে, তা দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না। রাজনৈতিক কোনো সহিংসতা না থাকায় চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি আগের নির্বাচনী বছরগুলোর মতো কমবে না।
গত ২৭ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রাবিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’-এর বৈঠকেও চলতি অর্থবছর প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮ শতাংশ হবে বলে আশা করা হয়েছে। গত অর্থবছর ৭.৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিডিপির ২০১৫ সালে করা এক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ৪৬ দিন করে হরতাল হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনী বছরগুলোতেই হরতাল হয়েছে বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর ছিল নির্বাচনী বছর। ওই সময় জিডিপির প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে হয় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। একইভাবে ২০০১-০২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, আর এর আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০০৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। আগের অর্থবছর প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতা, হরতাল অবরোধ বাড়লেও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। আগের বছর প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ০১ শতাংশ।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের দেওয়া তথ্য ও দেশি-বিদেশি গবেষণায় হরতাল, অবরোধসহ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলায় নির্বাচনী বছরে বাংলাদেশের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির চিত্র উঠে আসে। উদ্যোক্তারা ভীত হয়ে নতুন বিনিয়োগ থেকে হাত গুটিয়ে রাখেন, বিনিয়োগ কমে যায়। বাংলাদেশে নির্বাচনী বছরগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থপাচার বেড়ে যায় বলে উঠে এসেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)। হরতাল-অবরোধের কারণে পোশাক খাত সময়মতো আমদানি করা কাঁচামাল বন্দর থেকে কারখানায় আনা, তৈরি পোশাক জাহাজীকরণের জন্য বন্দরে পৌঁছাতে পারে না। ফলে নির্বাচনী বছরগুলোতে রপ্তানি আয়েও ধস নামে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, নির্বাচনের দু’বছর আগে থেকেই বিদেশি ক্রেতারা প্রশ্ন করতে থাকেন, রপ্তানি আদেশ দিলে সময়মতো সরবরাহ করতে পারবে কি-না। এবারো সে ধরনের প্রশ্ন শুনতে হয়েছে বলে দেশ রূপান্তরকে জানান তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ‘এবার সমস্যা হবে না’ বলে ক্রেতাদের আশ্বস্ত করলেও তা ততটা বিশ্বাস করতে চাননি তারা। ভয়ে ভয়ে রপ্তানি অর্ডার বাড়িয়ে সময়মতো সরবরাহ পাওয়ায় ডিসেম্বরেও অর্ডার বাড়াচ্ছেন তারা।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এতকাল নির্বাচনী বছরে যেভাবে হরতাল, অবরোধ, রাজনৈতিক সহিংসতা হতো; এবার তার লেশমাত্র নেই। তার সুফল ভোগ করছে তৈরি পোশাক খাত। রপ্তানি অর্ডার মোটেও কমেনি। বরং গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছয় মাস আগেও শুনেছি, নির্বাচনের কারণে এদেশে অর্ডার আসবে না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ক্রেতা অর্ডার কমায়নি। এমনকি ডিসেম্বরেও অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে।
বিডার কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিনিয়োগ নিবন্ধন কমলেও এর কারণ রাজনৈতিক নয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। সেখানে বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি-নভেম্বর সময়ে বিডায় ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে। ২০১৭ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭১৩ কোটি ডলার।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক সহিংসতা না থাকায় নির্বাচনী বছরে অন্যবারের মতো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে উল্লেখ করার মতো প্রভাব পড়েনি। টাকার অঙ্কে বাস্তবায়ন বেড়েছে, কিছুটা কমেছে বাস্তবায়নের হার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ১৩.৯৩ শতাংশ, গত অর্থবছর এটি ছিল ১৪.৫১ শতাংশ।
জাপানের অর্থায়নে দেশের ৬১টি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাওয়েদ আলম বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনের কারণে কাজ নেই। প্রকল্প মেয়াদের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
শেয়ার করুন
রায়ান বণিক | ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

নির্বাচন ঘনিয়ে এলে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে রাজনীতি, তার ঝাপটা লাগে অর্থনীতিতেও। চিরাচরিত এই রূপ এবার পাল্টেছে। নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগেও রপ্তানি আয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে আগের মতোই। অন্য নির্বাচনী বছরগুলোর মতো নুয়ে না পড়ে স্বাভাবিক গতিতে এগোচ্ছে অর্থনীতি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবার গতবারের চেয়েও বেশি।
রাজনৈতিক সহিংসতায় অর্থনৈতিক কর্মকা- সঙ্কুচিত হওয়ায় আগের বছর ও পরের বছরের তুলনায় নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপির প্রবৃদ্ধিও কমে যায়। স্বাধীনতার পর থেকেই এমনটি হয়ে আসছে বাংলাদেশে। ১৯৯০ সাল থেকে দেশের প্রতিটি নির্বাচনী বছরে কীভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার কমেছে, তা তুলে ধরে গত নভেম্বর মাসে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের (বিডা) কর্মকর্তা ও রপ্তানিকারকরা বলছেন, এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ২০১৮ সালে হরতাল-অবরোধ হয়নি। অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো দৃশ্যত বড় ধরনের কোনো সহিংসতাও ছিল না। ফলে অন্য নির্বাচনী বছরগুলোর মতো এবার প্রবৃদ্ধি কমার আশঙ্কা দেখছেন না তারা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এদেশ থেকে হরতাল-অবরোধ উঠে গেছে। কোনো দল হরতাল ডেকে জনগণের ক্ষতি করবে, তা দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না। রাজনৈতিক কোনো সহিংসতা না থাকায় চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি আগের নির্বাচনী বছরগুলোর মতো কমবে না।
গত ২৭ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রাবিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’-এর বৈঠকেও চলতি অর্থবছর প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮ শতাংশ হবে বলে আশা করা হয়েছে। গত অর্থবছর ৭.৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিডিপির ২০১৫ সালে করা এক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ৪৬ দিন করে হরতাল হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনী বছরগুলোতেই হরতাল হয়েছে বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর ছিল নির্বাচনী বছর। ওই সময় জিডিপির প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে হয় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। একইভাবে ২০০১-০২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, আর এর আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০০৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। আগের অর্থবছর প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতা, হরতাল অবরোধ বাড়লেও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। আগের বছর প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ০১ শতাংশ।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের দেওয়া তথ্য ও দেশি-বিদেশি গবেষণায় হরতাল, অবরোধসহ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলায় নির্বাচনী বছরে বাংলাদেশের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির চিত্র উঠে আসে। উদ্যোক্তারা ভীত হয়ে নতুন বিনিয়োগ থেকে হাত গুটিয়ে রাখেন, বিনিয়োগ কমে যায়। বাংলাদেশে নির্বাচনী বছরগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থপাচার বেড়ে যায় বলে উঠে এসেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)। হরতাল-অবরোধের কারণে পোশাক খাত সময়মতো আমদানি করা কাঁচামাল বন্দর থেকে কারখানায় আনা, তৈরি পোশাক জাহাজীকরণের জন্য বন্দরে পৌঁছাতে পারে না। ফলে নির্বাচনী বছরগুলোতে রপ্তানি আয়েও ধস নামে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, নির্বাচনের দু’বছর আগে থেকেই বিদেশি ক্রেতারা প্রশ্ন করতে থাকেন, রপ্তানি আদেশ দিলে সময়মতো সরবরাহ করতে পারবে কি-না। এবারো সে ধরনের প্রশ্ন শুনতে হয়েছে বলে দেশ রূপান্তরকে জানান তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ‘এবার সমস্যা হবে না’ বলে ক্রেতাদের আশ্বস্ত করলেও তা ততটা বিশ্বাস করতে চাননি তারা। ভয়ে ভয়ে রপ্তানি অর্ডার বাড়িয়ে সময়মতো সরবরাহ পাওয়ায় ডিসেম্বরেও অর্ডার বাড়াচ্ছেন তারা।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এতকাল নির্বাচনী বছরে যেভাবে হরতাল, অবরোধ, রাজনৈতিক সহিংসতা হতো; এবার তার লেশমাত্র নেই। তার সুফল ভোগ করছে তৈরি পোশাক খাত। রপ্তানি অর্ডার মোটেও কমেনি। বরং গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছয় মাস আগেও শুনেছি, নির্বাচনের কারণে এদেশে অর্ডার আসবে না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ক্রেতা অর্ডার কমায়নি। এমনকি ডিসেম্বরেও অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে।
বিডার কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিনিয়োগ নিবন্ধন কমলেও এর কারণ রাজনৈতিক নয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। সেখানে বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি-নভেম্বর সময়ে বিডায় ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে। ২০১৭ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭১৩ কোটি ডলার।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক সহিংসতা না থাকায় নির্বাচনী বছরে অন্যবারের মতো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে উল্লেখ করার মতো প্রভাব পড়েনি। টাকার অঙ্কে বাস্তবায়ন বেড়েছে, কিছুটা কমেছে বাস্তবায়নের হার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ১৩.৯৩ শতাংশ, গত অর্থবছর এটি ছিল ১৪.৫১ শতাংশ।
জাপানের অর্থায়নে দেশের ৬১টি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাওয়েদ আলম বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনের কারণে কাজ নেই। প্রকল্প মেয়াদের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।