ইসিতে টিকলেন জামায়াতের ২৫ নেতা
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হওয়া জামায়াতের ২৫ নেতার একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা বহাল রইল। এখতিয়ার না থাকার কথা জানিয়ে তাদের প্রার্থিতা বৈধ বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির এই সিদ্ধান্তের পর এই জামায়াত নেতাদের নির্বাচন করতে আর কোনো বাধা রইল না।
গতকাল রোববার ইসির বৈঠক শেষে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থিতা বাতিল বিষয়ে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ তিন কার্যদিবসে রুল নিষ্পত্তির যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা পর্যালোচনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেখেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের আইনগতভাবে প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ ইসির নেই। কারণ ২৫ জনের প্রার্থিতা রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ করেছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল। কিন্তু কেউ তখন নির্বাচন কমিশনে আপিল করেননি বিধায় নির্বাচন কমিশন মনে করে, জামায়াতের প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আইনগত ভিত্তি আছে।’ এই সিদ্ধান্ত আজ সোমবার উচ্চ আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান ইসি সচিব।
গত ১৮ ডিসেম্বর ২৫ আসনে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণা ও বাতিল চেয়ে ইসিতে করা একটি আবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসির প্রতি নির্দেশটি দেওয়া হয়। আবেদনটি করেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজকল্যাণ সচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। সিইসি, জামায়াতের আমির ও
সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২৫ প্রার্থীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত শনিবার এ আদেশ দেয়। এরপর গতকাল ওই আবেদনের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত কোনো দল নেই। তারা যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তা পর্যালোচনা করে ইসি দেখেছে যে এই প্রক্রিয়ায় তাদের প্রার্থিতা বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। তারা যেহেতু ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন, সেজন্য কমিশন মনে করে, তারা ধানের শীষেরই প্রার্থী।’
এর আগে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় সিইসি কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ব্যালট পেপার মুদ্রণ ও উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থীশূন্য হওয়া আসনে পুনঃ তফসিল বা বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবির বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হাইকোর্টের আদেশে প্রার্থী বাতিল হওয়ার কারণে যেসব আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই, সেখানে দলটি নতুন করে কোনো প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ পাবে না। ফলে ওই আসনগুলোতে ধানের শীষের কোনো প্রার্থীই থাকছেন না।
গতকাল গাইবান্ধা-৩ আসনে নির্বাচনের পুনঃ তফসিলও ঘোষণা করেছে ইসি। এই আসনে ভোট হবে আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি। এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর মৃত্যুর কারণে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হলো।
শেয়ার করুন
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হওয়া জামায়াতের ২৫ নেতার একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা বহাল রইল। এখতিয়ার না থাকার কথা জানিয়ে তাদের প্রার্থিতা বৈধ বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির এই সিদ্ধান্তের পর এই জামায়াত নেতাদের নির্বাচন করতে আর কোনো বাধা রইল না।
গতকাল রোববার ইসির বৈঠক শেষে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থিতা বাতিল বিষয়ে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ তিন কার্যদিবসে রুল নিষ্পত্তির যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা পর্যালোচনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেখেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের আইনগতভাবে প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ ইসির নেই। কারণ ২৫ জনের প্রার্থিতা রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ করেছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল। কিন্তু কেউ তখন নির্বাচন কমিশনে আপিল করেননি বিধায় নির্বাচন কমিশন মনে করে, জামায়াতের প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আইনগত ভিত্তি আছে।’ এই সিদ্ধান্ত আজ সোমবার উচ্চ আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান ইসি সচিব।
গত ১৮ ডিসেম্বর ২৫ আসনে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণা ও বাতিল চেয়ে ইসিতে করা একটি আবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসির প্রতি নির্দেশটি দেওয়া হয়। আবেদনটি করেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজকল্যাণ সচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। সিইসি, জামায়াতের আমির ও
সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২৫ প্রার্থীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত শনিবার এ আদেশ দেয়। এরপর গতকাল ওই আবেদনের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত কোনো দল নেই। তারা যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তা পর্যালোচনা করে ইসি দেখেছে যে এই প্রক্রিয়ায় তাদের প্রার্থিতা বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। তারা যেহেতু ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন, সেজন্য কমিশন মনে করে, তারা ধানের শীষেরই প্রার্থী।’
এর আগে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় সিইসি কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ব্যালট পেপার মুদ্রণ ও উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থীশূন্য হওয়া আসনে পুনঃ তফসিল বা বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবির বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হাইকোর্টের আদেশে প্রার্থী বাতিল হওয়ার কারণে যেসব আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই, সেখানে দলটি নতুন করে কোনো প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ পাবে না। ফলে ওই আসনগুলোতে ধানের শীষের কোনো প্রার্থীই থাকছেন না।
গতকাল গাইবান্ধা-৩ আসনে নির্বাচনের পুনঃ তফসিলও ঘোষণা করেছে ইসি। এই আসনে ভোট হবে আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি। এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর মৃত্যুর কারণে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হলো।