দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করুন : সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘কারো কারণে নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। ভোটার সাধারণের কাছে অনুরোধ করি, আপনার ভোট অতি মূল্যবান। কোনো ভয়ভীতির কাছে নত স্বীকার করবেন না, স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’ কোনো প্রার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সেদিকেও খেয়াল রাখার নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিইসি।
তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সকলের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যদের নির্দেশ দিচ্ছি। সহিংসতা ও নাশকতামূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কঠোর অবস্থান নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছি। কোনো মহল ভোটকেন্দ্রে অবৈধভাবে কোনো অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করলে অবশ্যই দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা নিয়ন্ত্রণ করবে। কোনো বাহিনীর নির্লিপ্ততার কারণে অথবা নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে কোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ব্যাহত হলে অধিক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে তদন্ত করা হবে এবং দোষী প্রমাণিত হলে প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গণমাধ্যমের খবর উদ্ধৃত করে সিইসি বলেন, ‘প্রার্থীর এজেন্টদের হয়রানি করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো এজেন্টের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি কোনো অভিযোগ না থাকলে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করবে না। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। এজেন্টদের দায়িত্ব অনেক, তারা প্রার্থীর প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা প্রার্থীর স্বার্থে কাজ করেন।’
লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘কাক্সিক্ষত প্রত্যাশিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি আমরা। আগামীকাল (আজ) সকাল ৮ ঘটিকায় দেশব্যাপী একসঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে একে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে পারি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩০০টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে রেকর্ডসংখ্যক ১,৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মাঠে নেমেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। নির্বাচনী প্রচারে সমগ্র দেশ মুখরিত হয়েছে। মিছিল, সমাবেশ, পথসভা, জনসভা, লংমার্চ, লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রতিযোগিতামূলক আবহ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রস্তুতিপর্বে দেশব্যাপী ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৫৮০ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, কেন্দ্রভিত্তিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
সিইসি বলেন, ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটারের জন্য মোট ৪০ হাজার ১৮৩টি নির্বাচনী কেন্দ্র, দুই লক্ষ ৬ হাজার ৭৭৭টি বুথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনের সব সামগ্রী সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নির্বাচনের মালামাল নিয়ে আজ (শনিবার) রাতের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। যে ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে সেসব আসনেও নির্বাচনী সামগ্রী ও জনবল পৌঁছে গেছে। ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনী সামগ্রী, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্টসহ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় তদন্ত কমিটি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিবেচনায় কেন্দ্রের অবস্থান সবার ওপরে, কেন্দ্রের সাফল্যের ওপর পুরো নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করে। সেখানে কর্তব্যে থাকেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্ট, পর্যবেক্ষক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের প্রত্যেকেই সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্য থাকে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সমুন্নত রাখা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজ (শনিবার) রাতের মধ্যেই নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। পুলিশ ও আনসার প্রহরায় নির্বাচনী মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আগামীকাল সকাল ৭টার মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার কাজ শুরু করবেন। তার সহযোগীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেবেন। নির্বাচন শুরু করার পূর্বে তিনি ব্যালট বাক্সগুলো সবাইকে দেখাবেন, ব্যালট বাক্স খালি আছে কি না দেখিয়ে নেবেন। তারপর বাক্সটি তালাবদ্ধ করবেন। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু করবেন। নির্বাচন শেষ হলে এজেন্ট, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষকদের সামনে ব্যালট গণনা করবেন। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে ব্যালট গণনা করা যাবে না। ফলাফলের তালিকা অবশ্যই প্রত্যেক এজেন্টকে সরবরাহ করতে হবে। নির্বাচনের ফলাফল হাতে না পাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো অবস্থায় তারা কেন্দ্র ত্যাগ করবেন না। কেউ যদি অবৈধভাবে এজেন্টকে কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন তখন ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা নির্বাচনে বড় দায়িত্ব পালন করেন। তাদের মাধ্যমে দেশবাসী নির্বাচনের সঠিক চিত্র দেখতে পারে। সংবাদ সংগ্রহ এবং পরিবেশনকালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা স্বাভাবিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয় তার প্রতি তাদের খেয়াল রাখতে হবে।
রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন। যাতে একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন, নির্বাচনী প্রতিযোগিতা যেন সহিংসতায় রূপ না নেয়। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করেছি, নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, অনেক মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে, এটা কাম্য ছিল না। সহিংসতার কারণে যেখানে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেখানে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি আবার অনুরোধ করতে চাই, আপনারা আচরণবিধি মেনে চলুন। সহিংসতা পরিহার করুন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ বজার রাখুন, নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করুন।
বিফ্রিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘কারো কারণে নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। ভোটার সাধারণের কাছে অনুরোধ করি, আপনার ভোট অতি মূল্যবান। কোনো ভয়ভীতির কাছে নত স্বীকার করবেন না, স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’ কোনো প্রার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সেদিকেও খেয়াল রাখার নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিইসি।
তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সকলের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যদের নির্দেশ দিচ্ছি। সহিংসতা ও নাশকতামূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কঠোর অবস্থান নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছি। কোনো মহল ভোটকেন্দ্রে অবৈধভাবে কোনো অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করলে অবশ্যই দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা নিয়ন্ত্রণ করবে। কোনো বাহিনীর নির্লিপ্ততার কারণে অথবা নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে কোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ব্যাহত হলে অধিক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে তদন্ত করা হবে এবং দোষী প্রমাণিত হলে প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গণমাধ্যমের খবর উদ্ধৃত করে সিইসি বলেন, ‘প্রার্থীর এজেন্টদের হয়রানি করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো এজেন্টের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি কোনো অভিযোগ না থাকলে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করবে না। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। এজেন্টদের দায়িত্ব অনেক, তারা প্রার্থীর প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা প্রার্থীর স্বার্থে কাজ করেন।’
লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘কাক্সিক্ষত প্রত্যাশিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি আমরা। আগামীকাল (আজ) সকাল ৮ ঘটিকায় দেশব্যাপী একসঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে একে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে পারি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩০০টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে রেকর্ডসংখ্যক ১,৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মাঠে নেমেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। নির্বাচনী প্রচারে সমগ্র দেশ মুখরিত হয়েছে। মিছিল, সমাবেশ, পথসভা, জনসভা, লংমার্চ, লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রতিযোগিতামূলক আবহ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রস্তুতিপর্বে দেশব্যাপী ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৫৮০ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, কেন্দ্রভিত্তিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
সিইসি বলেন, ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটারের জন্য মোট ৪০ হাজার ১৮৩টি নির্বাচনী কেন্দ্র, দুই লক্ষ ৬ হাজার ৭৭৭টি বুথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনের সব সামগ্রী সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নির্বাচনের মালামাল নিয়ে আজ (শনিবার) রাতের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। যে ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে সেসব আসনেও নির্বাচনী সামগ্রী ও জনবল পৌঁছে গেছে। ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনী সামগ্রী, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্টসহ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় তদন্ত কমিটি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিবেচনায় কেন্দ্রের অবস্থান সবার ওপরে, কেন্দ্রের সাফল্যের ওপর পুরো নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করে। সেখানে কর্তব্যে থাকেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্ট, পর্যবেক্ষক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের প্রত্যেকেই সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্য থাকে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সমুন্নত রাখা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজ (শনিবার) রাতের মধ্যেই নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। পুলিশ ও আনসার প্রহরায় নির্বাচনী মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আগামীকাল সকাল ৭টার মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার কাজ শুরু করবেন। তার সহযোগীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেবেন। নির্বাচন শুরু করার পূর্বে তিনি ব্যালট বাক্সগুলো সবাইকে দেখাবেন, ব্যালট বাক্স খালি আছে কি না দেখিয়ে নেবেন। তারপর বাক্সটি তালাবদ্ধ করবেন। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু করবেন। নির্বাচন শেষ হলে এজেন্ট, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষকদের সামনে ব্যালট গণনা করবেন। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে ব্যালট গণনা করা যাবে না। ফলাফলের তালিকা অবশ্যই প্রত্যেক এজেন্টকে সরবরাহ করতে হবে। নির্বাচনের ফলাফল হাতে না পাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো অবস্থায় তারা কেন্দ্র ত্যাগ করবেন না। কেউ যদি অবৈধভাবে এজেন্টকে কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন তখন ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা নির্বাচনে বড় দায়িত্ব পালন করেন। তাদের মাধ্যমে দেশবাসী নির্বাচনের সঠিক চিত্র দেখতে পারে। সংবাদ সংগ্রহ এবং পরিবেশনকালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা স্বাভাবিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয় তার প্রতি তাদের খেয়াল রাখতে হবে।
রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন। যাতে একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন, নির্বাচনী প্রতিযোগিতা যেন সহিংসতায় রূপ না নেয়। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করেছি, নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, অনেক মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে, এটা কাম্য ছিল না। সহিংসতার কারণে যেখানে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেখানে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি আবার অনুরোধ করতে চাই, আপনারা আচরণবিধি মেনে চলুন। সহিংসতা পরিহার করুন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ বজার রাখুন, নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করুন।
বিফ্রিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।