ব্যবধান আকাশ-পাতাল
রায়ান বণিক | ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের সঙ্গে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটে আকাশ-পাতাল ব্যবধান দেখা গেছে। কোনো কোনো আসনে বিএনপি প্রার্থীর ভোটের সংখ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের পাওয়া ভোটের চেয়েও কম। অনেক আসনে বিএনপির প্রার্থীরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের চেয়েও অনেক কম ভোট পেয়েছেন। গতরাত পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন আসনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যত ভোটার ভোট দিয়েছে তার ৮০ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীরা। বাকি ২০ ভাগ পেয়েছেন বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট, স্বতন্ত্র ও অন্য দলের প্রার্থীরা। আসনভিত্তিক ভোটচিত্র পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, এবারের মতো এত বড় ব্যবধানে কখনো জয় দেখেনি বাংলাদেশ। দল বা জোটগতভাবেও আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের ব্যবধান এমন আকাশ-পাতাল হয়নি।
১৯৯১ সাল থেকে গত কয়েকটি নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে পরাজিত প্রার্থী, কিংবা আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের অনুপাত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশিরভাগ আসনেই কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। কোনো কোনো আসনে বড় ব্যবধানে প্রার্থীরা জয়লাভ করলেও এভাবে দেড়-দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করা প্রার্থী ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪০টি আসনে জয়লাভ করে। তার চেয়ে মাত্র ২৫ লাখ ভোট কম বা ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ পেয়ে ৮৮টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪৬টি আসনে জয়লাভ করে, ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ ভোট নিয়ে ১১৬টি পায় বিএনপি।
কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০১ সালে প্রথম জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। ওই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট প্রায় ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। মূল শরিক দল বিএনপি পায় ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট। এককভাবে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৪০ শতাংশের মতো। পরের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, ১৪ দল নিয়ে মহাজোট গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬৪ আসনে প্রার্থী দিয়ে ৪৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট পায়। তাদের শরিক জাতীয় পার্টি পায় ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। অন্যদিকে বিএনপি ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ, জামায়াতের ৪ দশমিক ৭ শতাংশসহ চারদলীয় জোট পায় প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট।
ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০-১৫ শতাংশ ভোটার পাঁচ বছরের ব্যবধানে ভোটের সিদ্ধান্ত বদল করে। এসব ভোট সাধারণত বিরোধীপক্ষ পেয়ে থাকে। তবে এবার তা হয়নি। এছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর নতুন যে প্রায় আড়াই কোটি ভোটার যুক্ত হয়েছে, তাদের কোনো ভোটই বিরোধীপক্ষ পায়নি। উল্টো আগের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষের ভোটারদের ভোট এবার আওয়ামী লীগ ও মহাজোট পেয়েছে।
পটুয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ স ম ফিরোজ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী সালমা আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৬০ ভোট। সেখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা নজরুল ইসলাম ভোট পেয়েছেন ৯ হাজার ২৬৯ ভোট।
গত কয়েকটি নির্বাচনে এ আসনের ভোটচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৮ সালেও আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ স ম ফিরোজ জয়ী হয়েছিলেন। তখন তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৯৮ হাজার ৩০৩ ভোট। বিএনপির প্রার্থী একেএম ফারুক হোসেন তালুকদারের ভোট ছিল ৫৮ হাজার ২৫৮ ভোট। তখন ভোটের ব্যবধান ছিল ৬৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি ৬৯ হাজার ৭৩৫ ভোট পায়, আওয়ামী লীগ পায় ৫২ হাজার ৮০২ ভোট। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগের চেয়ে মাত্র ২৪ ভোট কম পায় বিএনপি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে প্রায় ৯০০ ভোট বেশি পেয়েছিল।
কেবল পটুয়াখালী-২ আসনই নয়, জেলার বাকি তিনটি আসনেই বিএনপির প্রার্থীদের চেয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা বেশি ভোট পেয়েছেন। এই তিনটি আসনের মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে বিএনপি সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৭৪১ ভোট পেয়েছে। দেশের অন্য জেলাগুলোর বেশিরভাগ আসনের চিত্রও একইরকম।
বগুড়া-১ আসনে ভোটের ব্যবধান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের প্রায় চারগুণ ভোট পেয়ে জয় পায় বিএনপি। ২০০১-এর নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলেও ভোটের ব্যবধান দ্বিগুণের কাছাকাছিতে নামে। ২০০৮-এর নির্বাচনে প্রায় পাঁচ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৯৪৭ ভোট, বিএনপি ১৬ হাজার ৬৯০। অর্থাৎ, বিএনপির চেয়ে এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রায় ১৬ গুণ বেশি ভোট পেয়েছে।
মেহেরপুর-১ আসনের ভোটচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের ব্যবধান এতটা আকাশ ছোঁয়নি কখনো। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে পর্যায়ক্রমে দুই দলের প্রার্থীরা জিতেছেন এখানে। ২০০১ সালে সর্বোচ্চ ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগকে হারায় বিএনপি। ২০০৮-এর নির্বাচনে ৩৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপিকে হারায় আওয়ামী লীগ। গতকালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ২০৪ ভোট। সেখানে ২০০৮-এর বিএনপির প্রার্থী মাসুদ অরুণের ভোট ১০ বছরের ব্যবধানে ৬২ হাজার ৭৪৫ থেকে কমে ১২ হাজার ৯৬৯টিতে নেমেছে।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে গত নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় হয়েছে কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে। ১৯৯১ সালে ছয় হাজার ও ১৯৯৬ সালে দুই হাজার ভোট বেশি পেয়ে আওয়ামী লীগ, ২০০১ সালে এক হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিএনপি জয় পায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটিতে সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পায় আওয়ামী লীগ। ১০ বছরের ব্যবধানে আসনটিতে আওয়ামী লীগের ভোটসংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৪, বিএনপির ৪ হাজার ৯১৮ ভোট।
শেয়ার করুন
রায়ান বণিক | ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের সঙ্গে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটে আকাশ-পাতাল ব্যবধান দেখা গেছে। কোনো কোনো আসনে বিএনপি প্রার্থীর ভোটের সংখ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের পাওয়া ভোটের চেয়েও কম। অনেক আসনে বিএনপির প্রার্থীরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের চেয়েও অনেক কম ভোট পেয়েছেন। গতরাত পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন আসনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যত ভোটার ভোট দিয়েছে তার ৮০ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীরা। বাকি ২০ ভাগ পেয়েছেন বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট, স্বতন্ত্র ও অন্য দলের প্রার্থীরা। আসনভিত্তিক ভোটচিত্র পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, এবারের মতো এত বড় ব্যবধানে কখনো জয় দেখেনি বাংলাদেশ। দল বা জোটগতভাবেও আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের ব্যবধান এমন আকাশ-পাতাল হয়নি।
১৯৯১ সাল থেকে গত কয়েকটি নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে পরাজিত প্রার্থী, কিংবা আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের অনুপাত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশিরভাগ আসনেই কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। কোনো কোনো আসনে বড় ব্যবধানে প্রার্থীরা জয়লাভ করলেও এভাবে দেড়-দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করা প্রার্থী ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪০টি আসনে জয়লাভ করে। তার চেয়ে মাত্র ২৫ লাখ ভোট কম বা ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ পেয়ে ৮৮টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪৬টি আসনে জয়লাভ করে, ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ ভোট নিয়ে ১১৬টি পায় বিএনপি।
কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০১ সালে প্রথম জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। ওই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট প্রায় ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। মূল শরিক দল বিএনপি পায় ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট। এককভাবে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৪০ শতাংশের মতো। পরের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, ১৪ দল নিয়ে মহাজোট গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬৪ আসনে প্রার্থী দিয়ে ৪৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট পায়। তাদের শরিক জাতীয় পার্টি পায় ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। অন্যদিকে বিএনপি ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ, জামায়াতের ৪ দশমিক ৭ শতাংশসহ চারদলীয় জোট পায় প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট।
ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০-১৫ শতাংশ ভোটার পাঁচ বছরের ব্যবধানে ভোটের সিদ্ধান্ত বদল করে। এসব ভোট সাধারণত বিরোধীপক্ষ পেয়ে থাকে। তবে এবার তা হয়নি। এছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর নতুন যে প্রায় আড়াই কোটি ভোটার যুক্ত হয়েছে, তাদের কোনো ভোটই বিরোধীপক্ষ পায়নি। উল্টো আগের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষের ভোটারদের ভোট এবার আওয়ামী লীগ ও মহাজোট পেয়েছে।
পটুয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ স ম ফিরোজ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী সালমা আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৬০ ভোট। সেখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা নজরুল ইসলাম ভোট পেয়েছেন ৯ হাজার ২৬৯ ভোট।
গত কয়েকটি নির্বাচনে এ আসনের ভোটচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৮ সালেও আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ স ম ফিরোজ জয়ী হয়েছিলেন। তখন তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৯৮ হাজার ৩০৩ ভোট। বিএনপির প্রার্থী একেএম ফারুক হোসেন তালুকদারের ভোট ছিল ৫৮ হাজার ২৫৮ ভোট। তখন ভোটের ব্যবধান ছিল ৬৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি ৬৯ হাজার ৭৩৫ ভোট পায়, আওয়ামী লীগ পায় ৫২ হাজার ৮০২ ভোট। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগের চেয়ে মাত্র ২৪ ভোট কম পায় বিএনপি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে প্রায় ৯০০ ভোট বেশি পেয়েছিল।
কেবল পটুয়াখালী-২ আসনই নয়, জেলার বাকি তিনটি আসনেই বিএনপির প্রার্থীদের চেয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা বেশি ভোট পেয়েছেন। এই তিনটি আসনের মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে বিএনপি সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৭৪১ ভোট পেয়েছে। দেশের অন্য জেলাগুলোর বেশিরভাগ আসনের চিত্রও একইরকম।
বগুড়া-১ আসনে ভোটের ব্যবধান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের প্রায় চারগুণ ভোট পেয়ে জয় পায় বিএনপি। ২০০১-এর নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলেও ভোটের ব্যবধান দ্বিগুণের কাছাকাছিতে নামে। ২০০৮-এর নির্বাচনে প্রায় পাঁচ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৯৪৭ ভোট, বিএনপি ১৬ হাজার ৬৯০। অর্থাৎ, বিএনপির চেয়ে এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রায় ১৬ গুণ বেশি ভোট পেয়েছে।
মেহেরপুর-১ আসনের ভোটচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের ব্যবধান এতটা আকাশ ছোঁয়নি কখনো। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে পর্যায়ক্রমে দুই দলের প্রার্থীরা জিতেছেন এখানে। ২০০১ সালে সর্বোচ্চ ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগকে হারায় বিএনপি। ২০০৮-এর নির্বাচনে ৩৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপিকে হারায় আওয়ামী লীগ। গতকালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ২০৪ ভোট। সেখানে ২০০৮-এর বিএনপির প্রার্থী মাসুদ অরুণের ভোট ১০ বছরের ব্যবধানে ৬২ হাজার ৭৪৫ থেকে কমে ১২ হাজার ৯৬৯টিতে নেমেছে।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে গত নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় হয়েছে কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে। ১৯৯১ সালে ছয় হাজার ও ১৯৯৬ সালে দুই হাজার ভোট বেশি পেয়ে আওয়ামী লীগ, ২০০১ সালে এক হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিএনপি জয় পায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটিতে সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পায় আওয়ামী লীগ। ১০ বছরের ব্যবধানে আসনটিতে আওয়ামী লীগের ভোটসংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৪, বিএনপির ৪ হাজার ৯১৮ ভোট।