ছাত্রদলের নেতা হতে চাইছেন বিবাহিতরাও
রেজাউল করিম লাবলু | ২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০
ছাত্রদলের কাউন্সিলে বিবাহিতরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারবেন না বলে বিএনপির পক্ষ থেকে শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু দলের এমন শর্ত উপেক্ষা করে বিবাহিতদের কেউ কেউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরের সঙ্গে আলাপকালে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের একাধিক প্রার্থী এমন অভিযোগ করেছেন।
বিবাহিত প্রার্থীদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, মনোনয়নপত্রে দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই হচ্ছে। বিবাহিতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। জেলা বিএনপির মাধ্যমে প্রার্থীদের সব ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
যাচাই-বাছাই কমিটির আরেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছাত্রদলের সভাপতি পদে প্রার্থী আল মেহেদি তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী নাদিয়া পাঠান পাপনের বৈবাহিক অবস্থার বিষয়ে অন্য প্রার্থীরা তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করেছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
২৭ বছর পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। এর আগের বেশিরভাগ কমিটি গঠনের সময় বিবাহিতদের শীর্ষ পদে রাখা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী ও ছাত্রদল নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন এমন কয়েকজন নেতার বিবাহ অনুষ্ঠানে আমরা যোগ দিয়েছি। তাদের কেউ কেউ বাবাও হয়েছেন। যদিও এখন তারা অবিবাহিত বলে দাবি করছেন। সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে বিবাহিতরা হলেন আল মেহেদি তালুকদার, আরাফাত বিল্লাহ খান, আজিমউদ্দিন মেরাজ, মো. আব্বাস আলী, মাইনুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ ভদ্র, নজরুল ইসলাম নাহিদ ও সিহাবুর রহমান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে যেসব বিবাহিত নেতারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা হলেনÑ নাদিয়া পাঠান পাপন, সিরাজুল ইসলাম ও মাহমুদুল আলম শাহীন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি প্রার্থী আল মেহেদি তালুকদার গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি হয়েছে তখনো আমার বিরুদ্ধে এরকম ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমরা এরকম একটা প্র্যাকটিসের মধ্যে আছি যে নিজের যোগ্যতাকে প্রস্ফুটিত না করে যোগ্য প্রার্থীদের কীভাবে বিতর্কিত করা যায় সে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের কত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে এগুলো নিয়ে মানুষকে বিবাহিত বলার তো কোনো কারণ হয় না। আমাদের ভাতিজা, ভাগ্নি, বন্ধু-বান্ধবদের বাচ্চাদের নিয়ে ছবি তোলার পর কেউ যদি তা দেখিয়ে কেউ প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে আমি বিবাহিত তা দুঃখজনক হবে।’ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তানজিল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রদলের প্রার্থী হতে হলে অবিবাহিত হতে হবে। আমার বিশ^াস বিবাহিত নেতারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।’
সাধারণ সম্পাদক পদে নারী প্রার্থী হয়েছেন নাদিয়া পাঠান পাপন। তিনি বিবাহিত। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা বিবাহিত হতে পারবে না বলে বিএনপি যে শর্ত দিয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নাদিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, শর্তের বিষয়টি জানি। কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে যে বয়সের শর্ত দেওয়া হয়েছে তাতে এই বয়সে কোনো মেয়ের পক্ষে অবিবাহিত থাকা সম্ভব নয়। নারী প্রার্থী হিসেবে তার বিষয়টি দল সহজভাবে নেবে বলে মনেপ্রাণে বিশ^াস করেন তিনি। বয়সের বিষয়টি ছাত্রদের বেলায় শক্তভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
নাদিয়া বলেন, একটি রাজনৈতিক দলে নারীনেত্রীর সংখ্যা শতকরা ৩৩ ভাগ থাকতে হবে বলে নির্বাচন কমিশনের যে শর্ত আছে সে শর্ত পালন করলে ভালো হয়।
শেয়ার করুন
রেজাউল করিম লাবলু | ২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০

ছাত্রদলের কাউন্সিলে বিবাহিতরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারবেন না বলে বিএনপির পক্ষ থেকে শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু দলের এমন শর্ত উপেক্ষা করে বিবাহিতদের কেউ কেউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরের সঙ্গে আলাপকালে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের একাধিক প্রার্থী এমন অভিযোগ করেছেন।
বিবাহিত প্রার্থীদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, মনোনয়নপত্রে দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই হচ্ছে। বিবাহিতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। জেলা বিএনপির মাধ্যমে প্রার্থীদের সব ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
যাচাই-বাছাই কমিটির আরেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছাত্রদলের সভাপতি পদে প্রার্থী আল মেহেদি তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী নাদিয়া পাঠান পাপনের বৈবাহিক অবস্থার বিষয়ে অন্য প্রার্থীরা তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করেছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
২৭ বছর পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। এর আগের বেশিরভাগ কমিটি গঠনের সময় বিবাহিতদের শীর্ষ পদে রাখা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী ও ছাত্রদল নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন এমন কয়েকজন নেতার বিবাহ অনুষ্ঠানে আমরা যোগ দিয়েছি। তাদের কেউ কেউ বাবাও হয়েছেন। যদিও এখন তারা অবিবাহিত বলে দাবি করছেন। সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে বিবাহিতরা হলেন আল মেহেদি তালুকদার, আরাফাত বিল্লাহ খান, আজিমউদ্দিন মেরাজ, মো. আব্বাস আলী, মাইনুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ ভদ্র, নজরুল ইসলাম নাহিদ ও সিহাবুর রহমান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে যেসব বিবাহিত নেতারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা হলেনÑ নাদিয়া পাঠান পাপন, সিরাজুল ইসলাম ও মাহমুদুল আলম শাহীন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি প্রার্থী আল মেহেদি তালুকদার গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি হয়েছে তখনো আমার বিরুদ্ধে এরকম ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমরা এরকম একটা প্র্যাকটিসের মধ্যে আছি যে নিজের যোগ্যতাকে প্রস্ফুটিত না করে যোগ্য প্রার্থীদের কীভাবে বিতর্কিত করা যায় সে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের কত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে এগুলো নিয়ে মানুষকে বিবাহিত বলার তো কোনো কারণ হয় না। আমাদের ভাতিজা, ভাগ্নি, বন্ধু-বান্ধবদের বাচ্চাদের নিয়ে ছবি তোলার পর কেউ যদি তা দেখিয়ে কেউ প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে আমি বিবাহিত তা দুঃখজনক হবে।’ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তানজিল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রদলের প্রার্থী হতে হলে অবিবাহিত হতে হবে। আমার বিশ^াস বিবাহিত নেতারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।’
সাধারণ সম্পাদক পদে নারী প্রার্থী হয়েছেন নাদিয়া পাঠান পাপন। তিনি বিবাহিত। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা বিবাহিত হতে পারবে না বলে বিএনপি যে শর্ত দিয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নাদিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, শর্তের বিষয়টি জানি। কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে যে বয়সের শর্ত দেওয়া হয়েছে তাতে এই বয়সে কোনো মেয়ের পক্ষে অবিবাহিত থাকা সম্ভব নয়। নারী প্রার্থী হিসেবে তার বিষয়টি দল সহজভাবে নেবে বলে মনেপ্রাণে বিশ^াস করেন তিনি। বয়সের বিষয়টি ছাত্রদের বেলায় শক্তভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
নাদিয়া বলেন, একটি রাজনৈতিক দলে নারীনেত্রীর সংখ্যা শতকরা ৩৩ ভাগ থাকতে হবে বলে নির্বাচন কমিশনের যে শর্ত আছে সে শর্ত পালন করলে ভালো হয়।