সুন্দরবন উপকূলে তাণ্ডবের ছাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০
এগারো বছর আগের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আইলার ক্ষত সারতে না সারতেই সুপার সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকা। গত বুধবার রাতব্যাপী প্রচণ্ড ঝড় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে লাখো গাছপালা। ভারী বর্ষণ ও তীব্র জোয়ারের পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের। সড়কে বড় বড় ভাঙা গাছ পড়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। আম্পানের তান্ডবে বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত হয়েছে গোটা সুন্দরবন উপকূল।
ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার ক্ষত সারতে না সারতেই আবারও লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সুন্দরবন উপকূলের খুলনার কয়রা, দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলা উপজেলাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। খুলনা মহানগরীসহ এসব এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ও স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত ও জোয়ারের পানির তোড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ছোট আংটিহারা বাকেরগাজীর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ, আংটিহারা মজিদ গাজীর পাশের বেড়িবাঁধ, জোড়সিং বাজারের পাশের বেড়িবাঁধ, কপোতাক্ষ নদের চোরামোখা খেয়াঘাটের কাছের বেড়িবাঁধ ও গোলখালী তসলিম মোল্লার বাড়ির পাশের বেড়িবাঁধ, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাজীপাড়া গ্রামের মাথায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ, কাটকাটা বাজারের শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা ও গোবরা ঘাটাখালী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের আধা কিলোমিটার এলাকাসহ ১০টি জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙে এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কয়রা নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ উপচে লবণ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এছাড়া ঝড়ে কয়রা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে জোয়ারে ছোট-বড় ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন অফিসের টিন উড়ে গেছে।
এছাড়া পাইকগাছা উপজেলার লতা, দেলুটি, লস্কর, গোড়ইখালী সোলাদানা ও রাড়ন্ডলি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে গাছপালা, কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা জানান, উপজেলায় ১৩-১৪টি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ওই এলাকার সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ঝড়ে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০

এগারো বছর আগের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আইলার ক্ষত সারতে না সারতেই সুপার সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকা। গত বুধবার রাতব্যাপী প্রচণ্ড ঝড় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে লাখো গাছপালা। ভারী বর্ষণ ও তীব্র জোয়ারের পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের। সড়কে বড় বড় ভাঙা গাছ পড়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। আম্পানের তান্ডবে বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত হয়েছে গোটা সুন্দরবন উপকূল।
ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার ক্ষত সারতে না সারতেই আবারও লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সুন্দরবন উপকূলের খুলনার কয়রা, দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলা উপজেলাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। খুলনা মহানগরীসহ এসব এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ও স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত ও জোয়ারের পানির তোড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ছোট আংটিহারা বাকেরগাজীর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ, আংটিহারা মজিদ গাজীর পাশের বেড়িবাঁধ, জোড়সিং বাজারের পাশের বেড়িবাঁধ, কপোতাক্ষ নদের চোরামোখা খেয়াঘাটের কাছের বেড়িবাঁধ ও গোলখালী তসলিম মোল্লার বাড়ির পাশের বেড়িবাঁধ, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাজীপাড়া গ্রামের মাথায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ, কাটকাটা বাজারের শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা ও গোবরা ঘাটাখালী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের আধা কিলোমিটার এলাকাসহ ১০টি জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙে এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কয়রা নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ উপচে লবণ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এছাড়া ঝড়ে কয়রা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে জোয়ারে ছোট-বড় ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন অফিসের টিন উড়ে গেছে।
এছাড়া পাইকগাছা উপজেলার লতা, দেলুটি, লস্কর, গোড়ইখালী সোলাদানা ও রাড়ন্ডলি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে গাছপালা, কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা জানান, উপজেলায় ১৩-১৪টি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ওই এলাকার সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ঝড়ে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।