টিউশন ফি ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া যাবে না : মাউশি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
করোনাভাইরাসের কারণে গত প্রায় ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার লক্ষণ থাকায় এরই মধ্যে অনলাইন এবং সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করে সরকার। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুল-কলেজ কর্র্তৃপক্ষ টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি পরিশোধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে জটিলতা তৈরি হলেও এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। অবশেষে গতকাল বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনার মধ্যে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নিতে পারবে। তবে পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন বা উন্নয়ন ফির মতো আনুষঙ্গিক ফি আদায় করতে পারবে না।
মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি আদায় করে থাকে তাহলে টিউশন ফি বাদে অন্যান্য ফি ফেরত দেবে। মহামারীর মধ্যে যেসব অভিভাবকের আয় কমে গেছে বা যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের সন্তানের টিউশন ফির বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
কর্র্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে। কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনো কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যতœশীল হতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, অভিভাবকদের অসুবিধার কথা যেমন ভাবতে হবে, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায় কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন চরম সংকটে পতিত না হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
মাউশি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ২০২১ সালের শুরুতে কভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফির নামে অর্থ নিতে পারবে না। গত ১৮ মার্চের পর থেকে ইতিমধ্যে টিউশন ফি ছাড়া অন্য কোনো ফি নিয়ে থাকলে তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামী বছরের শুরুতে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে একই নিয়মে শুধু টিউশন ফি নিতে পারবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগের নিয়মে সব ফি নিতে পারবে তারা। মহামারীর এই সময়ে সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসের পাশাপাশি বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও কিছু প্রতিষ্ঠান তা ‘ভালোভাবে’ করতে পারেনি। একইভাবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এসব অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, কিছু শিক্ষার্থী পারেনি। সার্বিক বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করে উদ্ভূত এই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘টিউশন ফি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক দুইপক্ষকেই সহনশীল হতে হবে। অভিভাবকরা ফি না দিলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কীভাবে হবে? তবে এ কথাও সত্য যে, করোনার কারণে বহু অভিভাবকের আয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মানবিক হতে হবে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

করোনাভাইরাসের কারণে গত প্রায় ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার লক্ষণ থাকায় এরই মধ্যে অনলাইন এবং সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করে সরকার। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুল-কলেজ কর্র্তৃপক্ষ টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি পরিশোধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে জটিলতা তৈরি হলেও এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। অবশেষে গতকাল বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনার মধ্যে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নিতে পারবে। তবে পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন বা উন্নয়ন ফির মতো আনুষঙ্গিক ফি আদায় করতে পারবে না।
মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি আদায় করে থাকে তাহলে টিউশন ফি বাদে অন্যান্য ফি ফেরত দেবে। মহামারীর মধ্যে যেসব অভিভাবকের আয় কমে গেছে বা যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের সন্তানের টিউশন ফির বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
কর্র্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে। কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনো কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যতœশীল হতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, অভিভাবকদের অসুবিধার কথা যেমন ভাবতে হবে, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায় কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন চরম সংকটে পতিত না হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
মাউশি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ২০২১ সালের শুরুতে কভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফির নামে অর্থ নিতে পারবে না। গত ১৮ মার্চের পর থেকে ইতিমধ্যে টিউশন ফি ছাড়া অন্য কোনো ফি নিয়ে থাকলে তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামী বছরের শুরুতে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে একই নিয়মে শুধু টিউশন ফি নিতে পারবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগের নিয়মে সব ফি নিতে পারবে তারা। মহামারীর এই সময়ে সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসের পাশাপাশি বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও কিছু প্রতিষ্ঠান তা ‘ভালোভাবে’ করতে পারেনি। একইভাবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এসব অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, কিছু শিক্ষার্থী পারেনি। সার্বিক বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করে উদ্ভূত এই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘টিউশন ফি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক দুইপক্ষকেই সহনশীল হতে হবে। অভিভাবকরা ফি না দিলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কীভাবে হবে? তবে এ কথাও সত্য যে, করোনার কারণে বহু অভিভাবকের আয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মানবিক হতে হবে।