করোনাকালে চাকরিচ্যুত লাখো পোশাকশ্রমিক
খুলছে ইইউ-জার্মান প্রণোদনার জট
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
করোনাকালে চাকরিচ্যুত পোশাকশ্রমিকদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মান সরকার ঘোষিত প্রণোদনা অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর এই অর্থ গ্রহণ ও বণ্টনের জন্য একটি কমিটি গঠন করে সরকার। মোট ১১৩ মিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা) এই প্রণোদনা ৩ কিস্তিতে ভাগ করে বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে চলতি বছরই অন্তত দুটি কিস্তি বিতরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত কমিটির প্রথম বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সবমিলিয়ে কারখানা মালিকরা সহায়তা করলে ডিসেম্বরের শুরুতেই অনুদানের টাকা পেতে যাচ্ছেন চাকরিহারা শ্রমিকরা।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ছোট কারখানাগুলোর জন্য নতুন করে আরও ১২ কোটি টাকার প্রণোদনা দিতে চাইছে জার্মানি। এ লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ধস নামে। ওই সময়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়াদেশ বাতিল/স্থগিত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কারখানাগুলো সাধারণ ছুটি/লে-অফ ঘোষণা করা হয়। অনেক শ্রমিকের চাকরি চলে যায়।
সরকারের সিদ্ধান্তেমালিকরা কারখানা বন্ধ থাকাকালে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ হারে বেতন দেয়। এরই মধ্যে গত জুনে সামাজিক সুরক্ষার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জন্য ১১৩ মিলিয়ন ইউরো প্রণোদনার ঘোষণা দেয় ইইউ ও জার্মানি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা (প্রতি ইউরো ৯৭ টাকা হিসাবে)। এর মধ্যে ইইউর অংশীদারিত্ব ৯৩ মিলিয়ন ইউরো। এ বিষয়ে জুলাইয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) চিঠি দেয় ইইউ ও জার্মানি। কিন্তু কারখানা মালিকদের অনীহার পাশাপাশি অর্থ গ্রহণ ও বণ্টনের বিষয়ে কোনো রূপরেখা না থাকায় এতদিন এই টাকা আটকে ছিল। এভাবে কয়েক মাস চলার পর গত ১৮ নভেম্বর রপ্তানিমুখী পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করে সরকার। ১১ সদস্যের ওই কমিটিতে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সভাপতি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসার, বিকেএমইএর পরিচালক ফজলে শামীম এহসান, বিজিএমইএর যুগ্ম সচিব এ কে এম মামুনুর রশিদ, এলএফএমএবির নির্বাহী পরিচালক কাজী রওশন আরা, বিএএলএলএফইএর সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন উন্নয়ন বিভাগের সেক্রেটারি কোয়েন এভিরার্ট, শ্রম অধিদপ্তরের অডিও ভিজ্যুয়াল অফিসার শফিকুল ইসলাম এবং শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক আবু আশরীফ খান।
জানা গেছে, গতকাল কমিটির প্রথম বৈঠকে ১১৩ মিলিয়ন ইউরো প্রণোদনার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। চলতি বছরের মধ্যেই শ্রমিকদের কমপক্ষে ২টি কিস্তি অর্থাৎ ৬ হাজার টাকা করে বিতরণের বিষয়ে সবাই সম্মত হন। এজন্য শিগগিরই কারখানা মালিকদের কাছে চাকরিচ্যুত শ্রমিকের তালিকা চাইবে কমিটি। তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রণোদনার অর্থ বিতরণ করা হবে। প্রণোদানা যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু শর্ত নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শ্রমিককে অবশ্যই গত ফেব্রুয়ারিতে চাকরিরত অবস্থায় থাকতে হবে, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর চাকরি হারিয়েছেন এমন শ্রমিক হতে হবে, এক কারখানা থেকে চাকরি হারিয়ে অন্য কারখানায় চাকরি করছেন এমন শ্রমিক প্রণোদনার জন্য বিবেচিত হবেন না এবং কারখানা মালিকদের পাঠানো তালিকার ভিত্তিতেই প্রণোদনা দেওয়া হবে।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ও পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ পরিচালক ফজলে শামীম এহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১০ লাখ চাকরিচ্যুত শ্রমিককে এই অর্থ দেওয়ার কথা। তবে আমাদের হিসাবে হয়তো সর্বসাকল্যে দেড় লাখ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করব যাতে সবাই এই টাকাটা পায়। এজন্য কারখানা মালিকদেরও সহায়তা প্রয়োজন। তারা চাকরিচ্যুত শ্রমিকের তালিকা প্রেরণ করলে আমরা তা ডাটাবেজের সঙ্গে মিলিয়ে টাকা বিতরণ করতে পারব। বিতরণের পর অবশিষ্ট টাকা থাকলে সে বিষয়ে কমিটি হয়তো একটা সুপারিশ করবে। এখানে ইইউ ও জার্মান সরকারেরও বিষয় আছে। সবার সম্মতিতে টাকার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় যে লাভ হয়েছে তা হলো, প্রণোদনা গ্রহণ ও বণ্টনের বিষয়ে আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা বা রূপরেখা ছিল না। এখন সেটাও হলো। একটা কাঠামো দাঁড়িয়ে গেল। আবার করোনায় ঠিক কত পোশাক কারখানা শ্রমিক বেকার হয়েছে তারও একটি মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে।’
এদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত ছোট কারখানাগুলোর জন্য জার্মান সরকার আরও ১২ কোটি টাকা অনুদান দিতে চাইছে। এটি তাদের দ্বিতীয় ধাপের অনুদান। অর্থের পরিমাণ কম হওয়ায় প্রথমে এই টাকা গ্রহণে কিছুটা অনীহা দেখিয়েছিল কারখানা মালিকরা। তবে সরকারের আগ্রহ থাকায় ব্যবসায়ীরাও এখন মত পাল্টেছে। এই প্রকল্পে সুবিধাভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ হাজার। যেসব ছোট কারখানা করোনার কারণে ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে বা বেতন দিতে সমস্যায় পড়ছে সেসব কারখানাকে সহায়তার জন্যই এই প্রকল্প। এর আওত্তায় বেতন সহায়তা হিসেবে শ্রমিকপ্রতি ৩ হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে। একবারই এই অর্থ দেওয়া হবে। বর্তমানে এই টাকা গ্রহণ ও বণ্টনের জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে। যেসব কারখানা বছরে ৫ মিলিয়ন ডলারের কম মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে তাদের ছোট কারখানা বলা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকেএমইএ পরিচালক ফজলে শামীম এহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ১ মাস শ্রমিককে বসিয়ে রেখে ৩৫০০ কোটি টাকা বেতন দিয়েছি। সেখানে ১২ কোটি টাকা খুবই সামান্য। তাই শুরুতে অনেকেই এটা নিতে চাইছিল না। কিন্তু সরকারের আগ্রহের কারণে এবং শ্রমিকের কথা ভেবে আমরা রাজি হয়েছি। কমিটি গঠন হলে আমরা এই টাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

করোনাকালে চাকরিচ্যুত পোশাকশ্রমিকদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মান সরকার ঘোষিত প্রণোদনা অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর এই অর্থ গ্রহণ ও বণ্টনের জন্য একটি কমিটি গঠন করে সরকার। মোট ১১৩ মিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা) এই প্রণোদনা ৩ কিস্তিতে ভাগ করে বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে চলতি বছরই অন্তত দুটি কিস্তি বিতরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত কমিটির প্রথম বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সবমিলিয়ে কারখানা মালিকরা সহায়তা করলে ডিসেম্বরের শুরুতেই অনুদানের টাকা পেতে যাচ্ছেন চাকরিহারা শ্রমিকরা।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ছোট কারখানাগুলোর জন্য নতুন করে আরও ১২ কোটি টাকার প্রণোদনা দিতে চাইছে জার্মানি। এ লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ধস নামে। ওই সময়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়াদেশ বাতিল/স্থগিত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কারখানাগুলো সাধারণ ছুটি/লে-অফ ঘোষণা করা হয়। অনেক শ্রমিকের চাকরি চলে যায়।
সরকারের সিদ্ধান্তেমালিকরা কারখানা বন্ধ থাকাকালে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ হারে বেতন দেয়। এরই মধ্যে গত জুনে সামাজিক সুরক্ষার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জন্য ১১৩ মিলিয়ন ইউরো প্রণোদনার ঘোষণা দেয় ইইউ ও জার্মানি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা (প্রতি ইউরো ৯৭ টাকা হিসাবে)। এর মধ্যে ইইউর অংশীদারিত্ব ৯৩ মিলিয়ন ইউরো। এ বিষয়ে জুলাইয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) চিঠি দেয় ইইউ ও জার্মানি। কিন্তু কারখানা মালিকদের অনীহার পাশাপাশি অর্থ গ্রহণ ও বণ্টনের বিষয়ে কোনো রূপরেখা না থাকায় এতদিন এই টাকা আটকে ছিল। এভাবে কয়েক মাস চলার পর গত ১৮ নভেম্বর রপ্তানিমুখী পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করে সরকার। ১১ সদস্যের ওই কমিটিতে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সভাপতি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসার, বিকেএমইএর পরিচালক ফজলে শামীম এহসান, বিজিএমইএর যুগ্ম সচিব এ কে এম মামুনুর রশিদ, এলএফএমএবির নির্বাহী পরিচালক কাজী রওশন আরা, বিএএলএলএফইএর সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন উন্নয়ন বিভাগের সেক্রেটারি কোয়েন এভিরার্ট, শ্রম অধিদপ্তরের অডিও ভিজ্যুয়াল অফিসার শফিকুল ইসলাম এবং শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক আবু আশরীফ খান।
জানা গেছে, গতকাল কমিটির প্রথম বৈঠকে ১১৩ মিলিয়ন ইউরো প্রণোদনার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। চলতি বছরের মধ্যেই শ্রমিকদের কমপক্ষে ২টি কিস্তি অর্থাৎ ৬ হাজার টাকা করে বিতরণের বিষয়ে সবাই সম্মত হন। এজন্য শিগগিরই কারখানা মালিকদের কাছে চাকরিচ্যুত শ্রমিকের তালিকা চাইবে কমিটি। তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রণোদনার অর্থ বিতরণ করা হবে। প্রণোদানা যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু শর্ত নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শ্রমিককে অবশ্যই গত ফেব্রুয়ারিতে চাকরিরত অবস্থায় থাকতে হবে, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর চাকরি হারিয়েছেন এমন শ্রমিক হতে হবে, এক কারখানা থেকে চাকরি হারিয়ে অন্য কারখানায় চাকরি করছেন এমন শ্রমিক প্রণোদনার জন্য বিবেচিত হবেন না এবং কারখানা মালিকদের পাঠানো তালিকার ভিত্তিতেই প্রণোদনা দেওয়া হবে।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ও পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ পরিচালক ফজলে শামীম এহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১০ লাখ চাকরিচ্যুত শ্রমিককে এই অর্থ দেওয়ার কথা। তবে আমাদের হিসাবে হয়তো সর্বসাকল্যে দেড় লাখ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করব যাতে সবাই এই টাকাটা পায়। এজন্য কারখানা মালিকদেরও সহায়তা প্রয়োজন। তারা চাকরিচ্যুত শ্রমিকের তালিকা প্রেরণ করলে আমরা তা ডাটাবেজের সঙ্গে মিলিয়ে টাকা বিতরণ করতে পারব। বিতরণের পর অবশিষ্ট টাকা থাকলে সে বিষয়ে কমিটি হয়তো একটা সুপারিশ করবে। এখানে ইইউ ও জার্মান সরকারেরও বিষয় আছে। সবার সম্মতিতে টাকার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় যে লাভ হয়েছে তা হলো, প্রণোদনা গ্রহণ ও বণ্টনের বিষয়ে আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা বা রূপরেখা ছিল না। এখন সেটাও হলো। একটা কাঠামো দাঁড়িয়ে গেল। আবার করোনায় ঠিক কত পোশাক কারখানা শ্রমিক বেকার হয়েছে তারও একটি মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে।’
এদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত ছোট কারখানাগুলোর জন্য জার্মান সরকার আরও ১২ কোটি টাকা অনুদান দিতে চাইছে। এটি তাদের দ্বিতীয় ধাপের অনুদান। অর্থের পরিমাণ কম হওয়ায় প্রথমে এই টাকা গ্রহণে কিছুটা অনীহা দেখিয়েছিল কারখানা মালিকরা। তবে সরকারের আগ্রহ থাকায় ব্যবসায়ীরাও এখন মত পাল্টেছে। এই প্রকল্পে সুবিধাভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ হাজার। যেসব ছোট কারখানা করোনার কারণে ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে বা বেতন দিতে সমস্যায় পড়ছে সেসব কারখানাকে সহায়তার জন্যই এই প্রকল্প। এর আওত্তায় বেতন সহায়তা হিসেবে শ্রমিকপ্রতি ৩ হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে। একবারই এই অর্থ দেওয়া হবে। বর্তমানে এই টাকা গ্রহণ ও বণ্টনের জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে। যেসব কারখানা বছরে ৫ মিলিয়ন ডলারের কম মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে তাদের ছোট কারখানা বলা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকেএমইএ পরিচালক ফজলে শামীম এহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ১ মাস শ্রমিককে বসিয়ে রেখে ৩৫০০ কোটি টাকা বেতন দিয়েছি। সেখানে ১২ কোটি টাকা খুবই সামান্য। তাই শুরুতে অনেকেই এটা নিতে চাইছিল না। কিন্তু সরকারের আগ্রহের কারণে এবং শ্রমিকের কথা ভেবে আমরা রাজি হয়েছি। কমিটি গঠন হলে আমরা এই টাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’