নোয়াখালীতে কাদেরের ভাই
শেখ হাসিনা চেয়েছেন ফল, তারা এনে দিয়েছেন গাছসহ
নোয়াখালী সংবাদদাতা | ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
প্রশাসনের কিছু লোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অতি উৎসাহী আচরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেছেন, ‘তারা অনেক উড়ছেন, তারা মনে করেন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছেন তারা। শেখ হাসিনা চাইছেন ফল, তারা এনে দিয়েছেন গাছসহ কত অতি উৎসাহী। প্রশাসনের কিছু লোক এসব করেছেন শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য।’ গতকাল শুক্রবার সকালে বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক নির্বাচনী পথসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। আবদুল কাদের মির্জা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। সম্প্রতি দলীয় নেতাদের নানা অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হয়েছেন তিনি।
পথসভায় আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমেরিকা থেকে বিমানবন্দরে এসে আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলেছি, আমি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। আমি কি এটা থেকে সরে যেতে পারব? পারব না। কে রাঘব, কে বহিষ্কার করার কথা বলে, কে জেলে দেওয়ার কথা বলে, কে মেরে ফেলার কথা বলে। মেরে ফেললে আমি কবর ঠিক করে রেখেছি। হাশরের দিন যারা এসব করছে, তাদের সঙ্গে দেখা হবে।’
দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকারের জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কথা উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘শেখ হাসিনা মানুষের ভাতের অধিকার দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শেখ হাসিনা ভোটের অধিকার হরণ করেননি, ভোটের অধিকার হরণ করেছেন জিয়াউর রহমান, হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে।’ এ সময় আবদুল কাদেরের এসব বক্তব্য উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটাররা করতালি দিয়ে ‘ঠিক ঠিক’ বলে সমর্থন জানান।
আবদুল কাদের ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘একটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলি করে, গাড়িতে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, আমি এগুলো বললে খারাপ। টেন্ডারবাজি করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে। গরিব পুলিশের চাকরি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা কামিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়নের চাকরি দিতেও পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসের পিয়নের চাকরি দিতে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। এটা কি রাজনীতি। এই কথাগুলো বলছি পরিবর্তনের জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার এখন দিতে পারবেন একমাত্র শেখ হাসিনা। আর কেউ পারবেন না। খালেদা জিয়া ঘরে ঢুকে গেছেন। তার ছেলেটা চরিত্রহীন। তাকে দিয়ে বিএনপির রাজনীতি অচল। মওদুদ সাহেবও অসুস্থ। আর কোনো নেতাও নেই। শেখ হাসিনা সাহসী নেত্রী। ১৭ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন। তিনিই পারবেন মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে।’
নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আরও বলেন, ‘আমার স্পষ্ট বক্তব্য আমি আমেরিকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে যে উপলব্ধি হয়েছে, সেটি আমি বলেছি। আমি নোয়াখালীর রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আমি জানিও না আর আমার বলারও দরকার নেই। এগুলো অনেকে উল্টাপাল্টা লিখছে। সাংবাদিক ভাইয়েরাও বিপদে আছেন, অস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে, তারা কী করবেন। এখন সবাই ভালো লিখছেন।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। কিন্তু আমাদের প্রশাসন, দলের নেতারা কি তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন? পারেননি। এখন নেত্রী আপনি সিদ্ধান্ত দেন, দলের কোনো এমপি, জনপ্রতিনিধি হতে হলে মাদক ও নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না। আর যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তারা দলের কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। তাহলে দলের ভেতর অনিয়ম কমবে। আমরা এখন থেকে এটা কার্যকর করব।’
পথসভায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
নোয়াখালী সংবাদদাতা | ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

প্রশাসনের কিছু লোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অতি উৎসাহী আচরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেছেন, ‘তারা অনেক উড়ছেন, তারা মনে করেন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছেন তারা। শেখ হাসিনা চাইছেন ফল, তারা এনে দিয়েছেন গাছসহ কত অতি উৎসাহী। প্রশাসনের কিছু লোক এসব করেছেন শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য।’ গতকাল শুক্রবার সকালে বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক নির্বাচনী পথসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। আবদুল কাদের মির্জা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। সম্প্রতি দলীয় নেতাদের নানা অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হয়েছেন তিনি।
পথসভায় আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমেরিকা থেকে বিমানবন্দরে এসে আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলেছি, আমি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। আমি কি এটা থেকে সরে যেতে পারব? পারব না। কে রাঘব, কে বহিষ্কার করার কথা বলে, কে জেলে দেওয়ার কথা বলে, কে মেরে ফেলার কথা বলে। মেরে ফেললে আমি কবর ঠিক করে রেখেছি। হাশরের দিন যারা এসব করছে, তাদের সঙ্গে দেখা হবে।’
দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকারের জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কথা উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘শেখ হাসিনা মানুষের ভাতের অধিকার দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শেখ হাসিনা ভোটের অধিকার হরণ করেননি, ভোটের অধিকার হরণ করেছেন জিয়াউর রহমান, হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে।’ এ সময় আবদুল কাদেরের এসব বক্তব্য উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটাররা করতালি দিয়ে ‘ঠিক ঠিক’ বলে সমর্থন জানান।
আবদুল কাদের ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘একটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলি করে, গাড়িতে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, আমি এগুলো বললে খারাপ। টেন্ডারবাজি করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে। গরিব পুলিশের চাকরি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা কামিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়নের চাকরি দিতেও পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসের পিয়নের চাকরি দিতে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। এটা কি রাজনীতি। এই কথাগুলো বলছি পরিবর্তনের জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার এখন দিতে পারবেন একমাত্র শেখ হাসিনা। আর কেউ পারবেন না। খালেদা জিয়া ঘরে ঢুকে গেছেন। তার ছেলেটা চরিত্রহীন। তাকে দিয়ে বিএনপির রাজনীতি অচল। মওদুদ সাহেবও অসুস্থ। আর কোনো নেতাও নেই। শেখ হাসিনা সাহসী নেত্রী। ১৭ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন। তিনিই পারবেন মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে।’
নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আরও বলেন, ‘আমার স্পষ্ট বক্তব্য আমি আমেরিকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে যে উপলব্ধি হয়েছে, সেটি আমি বলেছি। আমি নোয়াখালীর রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আমি জানিও না আর আমার বলারও দরকার নেই। এগুলো অনেকে উল্টাপাল্টা লিখছে। সাংবাদিক ভাইয়েরাও বিপদে আছেন, অস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে, তারা কী করবেন। এখন সবাই ভালো লিখছেন।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। কিন্তু আমাদের প্রশাসন, দলের নেতারা কি তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন? পারেননি। এখন নেত্রী আপনি সিদ্ধান্ত দেন, দলের কোনো এমপি, জনপ্রতিনিধি হতে হলে মাদক ও নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না। আর যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তারা দলের কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। তাহলে দলের ভেতর অনিয়ম কমবে। আমরা এখন থেকে এটা কার্যকর করব।’
পথসভায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।