টিকা ক্রয় ও বিতরণে স্বচ্ছতার দাবি টিআইবির
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
করোনাভাইরাসের টিকা কেনা ও বিতরণে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এতে বলা হয়েছে, মহামারী চলাকালে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় স্বাস্থ্য খাতে অবারিত দুর্নীতি দেখা গেছে। টিকা কার্যক্রমে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সতর্ক থাকতে হবে। মহামারী যেন কারও পকেটপূর্তির উৎসবে পরিণত না হয়।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কভিড-১৯-এর টিকার সংখ্যা খুবই কম হওয়ায় এটি পেতে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা রয়েছে। এমন বাস্তবতার মধ্যেও সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে সম্প্রতি এ টিকা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা-বিতর্ক উঠেছে। মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বাণিজ্যিক চুক্তিটিকে জিটুজি বলার চেষ্টা চালিয়েছে, যা অনভিপ্রেত।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতে টিকার অনুমোদনের পরদিনই যেভাবে দ্রুতগতিতে কাভিশিল্ডের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসনের বিদ্যমান আইন কতটা মানা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একইভাবে সরাসরি কেনা টিকার জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে তাদের খরচ ও কমিশন বাবদ যে মূল্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা কোন নীতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নেওয়া হয়েছে সেটি পরিষ্কার নয়। ফলে এটি যেকোনো পর্যায়ের সরকারি কেনাকাটার স্বচ্ছতার পরিপন্থী।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কভিড-১৯-এর টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। দেশে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও বেশ কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর বাতিল হয়। আবার বিতর্কের মধ্যেই দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের টিকার ট্রায়াল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে। একইভাবে চীনা কোম্পানি আনহুই জিফেইর টিকার ট্রায়াল চালানোর চিন্তাভাবনার কথা জানা যাচ্ছে সমালোচনার মুখে।’
তিনি বলেন, ‘এর মাঝে সংরক্ষণ জটিলতা থাকার পরও কোভ্যাক্স উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফাইজারের টিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারি মূল্যায়ন অনুযায়ী ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ ও ব্যবহারে ৬৪ জেলার ৫৬টিতেই মানসম্পন্ন বিশেষ শীতলীকরণ ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করতে হবে। টিকাটির প্রয়োগে বিশেষ সিরিঞ্জের প্রাপ্তির চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত কতটা ফলদায়ক হবে? এ ছাড়া টিকার দাম কত নির্ধারণ করা হবে তা পরিষ্কার করা দরকার।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

করোনাভাইরাসের টিকা কেনা ও বিতরণে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এতে বলা হয়েছে, মহামারী চলাকালে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় স্বাস্থ্য খাতে অবারিত দুর্নীতি দেখা গেছে। টিকা কার্যক্রমে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সতর্ক থাকতে হবে। মহামারী যেন কারও পকেটপূর্তির উৎসবে পরিণত না হয়।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কভিড-১৯-এর টিকার সংখ্যা খুবই কম হওয়ায় এটি পেতে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা রয়েছে। এমন বাস্তবতার মধ্যেও সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে সম্প্রতি এ টিকা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা-বিতর্ক উঠেছে। মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বাণিজ্যিক চুক্তিটিকে জিটুজি বলার চেষ্টা চালিয়েছে, যা অনভিপ্রেত।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতে টিকার অনুমোদনের পরদিনই যেভাবে দ্রুতগতিতে কাভিশিল্ডের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসনের বিদ্যমান আইন কতটা মানা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একইভাবে সরাসরি কেনা টিকার জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে তাদের খরচ ও কমিশন বাবদ যে মূল্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা কোন নীতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নেওয়া হয়েছে সেটি পরিষ্কার নয়। ফলে এটি যেকোনো পর্যায়ের সরকারি কেনাকাটার স্বচ্ছতার পরিপন্থী।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কভিড-১৯-এর টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। দেশে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও বেশ কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর বাতিল হয়। আবার বিতর্কের মধ্যেই দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের টিকার ট্রায়াল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে। একইভাবে চীনা কোম্পানি আনহুই জিফেইর টিকার ট্রায়াল চালানোর চিন্তাভাবনার কথা জানা যাচ্ছে সমালোচনার মুখে।’
তিনি বলেন, ‘এর মাঝে সংরক্ষণ জটিলতা থাকার পরও কোভ্যাক্স উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফাইজারের টিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারি মূল্যায়ন অনুযায়ী ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ ও ব্যবহারে ৬৪ জেলার ৫৬টিতেই মানসম্পন্ন বিশেষ শীতলীকরণ ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করতে হবে। টিকাটির প্রয়োগে বিশেষ সিরিঞ্জের প্রাপ্তির চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত কতটা ফলদায়ক হবে? এ ছাড়া টিকার দাম কত নির্ধারণ করা হবে তা পরিষ্কার করা দরকার।’