হিলি স্থলবন্দরে আটকে থাকা চাল খালাস শুরু
হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
শুল্কায়ন মূল্য ও আদেশ জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে হিলি স্থলবন্দরে আটকে থাকা এক হাজার টনের বেশি চাল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত সোমবার রাত ৯টার পর থেকে আমদানি করা চালগুলো খালাস শুরু হয়। শুল্ক কর্মকর্তাদের ‘গাফিলতির’ কারণে তিন দিন ধরে চাল খালাস করতে না পারায় আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। আমদানি করা এসব চাল দেশের বাজারে প্রবেশ করলে চালের বর্তমান দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, গত শনিবার বন্দর দিয়ে প্রথম চালান হিসেবে নওগাঁর আমদানিকারক জগদীশ চন্দ্র রায় তিনটি ট্রাকে ১১২ টন চাল আমদানি করেন। পরদিন রবিবার বন্দর দিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির হেনা এন্টারপ্রাইজ ২০টি ট্রাকে ৮২৮ টন চাল আমদানি করে। এরপর গত সোমবার বন্দর দিয়ে উল্লিখিত দুই আমদানিকারক আরও আট ট্রাকে ৩২৯ টন চাল আমদানি করেন। সব মিলিয়ে তিন দিনে বন্দরে আটকা পড়ে আমদানি করা ১ হাজার ২৬৯ টন চাল। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, ‘দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক বেসরকারি আমদানিকারককে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। সেসব নির্দেশনা মেনে বন্দর দিয়ে গত শনিবার থেকে চাল আমদানি শুরু করেন আমদানিকারকরা। কিন্তু কাস্টমসের গাফিলতির কারণে গত তিন দিন ধরে আমদানি করা চাল খালাস নিতে পারিনি আমরা। সরকার চাল আমদানি থেকে শুরু করে বাজারে সরবরাহ করার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু চাল আমদানি করার পর তিন দিন যদি বন্দরেই আটকা থাকে তাহলে শর্ত কীভাবে পূরণ করব, একই সঙ্গে চালের বাজার কমবে কীভাবে?’
আমদানি করা চাল দ্রুত ছাড়করণ ও দেশের বাজারে সরবরাহ করতে কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্র্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হারুন উর রশীদ বলেন, ‘এসব চাল দেশের বাজারে সরবরাহ শুরু হলে চালের বাজার কমে আসবে।’
হিলি স্থল শুল্কস্টেশনের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম বলেন, ‘বন্দর দিয়ে গত তিন দিন ধরে আমদানি করা চালগুলো গত রবি ও সোমবার ছাড়করণ করতে পারিনি কিছু আইনি জটিলতা থাকার কারণে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করেছি, চালের শুল্কায়ন মূল্য নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল সেটিও সমাধান হয়েছে। যেসব চাল বন্দরে আটকা রয়েছে সেগুলো দ্রুত খালাসকরণের জন্য তৎপর রয়েছি, একই সঙ্গে আটকে থাকা চালগুলো খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে যেসব চাল আসবে সেগুলো নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না। বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত দুজন আমদানিকারক চাল আমদানি করেছেন। এর মধ্যে একজন আমদানিকারক ৪২৫ মার্কিন ডলার মূল্যে চাল আমদানি করেছেন, সেই মূল্যেই সেটি শুল্কায়ন করে ছাড় দেওয়া হবে। অপর আমদানিকারক ৩৫৬ মার্কিন ডলার মূল্যে চাল আমদানি করেছেন, সেটি ৩৭০ মার্কিন ডলার মূল্যে শুল্কায়ন করে ছাড় দেওয়া হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। উনি ওই মূল্যে চাল নিতে রাজি হয়েছেন। সেভাবেই চালগুলো শুল্কায়ন করে ছাড়করণ দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে গতকাল মঙ্গলবারও বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে জানিয়ে হিলি স্থলবন্দর পরিচালনকারী প্রতিষ্ঠান পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) বন্দর দিয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিনজন আমদানিকারকের ১৫ ট্রাক চাল আমদানি হয়েছে এবং ১৫ ট্রাক চাল খালাস কার্যক্রম চলছে।’
শেয়ার করুন
হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

শুল্কায়ন মূল্য ও আদেশ জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে হিলি স্থলবন্দরে আটকে থাকা এক হাজার টনের বেশি চাল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত সোমবার রাত ৯টার পর থেকে আমদানি করা চালগুলো খালাস শুরু হয়। শুল্ক কর্মকর্তাদের ‘গাফিলতির’ কারণে তিন দিন ধরে চাল খালাস করতে না পারায় আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। আমদানি করা এসব চাল দেশের বাজারে প্রবেশ করলে চালের বর্তমান দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, গত শনিবার বন্দর দিয়ে প্রথম চালান হিসেবে নওগাঁর আমদানিকারক জগদীশ চন্দ্র রায় তিনটি ট্রাকে ১১২ টন চাল আমদানি করেন। পরদিন রবিবার বন্দর দিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির হেনা এন্টারপ্রাইজ ২০টি ট্রাকে ৮২৮ টন চাল আমদানি করে। এরপর গত সোমবার বন্দর দিয়ে উল্লিখিত দুই আমদানিকারক আরও আট ট্রাকে ৩২৯ টন চাল আমদানি করেন। সব মিলিয়ে তিন দিনে বন্দরে আটকা পড়ে আমদানি করা ১ হাজার ২৬৯ টন চাল। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, ‘দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক বেসরকারি আমদানিকারককে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। সেসব নির্দেশনা মেনে বন্দর দিয়ে গত শনিবার থেকে চাল আমদানি শুরু করেন আমদানিকারকরা। কিন্তু কাস্টমসের গাফিলতির কারণে গত তিন দিন ধরে আমদানি করা চাল খালাস নিতে পারিনি আমরা। সরকার চাল আমদানি থেকে শুরু করে বাজারে সরবরাহ করার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু চাল আমদানি করার পর তিন দিন যদি বন্দরেই আটকা থাকে তাহলে শর্ত কীভাবে পূরণ করব, একই সঙ্গে চালের বাজার কমবে কীভাবে?’
আমদানি করা চাল দ্রুত ছাড়করণ ও দেশের বাজারে সরবরাহ করতে কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্র্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হারুন উর রশীদ বলেন, ‘এসব চাল দেশের বাজারে সরবরাহ শুরু হলে চালের বাজার কমে আসবে।’
হিলি স্থল শুল্কস্টেশনের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম বলেন, ‘বন্দর দিয়ে গত তিন দিন ধরে আমদানি করা চালগুলো গত রবি ও সোমবার ছাড়করণ করতে পারিনি কিছু আইনি জটিলতা থাকার কারণে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করেছি, চালের শুল্কায়ন মূল্য নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল সেটিও সমাধান হয়েছে। যেসব চাল বন্দরে আটকা রয়েছে সেগুলো দ্রুত খালাসকরণের জন্য তৎপর রয়েছি, একই সঙ্গে আটকে থাকা চালগুলো খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে যেসব চাল আসবে সেগুলো নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না। বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত দুজন আমদানিকারক চাল আমদানি করেছেন। এর মধ্যে একজন আমদানিকারক ৪২৫ মার্কিন ডলার মূল্যে চাল আমদানি করেছেন, সেই মূল্যেই সেটি শুল্কায়ন করে ছাড় দেওয়া হবে। অপর আমদানিকারক ৩৫৬ মার্কিন ডলার মূল্যে চাল আমদানি করেছেন, সেটি ৩৭০ মার্কিন ডলার মূল্যে শুল্কায়ন করে ছাড় দেওয়া হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। উনি ওই মূল্যে চাল নিতে রাজি হয়েছেন। সেভাবেই চালগুলো শুল্কায়ন করে ছাড়করণ দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে গতকাল মঙ্গলবারও বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে জানিয়ে হিলি স্থলবন্দর পরিচালনকারী প্রতিষ্ঠান পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) বন্দর দিয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিনজন আমদানিকারকের ১৫ ট্রাক চাল আমদানি হয়েছে এবং ১৫ ট্রাক চাল খালাস কার্যক্রম চলছে।’