ঢাবির শতবর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
গবেষণা ছাড়া কোনো কিছু অর্জন সম্ভব নয়
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘দেশের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গবেষণা ছাড়া কোনো কিছু অর্জন সম্ভব নয়। আপনারা গবেষণাকে গুরুত্ব দেবেন। আমরা সেটাই চাই। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ‘সেলিব্রেটিং হানড্রেড ইয়ার্স অব দ্য ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা : রিফ্লেকশনস ফ্রম দ্য অ্যালামনাই-ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ন্যাশনাল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। সম্মেলনের শুরুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের অনেক বাধা দিয়েছে। কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন গবেষণা করা।’ তিনি বলেন, ‘আমার একটাই আকাক্সক্ষা যে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার যে মানবসম্পদ গড়ে তোলা, সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হবে। একই সঙ্গে সারা বাংলাদেশে যত বিশ্ববিদ্যালয় করে যাচ্ছি তারাও সেটি অনুসরণ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব ধরনের সহযোগিতা পাবে। এটুকু অ্যালামনাই হিসেবেও বলতে পারি। এটা আমার গর্বের বিষয়। আমরা চাই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা এ স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, এই স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বাঙালি হিসেবে আমাদের অর্জনের ও গৌরবের। আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি সত্যিই খুব গর্বিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালায় তখন তারা রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং ৩২ নম্বরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি বেছে নিয়েছিল। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষককে হত্যা করেছিল। পরবর্তী সময়ে যখন আমাদের বিজয় সন্নিকটে সে সময় আমাদের শিক্ষকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিশেষ করে আমার বিভাগের তো অনেককেই আর আমি সারা জীবনেও দেখতে পারিনি। আমি আজ সবাইকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। বাংলাদেশ এই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমরা আরও অগ্রসরমানতা দেখতে চাই। এটি সত্য, শিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে বৈশ্বিক মানের বিবেচনায় আমরা এখনো কাক্সিক্ষত মানে পৌঁছাতে পারিনি। এটির উত্তরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে। কেননা শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। তাই আমাদের সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সময়োপযোগী কার্যসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈশ্বিক সূচকে আশাব্যঞ্জক ভূমিকা রাখতে হবে। আমি আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফল হবে।
এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্যসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট ও বিভাগের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘দেশের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গবেষণা ছাড়া কোনো কিছু অর্জন সম্ভব নয়। আপনারা গবেষণাকে গুরুত্ব দেবেন। আমরা সেটাই চাই। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ‘সেলিব্রেটিং হানড্রেড ইয়ার্স অব দ্য ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা : রিফ্লেকশনস ফ্রম দ্য অ্যালামনাই-ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ন্যাশনাল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। সম্মেলনের শুরুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের অনেক বাধা দিয়েছে। কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন গবেষণা করা।’ তিনি বলেন, ‘আমার একটাই আকাক্সক্ষা যে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার যে মানবসম্পদ গড়ে তোলা, সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হবে। একই সঙ্গে সারা বাংলাদেশে যত বিশ্ববিদ্যালয় করে যাচ্ছি তারাও সেটি অনুসরণ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব ধরনের সহযোগিতা পাবে। এটুকু অ্যালামনাই হিসেবেও বলতে পারি। এটা আমার গর্বের বিষয়। আমরা চাই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা এ স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, এই স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বাঙালি হিসেবে আমাদের অর্জনের ও গৌরবের। আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি সত্যিই খুব গর্বিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালায় তখন তারা রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং ৩২ নম্বরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি বেছে নিয়েছিল। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষককে হত্যা করেছিল। পরবর্তী সময়ে যখন আমাদের বিজয় সন্নিকটে সে সময় আমাদের শিক্ষকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিশেষ করে আমার বিভাগের তো অনেককেই আর আমি সারা জীবনেও দেখতে পারিনি। আমি আজ সবাইকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। বাংলাদেশ এই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমরা আরও অগ্রসরমানতা দেখতে চাই। এটি সত্য, শিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে বৈশ্বিক মানের বিবেচনায় আমরা এখনো কাক্সিক্ষত মানে পৌঁছাতে পারিনি। এটির উত্তরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে। কেননা শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। তাই আমাদের সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সময়োপযোগী কার্যসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈশ্বিক সূচকে আশাব্যঞ্জক ভূমিকা রাখতে হবে। আমি আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফল হবে।
এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্যসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট ও বিভাগের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।