দিশেহারা শিক্ষা প্রশাসন
রশিদ আল রুহানী | ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ এমনকি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের প্রতি স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দিতে পারছে না তারা। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের পর মন্ত্রণালয় গত বছর আগস্ট মাস থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়ার পরামর্শ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মেসে এবং ভাড়া বাড়িতে থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি হঠাৎই হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলন চরমে উঠছে; লক্ষ্য করেই গত সোমবার জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও ঢাবি অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান। পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণার এক দিন পরই গতকাল বুধবার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা চালু রাখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নির্দেশনায় শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, পরীক্ষা নিলেও হল খোলা যাবে না।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, গোটা শিক্ষা পরিবারের দেশের সাড়ে ছয় কোটি মানুষ যুক্ত। সিদ্ধান্ত যেটা যখনই নেওয়া হোক না কেন, ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত। অন্যদিকে গত মঙ্গলবার একটি অনলাইন জরিপে অংশ নিয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় উভয় সংকটে।’ এদিকে কয়েকজন উপাচার্য বলছেন, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ
থাকলে নিয়ে নেওয়া উচিত। যেমনটা সাত কলেজের ক্ষেত্রে করা হলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একেক সময়ে একেক ধরনের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল বলেছেন, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সাত কলেজে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা কেন বন্ধ থাকবে? পরীক্ষার দাবিতে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান তারা।
উল্লেখ্য, হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী ১৭ মে আবাসিক হল খোলা হবে এবং ২৪ মে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। যদিও পরে তারা আন্দোলন থেকে সরে যান। এদিকে মন্ত্রীর নির্দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও ঢাবি অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। গত মঙ্গলবার থেকে চলতে থাকা আন্দোলনের একপর্যায়ে গতকাল সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রাখেন। এতে সাধারণ পথচারী ও পরিবহন যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এমন সময় গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি এক বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে জানান, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। তবে হল খোলা যাবে না। এরপর অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা স্থগিত রেখে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে ফোন করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে ঢাবির নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা স্থগিত রেখে অধিভুক্ত সাত কলেজের চলমান পরীক্ষা কেন নেওয়ার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যেটা ভালো সেটাই করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থীর হলে ওঠার সঙ্গে সম্পর্ক নেই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ উপাচার্য এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
এদিকে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএস মাকসুদ কামালকে ফোন করলেও তিনি কেটে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল দেশ রূপান্তরকে জানান, মন্ত্রণালয় একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। পাবলিক ও প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করে আবারও সেশনজটে ফেলে দিল সরকার। এছাড়া নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এলেও পরীক্ষা আটকে থাকায় এসব নিয়োগ পরীক্ষাতেও অংশ নেওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে। ফলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আবারও আন্দোলনে যাবেন বলে জানান তারা।
মন্ত্রণালয়ের এমন আচমকা সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি আমাদের বিরাট একটা সংকটে ফেলে দিয়েছে যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। বাধ্য হয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছে। শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক সবারই স্বাস্থ্য সচেতন করা ও এ বিষয়ে সতর্ক করার দায়িত্ব সরকারের। দেশে সাড়ে ছয় কোটি মানুষ শিক্ষা পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। ফলে এদের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত খুব ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত। হঠাৎ একটা কিছু মাথায় এলো আর সেটা জানিয়ে দিলামÑ এমনটা হওয়া উচিত নয়।’
জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হলে সেটাই করা উচিত। শিক্ষার্থীরা অন্তত পরীক্ষাগুলো শেষ করে ফেলত। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে এ পর্যায়ের সব পরীক্ষা নিয়ে রেজাল্টও দিয়ে দিয়েছে।’
অন্যদিকে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘অবশেষে স্কুল খুলছে : আমরা কতখানি প্রস্তুত?’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে অংশ নিয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘সরকার উভয় সংকটে রয়েছে। খুলে দিলেও অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে। আবার না খুললেও চাপ তৈরি হচ্ছে।’
শেয়ার করুন
রশিদ আল রুহানী | ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ এমনকি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের প্রতি স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দিতে পারছে না তারা। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের পর মন্ত্রণালয় গত বছর আগস্ট মাস থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়ার পরামর্শ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মেসে এবং ভাড়া বাড়িতে থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি হঠাৎই হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলন চরমে উঠছে; লক্ষ্য করেই গত সোমবার জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও ঢাবি অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান। পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণার এক দিন পরই গতকাল বুধবার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা চালু রাখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নির্দেশনায় শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, পরীক্ষা নিলেও হল খোলা যাবে না।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, গোটা শিক্ষা পরিবারের দেশের সাড়ে ছয় কোটি মানুষ যুক্ত। সিদ্ধান্ত যেটা যখনই নেওয়া হোক না কেন, ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত। অন্যদিকে গত মঙ্গলবার একটি অনলাইন জরিপে অংশ নিয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় উভয় সংকটে।’ এদিকে কয়েকজন উপাচার্য বলছেন, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ
থাকলে নিয়ে নেওয়া উচিত। যেমনটা সাত কলেজের ক্ষেত্রে করা হলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একেক সময়ে একেক ধরনের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল বলেছেন, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সাত কলেজে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা কেন বন্ধ থাকবে? পরীক্ষার দাবিতে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান তারা।
উল্লেখ্য, হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী ১৭ মে আবাসিক হল খোলা হবে এবং ২৪ মে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। যদিও পরে তারা আন্দোলন থেকে সরে যান। এদিকে মন্ত্রীর নির্দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও ঢাবি অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। গত মঙ্গলবার থেকে চলতে থাকা আন্দোলনের একপর্যায়ে গতকাল সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রাখেন। এতে সাধারণ পথচারী ও পরিবহন যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এমন সময় গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি এক বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে জানান, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। তবে হল খোলা যাবে না। এরপর অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা স্থগিত রেখে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে ফোন করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে ঢাবির নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা স্থগিত রেখে অধিভুক্ত সাত কলেজের চলমান পরীক্ষা কেন নেওয়ার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যেটা ভালো সেটাই করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থীর হলে ওঠার সঙ্গে সম্পর্ক নেই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ উপাচার্য এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
এদিকে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএস মাকসুদ কামালকে ফোন করলেও তিনি কেটে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল দেশ রূপান্তরকে জানান, মন্ত্রণালয় একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। পাবলিক ও প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করে আবারও সেশনজটে ফেলে দিল সরকার। এছাড়া নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এলেও পরীক্ষা আটকে থাকায় এসব নিয়োগ পরীক্ষাতেও অংশ নেওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে। ফলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আবারও আন্দোলনে যাবেন বলে জানান তারা।
মন্ত্রণালয়ের এমন আচমকা সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি আমাদের বিরাট একটা সংকটে ফেলে দিয়েছে যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। বাধ্য হয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছে। শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক সবারই স্বাস্থ্য সচেতন করা ও এ বিষয়ে সতর্ক করার দায়িত্ব সরকারের। দেশে সাড়ে ছয় কোটি মানুষ শিক্ষা পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। ফলে এদের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত খুব ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত। হঠাৎ একটা কিছু মাথায় এলো আর সেটা জানিয়ে দিলামÑ এমনটা হওয়া উচিত নয়।’
জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হলে সেটাই করা উচিত। শিক্ষার্থীরা অন্তত পরীক্ষাগুলো শেষ করে ফেলত। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে এ পর্যায়ের সব পরীক্ষা নিয়ে রেজাল্টও দিয়ে দিয়েছে।’
অন্যদিকে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘অবশেষে স্কুল খুলছে : আমরা কতখানি প্রস্তুত?’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে অংশ নিয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘সরকার উভয় সংকটে রয়েছে। খুলে দিলেও অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে। আবার না খুললেও চাপ তৈরি হচ্ছে।’