সপ্তাহজুড়ে শনাক্ত ৭ হাজার ছাড়িয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নিয়ন্ত্রণহীন ঊর্ধ্বগতির মধ্যে রোগী শনাক্তে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল বুধবার ফের এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭ হাজার ৬২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে সাত দিনই সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড হলো। গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর জুন, জুলাই ও আগস্টে সংক্রমণ সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে। ওই সময় ২ জুলাই এক দিনে ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, যা ছিল গত ২৮ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। প্রায় নয় মাস পর ২৯ মার্চ সেই রেকর্ড ভেঙে ৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। তারপর থেকে একের পর এক রেকর্ড ভাঙে এবং সর্বোচ্চ শনাক্তের নতুন নতুন রেকর্ড হয়। দুদিনের মাথায় নতুন রেকর্ড গড়ে ৫ হাজার ৩৫৮ রোগী শনাক্ত হয়। তার পরের দুদিন পর পর রেকর্ড গড়ে ছয় হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। এর এক দিন পর ৪ এপ্রিল প্রথমবার সাত হাজার রোগী শনাক্ত হয়ে আবারও নতুন রেকর্ড হয়। গত মঙ্গলবার আবার রেকর্ড হয় এবং গতকাল সপ্তমবারের মতো সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড হলো।
এদিকে গতকাল দেশে আরও ৬৩ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন, যা দেশে এক দিনে মৃত্যুর তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রায় নয় মাসের রেকর্ড ভেঙে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়। এদিন ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। তারও আগে গত বছরের ৩০ জুন ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল মৃতদের মধ্যে ৪১ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা এবং ৫২ জনের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব।
করোনা সংক্রমণের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতির মধ্যে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। রোগী শনাক্তের মতো পরীক্ষায় একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল ফের সর্বোচ্চ পরীক্ষার নতুন রেকর্ড হয়েছে। অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৬৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ। এর আগে গত মঙ্গলবার ৩৪ হাজার ৩১১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। গতকাল রোগী শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ০২ শতাংশ, যা আগের দিনের চেয়ে বেশি। আগের দিন মঙ্গলবার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ হারে রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর গতকাল ছিল ৩৯৬তম দিন। অধিদপ্তরের গতকালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে ২৩৭টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৪টি জিন-এক্সপার্ট, ৮২টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ও ১২১টি আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার। এসব পরীক্ষাগারে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৮ জনের। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৩০ জনের। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৫৬৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জন। মোট পরীক্ষার বিপরীতে গড়ে ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ লোকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ হাজার ৪৪৭ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৫৬ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৯ জন। বাকিরা চিকিৎসাধীন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৩ এবং সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৯ ও নারী ২৪ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৮২ পুরুষ ও ২ হাজার ৩৬৫ নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৪ দশমিক ৯৭ ও নারী ২৫ দশমিক ০৩ ভাগ। সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪১ জন ঢাকা বিভাগের। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রামে দশ, রাজশাহীতে চার, সিলেটে তিন, খুলনা ও ময়মনসিংহে দুজন করে এবং বরিশালে একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে করোনায় এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪৩৯ জন মারা গেল ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১ হাজার ৬৯৪, খুলনায় ৫৯৭, রাজশাহীতে ৫১৭, রংপুরে ৩৮১, সিলেটে ৩৩২, বরিশালে ২৮০ ও ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ২০৭ রোগী মারা গেছেন। বয়স অনুযায়ী, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৪০, ৫১-৬০ বছরের ১২, ৪১-৫০ বছরের পাঁচ, ৩১-৪০ বছরের দুই, ২১-৩০ বছরের তিন এবং ১১-২০ বছরের ছিল একজন। এদিন সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৬৪ রোগীকে আইসোলেশনে এবং ২ হাজার ৫৫৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে ১৩ হাজার ৯০৩ এবং কোয়ারেন্টাইনে আছে ৪৩ হাজার ৩৪৪ জন। সারা দেশে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় ৯ হাজার ৯১৮টি সাধারণ বেডের মধ্যে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ৪ হাজার ৭৭৫টিতে। বাকিগুলো খালি ছিল। এ ছাড়া ৬০২টি আইসিইউর মধ্যে এদিন রোগী ভর্তি ছিল ৪৩৩টিতে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নিয়ন্ত্রণহীন ঊর্ধ্বগতির মধ্যে রোগী শনাক্তে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল বুধবার ফের এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭ হাজার ৬২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে সাত দিনই সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড হলো। গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর জুন, জুলাই ও আগস্টে সংক্রমণ সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে। ওই সময় ২ জুলাই এক দিনে ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, যা ছিল গত ২৮ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। প্রায় নয় মাস পর ২৯ মার্চ সেই রেকর্ড ভেঙে ৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। তারপর থেকে একের পর এক রেকর্ড ভাঙে এবং সর্বোচ্চ শনাক্তের নতুন নতুন রেকর্ড হয়। দুদিনের মাথায় নতুন রেকর্ড গড়ে ৫ হাজার ৩৫৮ রোগী শনাক্ত হয়। তার পরের দুদিন পর পর রেকর্ড গড়ে ছয় হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। এর এক দিন পর ৪ এপ্রিল প্রথমবার সাত হাজার রোগী শনাক্ত হয়ে আবারও নতুন রেকর্ড হয়। গত মঙ্গলবার আবার রেকর্ড হয় এবং গতকাল সপ্তমবারের মতো সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড হলো।
এদিকে গতকাল দেশে আরও ৬৩ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন, যা দেশে এক দিনে মৃত্যুর তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রায় নয় মাসের রেকর্ড ভেঙে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়। এদিন ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। তারও আগে গত বছরের ৩০ জুন ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল মৃতদের মধ্যে ৪১ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা এবং ৫২ জনের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব।
করোনা সংক্রমণের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতির মধ্যে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। রোগী শনাক্তের মতো পরীক্ষায় একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল ফের সর্বোচ্চ পরীক্ষার নতুন রেকর্ড হয়েছে। অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৬৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ। এর আগে গত মঙ্গলবার ৩৪ হাজার ৩১১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। গতকাল রোগী শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ০২ শতাংশ, যা আগের দিনের চেয়ে বেশি। আগের দিন মঙ্গলবার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ হারে রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর গতকাল ছিল ৩৯৬তম দিন। অধিদপ্তরের গতকালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে ২৩৭টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৪টি জিন-এক্সপার্ট, ৮২টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ও ১২১টি আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার। এসব পরীক্ষাগারে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৮ জনের। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৩০ জনের। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৫৬৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জন। মোট পরীক্ষার বিপরীতে গড়ে ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ লোকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ হাজার ৪৪৭ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৫৬ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৯ জন। বাকিরা চিকিৎসাধীন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৩ এবং সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৯ ও নারী ২৪ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৮২ পুরুষ ও ২ হাজার ৩৬৫ নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৪ দশমিক ৯৭ ও নারী ২৫ দশমিক ০৩ ভাগ। সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪১ জন ঢাকা বিভাগের। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রামে দশ, রাজশাহীতে চার, সিলেটে তিন, খুলনা ও ময়মনসিংহে দুজন করে এবং বরিশালে একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে করোনায় এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪৩৯ জন মারা গেল ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১ হাজার ৬৯৪, খুলনায় ৫৯৭, রাজশাহীতে ৫১৭, রংপুরে ৩৮১, সিলেটে ৩৩২, বরিশালে ২৮০ ও ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ২০৭ রোগী মারা গেছেন। বয়স অনুযায়ী, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৪০, ৫১-৬০ বছরের ১২, ৪১-৫০ বছরের পাঁচ, ৩১-৪০ বছরের দুই, ২১-৩০ বছরের তিন এবং ১১-২০ বছরের ছিল একজন। এদিন সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৬৪ রোগীকে আইসোলেশনে এবং ২ হাজার ৫৫৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে ১৩ হাজার ৯০৩ এবং কোয়ারেন্টাইনে আছে ৪৩ হাজার ৩৪৪ জন। সারা দেশে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় ৯ হাজার ৯১৮টি সাধারণ বেডের মধ্যে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ৪ হাজার ৭৭৫টিতে। বাকিগুলো খালি ছিল। এ ছাড়া ৬০২টি আইসিইউর মধ্যে এদিন রোগী ভর্তি ছিল ৪৩৩টিতে।