মিয়ানমারে গুলিতে নিহত আরও ১৩ বিক্ষোভকারী
রূপান্তর ডেস্ক | ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০
জান্তা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় চীনের ওপর চটেছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা। সেনা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন-বিক্ষোভের মাঝেই তারা চীনকে তাদের দেশ ছাড়ায় আহ্বান জানাচ্ছেন। দূতাবাসসহ ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ারও কথা বলছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত একাধিক চীনা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। যার জেরে সেনাবাহিনীর গুলিতে সেখানে নিহত হয়েছেন অন্তত ২ জন। এছাড়া দেশটির কালে শহরের নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে আরও ৫ জনের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্স জানাচ্ছে, বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি চীনা কারখানায় অগ্নিসংযোগেরও ঘটনা ঘটেছে; বিক্ষোভকারীরা এদিন চীনের পতাকাও পুড়িয়েছে।
বাণিজ্যিক এ রাজধানীতে চীনা একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার খবর দিয়েছে মিয়ানমারের দমকল বিভাগ। অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। বিক্ষোভকারীদের চীনের পতাকায় আগুন দেওয়ার ছবি ফেইসবুকেও এসেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটির অনেকেই ক্ষমতাসীন জান্তাকে চীনের সমর্থনপুষ্ট মনে করে; গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
এরা আগে গত বৃহস্পতিার মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সমর্থকরা ইয়াঙ্গুনে চীনা দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। মিয়ানমারে রক্তক্ষরণ বন্ধের উদ্দেশ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপ থামিয়ে দেয় চীন। এরপর চীনবিরোধী সেøাগান দিয়েছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা।
গণতন্ত্রপন্থি কয়েক হাজার সমর্থক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং সেলিব্রিটি এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। তারা সেøাগান দিয়েছেন- মিয়ানমার ছেড়ে চলে যাও চীন। চীনা দূতাবাস সরিয়ে নাও। চীনা দূতাবাসের দরকার নেই, এখনই মিয়ানমার ছেড়ে চলে যাও।
বুধবার এক বিবৃতিতে সামরিক জান্তার প্রধান জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, আইন অমান্য আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল, স্কুল, সড়ক, বিভিন্ন দপ্তর ও কারখানা স্থবির হয়ে আছে। প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নানা ধরনের বিক্ষোভ হচ্ছে, কিন্তু সেখানে (বিক্ষোভকারীরা) ব্যবসার ক্ষতি করছে না। আইন অমান্য আন্দোলন হচ্ছে দেশ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত কর্মকাণ্ড।
গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে টালমাটাল মিয়ানমার বুধবার পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু দেখেছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স।
১ ফেব্রুয়ারির ওই অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন উপেক্ষা করেই দেশটির বিভিন্ন এলাকায় লাগাতার বিক্ষোভ ও ধর্মঘট হয়েছে। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে শিশুরাও আছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এ তথ্য জানিয়েছে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০

জান্তা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় চীনের ওপর চটেছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা। সেনা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন-বিক্ষোভের মাঝেই তারা চীনকে তাদের দেশ ছাড়ায় আহ্বান জানাচ্ছেন। দূতাবাসসহ ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ারও কথা বলছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত একাধিক চীনা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। যার জেরে সেনাবাহিনীর গুলিতে সেখানে নিহত হয়েছেন অন্তত ২ জন। এছাড়া দেশটির কালে শহরের নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে আরও ৫ জনের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্স জানাচ্ছে, বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি চীনা কারখানায় অগ্নিসংযোগেরও ঘটনা ঘটেছে; বিক্ষোভকারীরা এদিন চীনের পতাকাও পুড়িয়েছে।
বাণিজ্যিক এ রাজধানীতে চীনা একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার খবর দিয়েছে মিয়ানমারের দমকল বিভাগ। অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। বিক্ষোভকারীদের চীনের পতাকায় আগুন দেওয়ার ছবি ফেইসবুকেও এসেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটির অনেকেই ক্ষমতাসীন জান্তাকে চীনের সমর্থনপুষ্ট মনে করে; গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
এরা আগে গত বৃহস্পতিার মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সমর্থকরা ইয়াঙ্গুনে চীনা দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। মিয়ানমারে রক্তক্ষরণ বন্ধের উদ্দেশ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপ থামিয়ে দেয় চীন। এরপর চীনবিরোধী সেøাগান দিয়েছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা।
গণতন্ত্রপন্থি কয়েক হাজার সমর্থক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং সেলিব্রিটি এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। তারা সেøাগান দিয়েছেন- মিয়ানমার ছেড়ে চলে যাও চীন। চীনা দূতাবাস সরিয়ে নাও। চীনা দূতাবাসের দরকার নেই, এখনই মিয়ানমার ছেড়ে চলে যাও।
বুধবার এক বিবৃতিতে সামরিক জান্তার প্রধান জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, আইন অমান্য আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল, স্কুল, সড়ক, বিভিন্ন দপ্তর ও কারখানা স্থবির হয়ে আছে। প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নানা ধরনের বিক্ষোভ হচ্ছে, কিন্তু সেখানে (বিক্ষোভকারীরা) ব্যবসার ক্ষতি করছে না। আইন অমান্য আন্দোলন হচ্ছে দেশ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত কর্মকাণ্ড।
গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে টালমাটাল মিয়ানমার বুধবার পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু দেখেছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স।
১ ফেব্রুয়ারির ওই অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন উপেক্ষা করেই দেশটির বিভিন্ন এলাকায় লাগাতার বিক্ষোভ ও ধর্মঘট হয়েছে। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে শিশুরাও আছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এ তথ্য জানিয়েছে।