প্রাভা হেলথের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি | ৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাভা হেলথের সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদনে জারি করা এক আদেশে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ‘থামেনি সনদ জালিয়াতি’ শিরোনামে গত ১৩ জুলাই দেশ রূপান্তরে প্রাভা হেলথের করোনা পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর এক দিন পর ১৫ জুলাই অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই মধ্যে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানমের ছেলে ডা. মাহফুজ শফিক।
প্রাভা হেলথের কার্যক্রম স্থগিতের পর গতকাল মাহফুজ শফিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আল্টিমেটলি ইট ইজ আওয়ার কম্বাইন্ড উইন। নিশ্চয়ই আমাদের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটা আমাদের সবার মিলিত চেষ্টার ফল। আমাদের মতো আর কেউ প্রতারিত হবে না, এটাই আমাদের মিলিত সাফল্য।’
গত ৭ জুলাই সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের পরিবার করোনার নমুনা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ আনে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে। সেখানে বলা হয়, প্রাভা হেলথের ভুল রিপোর্টের জন্য তাদের বিদেশ ভ্রমণ বাতিল হয়। এমনকি নতুন করে নমুনা পরীক্ষা করাতে রাজিও হয়নি প্রাভা হেলথ কর্র্তৃপক্ষ। এরপর তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ গবেষণা কেন্দ্রে (আইইডিসিআর) নমুনা পরীক্ষা করান। যেখানে ফলাফল আসে করোনা নেগেটিভ। পরে ভুল ফল দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানায় ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের পরিবার। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এরপর মাহফুজ শফিককে তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য দেওয়ার জন্য চিঠি দেয় তদন্ত কমিটি। কমিটিকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে মাহফুজ শফিক বলেন, ১. প্রাভা হেলথের অতি উৎসাহী মার্কেটিং আমাদের আকৃষ্ট করেছে। ২. প্রাভা নামটি ইন্টারন্যাশনাল হেলথ চেইন অব ইন্ডিয়া। ৩. তাদের ওয়েবসাইটে (প্রাভা) বলা হয়েছে, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পার্টনার। ৪. আমার বড় মেয়ে বায়ান শফিকের প্রাভা হেলথের পজিটিভ রিপোর্ট (করোনা) পেয়ে মেডিনোভাতে সিটিস্ক্যান ও রক্তের অন্যান্য পরীক্ষা করানো হয় এবং বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ানো হয়। ৫. প্রাভার পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর আইইডিসিআরের পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার আগে পর্যন্ত পুরো পরিবার অবর্ণনীয় মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করে। ৬. করোনা পজিটিভ না হয়েও ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস ওয়েবসাইটে পজিটিভ রিপোর্ট আপলোড করা হয়, সারা পৃথিবীর সব ইমিগ্রেশন দেখতে পাবে। এটা মানহানিকর। ৭. টিকিট, হোটেল ও অন্যান্য খরচসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন।
তদন্তে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে চারটি সুস্পষ্ট অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে বলেও গতকাল জানায় অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) ও তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তারা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিনিধি | ৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাভা হেলথের সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদনে জারি করা এক আদেশে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ‘থামেনি সনদ জালিয়াতি’ শিরোনামে গত ১৩ জুলাই দেশ রূপান্তরে প্রাভা হেলথের করোনা পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর এক দিন পর ১৫ জুলাই অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই মধ্যে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানমের ছেলে ডা. মাহফুজ শফিক।
প্রাভা হেলথের কার্যক্রম স্থগিতের পর গতকাল মাহফুজ শফিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আল্টিমেটলি ইট ইজ আওয়ার কম্বাইন্ড উইন। নিশ্চয়ই আমাদের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটা আমাদের সবার মিলিত চেষ্টার ফল। আমাদের মতো আর কেউ প্রতারিত হবে না, এটাই আমাদের মিলিত সাফল্য।’
গত ৭ জুলাই সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের পরিবার করোনার নমুনা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ আনে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে। সেখানে বলা হয়, প্রাভা হেলথের ভুল রিপোর্টের জন্য তাদের বিদেশ ভ্রমণ বাতিল হয়। এমনকি নতুন করে নমুনা পরীক্ষা করাতে রাজিও হয়নি প্রাভা হেলথ কর্র্তৃপক্ষ। এরপর তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ গবেষণা কেন্দ্রে (আইইডিসিআর) নমুনা পরীক্ষা করান। যেখানে ফলাফল আসে করোনা নেগেটিভ। পরে ভুল ফল দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানায় ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের পরিবার। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এরপর মাহফুজ শফিককে তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য দেওয়ার জন্য চিঠি দেয় তদন্ত কমিটি। কমিটিকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে মাহফুজ শফিক বলেন, ১. প্রাভা হেলথের অতি উৎসাহী মার্কেটিং আমাদের আকৃষ্ট করেছে। ২. প্রাভা নামটি ইন্টারন্যাশনাল হেলথ চেইন অব ইন্ডিয়া। ৩. তাদের ওয়েবসাইটে (প্রাভা) বলা হয়েছে, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পার্টনার। ৪. আমার বড় মেয়ে বায়ান শফিকের প্রাভা হেলথের পজিটিভ রিপোর্ট (করোনা) পেয়ে মেডিনোভাতে সিটিস্ক্যান ও রক্তের অন্যান্য পরীক্ষা করানো হয় এবং বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ানো হয়। ৫. প্রাভার পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর আইইডিসিআরের পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার আগে পর্যন্ত পুরো পরিবার অবর্ণনীয় মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করে। ৬. করোনা পজিটিভ না হয়েও ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস ওয়েবসাইটে পজিটিভ রিপোর্ট আপলোড করা হয়, সারা পৃথিবীর সব ইমিগ্রেশন দেখতে পাবে। এটা মানহানিকর। ৭. টিকিট, হোটেল ও অন্যান্য খরচসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন।
তদন্তে প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে চারটি সুস্পষ্ট অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে বলেও গতকাল জানায় অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) ও তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তারা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছেন।