তালেবান সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বিলম্বিত
রূপান্তর ডেস্ক | ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০
৯/১১ হামলার বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামঙ্গানির উদ্ধৃতি দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে তাস। এক টুইটবার্তায় ইনামুল্লাহ সামঙ্গানি বলেন, ‘নতুন আফগান সরকারের অনুষ্ঠান আপাতত বাতিল করা হয়েছে। মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হন, সে জন্য ইসলামিক আমিরাতের নেতৃত্ব মন্ত্রিসভার একাংশ ঘোষণা করা হয়। যা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে’।
এর আগে তালেবান দলের সূত্রে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বাণিজ্য কেন্দ্র টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২০তম বার্ষিকীর দিনটিতে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নেন তালেবানের শীর্ষ নেতারা। শপথ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, চীন, কাতার, তুরস্ক, পাকিস্তান, ভারত ও ইরানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তালেবান। কিন্তু রাশিয়া কাতারকে জানিয়ে দেয় ৯/১১ হামলার বার্ষিকীতে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে অংশ নেবে না মস্কো।
এক প্রতিবেদনে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর মিত্ররা কাতারকে চাপ দিচ্ছিল যে ৯/১১ এ আফগানিস্তানের নতুন সরকারের কোনো শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন যেন না হয়। রাজধানী কাবুল দখলের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত ৭ সেপ্টেম্বর ৩৩ সদস্যের তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ঘোষণা করে তালেবান গোষ্ঠী। এই সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এখনো যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদবিষয়ক কালো তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও ছয়জন মন্ত্রী-উপমন্ত্রী আছেন যারা দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি ছিলেন।
আফগানিস্তানের বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা, নিহত ৪ : আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই তালেবান যোদ্ধাদের গুলিতে চার বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি গত শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের সহিংস আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে বের করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিক্ষোভ বাড়লেও গত বুধবার তালেবান সব অননুমোদিত বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং বৃহস্পতিবার তারা কাবুলে টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলোকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশনাও দেয়।
বিবৃতিতে বিক্ষোভ চলাকালে এক তরুণসহ অন্তত চারজনের মৃত্যুর কথা জানান জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা। যারা বিক্ষোভের সংবাদ কভার করছেন সেসব সাংবাদিককে ধরপাকড় ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার নিন্দাও জানান তিনি।
আফগান নারীরাও তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ করছেন কয়েক দিন ধরে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনকালে নারীদের অধিকারের বিষয়গুলো ক্ষুণœ হওয়ার বিস্তর অভিযোগ আছে আন্তর্জাতিক মহলে। এবারও তালেবানের নতুন সরকারে উচ্চপর্যায়ে ঠাঁই হয়নি নারীদের।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০

৯/১১ হামলার বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামঙ্গানির উদ্ধৃতি দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে তাস। এক টুইটবার্তায় ইনামুল্লাহ সামঙ্গানি বলেন, ‘নতুন আফগান সরকারের অনুষ্ঠান আপাতত বাতিল করা হয়েছে। মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হন, সে জন্য ইসলামিক আমিরাতের নেতৃত্ব মন্ত্রিসভার একাংশ ঘোষণা করা হয়। যা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে’।
এর আগে তালেবান দলের সূত্রে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বাণিজ্য কেন্দ্র টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২০তম বার্ষিকীর দিনটিতে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নেন তালেবানের শীর্ষ নেতারা। শপথ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, চীন, কাতার, তুরস্ক, পাকিস্তান, ভারত ও ইরানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তালেবান। কিন্তু রাশিয়া কাতারকে জানিয়ে দেয় ৯/১১ হামলার বার্ষিকীতে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে অংশ নেবে না মস্কো।
এক প্রতিবেদনে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর মিত্ররা কাতারকে চাপ দিচ্ছিল যে ৯/১১ এ আফগানিস্তানের নতুন সরকারের কোনো শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন যেন না হয়। রাজধানী কাবুল দখলের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত ৭ সেপ্টেম্বর ৩৩ সদস্যের তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ঘোষণা করে তালেবান গোষ্ঠী। এই সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এখনো যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদবিষয়ক কালো তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও ছয়জন মন্ত্রী-উপমন্ত্রী আছেন যারা দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি ছিলেন।
আফগানিস্তানের বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা, নিহত ৪ : আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই তালেবান যোদ্ধাদের গুলিতে চার বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি গত শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের সহিংস আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে বের করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিক্ষোভ বাড়লেও গত বুধবার তালেবান সব অননুমোদিত বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং বৃহস্পতিবার তারা কাবুলে টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলোকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশনাও দেয়।
বিবৃতিতে বিক্ষোভ চলাকালে এক তরুণসহ অন্তত চারজনের মৃত্যুর কথা জানান জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা। যারা বিক্ষোভের সংবাদ কভার করছেন সেসব সাংবাদিককে ধরপাকড় ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার নিন্দাও জানান তিনি।
আফগান নারীরাও তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ করছেন কয়েক দিন ধরে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনকালে নারীদের অধিকারের বিষয়গুলো ক্ষুণœ হওয়ার বিস্তর অভিযোগ আছে আন্তর্জাতিক মহলে। এবারও তালেবানের নতুন সরকারে উচ্চপর্যায়ে ঠাঁই হয়নি নারীদের।