ডব্লিউএইচওর সতর্কতা
শুধু সীমান্ত বন্ধ করে ওমিক্রণের সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিশ্বের দেশগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা ও টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে সে ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় গুরুত্ব না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও টিকাদানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্য, সীমান্ত বন্ধ করে ওমিক্রণের সংক্রমণ সাময়িকভবে বিলম্বিত করা গেলেও এককভাবে তা কোনো সমাধান নয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে সতর্ক করে এসব তথ্য জানায় ডব্লিউএইচও। খবরে বলা হয়, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিলেও অস্ট্রেলিয়াই হলো সর্বশেষ দেশ, যেখানে করোনার নতুন ধরনের সামাজিক সংক্রমণ ঘটার তথ্য পাওয়া গেছে। এর এক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে ওমিক্রন সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
ওমিক্রনের সংক্রমণ ইতিমধ্যে এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের ২৫টির বেশি দেশে শনাক্ত হয়েছে। আর প্রথম শনাক্ত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ৯টি প্রদেশের মধ্যে ৭টিতেই এই ধরনে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টায় অনেক দেশের সরকার ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করেছে।
ডব্লিউএইচওর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক তাকেশি কাসেই বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া সাময়িকভাবে বিলম্বিত করা যেতে পারে। কিন্তু প্রতিটি দেশ ও কমিউনিটিকে অবশ্যই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তৈরি থাকতে হবে।’
এক সংবাদ সম্মেলনে তাকেশি আরও বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ে গৃহীত পদক্ষেপের ওপরই শুধু নির্ভর করে থাকলে মানুষের চলবে না, যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, সম্ভাব্য উচ্চ সংক্রমণ সক্ষমতার এ ধরনটিকে নিয়ন্ত্রণে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে এ ইঙ্গিতই পাওয়া যায়, আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছি না।’
প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ডব্লিউএইচওর এই কর্মকর্তা সব দেশের সরকারগুলোর প্রতি ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ ডোজ টিকার আওতায় আনা এবং সবাইকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ কার্যকর করার আহ্বান জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে করোনার ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বিজ্ঞানীরা এই ধরন কতটা বিপজ্জনক ও সংক্রামক, তা নির্ধারণে এখনো তথ্য সংগ্রহ করছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজের বিজ্ঞানী মিশেল গ্রুম বলেন, ওমিক্রন নিয়ে তার দেশ এ মুহূর্তে করোনার এক নজিরবিহীন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মুখোমুখি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত বিশে^ এ মহামারীতে ২৬ কোটি ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে প্রায় ৫৫ লাখ।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিশ্বের দেশগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা ও টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে সে ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় গুরুত্ব না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও টিকাদানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্য, সীমান্ত বন্ধ করে ওমিক্রণের সংক্রমণ সাময়িকভবে বিলম্বিত করা গেলেও এককভাবে তা কোনো সমাধান নয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে সতর্ক করে এসব তথ্য জানায় ডব্লিউএইচও। খবরে বলা হয়, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিলেও অস্ট্রেলিয়াই হলো সর্বশেষ দেশ, যেখানে করোনার নতুন ধরনের সামাজিক সংক্রমণ ঘটার তথ্য পাওয়া গেছে। এর এক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে ওমিক্রন সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
ওমিক্রনের সংক্রমণ ইতিমধ্যে এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের ২৫টির বেশি দেশে শনাক্ত হয়েছে। আর প্রথম শনাক্ত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ৯টি প্রদেশের মধ্যে ৭টিতেই এই ধরনে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টায় অনেক দেশের সরকার ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করেছে।
ডব্লিউএইচওর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক তাকেশি কাসেই বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া সাময়িকভাবে বিলম্বিত করা যেতে পারে। কিন্তু প্রতিটি দেশ ও কমিউনিটিকে অবশ্যই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তৈরি থাকতে হবে।’
এক সংবাদ সম্মেলনে তাকেশি আরও বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ে গৃহীত পদক্ষেপের ওপরই শুধু নির্ভর করে থাকলে মানুষের চলবে না, যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, সম্ভাব্য উচ্চ সংক্রমণ সক্ষমতার এ ধরনটিকে নিয়ন্ত্রণে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে এ ইঙ্গিতই পাওয়া যায়, আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছি না।’
প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ডব্লিউএইচওর এই কর্মকর্তা সব দেশের সরকারগুলোর প্রতি ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ ডোজ টিকার আওতায় আনা এবং সবাইকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ কার্যকর করার আহ্বান জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে করোনার ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বিজ্ঞানীরা এই ধরন কতটা বিপজ্জনক ও সংক্রামক, তা নির্ধারণে এখনো তথ্য সংগ্রহ করছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজের বিজ্ঞানী মিশেল গ্রুম বলেন, ওমিক্রন নিয়ে তার দেশ এ মুহূর্তে করোনার এক নজিরবিহীন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মুখোমুখি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত বিশে^ এ মহামারীতে ২৬ কোটি ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে প্রায় ৫৫ লাখ।