সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ
মৌলিক প্রশ্নে দলমত নির্বিশেষে উদ্যোগ নিতে হবে
বিশেষ প্রতিনিধি | ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নয়নের মতো মৌলিক প্রশ্নে দলমত ও শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে আপামর জনগণকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বছরের প্রথম ও শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়। সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপতি সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সংসদে তুলে ধরেন।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘জনগণই সব ক্ষমতার উৎস এবং তাদের সব প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনস্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। আমি সরকারি দল ও বিরোধী দলের সব সংসদ সদস্যকে এই মহান জাতীয় সংসদে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য। এ লক্ষ্যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং উন্নয়নের মতো মৌলিক প্রশ্নে দলমত, শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে আপামর জনগণকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি উদাত্ত আহ্বান জানাই। আসুন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল মহান স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের “সোনার বাংলা” গড়তে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।’
তিনি বলেন, গত দেড় দশকে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য সরকারি অর্থের অপব্যবহার রোধপূর্বক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি সরকারি সব কার্যক্রমে জনগণের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রকে অধিক কার্যকর করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নীতির কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে; যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বিশ্বের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ। দেশের সব সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে সম্প্রীতিসহকারে নিজ নিজ ধর্ম চর্চা করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘেœ, যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা হচ্ছে। তথাপি ধর্মের নামে কোনো ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
রূপকল্প ২০২১-এর সফল বাস্তবায়ন শেষে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পানি ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশগত পরিবর্তন বিবেচনা করে প্রণীত বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর আওতায় বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে চাই আমরা। ইতিমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরণ-পরবর্তী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আমাদের জনমিতির সুবিধা পুরোপুরি ব্যবহার করতে হবে। এ জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশে^র সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানসহ বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে। বিশ^বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম প্রস্তুত, বিদ্যমান কারিকুলাম যুগোপযোগীকরণ এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফায়েড দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সাল ছিল বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের জন্য এক অবিস্মরণীয় বছর। এ বছরেই আমরা উদযাপন করেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। উৎসবের এমন মহামিলন, গণমানুষের এমন সম্মিলন ইতিহাসে কমই দেখা যায়। যদিও করোনা মহামারীর কারণে উৎসব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু শেষ প্রান্তে কোনো বাধাই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। সাড়ম্বরে দেশে ও দেশের বাইরে জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানের মর্যাদা ও আনন্দ-উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। এ ছাড়া অনেক বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফলে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও যোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বহির্বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছে।’
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অনুপ্রেরণায় আমরা এখন পর্যন্ত করোনা এবং এর অভিঘাত সফলভাবে মোকাবিলা করে যাচ্ছি। তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন যাতে আমাদের দেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সে জন্য সরকারকে সতর্কতা অবলম্বনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ এ সময় রাষ্ট্রপতি রেমিট্যান্স প্রেরণে নগদ প্রণোদনা এবং পদ্ধতি সহজীকরণের সুফলের কথাও তুলে ধরেন।
শেয়ার করুন
বিশেষ প্রতিনিধি | ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নয়নের মতো মৌলিক প্রশ্নে দলমত ও শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে আপামর জনগণকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বছরের প্রথম ও শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়। সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপতি সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সংসদে তুলে ধরেন।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘জনগণই সব ক্ষমতার উৎস এবং তাদের সব প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনস্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। আমি সরকারি দল ও বিরোধী দলের সব সংসদ সদস্যকে এই মহান জাতীয় সংসদে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য। এ লক্ষ্যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং উন্নয়নের মতো মৌলিক প্রশ্নে দলমত, শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে আপামর জনগণকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি উদাত্ত আহ্বান জানাই। আসুন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল মহান স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের “সোনার বাংলা” গড়তে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।’
তিনি বলেন, গত দেড় দশকে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য সরকারি অর্থের অপব্যবহার রোধপূর্বক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি সরকারি সব কার্যক্রমে জনগণের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রকে অধিক কার্যকর করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নীতির কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে; যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বিশ্বের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ। দেশের সব সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে সম্প্রীতিসহকারে নিজ নিজ ধর্ম চর্চা করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘেœ, যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা হচ্ছে। তথাপি ধর্মের নামে কোনো ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
রূপকল্প ২০২১-এর সফল বাস্তবায়ন শেষে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পানি ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশগত পরিবর্তন বিবেচনা করে প্রণীত বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর আওতায় বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে চাই আমরা। ইতিমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরণ-পরবর্তী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আমাদের জনমিতির সুবিধা পুরোপুরি ব্যবহার করতে হবে। এ জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশে^র সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানসহ বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে। বিশ^বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম প্রস্তুত, বিদ্যমান কারিকুলাম যুগোপযোগীকরণ এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফায়েড দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সাল ছিল বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের জন্য এক অবিস্মরণীয় বছর। এ বছরেই আমরা উদযাপন করেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। উৎসবের এমন মহামিলন, গণমানুষের এমন সম্মিলন ইতিহাসে কমই দেখা যায়। যদিও করোনা মহামারীর কারণে উৎসব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু শেষ প্রান্তে কোনো বাধাই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। সাড়ম্বরে দেশে ও দেশের বাইরে জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানের মর্যাদা ও আনন্দ-উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। এ ছাড়া অনেক বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফলে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও যোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বহির্বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছে।’
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অনুপ্রেরণায় আমরা এখন পর্যন্ত করোনা এবং এর অভিঘাত সফলভাবে মোকাবিলা করে যাচ্ছি। তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন যাতে আমাদের দেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সে জন্য সরকারকে সতর্কতা অবলম্বনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ এ সময় রাষ্ট্রপতি রেমিট্যান্স প্রেরণে নগদ প্রণোদনা এবং পদ্ধতি সহজীকরণের সুফলের কথাও তুলে ধরেন।