নাহিদ-মোরসালিনের খুনিরা চিহ্নিত, গ্রেপ্তারে অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০
ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ মিয়া ও মোরসালিন হত্যায় জড়িতরা চিহ্নিত হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযুক্তরা হলে অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার ঢাকা কলেজের একটি হলে অভিযানও চালানো হয়েছে। অভিযান শেষে এক ছাত্রকে র্যাব আটক করেছে বলে জানিয়েছেন হলের সাধারণ ছাত্ররা।
এছাড়া গত শনিবার সন্ধ্যায়ও সাদা পোশাকে কয়েক ব্যক্তি আরও তিন ছাত্রকে হল থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন কলেজের এক শিক্ষক।
সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে সম্মুখসারিতে ছিল এমন আরও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনা বিভাগ।
র্যাব, ডিবি, কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক সূত্রে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে র্যাব ও ডিবি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
এদিকে নাহিদকে কোপানোর একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ওই যুবকের নাম রাব্বি। তিনি ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। থাকেন কলেজের নর্থ হলে।
তবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, গণমাধ্যমে নাহিদ হত্যায় জড়িত বলে রাব্বি নামে এক ছাত্রের নাম এলেও তদন্তে দেখা গেছে ঘটনার সময় তিনি দিনাজপুরে ছিলেন। পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে কারও নাম প্রকাশ না করার বিষয়ে গণমাধ্যমকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই মাঠে নেমেছে র্যাব। তারা বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে বলেও একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অভিযান ও আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল সন্ধ্যায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের টিম মাঠে রয়েছে। নাহিদকে যে কুপিয়েছে তার নাম ইমন। আমাদের মূল টার্গেট সে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রবিবার কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে (হল) অভিযান পরিচালনা করেছেন র্যাব ও ডিবির সদস্যরা। বিকেল ৫টায় কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষে অভিযান চালায় র্যাব। ওই কক্ষেই থাকতেন ইমন। তবে অভিযানের সময় তিনি কক্ষে ছিলেন না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযান শেষে দুটি মোবাইল ফোনসেট ও জহির হাসান জুয়েল নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব। আটক জুয়েল ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি শুনেছি ছাত্রাবাসে ডিবি ও র্যাব সদস্যরা এসেছিলেন। এ সময় দুটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে গেছে কি-না সে বিষয়ে আমি জানি না।’ ছাত্রাবাসে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমার সঙ্গে কোনো কথা বলে আসেননি, সম্ভবত কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আজ বিকেল (রবিবার) সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে এসেছিল সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ। তারা একজনকে নিয়ে গেছে। এর আগেও ৩-৪ জনকে গোয়েন্দারা হল থেকে নিয়ে গেছেন বলে তারা জেনেছেন।
কলেজে ঢুকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো অনুমতি নিয়েছিল কি-না জানতে চাইলে ওই শিক্ষক বলেন, কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে তারা অনুমতি নেন। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তারের সময় তারা অনুমতি নেন না।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় নাহিদ মিয়াকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম পুলিশ প্রকাশ করায় অনেক শিক্ষার্থী হল ছাড়ছেন। গতকাল সরেজমিনে ঢাকা কলেজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাস নীরব। আগের মতো শিক্ষার্থীদের আড্ডা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজে প্রায়ই সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসছেন। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি করছেন। এরই মধ্যে অনেকেই হল ছেড়ে চলে গেছেন। আজ (গতকাল) চলে যাওয়ার হারটা বেশি।
গতকাল পর্যন্ত সংঘর্ষের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই সব ছবির ব্যক্তিরা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। নাহিদকে যিনি কুপিয়েছেন দুটি সংবাদমাধ্যম তার নাম বলেছে রাব্বি। ডিবি ও র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যক্তি রাব্বি নন, তার নাম ইমন। এছাড়া কালো চেকের গেঞ্জি গায়ে হাতে রামদা থাকা যুবক কাইয়ুম, হলুদ হেলমেট মাথায় রামদা হাতে কাউসার ও কালো হেলমেট মাথায় ছাত্রলীগ নেতা শাহীন সাদেক মির্জা বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ ধরনের যে কোনো দাঙ্গায় জড়িতদের সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা কঠিন কাজ। দাঙ্গার সময় হত্যাকা-গুলো পরিকল্পিতভাবে হয় না, তাৎক্ষণিক ঘটে যায়। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ থেকেও পরিষ্কার কোনো চিত্র পাচ্ছি না। সেখানে হেলমেট পরা লোক আছে। যে কোপালো ওর ছবি পরিষ্কার না। তার পরও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আমরা তো নিশ্চিত না হয়ে গণগ্রেপ্তার করতে পারি না।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে নিউমার্কেটে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকাল থেকে আবার দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দিনভর সংঘর্ষে গুরুতর আহত নাহিদ ও মোরসালিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং নিহত দুজনের স্বজনরা দুটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা-মামলায় বিএনপির এক নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ছাড়া সবগুলো মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০

ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ মিয়া ও মোরসালিন হত্যায় জড়িতরা চিহ্নিত হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযুক্তরা হলে অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার ঢাকা কলেজের একটি হলে অভিযানও চালানো হয়েছে। অভিযান শেষে এক ছাত্রকে র্যাব আটক করেছে বলে জানিয়েছেন হলের সাধারণ ছাত্ররা।
এছাড়া গত শনিবার সন্ধ্যায়ও সাদা পোশাকে কয়েক ব্যক্তি আরও তিন ছাত্রকে হল থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন কলেজের এক শিক্ষক।
সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে সম্মুখসারিতে ছিল এমন আরও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনা বিভাগ।
র্যাব, ডিবি, কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক সূত্রে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে র্যাব ও ডিবি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
এদিকে নাহিদকে কোপানোর একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ওই যুবকের নাম রাব্বি। তিনি ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। থাকেন কলেজের নর্থ হলে।
তবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, গণমাধ্যমে নাহিদ হত্যায় জড়িত বলে রাব্বি নামে এক ছাত্রের নাম এলেও তদন্তে দেখা গেছে ঘটনার সময় তিনি দিনাজপুরে ছিলেন। পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে কারও নাম প্রকাশ না করার বিষয়ে গণমাধ্যমকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই মাঠে নেমেছে র্যাব। তারা বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে বলেও একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অভিযান ও আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল সন্ধ্যায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের টিম মাঠে রয়েছে। নাহিদকে যে কুপিয়েছে তার নাম ইমন। আমাদের মূল টার্গেট সে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রবিবার কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে (হল) অভিযান পরিচালনা করেছেন র্যাব ও ডিবির সদস্যরা। বিকেল ৫টায় কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষে অভিযান চালায় র্যাব। ওই কক্ষেই থাকতেন ইমন। তবে অভিযানের সময় তিনি কক্ষে ছিলেন না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযান শেষে দুটি মোবাইল ফোনসেট ও জহির হাসান জুয়েল নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব। আটক জুয়েল ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি শুনেছি ছাত্রাবাসে ডিবি ও র্যাব সদস্যরা এসেছিলেন। এ সময় দুটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে গেছে কি-না সে বিষয়ে আমি জানি না।’ ছাত্রাবাসে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমার সঙ্গে কোনো কথা বলে আসেননি, সম্ভবত কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আজ বিকেল (রবিবার) সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে এসেছিল সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ। তারা একজনকে নিয়ে গেছে। এর আগেও ৩-৪ জনকে গোয়েন্দারা হল থেকে নিয়ে গেছেন বলে তারা জেনেছেন।
কলেজে ঢুকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো অনুমতি নিয়েছিল কি-না জানতে চাইলে ওই শিক্ষক বলেন, কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে তারা অনুমতি নেন। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তারের সময় তারা অনুমতি নেন না।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় নাহিদ মিয়াকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম পুলিশ প্রকাশ করায় অনেক শিক্ষার্থী হল ছাড়ছেন। গতকাল সরেজমিনে ঢাকা কলেজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাস নীরব। আগের মতো শিক্ষার্থীদের আড্ডা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজে প্রায়ই সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসছেন। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি করছেন। এরই মধ্যে অনেকেই হল ছেড়ে চলে গেছেন। আজ (গতকাল) চলে যাওয়ার হারটা বেশি।
গতকাল পর্যন্ত সংঘর্ষের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই সব ছবির ব্যক্তিরা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। নাহিদকে যিনি কুপিয়েছেন দুটি সংবাদমাধ্যম তার নাম বলেছে রাব্বি। ডিবি ও র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যক্তি রাব্বি নন, তার নাম ইমন। এছাড়া কালো চেকের গেঞ্জি গায়ে হাতে রামদা থাকা যুবক কাইয়ুম, হলুদ হেলমেট মাথায় রামদা হাতে কাউসার ও কালো হেলমেট মাথায় ছাত্রলীগ নেতা শাহীন সাদেক মির্জা বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ ধরনের যে কোনো দাঙ্গায় জড়িতদের সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা কঠিন কাজ। দাঙ্গার সময় হত্যাকা-গুলো পরিকল্পিতভাবে হয় না, তাৎক্ষণিক ঘটে যায়। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ থেকেও পরিষ্কার কোনো চিত্র পাচ্ছি না। সেখানে হেলমেট পরা লোক আছে। যে কোপালো ওর ছবি পরিষ্কার না। তার পরও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আমরা তো নিশ্চিত না হয়ে গণগ্রেপ্তার করতে পারি না।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে নিউমার্কেটে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকাল থেকে আবার দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দিনভর সংঘর্ষে গুরুতর আহত নাহিদ ও মোরসালিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং নিহত দুজনের স্বজনরা দুটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা-মামলায় বিএনপির এক নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ছাড়া সবগুলো মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০।