এনু-রুপনসহ ১১ জনের সাত বছর কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০
অর্থ পাচার মামলায় ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৪ কোটি টাকার সমানুপাতিক হারে অর্থদণ্ডও করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাভোগ করতে হবে আসামিদের। গতকাল সোমবার ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।
আওয়ামী লীগের গেন্ডারিয়া ইউনিটের সাবেক সহসভাপতি এনু ও একই ইউনিটের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপনসহ ৭ জনের উপস্থিতিতে রায় দেওয়া হয়। রায়ে বিচারক বলেন, প্রসিকিউশন নিঃসন্দেহে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধ করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত ওই দুই ভাই ছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম। এদের মধ্যে শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের শাস্তি তাদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো খেলা পরিচালনাকারী এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাসায় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত টাকা উদ্ধারের জন্য ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাড়ি ঘেরাও করে র্যাব। ৪র্থ তলার বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করে তারা। এ ঘটনায় র্যাব-৩-এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হলে তারা তাদের অপকর্ম আড়াল করতে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপন করার জন্য কালামের বাসায় রেখেছিলেন। আসামিরা জেনে-বুঝে অবৈধ প্রক্রিয়ায় উপার্জিত অর্থ আড়াল করার জন্য গোপনে কালামের কাছে রাখেন। কালাম তা গ্রহণ করে নিজের কাছে রাখেন। যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অপরাধ।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২১ জুলাই সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে। গত ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। গত ৬ এপ্রিল এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল রায়ের তারিখ পিছিয়ে ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। সিআইডি জানায়, দুই ভাইয়ের মোট ২২ জায়গায় জমি ও বাড়ি আছে। যার অধিকাংশই পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক। এছাড়া সারা দেশে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ৯১টি অ্যাকাউন্টে তাদের মোট ১৯ কোটি টাকা জমা রয়েছে। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের ১২টি মামলার মধ্যে এটিই প্রথম রায়।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০

অর্থ পাচার মামলায় ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৪ কোটি টাকার সমানুপাতিক হারে অর্থদণ্ডও করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাভোগ করতে হবে আসামিদের। গতকাল সোমবার ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।
আওয়ামী লীগের গেন্ডারিয়া ইউনিটের সাবেক সহসভাপতি এনু ও একই ইউনিটের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপনসহ ৭ জনের উপস্থিতিতে রায় দেওয়া হয়। রায়ে বিচারক বলেন, প্রসিকিউশন নিঃসন্দেহে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধ করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত ওই দুই ভাই ছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম। এদের মধ্যে শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের শাস্তি তাদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো খেলা পরিচালনাকারী এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাসায় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত টাকা উদ্ধারের জন্য ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাড়ি ঘেরাও করে র্যাব। ৪র্থ তলার বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করে তারা। এ ঘটনায় র্যাব-৩-এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হলে তারা তাদের অপকর্ম আড়াল করতে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপন করার জন্য কালামের বাসায় রেখেছিলেন। আসামিরা জেনে-বুঝে অবৈধ প্রক্রিয়ায় উপার্জিত অর্থ আড়াল করার জন্য গোপনে কালামের কাছে রাখেন। কালাম তা গ্রহণ করে নিজের কাছে রাখেন। যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অপরাধ।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২১ জুলাই সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে। গত ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। গত ৬ এপ্রিল এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল রায়ের তারিখ পিছিয়ে ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। সিআইডি জানায়, দুই ভাইয়ের মোট ২২ জায়গায় জমি ও বাড়ি আছে। যার অধিকাংশই পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক। এছাড়া সারা দেশে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ৯১টি অ্যাকাউন্টে তাদের মোট ১৯ কোটি টাকা জমা রয়েছে। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের ১২টি মামলার মধ্যে এটিই প্রথম রায়।