অফিস খুললেও শুভেচ্ছাতেই দিন পার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৬ মে, ২০২২ ০০:০০
এক দিনের ছুটির ফেরে অফিস খোলা হলেও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি সরকারি দপ্তরগুলোতে। কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগই তাদের সূচিতে ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে করার জন্য পূর্বনির্ধারিত বৈঠক রাখেনি। ছিল না আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলস্যেমোড়া একটি কর্মদিন পার করেছেন। সময় কাটিয়েছেন ঈদ-পরবর্তী কুশল বিনিময় ও গল্পগুজবে।
ঈদের ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল প্রথম কর্মদিবস। সচিবালয় ঘুরে দেখা গেছে মন্ত্রণালয়গুলোর সব অধিশাখা, শাখাই খোলা। কিন্তু খোলা রাখলেও এসব শাখার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐচ্ছিক ছুটিতে ছিলেন। এতে তারা টানা ৯ দিনের ছুটি ভোগ করবেন।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সূচিতে কোনো কর্মসূচিই নেই। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন। প্রশাসনের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তার সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন, ঈদ-পরবর্তী কুশল বিনিময় করেছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সোমবার মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে তারা কোনো নির্দেশনা পাননি। আগামী সপ্তাহে সরকারের সবচেয়ে বড় বৈঠক হবে একনেক। এর বাইরে উল্লেখযোগ্য কোনো সভার নামও সূচিতে নেই।
জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম গতকাল সচিবালয়ে অফিস করেননি। তিনি সাতক্ষীরা রয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে গেছেন নানা পদের কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং জননিরাপত্তা বিভাগ ঘুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন এবং অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গেও। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের তথ্য অনুযায়ী ঈদের আগে ৭০ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়েছেন। ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের কোনোটিরই পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ছিল না। ধর্ম মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে।
গত ৩ মে দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। গত ২৯ এপ্রিল শুক্রবার এবং ৩০ এপ্রিল শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ১ মে রবিবার মে দিবসের ছুটি। এর পরের ২ থেকে ৪ মে তিন দিন ঈদের ছুটি। সব মিলিয়ে টানা ৬ দিনের ছুটিতে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর যারা বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন তারা আজ শুক্র এবং আগামীকাল শনিবারসহ মোট ৯ দিন ছুটি শেষে আগামী রবিবার অফিস শুরু করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ঈদের পর যেদিন অফিস খোলে সেদিন এমনিতেই উপস্থিতি কম থাকে। এবার অনুপস্থিতিটা একটু বেশি। কারণ ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর এক দিন কর্মদিবস। তারপর দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। নীতিনির্ধারকরা ইচ্ছা করলেই আজ (গতকাল) বৃহস্পতিবারও ছুটি দিতে পারতেন। বৃহস্পতিবারের কাজটা অন্যদিন করিয়ে নেওয়া যেত। আমাদের দেশে এ ধরনের উদ্যোগের বড় অভাব। অথচ ইউরোপ আমেরিকায় বড়দিনের ছুটি অনেক বেশি। চীনেও বসন্ত উৎসবের জন্য দীর্ঘদিন ছুটি দেওয়া হয়। তারা অনেক দিনের ছুটি শেষে চাঙ্গা হয়ে আবার কাজে যোগ দেয়। অমাদের দেশেও হরেক রকমের ছুটি কমিয়ে একসঙ্গে ঈদের সময় বেশি ছুটি দেওয়া উচিত। এতে ঈদ করতে গ্রামে যাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ কমবে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৬ মে, ২০২২ ০০:০০

এক দিনের ছুটির ফেরে অফিস খোলা হলেও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি সরকারি দপ্তরগুলোতে। কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগই তাদের সূচিতে ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে করার জন্য পূর্বনির্ধারিত বৈঠক রাখেনি। ছিল না আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলস্যেমোড়া একটি কর্মদিন পার করেছেন। সময় কাটিয়েছেন ঈদ-পরবর্তী কুশল বিনিময় ও গল্পগুজবে।
ঈদের ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল প্রথম কর্মদিবস। সচিবালয় ঘুরে দেখা গেছে মন্ত্রণালয়গুলোর সব অধিশাখা, শাখাই খোলা। কিন্তু খোলা রাখলেও এসব শাখার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐচ্ছিক ছুটিতে ছিলেন। এতে তারা টানা ৯ দিনের ছুটি ভোগ করবেন।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সূচিতে কোনো কর্মসূচিই নেই। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন। প্রশাসনের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তার সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন, ঈদ-পরবর্তী কুশল বিনিময় করেছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সোমবার মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে তারা কোনো নির্দেশনা পাননি। আগামী সপ্তাহে সরকারের সবচেয়ে বড় বৈঠক হবে একনেক। এর বাইরে উল্লেখযোগ্য কোনো সভার নামও সূচিতে নেই।
জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম গতকাল সচিবালয়ে অফিস করেননি। তিনি সাতক্ষীরা রয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে গেছেন নানা পদের কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং জননিরাপত্তা বিভাগ ঘুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন এবং অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গেও। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের তথ্য অনুযায়ী ঈদের আগে ৭০ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়েছেন। ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের কোনোটিরই পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ছিল না। ধর্ম মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে।
গত ৩ মে দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। গত ২৯ এপ্রিল শুক্রবার এবং ৩০ এপ্রিল শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ১ মে রবিবার মে দিবসের ছুটি। এর পরের ২ থেকে ৪ মে তিন দিন ঈদের ছুটি। সব মিলিয়ে টানা ৬ দিনের ছুটিতে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর যারা বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন তারা আজ শুক্র এবং আগামীকাল শনিবারসহ মোট ৯ দিন ছুটি শেষে আগামী রবিবার অফিস শুরু করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ঈদের পর যেদিন অফিস খোলে সেদিন এমনিতেই উপস্থিতি কম থাকে। এবার অনুপস্থিতিটা একটু বেশি। কারণ ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর এক দিন কর্মদিবস। তারপর দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। নীতিনির্ধারকরা ইচ্ছা করলেই আজ (গতকাল) বৃহস্পতিবারও ছুটি দিতে পারতেন। বৃহস্পতিবারের কাজটা অন্যদিন করিয়ে নেওয়া যেত। আমাদের দেশে এ ধরনের উদ্যোগের বড় অভাব। অথচ ইউরোপ আমেরিকায় বড়দিনের ছুটি অনেক বেশি। চীনেও বসন্ত উৎসবের জন্য দীর্ঘদিন ছুটি দেওয়া হয়। তারা অনেক দিনের ছুটি শেষে চাঙ্গা হয়ে আবার কাজে যোগ দেয়। অমাদের দেশেও হরেক রকমের ছুটি কমিয়ে একসঙ্গে ঈদের সময় বেশি ছুটি দেওয়া উচিত। এতে ঈদ করতে গ্রামে যাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ কমবে।