স্ত্রী-দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি | ৯ মে, ২০২২ ০০:০০
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এক নারী ও তার দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রাম থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে ওই নারীর স্বামী আসাদুর রহমান রুবেলকে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা হলেনরুবেলের স্ত্রী লাভলী আক্তার (৩৫), মেয়ে ছোঁয়া আক্তার (১৬) ও কথা আক্তার (১২)। বড় মেয়ে ছোঁয়ার আগামী বছর বানিয়াজুরী সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। আর ছোট মেয়ে কথা স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট রুবেল ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশায় ভুগছিলেন। এ কারণে তাদের দাম্পত্য কলহ বাধে। এর জেরেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টাও করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
তারা জানান, রুবেল উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডে দন্তচিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন। ২০ বছর আগে লাভলীকে বিয়ে করেন। এতদিন তাদের সংসার সুখে-শান্তিতে চলছিল। তবে সম্প্রতি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তাদের সংসারেও অশান্তি শুরু হয়।
নিহত লাভলীর ভাতিজা সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একটি ভুল চিকিৎসা করার দায়ে রুবেলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই জরিমানার টাকা আজ (রবিবার) দেওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে চাপে ছিলেন।
লাভলীর ভাই মো. আলম বলেন, বেশকিছু দিন ধরে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক অস্বস্তিতে ছিলেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ বাড়তে থাকে। শনিবার রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
লাভলীর মা হালিমা বেগম বলেন, ভোরে আমি মেয়ের বাড়িতে যাই। এ সময় ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ঘরের বাইরের ছিকল খুলে দেখি তিনজনের রক্তাক্ত দেহ খাটে পড়ে আছে।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান বলেন, শুনেছি রুবেল অনেক টাকা ঋণ নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাভলী আক্তারের ভাই মো. আলম বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। রুবেলকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবণী বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এবং রুবেলকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।
শেয়ার করুন
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি | ৯ মে, ২০২২ ০০:০০

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এক নারী ও তার দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রাম থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে ওই নারীর স্বামী আসাদুর রহমান রুবেলকে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা হলেনরুবেলের স্ত্রী লাভলী আক্তার (৩৫), মেয়ে ছোঁয়া আক্তার (১৬) ও কথা আক্তার (১২)। বড় মেয়ে ছোঁয়ার আগামী বছর বানিয়াজুরী সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। আর ছোট মেয়ে কথা স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট রুবেল ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশায় ভুগছিলেন। এ কারণে তাদের দাম্পত্য কলহ বাধে। এর জেরেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টাও করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
তারা জানান, রুবেল উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডে দন্তচিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন। ২০ বছর আগে লাভলীকে বিয়ে করেন। এতদিন তাদের সংসার সুখে-শান্তিতে চলছিল। তবে সম্প্রতি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তাদের সংসারেও অশান্তি শুরু হয়।
নিহত লাভলীর ভাতিজা সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একটি ভুল চিকিৎসা করার দায়ে রুবেলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই জরিমানার টাকা আজ (রবিবার) দেওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে চাপে ছিলেন।
লাভলীর ভাই মো. আলম বলেন, বেশকিছু দিন ধরে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক অস্বস্তিতে ছিলেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ বাড়তে থাকে। শনিবার রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
লাভলীর মা হালিমা বেগম বলেন, ভোরে আমি মেয়ের বাড়িতে যাই। এ সময় ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ঘরের বাইরের ছিকল খুলে দেখি তিনজনের রক্তাক্ত দেহ খাটে পড়ে আছে।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান বলেন, শুনেছি রুবেল অনেক টাকা ঋণ নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাভলী আক্তারের ভাই মো. আলম বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। রুবেলকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবণী বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এবং রুবেলকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।