অফিসে নেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কক্ষের সামনে এমপি
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি | ১৬ মে, ২০২২ ০০:০০
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়ে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস কর্মকর্তা কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের তালাবদ্ধ কক্ষের সামনে চেয়ার পেতে প্রায় ২০ মিনিট বসে তার জন্য অপেক্ষা করেন।
গতকাল রবিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে এমপি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের ভিড় দেখেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি, দালালদের দৌরাত্ম্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে গতকাল সকালে কাউকে না জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র মো. ইছাহক আলি মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহসিন কবীর ও ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান। হাসপাতালে এসেই জরুরি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির ভিড় দেখে এগিয়ে যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তাকে দেখে বিক্রয় প্রতিনিধিরা সটকে পড়েন। এ সময় এমপিকে কাছে পেয়ে অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রোগীরা তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
এরপর এমপি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের কক্ষে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ পান। অগত্যা কক্ষের সামনে চেয়ার নিয়ে একা বসে থাকেন। সকাল ৮টায় হাসপাতালে রাউন্ড ছিল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের। তিনিও তখন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এভাবে প্রায় ২০ মিনিট বসে থাকার পর খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন। তার আসার আরও ১০ মিনিট পর আরএমও ডা. শামীম হাসপাতালে আসেন।
এ সময় এমপি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আরএমওকে ভর্ৎসনা করেন। হাসপাতালের অভ্যন্তরে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষেধ, দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজ অপসারণে নির্দেশ দেন। আর হাসপাতাল চত্বরে মাদকসেবীদের আনাগোনা বন্ধে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
পরে নুরুজ্জামান বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালের বিষয়ে নানা অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে তদন্তে এসেছিলাম। কাউকে কিছু না বলে আসায় সবকিছু হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছি। কর্মকর্তাদের দায়িত্বের বিষয়ে সংশোধন হতে বলেছি। এতে কাজ না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অনুপস্থিতির বিষয়ে আরএমও ডা. শামীমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন বলেন, ‘এমপি আমাদের কিছু না জানিয়ে হাসপাতালে আসায় সামান্য সমস্যা হয়েছিল। পরে সব ঠিক হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে এমপি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’
শেয়ার করুন
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি | ১৬ মে, ২০২২ ০০:০০

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়ে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস কর্মকর্তা কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের তালাবদ্ধ কক্ষের সামনে চেয়ার পেতে প্রায় ২০ মিনিট বসে তার জন্য অপেক্ষা করেন।
গতকাল রবিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে এমপি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের ভিড় দেখেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি, দালালদের দৌরাত্ম্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে গতকাল সকালে কাউকে না জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র মো. ইছাহক আলি মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহসিন কবীর ও ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান। হাসপাতালে এসেই জরুরি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির ভিড় দেখে এগিয়ে যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তাকে দেখে বিক্রয় প্রতিনিধিরা সটকে পড়েন। এ সময় এমপিকে কাছে পেয়ে অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রোগীরা তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
এরপর এমপি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের কক্ষে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ পান। অগত্যা কক্ষের সামনে চেয়ার নিয়ে একা বসে থাকেন। সকাল ৮টায় হাসপাতালে রাউন্ড ছিল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের। তিনিও তখন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এভাবে প্রায় ২০ মিনিট বসে থাকার পর খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন। তার আসার আরও ১০ মিনিট পর আরএমও ডা. শামীম হাসপাতালে আসেন।
এ সময় এমপি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আরএমওকে ভর্ৎসনা করেন। হাসপাতালের অভ্যন্তরে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষেধ, দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজ অপসারণে নির্দেশ দেন। আর হাসপাতাল চত্বরে মাদকসেবীদের আনাগোনা বন্ধে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
পরে নুরুজ্জামান বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালের বিষয়ে নানা অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে তদন্তে এসেছিলাম। কাউকে কিছু না বলে আসায় সবকিছু হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছি। কর্মকর্তাদের দায়িত্বের বিষয়ে সংশোধন হতে বলেছি। এতে কাজ না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অনুপস্থিতির বিষয়ে আরএমও ডা. শামীমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন বলেন, ‘এমপি আমাদের কিছু না জানিয়ে হাসপাতালে আসায় সামান্য সমস্যা হয়েছিল। পরে সব ঠিক হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে এমপি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’