আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহারে ছাড় দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ মে, ২০২২ ০০:০০
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেঁধে দেওয়া সুদহারে কিছুটা ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ খাতের প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সুদহার বাস্তবায়ন শিথিল করার আশ্বাস দেন গভর্নর ফজলে কবির।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) নেতারা গভর্নরের কাছে সুদহার পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এসময় গভর্নর ফজলে কবির দীর্ঘমেয়াদি আমানতে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া ছোট ঋণের তদারকির ব্যয় যেহেতু বেশি সেহেতু এসব ঋণের সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত যাতে নেওয়া যায় সে বিষয়টিও দেখবেন বলে বিএলএফসিএ নেতাদের আশ্বাস দেন গভর্নর।
বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান ও আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বৈঠকের বিষয়ে বলেন, ‘মূলত আমানত ও ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। আমাদের পক্ষ থেকে এই সুদহার বাস্তবায়নে কিছুটা নমনীয়তা দেখানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দেন।’
মমিনুল আরও বলেন, ‘বর্তমান সুদহারে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে ঋণ সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়ার অনুমোদন চেয়েছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। যাচাই-বাছাই করে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) আমানত সংগ্রহের প্রধান উৎস হচ্ছে ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকের আমানত সুদহার হচ্ছে মূল্যস্ফীতির ওপরে ও ঋণ সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণে সুদহার বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ওই বছর এপ্রিল থেকে কার্যকর রয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হারে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে আমানতে ৭ শতাংশ এবং ঋণে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১ জুলাই থেকে সুদের নতুন এ হার কার্যকর হবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেলায় প্রথমবারের মতো সুদহার বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, নতুন নেওয়া আমানত ও ঋণের ক্ষেত্রে নতুন এ নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তবে আগে থেকে নেওয়া ঋণ ও আমানতের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত আগের হারই বহাল থাকবে।
এই সুদহার কার্যকরের আগেই সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঋণ সুদহার ১২ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৬টি। অবসায়নের পথে যেতে থাকা পিপলস লিজিং আদালতের নির্দেশে এখন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ায় পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেন বন্ধ রয়েছে কোম্পানিটির।
এনবিএফআইগুলোতে গত ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। একই সময়ে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৬৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ মে, ২০২২ ০০:০০

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেঁধে দেওয়া সুদহারে কিছুটা ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ খাতের প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সুদহার বাস্তবায়ন শিথিল করার আশ্বাস দেন গভর্নর ফজলে কবির।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) নেতারা গভর্নরের কাছে সুদহার পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এসময় গভর্নর ফজলে কবির দীর্ঘমেয়াদি আমানতে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া ছোট ঋণের তদারকির ব্যয় যেহেতু বেশি সেহেতু এসব ঋণের সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত যাতে নেওয়া যায় সে বিষয়টিও দেখবেন বলে বিএলএফসিএ নেতাদের আশ্বাস দেন গভর্নর।
বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান ও আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বৈঠকের বিষয়ে বলেন, ‘মূলত আমানত ও ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। আমাদের পক্ষ থেকে এই সুদহার বাস্তবায়নে কিছুটা নমনীয়তা দেখানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দেন।’
মমিনুল আরও বলেন, ‘বর্তমান সুদহারে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে ঋণ সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়ার অনুমোদন চেয়েছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। যাচাই-বাছাই করে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) আমানত সংগ্রহের প্রধান উৎস হচ্ছে ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকের আমানত সুদহার হচ্ছে মূল্যস্ফীতির ওপরে ও ঋণ সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণে সুদহার বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ওই বছর এপ্রিল থেকে কার্যকর রয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হারে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে আমানতে ৭ শতাংশ এবং ঋণে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১ জুলাই থেকে সুদের নতুন এ হার কার্যকর হবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেলায় প্রথমবারের মতো সুদহার বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, নতুন নেওয়া আমানত ও ঋণের ক্ষেত্রে নতুন এ নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তবে আগে থেকে নেওয়া ঋণ ও আমানতের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত আগের হারই বহাল থাকবে।
এই সুদহার কার্যকরের আগেই সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঋণ সুদহার ১২ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৬টি। অবসায়নের পথে যেতে থাকা পিপলস লিজিং আদালতের নির্দেশে এখন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ায় পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেন বন্ধ রয়েছে কোম্পানিটির।
এনবিএফআইগুলোতে গত ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। একই সময়ে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৬৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা।